প্রাকৃতিক উপাদানে বড় হচ্ছে পাহাড়ের ষাঁড়

আবদুল মান্নান, মানিকছড়ি (খাগড়াছড়ি)
প্রকাশ : ২২ মে ২০২৪, ১০: ২৩
আপডেট : ২২ মে ২০২৪, ১৪: ৪৭

এক মাসের কম সময় আছে ঈদুল আজহার। এই ঈদের প্রধান অনুষঙ্গ পশু কোরবানি। আর আসন্ন ঈদে বিক্রির জন্য খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলায় প্রাকৃতিক উপায়ে পালন করা হচ্ছে গরু-ছাগল। পাহাড়ের এসব প্রাণীর মাংস সুস্বাদু হওয়ায় চাহিদাও বেশি। তাই খামারিরা লাভবান হবেন বলেই আশা করছেন।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় দেড় শ খামারে এবার কোরবানি উপযোগী গরু, ছাগল রয়েছে ২ হাজার ৬১০টি। তবে মাঝারি আকারের ষাঁড়ের সংখ্যা বেশি। বড় গরু হাতে গোনা। প্রাকৃতিক ঘাস, লতাপাতা, সাইলেজ (বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করে পুষ্টি উপাদান সঠিক রেখে বায়ুশূন্য অবস্থায় সবুজ ঘাসকে প্রক্রিয়াজাত করা) ও ভুট্টা খাওয়ানো হয় এসব প্রাণীকে। আর পাহাড়ের খামারিরা যত্নসহকারেই পালন করেন গরু-ছাগল।

উপজেলার গচ্ছাবিল এলাকার মো. জাবের হোসেন সোহাগের খামারে গাভির পাশাপাশি কোরবানি উপযোগী একটি ফ্রিজিয়ান ষাঁড় রয়েছে। কালো রঙের ষাঁড়টির নাম রাখা হয়েছে ‘রাজা বাবু’। ওজন ১৪-১৫ মণ। ঈদের বাজারে সাড়ে ৬ লাখ টাকায় ষাঁড়টি বিক্রি করতে চান তিনি।

শাহিওয়াল জাতের ১৫টি গরু পালন করা একসত্যাপাড়ার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক সবুজ ঘাস, সাইলেজ ও ভুট্টা ছাড়া আর কোনো খাদ্য গরুর সামনে দেওয়া হয় না। গত বছর ঠিক এই সময়ে শাহিওয়াল গরুগুলো গড়ে এক লাখ টাকায় কিনেছি। গড়ে প্রতিটি গরু ৩ লাখ টাকায় বিক্রি করতে চাই। ইতিমধ্যে একাধিক ব্যবসায়ী ২ লাখ টাকা করে বলেছেন।’

একই গ্রামের খামারি মো. কামাল হোসেন এবার ১৪টি দেশি, শাহিওয়াল, ফ্রিজিয়ান ষাঁড় কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য পালন করছেন। তিনি বলেন, ‘আমি প্রাকৃতিক ঘাস ও সাইলেজ খাইয়ে গরু মোটাতাজা করে থাকি। ইতিমধ্যে শহরের অনেক পাইকার গরুর খোঁজ নেওয়া শুরু করেছেন। আশা করি, এবারও ঘরে রেখেই গরু বিক্রি করব।’

উপজেলার ইকবাল ডেইরি ফার্মের ব্যবস্থাপক মো. একরামুল করিম বলেন, ইতিমধ্যে শতাধিক শাহিওয়াল ও ফ্রিজিয়ান ষাঁড় বিক্রি হয়ে গেছে। আর ২৫-৩০টি ষাঁড় আছে।

তবে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ৩-৪ বছর ধরে বাজারে গো-খাদ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে খামারিরা লোকসানের শিকার হচ্ছেন। যাঁদের নিজস্ব ঘাস, ভুট্টা চাষ আছে, তাঁরাই কেবল লাভবান হচ্ছেন।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গোলাম মোস্তফা আজকের পত্রিকাকে বলেন, এবার উপজেলার দেড় শ খামারে ২ হাজার ৬১০টি গরু-ছাগল কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে। গো-খাদ্যের আকাশচুম্বী দামের বিপরীতে পাহাড়ের প্রাকৃতিক খাদ্য খামারিদের কিছুটা রেহাই দিয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত