পুরস্কারজয়ী হাসপাতালে গরু-কুকুরের চলাচল

ইলিয়াস আহমেদ, ময়মনসিংহ
প্রকাশ : ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৯: ২৫

সেবার মান নিশ্চিতের জন্য ২০১৮, ২০১৯ ও ২০২০ সালে ‘হেলথ মিনিস্টারস ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ডে’ ভূষিত হয়েছিল ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতাল। সেই হাসপাতালেই এখন নোংরা পরিবেশে মেঝে ও বারান্দায় গাদাগাদি করে চিকিৎসা নিতে হয় রোগীদের। এমনকি হাসপাতালের ভেতরেও দেখা যায় গরু ও কুকুরের চলাচল। 

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এক হাজার শয্যার ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে প্রায় সাড়ে তিন হাজার রোগী ভর্তি থাকেন। বহির্বিভাগে সেবা নেন চার থেকে সাড়ে চার হাজার রোগী। বৃহত্তর ময়মনসিংহের ছয় জেলার মানুষ ছাড়াও অন্য জেলা থেকেও এখানে রোগীরা আসেন। 

সম্প্রতি এখানকার নানা অব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষুব্ধ রোগী ও তাঁদের স্বজনেরা। চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফদের আচরণ নিয়েও অভিযোগ রয়েছে তাঁদের। নিয়মিত ওষুধও পাওয়া যাচ্ছে না। পরীক্ষার রিপোর্টেও ভুলের অভিযোগ রয়েছে। অনেক চিকিৎসক তাঁদের পছন্দের প্রাইভেট হাসপাতালে বিভিন্ন পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিচ্ছেন রোগীদের। 

হার্টের সমস্যা নিয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে কার্ডিওলজি বিভাগে ভর্তি হন জেলার হালুয়াঘাটের বাসিন্দা মোশারফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমি হার্টের রোগী হওয়ায় অন্যান্য পরীক্ষার সঙ্গে ডাক্তার বলেছেন ইকো করাতে। কিন্তু তাঁরা পরীক্ষার জন্য সিরিয়াল দিয়েছেন দুই মাস পর। বাধ্য হয়ে বাইরে করিয়েছি। মেশিন নষ্ট থাকার কারণে অনেক পরীক্ষা এখানে হচ্ছে না। তাই ডাক্তাররা অন্য ক্লিনিকে পরীক্ষার পরামর্শ দিচ্ছেন।’ 

কার্ডিওলজি বিভাগের অপারেটর মো. কামাল বলেন, ‘অকেজো ইকো মেশিন মেরামত এবং নতুন মেশিনের চাহিদার কথা জানিয়ে ২০২১ সাল থেকে গত তিন বছরে সাত দফায় হাসপাতালের পরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে; কিন্তু সাড়া না পাওয়ায় দুর্ভোগ কমছে না।’ 

কার্ডিওলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান গোবিন্দ কান্তি পাল জানান, প্রতিদিন বেশিসংখ্যক রোগীর পরীক্ষা করানোর কারণে তিনটি ইকো মেশিনের মধ্যে দুটি অকেজো হয়ে গেছে। ফলে পরীক্ষায় সময় লাগছে। 

অব্যবস্থাপনার অভিযোগ
ফরিদুল ইসলাম নামের একজন বলেন, ‘একজন ভর্তি রোগীকে নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে এখানে আছি। আলট্রাসনোগ্রাম করানোর পর এখানকার চিকিৎসকেরা এক ধরনের রিপোর্ট দিয়েছেন। আবার বাইরের চিকিৎসকেরা অন্য ধরনের রিপোর্ট দিয়েছেন। পরে দেখা গেছে, বাইরের রিপোর্টই ঠিক।’ 

অব্যবস্থাপনার বিষয়ে প্রশ্ন করায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন মমেক হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ মাইনউদ্দিন খান। তিনি বলেন, সেবার মান খারাপ হলে কি এক হাজার শয্যার হাসপাতালে চার হাজার রোগী ভর্তি থাকত? কুকুর ও গরুর বিচরণের বিষয়ে করা প্রশ্ন এড়িয়ে তিনি বলেন, কার্ডিওলজি বিভাগের দুর্ভোগ নিরসনে পরবর্তী অর্থবছরে নতুন ইকো মেশিন কেনা হবে। এ ছাড়া সেবার মান নিশ্চিতে অন্যান্য সমস্যা নিরসনে কাজ হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত