‘গান-উপন্যাসের সেই নদী কোথায়’

রাজশাহী প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ এপ্রিল ২০২২, ১৬: ২৩
Thumbnail image

‘পদ্মা নদীকে নিয়ে গান হয়েছে “সর্বনাশা পদ্মা নদী”, উপন্যাস লেখা হয়েছে। সেই উপন্যাস থেকে সিনেমা হয়েছে “পদ্মা নদীর মাঝি”। সেই নদী আজ কোথায়। আমরা সেই নদী ফিরে পেতে চাই। পদ্মা শুকিয়ে যাওয়ার জন্য ভারত যেভাবে দায়ী, তার জন্য ক্ষতিপূরণ আদায় করতে হবে।’

ফারাক্কা বাঁধ চালু দিবস উপলক্ষে রাজশাহীতে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) আয়োজিদ প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা এমন কথা বলেন। গতকাল শনিবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত নগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে এই প্রতিবাদ সমাবেশ হয়।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, কয়েক দশকে ভারত সরকার পদ্মাসহ আন্তর্জাতিক ৫৪টি নদী নানাভাবে শাসন করেছে। তাঁরা নদীগুলোতে বাঁধ তৈরি করে এই অঞ্চলকে মরুকরণের দিকে ঠেলে দিয়েছে। এতে গত কয়েক দশকে বাংলাদেশের অনেক ক্ষতি হয়েছে। এই নদীগুলোর পানির সুষম বণ্টন নিশ্চিত করতে হবে এবং সরকারকে ভারত সরকারের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করতে হবে।

বক্তারা বলেন, ১৯৬১ সালের ভারতের গঙ্গা আর এ দেশের পদ্মা নদীর ওপর ফারাক্কা বাঁধ দেওয়ার কাজ শুরু করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশ ৬০ ভাগ পানি পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আজ পর্যন্ত সেই পানির হিস্যা বাংলাদেশ পায়নি। উল্টো ভারত হয়ে আসা বাংলাদেশে বয়ে যাওয়া ৫৪টি নদীকে শাসন করছে প্রতিবেশী দেশটির সরকার। এই নদী শাসনের ফলে এ দেশ মরুর মতো হয়ে যাচ্ছে।

বাসদের সমন্বয়ক আলফাজ হোসেন বলেন, ‘পদ্মাকে নিয়ে গান হয়েছে “সর্বনাশা পদ্মা নদী”, উপন্যাস লেখা হয়েছে। সেই উপন্যাস থেকে সিনেমা হয়েছে “পদ্মা নদীর মাঝি”। সেই নদী আজ কোথায়? ভারত নিজেদের সাম্রাজ্যবাদকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্যই বাঁধ দিয়েছিল। শুরু থেকেই এই বাঁধের প্রতিবাদ করে আসছে বাংলাদেশ। ১৯৭৬ সালে মজলুম জননেতা মওলানা হামিদ খান ভাসানী ঢাকা থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পর্যন্ত ফারাক্কা বাঁধের বিরুদ্ধে লং মার্চ করেছিলেন। লক্ষ লক্ষ মানুষ তাতে অংশ নিয়েছিলেন। তখন ভাসানী বলেছিলেন, এই বাঁধ থাকলে এই অঞ্চল মরুভূমি হয়ে যাবে। আজ এত বছর পর সেই মরুর দিকেই এই অঞ্চল ধাবিত হচ্ছে।’

আলফাজ হোসেন আরও বলেন,  এ দেশকে বাঁচাতে হলে আন্তর্জাতিক নদীর ওপর বাঁধ তুলে ফেলতে হবে। এ জন্য এ দেশের সরকারকে শক্ত হয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে যেতে হবে। নদীতে বাঁধ দেওয়ায় এ দেশের যত ক্ষতি হয়েছে, সেই ক্ষতিপূরণও আদায় করতে হবে। এটা সময়ের দাবি।

সমাবেশে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি রিদম শাহরিয়ার বলেন, ভারত শুকনো মৌসুমে এ দেশে পানি ছাড়ে না। যখন এখানকার পদ্মা এমনিতেই ভরপুর থাকে, তখন তাঁরা পানি ছেড়ে দিয়ে এই অঞ্চলকে ডুবিয়ে দেয়। ফারাক্কাসহ অন্যান্য বাঁধ দেওয়ার কারণে এই অঞ্চলের নদীকেন্দ্রিক মানুষের জীবিকা বন্ধ হয়ে গেছে। কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য দেন বাসদের ছাত্রফ্রন্টের নগর কমিটির আহ্বায়ক সজীবুর রহমান, পবা থানার বাসদের সংগঠক সদীশ চন্দ্র প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত