উবায়দুল্লাহ বাদল, ঢাকা
খাদ্য অধিদপ্তরের সহকারী উপখাদ্য পরিদর্শক পদে ২০১০ সালে সাধারণ কোটায় চাকরির আবেদন করেও মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগ পেয়েছিলেন মাসুদুর রহমান, শাম্মী আক্তার ও বেগম ফারজানা শাহ; কিন্তু তাঁরা যথাযথ সনদ জমা দেননি এখন পর্যন্ত। একই পদে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় আবেদন করে জাফর ইকবাল, নন্দগোপাল রায়, আব্দুল রহিম হাওলাদারও চাকরি পেয়েছিলেন উপযুক্ত সনদ ছাড়াই।
তাঁরাও এই ১৪ বছরে মুক্তিযোদ্ধার সনদ জমা দিতে পারেননি। এমনকি এই ছয় কর্মকর্তার চাকরির মূল আবেদনপত্রও পাওয়া যাচ্ছে না খাদ্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট শাখায়। খাদ্য অধিদপ্তরেরই তদন্ত প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
সূত্রমতে, ওই কর্মকর্তাদের মূল আবেদনপত্র গায়েব হওয়ায় নথি সংরক্ষণের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অধিদপ্তর থেকে গত সপ্তাহে ওই সুপারিশসংবলিত প্রতিবেদনটি খাদ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি এখনও আমার কাছে আসেনি। এলে তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশ দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (প্রশাসন) এ কে এম মামুনুর রশিদ অবশ্য বলেন, ‘আমরা প্রতিবেদন পেয়েছি। এখনো ঠিকমতো পড়া হয়নি। তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশ আমলে নিয়েই প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে যতদূর জানি, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা আদালতে রিট করে চাকরি করছেন।’
জানা গেছে, খাদ্য অধিদপ্তরে ২০১০ সালে ১০ ক্যাটাগরিতে জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল, যার ৩০ শতাংশ ছিল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও পোষ্য কোটায়। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের সনদ যাচাইয়ের জন্য ২০১৪ সালে খাদ্য মন্ত্রণালয় চিঠি দিয়েছিল মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে। নথি ঘেঁটে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় দেখতে পায়, ১৩ জনের মুক্তিযোদ্ধা সনদের বদলে পাঠানো হয়েছে শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, জেলা প্রশাসকের সনদ, প্রশংসাপত্র, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও এম এ জি ওসমানীর চিঠি।
ওই ১৩ জন হলেন খাদ্য পরিদর্শক খন্দকার সেলিম হোসেন, ইসরাত জাহান, মাসুদুর রহমান ও মো. সাইদুজ্জামান; উপখাদ্য পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন সিরাজী; সহকারী উপখাদ্য পরিদর্শক মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, কনিকা রানী মণ্ডল, শেখ এজাজ আহমেদ, শাম্মী আখতার, বেগম ফারজানা শাহ, জাফর ইকবাল, নন্দগোপাল রায় ও আ. রহিম হাওলাদার। তাঁরা বিভিন্ন জেলায় কর্মরত।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিষয়টি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে জানানো হলে ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি নেওয়া ১৩ জনকে বরখাস্ত করতে ২০১৫ সালে খাদ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তাঁদের দেওয়া বেতন-ভাতা ফেরত নিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছিল। পাশাপাশি ওই জালিয়াতির সঙ্গে যাঁরা জড়িত ছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও ফৌজদারি ও বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছিল। ওই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন অভিযুক্ত ব্যক্তিরা।
সূত্রমতে, পরে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সরবরাহ করায় ২০১৭ সালে দুজনকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয় খাদ্য মন্ত্রণালয়।আরেকজনকে অব্যাহতি দেওয়া হয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে।
ঢাকার সাভার খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খন্দকার সেলিম হোসেন বলেন, ‘আমার বাবা প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা। মন্ত্রণালয় থেকে সনদসহ কাগজপত্র চাওয়া হলে তা সরবরাহ করি। যাচাই-বাছাই শেষে আমাকে ও ইসরাত জাহানকে অভিযোগ হতে অব্যাহতি দেয় মন্ত্রণালয়।’
জানা যায়, বাকি ১০ জনই কর্মরত। এ নিয়ে অধিদপ্তরের তদন্ত কমিটি সম্প্রতি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ছয়জনের মূল আবেদনপত্রই খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে আবেদন গ্রহণের রেজিস্টার খাতায় এই ছয়জনের তিনজন সাধারণ কোটায় আবেদন করেছেন বলে উল্লেখ আছে।
রংপুরের গঙ্গাচড়ায় কর্মরত খাদ্য পরিদর্শক মাসুদুর রহমান বলেন, ‘আমরা বিষয়টি নিয়ে রিট করেছি। দেখা যাক, আদালত কী সিদ্ধান্ত দেন।’
শেরপুরে কর্মরত উপখাদ্য পরিদর্শক মো. সাইদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা মামলা করেছি। রায় পাওয়ার পরই এ বিষয়ে কথা বলব।’
এই সম্পর্কিত আরও খবর পড়ুন:
