রংপুরে বর্ষায় আতঙ্ক শ্যামাসুন্দরী

শিপুল ইসলাম, রংপুর
Thumbnail image

রংপুর নগরীর বুক চিরে বয়ে গেছে শ্যামাসুন্দরী খাল। সিটি করপোরেশন এলাকার মধ্যে ১৫ দশমিক ৮০ কিলোমিটারজুড়ে বিস্তৃত খালটি শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী।তবে এ খাল ঘেঁষে নির্মাণ হয়েছে আবাসিক ভবন, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও রেস্তোরাঁ। প্রতিদিন এসবের বর্জ্য খালে ফেলা হচ্ছে। ভরাট হয়ে খালের স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সামান্য বৃষ্টিতেই নগরে তীব্র জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।

টানা দুই বছরের জলাবদ্ধতায় ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে বাসিন্দাদের। শ্যামাসুন্দরীর উন্নয়নে সিটি করপোরেশন কার্যক্রম শুরু করলে তা এগোচ্ছে কচ্ছপ গতিতে। তাই এবার বর্ষা মৌসুমেও জলাবদ্ধতার শঙ্কায় রয়েছেন নগরবাসী।

রংপুর সিটি করপোরেশন সূত্র বলেছে, শ্যামাসুন্দরী খালের পুরোনো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে ২০১৯ সালের তিনটি ধাপে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। সীমানা নির্ধারণ, পুনরুদ্ধার ও পুনরুজ্জীবিত কর্মসূচির আওতায় ওই বছর ২৩ অক্টোবর নগরীর চেকপোস্ট এলাকায় সীমানা নির্ধারণ কাজের উদ্বোধন করা হয়। এরপর সীমানা নির্ধারণসহ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।

২০২০ সালে করোনার প্রকোপ বেড়ে গেলে থমকে যায় শ্যামাসুন্দরী পুনরুজ্জীবিতকরণ কাজ। ওই বছর বৃষ্টিপাতে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ২০২১ সালেও বৃষ্টিপাতে এ খাল দিয়ে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় নগরীতে তীব্র জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। ফলে পুনরায় পানিবন্দী হয়ে পড়েন নগরবাসী। এ ছাড়া পানির প্রবাহ না থাকায় ময়লা-আবর্জনায় দুর্গন্ধ ছড়ানোর পাশাপাশি মশা-মাছির উপদ্রব বেড়েছে খালপাড়ে।

২০২১ সালের শেষের দিকে সিটি করপোরেশন শ্যামাসুন্দরী নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিকন ডিজাইন স্টুডিও নামের একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেয়। সেই পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের শ্যামাসুন্দরী খাল সংস্কারে স্থায়ী পরিকল্পনা নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কচ্ছপের গতিতে কাজ করায় এখনো পরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি।

নগরীর নিউ ইঞ্জিনিয়ারপাড়ার বাসিন্দা আকরাম হোসেন বলেন, ‘বর্ষায় নগরবাসীর দুঃখে পরিণত হয়েছে শ্যামাসুন্দরী। এখন ময়লা-আবর্জনার কারণে দুর্গন্ধ আর মশার উৎপাত চরমে উঠেছে। তিন বছর ধরে সংস্কারের কথা শুনে আসছি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।’

নদী রক্ষাবিষয়ক সংগঠন রিভারাইন পিপলের পরিচালক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, শ্যামাসুন্দরী খালের বর্তমান অবস্থা এমন যে সামান্য বৃষ্টিতে গোটা নগরীতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে।

রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ‘গত পাঁচ বছরের খালের ১৭০ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছি। ২০২০ সালে ১০০ কোটি টাকার খাল সংস্কারের একটি প্রকল্প পরিকল্পনা গ্রহণ করা হলেও অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় সেই প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়নি। দেড় বছর আগে নতুন করে পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় মেয়াদে মেয়র হিসেবে শপথ নেওয়ার মাত্র পাঁচ মাস হয়েছে। শ্যামাসুন্দরী উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জোর উদ্যোগ নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত