রজত কান্তি রায়, ঢাকা
একে চন্দ্র, দুইয়ে পক্ষ, তিনে নেত্র থেকে শুরু করে ছয়ে ঋতুর ধারাপাত গণনার যুগ শেষ হয়েছে আমাদের ছেলেবেলার একটু আগে আগে, সেটা সত্তরের দশক। আমাদের ছেলেবেলা গড়ে ওঠে আশির দশকে। তখন প্রথম শ্রেণির ক্লাস শেষে সুর করে ধারাপাত পড়া হতো এক এক্কে এক, দুই এক্কে দুই…। চন্দ্র, পক্ষ, নেত্র মিলিয়ে ধারাপাত পড়ার সময় আমরা পাইনি। কিন্তু বাড়িতে বসে শিখেছিলাম বড়দের কাছে—একে চন্দ্র থেকে ছয়ে ঋতু হয়ে দশে দিক পর্যন্ত। সেই থেকে জানি, আমাদের দেশে ছয়ে ঋতু। মানে ছয়টি ঋতু।
আরও বড় হলে ফরহাদ খান আমাদের জানিয়েছিলেন, বাংলা ঋতু আর সংস্কৃত ঋতুর হিসাবে কিছু পার্থক্য আছে। ফরহাদ খান একটি লেখায় সংস্কৃত অভিধানের সূত্র টেনে বলেছিলেন, অগ্রহায়ণ-পৌষ নিয়ে ‘হিম’; মাঘ-ফাল্গুন নিয়ে ‘শিশির’; শ্রাবণ-ভাদ্র নিয়ে ‘বর্ষা’ এবং আশ্বিন-কার্তিক নিয়ে ‘শরদ’ বা শরৎ। এই ছিল সংস্কৃত ঋতু। এই হিসাব যখন করা হতো তখন বাংলা বছর শুরু হতো অগ্রহায়ণ থেকে। কারণ, হায়ণ অর্থ শুরু। একসময় অগ্রহায়ণ ছিল বছর শুরুর মাস। কিন্তু বাংলা ঋতুর হিসাব হলো, বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ গ্রীষ্মকাল, আষাঢ়-শ্রাবণ বর্ষাকাল, ভাদ্র-আশ্বিন শরৎকাল, কার্তিক-অগ্রহায়ণ হেমন্তকাল, পৌষ-মাঘ শীতকাল, ফাল্গুন-চৈত্র বসন্তকাল।
ওলটপালট যাই হোক, সেটা মেনে নিয়েই এখন আমাদের শরৎকালের যাপন ভাদ্র ও আশ্বিন মাস নিয়ে।
আজ পয়লা ভাদ্র, আজ থেকে শরতের শুরু। কিন্তু শরতের এই আবহটা পাওয়া যাচ্ছিল বেশ আগে থেকেই। ময়ূরকণ্ঠী নীল আকাশ, তুলোর মতো মেঘ, লিলুয়া বাতাস, শাপলা-পদ্মের অদ্ভুত আবেশ শুরু হয়েছিল শ্রাবণ শেষের আগেই। রূপের যত উপমাই দিই না কেন শরৎ মূলত মেঘেরই ঋতু। আর সব তার অনুষঙ্গ।
কাশফুল ফোটে শরতের মাঝামাঝি থেকে শেষের দিকে। শুরুতে মেঘ আর আকাশ তার ট্রেডমার্ক। কখনো শিউলি হয়ে ওঠে শরতের প্রতীক। কিন্তু জল নেমে যাওয়া বিলে সাদা, লাল আর বেগুনি শাপলার মাথায় খেলা করে গঙ্গাফড়িং, নিস্তরঙ্গ জলে ভেসে থাকে ঘনসবুজ কচুরিপানা, তার বেগুনি রঙের ফুল বুকে নিয়ে—এ দৃশ্য কেন যেন আমাদের চোখ এড়িয়ে যায় বরাবর। এর খুব উল্লেখ কোথাও পাওয়া যায় না। ঠিক যেমন পাওয়া যায় না পদ্মের উল্লেখ। গাঢ় নয়, ফ্যাকাসে সবুজ বড় বড় পাতার ক্যানভাসে ফুটে থাকা গোলাপি পদ্ম যে শরতেই দেখা যায়, এ কথা কেউ তেমন বলেন না। পদ্ম তেমন একটা দেখা যায় না বলেই কি তাকে নিয়ে এই মৌনতার খেলা? হতে পারে। শরতের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে বৃক্ষের পাতা ঝরে যাওয়া। সে দৃশ্য অতিমনোরম। সেটাও কিন্তু শেষের দিকে। শুরুতে নিচে নিস্তরঙ্গ জলপ্রবাহ আর ওপরে সাদা মেঘের আনাগোনা।
শরৎ এক আশ্চর্য ঋতু সত্যি। পৃথিবীর চারটি প্রধান ঋতুর মধ্যে এটি একটি। পুরো পৃথিবী তাকে ‘অটাম’ নামে ডাকলেও উত্তর আমেরিকায় একে ডাকা হয় ‘ফল’ নামে। উত্তর গোলার্ধে সেপ্টেম্বর মাসে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে মার্চ মাসে শরৎকাল গ্রীষ্ম ও শীতকালের মধ্যবর্তী ঋতু হিসেবে বিরাজ করে। শরতে একই সঙ্গে দুটি কৃষি মৌসুমের দেখা পাওয়া যায়। আষাঢ় থেকে ভাদ্র মাস এই সময় খরিপ-২ কৃষির মৌসুম। আর আশ্বিন থেকে ফাল্গুন রবি কৃষির মৌসুম। তাই বলছি, শরৎ এক রহস্যময় ঋতু—এটি একই সঙ্গে কোমল ও কঠোর। আবহাওয়ার দিকে তাকালেই সেটা বোঝা যায়।
একে চন্দ্র, দুইয়ে পক্ষ, তিনে নেত্র থেকে শুরু করে ছয়ে ঋতুর ধারাপাত গণনার যুগ শেষ হয়েছে আমাদের ছেলেবেলার একটু আগে আগে, সেটা সত্তরের দশক। আমাদের ছেলেবেলা গড়ে ওঠে আশির দশকে। তখন প্রথম শ্রেণির ক্লাস শেষে সুর করে ধারাপাত পড়া হতো এক এক্কে এক, দুই এক্কে দুই…। চন্দ্র, পক্ষ, নেত্র মিলিয়ে ধারাপাত পড়ার সময় আমরা পাইনি। কিন্তু বাড়িতে বসে শিখেছিলাম বড়দের কাছে—একে চন্দ্র থেকে ছয়ে ঋতু হয়ে দশে দিক পর্যন্ত। সেই থেকে জানি, আমাদের দেশে ছয়ে ঋতু। মানে ছয়টি ঋতু।
আরও বড় হলে ফরহাদ খান আমাদের জানিয়েছিলেন, বাংলা ঋতু আর সংস্কৃত ঋতুর হিসাবে কিছু পার্থক্য আছে। ফরহাদ খান একটি লেখায় সংস্কৃত অভিধানের সূত্র টেনে বলেছিলেন, অগ্রহায়ণ-পৌষ নিয়ে ‘হিম’; মাঘ-ফাল্গুন নিয়ে ‘শিশির’; শ্রাবণ-ভাদ্র নিয়ে ‘বর্ষা’ এবং আশ্বিন-কার্তিক নিয়ে ‘শরদ’ বা শরৎ। এই ছিল সংস্কৃত ঋতু। এই হিসাব যখন করা হতো তখন বাংলা বছর শুরু হতো অগ্রহায়ণ থেকে। কারণ, হায়ণ অর্থ শুরু। একসময় অগ্রহায়ণ ছিল বছর শুরুর মাস। কিন্তু বাংলা ঋতুর হিসাব হলো, বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ গ্রীষ্মকাল, আষাঢ়-শ্রাবণ বর্ষাকাল, ভাদ্র-আশ্বিন শরৎকাল, কার্তিক-অগ্রহায়ণ হেমন্তকাল, পৌষ-মাঘ শীতকাল, ফাল্গুন-চৈত্র বসন্তকাল।
ওলটপালট যাই হোক, সেটা মেনে নিয়েই এখন আমাদের শরৎকালের যাপন ভাদ্র ও আশ্বিন মাস নিয়ে।
আজ পয়লা ভাদ্র, আজ থেকে শরতের শুরু। কিন্তু শরতের এই আবহটা পাওয়া যাচ্ছিল বেশ আগে থেকেই। ময়ূরকণ্ঠী নীল আকাশ, তুলোর মতো মেঘ, লিলুয়া বাতাস, শাপলা-পদ্মের অদ্ভুত আবেশ শুরু হয়েছিল শ্রাবণ শেষের আগেই। রূপের যত উপমাই দিই না কেন শরৎ মূলত মেঘেরই ঋতু। আর সব তার অনুষঙ্গ।
কাশফুল ফোটে শরতের মাঝামাঝি থেকে শেষের দিকে। শুরুতে মেঘ আর আকাশ তার ট্রেডমার্ক। কখনো শিউলি হয়ে ওঠে শরতের প্রতীক। কিন্তু জল নেমে যাওয়া বিলে সাদা, লাল আর বেগুনি শাপলার মাথায় খেলা করে গঙ্গাফড়িং, নিস্তরঙ্গ জলে ভেসে থাকে ঘনসবুজ কচুরিপানা, তার বেগুনি রঙের ফুল বুকে নিয়ে—এ দৃশ্য কেন যেন আমাদের চোখ এড়িয়ে যায় বরাবর। এর খুব উল্লেখ কোথাও পাওয়া যায় না। ঠিক যেমন পাওয়া যায় না পদ্মের উল্লেখ। গাঢ় নয়, ফ্যাকাসে সবুজ বড় বড় পাতার ক্যানভাসে ফুটে থাকা গোলাপি পদ্ম যে শরতেই দেখা যায়, এ কথা কেউ তেমন বলেন না। পদ্ম তেমন একটা দেখা যায় না বলেই কি তাকে নিয়ে এই মৌনতার খেলা? হতে পারে। শরতের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে বৃক্ষের পাতা ঝরে যাওয়া। সে দৃশ্য অতিমনোরম। সেটাও কিন্তু শেষের দিকে। শুরুতে নিচে নিস্তরঙ্গ জলপ্রবাহ আর ওপরে সাদা মেঘের আনাগোনা।
শরৎ এক আশ্চর্য ঋতু সত্যি। পৃথিবীর চারটি প্রধান ঋতুর মধ্যে এটি একটি। পুরো পৃথিবী তাকে ‘অটাম’ নামে ডাকলেও উত্তর আমেরিকায় একে ডাকা হয় ‘ফল’ নামে। উত্তর গোলার্ধে সেপ্টেম্বর মাসে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে মার্চ মাসে শরৎকাল গ্রীষ্ম ও শীতকালের মধ্যবর্তী ঋতু হিসেবে বিরাজ করে। শরতে একই সঙ্গে দুটি কৃষি মৌসুমের দেখা পাওয়া যায়। আষাঢ় থেকে ভাদ্র মাস এই সময় খরিপ-২ কৃষির মৌসুম। আর আশ্বিন থেকে ফাল্গুন রবি কৃষির মৌসুম। তাই বলছি, শরৎ এক রহস্যময় ঋতু—এটি একই সঙ্গে কোমল ও কঠোর। আবহাওয়ার দিকে তাকালেই সেটা বোঝা যায়।
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
২ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ দিন আগে