খাদ্য অধিদপ্তরের সহকারী উপখাদ্য পরিদর্শক পদে ২০১০ সালে সাধারণ কোটায় চাকরির আবেদন করেও মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগ পেয়েছিলেন মাসুদুর রহমান, শাম্মী আক্তার ও বেগম ফারজানা শাহ; কিন্তু তাঁরা যথাযথ সনদ জমা দেননি এখন পর্যন্ত। একই পদে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় আবেদন করে জাফর ইকবাল, নন্দগোপাল রায়, আব্দুল রহিম হাওলাদারও চাকরি পেয়েছিলেন উপযুক্ত সনদ ছাড়াই।
তাঁরাও এই ১৪ বছরে মুক্তিযোদ্ধার সনদ জমা দিতে পারেননি। এমনকি এই ছয় কর্মকর্তার চাকরির মূল আবেদনপত্রও পাওয়া যাচ্ছে না খাদ্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট শাখায়। খাদ্য অধিদপ্তরেরই তদন্ত প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
সূত্রমতে, ওই কর্মকর্তাদের মূল আবেদনপত্র গায়েব হওয়ায় নথি সংরক্ষণের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অধিদপ্তর থেকে গত সপ্তাহে ওই সুপারিশসংবলিত প্রতিবেদনটি খাদ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি এখনও আমার কাছে আসেনি। এলে তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশ দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (প্রশাসন) এ কে এম মামুনুর রশিদ অবশ্য বলেন, ‘আমরা প্রতিবেদন পেয়েছি। এখনো ঠিকমতো পড়া হয়নি। তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশ আমলে নিয়েই প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে যতদূর জানি, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা আদালতে রিট করে চাকরি করছেন।’
জানা গেছে, খাদ্য অধিদপ্তরে ২০১০ সালে ১০ ক্যাটাগরিতে জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল, যার ৩০ শতাংশ ছিল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও পোষ্য কোটায়। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের সনদ যাচাইয়ের জন্য ২০১৪ সালে খাদ্য মন্ত্রণালয় চিঠি দিয়েছিল মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে। নথি ঘেঁটে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় দেখতে পায়, ১৩ জনের মুক্তিযোদ্ধা সনদের বদলে পাঠানো হয়েছে শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, জেলা প্রশাসকের সনদ, প্রশংসাপত্র, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও এম এ জি ওসমানীর চিঠি।
ওই ১৩ জন হলেন খাদ্য পরিদর্শক খন্দকার সেলিম হোসেন, ইসরাত জাহান, মাসুদুর রহমান ও মো. সাইদুজ্জামান; উপখাদ্য পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন সিরাজী; সহকারী উপখাদ্য পরিদর্শক মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, কনিকা রানী মণ্ডল, শেখ এজাজ আহমেদ, শাম্মী আখতার, বেগম ফারজানা শাহ, জাফর ইকবাল, নন্দগোপাল রায় ও আ. রহিম হাওলাদার। তাঁরা বিভিন্ন জেলায় কর্মরত।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিষয়টি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে জানানো হলে ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি নেওয়া ১৩ জনকে বরখাস্ত করতে ২০১৫ সালে খাদ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তাঁদের দেওয়া বেতন-ভাতা ফেরত নিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছিল। পাশাপাশি ওই জালিয়াতির সঙ্গে যাঁরা জড়িত ছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও ফৌজদারি ও বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছিল। ওই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন অভিযুক্ত ব্যক্তিরা।
সূত্রমতে, পরে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সরবরাহ করায় ২০১৭ সালে দুজনকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয় খাদ্য মন্ত্রণালয়।আরেকজনকে অব্যাহতি দেওয়া হয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে।
ঢাকার সাভার খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খন্দকার সেলিম হোসেন বলেন, ‘আমার বাবা প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা। মন্ত্রণালয় থেকে সনদসহ কাগজপত্র চাওয়া হলে তা সরবরাহ করি। যাচাই-বাছাই শেষে আমাকে ও ইসরাত জাহানকে অভিযোগ হতে অব্যাহতি দেয় মন্ত্রণালয়।’
জানা যায়, বাকি ১০ জনই কর্মরত। এ নিয়ে অধিদপ্তরের তদন্ত কমিটি সম্প্রতি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ছয়জনের মূল আবেদনপত্রই খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে আবেদন গ্রহণের রেজিস্টার খাতায় এই ছয়জনের তিনজন সাধারণ কোটায় আবেদন করেছেন বলে উল্লেখ আছে।
রংপুরের গঙ্গাচড়ায় কর্মরত খাদ্য পরিদর্শক মাসুদুর রহমান বলেন, ‘আমরা বিষয়টি নিয়ে রিট করেছি। দেখা যাক, আদালত কী সিদ্ধান্ত দেন।’
শেরপুরে কর্মরত উপখাদ্য পরিদর্শক মো. সাইদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা মামলা করেছি। রায় পাওয়ার পরই এ বিষয়ে কথা বলব।’
এই সম্পর্কিত আরও খবর পড়ুন:
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
২ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
২ দিন আগে