রাশেদুল ইসলাম
ফুটবলে মানুষ মনে রাখে গোলটাই। যদি হয় ১ ম্যাচে ৪ গোল, সেটিও আবার আবাহনী-মোহামেডানের মতো ফাইনালে—অনেক বড় ব্যাপার। তবে যাঁরা নিয়মিত ঘরোয়া ফুটবল দেখেন, তাঁদের আসলে সুলেমান দিয়াবাতের পারফরম্যান্সে মুগ্ধ হলেও চমকানোর সুযোগ নেই। কারণ, বড় ম্যাচে বড় কিছু করার সামর্থ্য তাঁর আছে।
এখন পর্যন্ত লিগে দিয়াবাতে ১২ গোল করেছেন। ফেডারেশন কাপে তো ৮ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন। একজন স্ট্রাইকার হিসেবে মোহামেডানের মতো দলকে তিনি একাই টানছেন। তাই অনেকে মোহামেডানের দিয়াবাতে না বলে ‘দিয়াবাতের মোহামেডান’ বলেন। এমন ফরোয়ার্ড হাতে থাকলে যেকোনো কোচের জন্য আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলাটা সহজ হয়ে যায়।
দিয়াবাতে আসলে হৃদয় দিয়ে খেলেন। মন-প্রাণ উজাড় করে খেলেন। নিজের দক্ষতা প্রমাণে একেবারে জীবনের সর্বোচ্চ পর্যায়ে চলে যান তিনি। এর বাইরে আর যাওয়া সম্ভব না। শতভাগেরও বেশি দেওয়া বলতে যা বোঝায়, সেটাই দেন দিয়াবাতে। এটাই তাঁর সাফল্যের বড় রহস্য।
স্ট্রাইকারদের ক্ষেত্রে দুটি কথা ব্যবহার হয়—কেউ স্ট্রাইকার হয়ে জন্মায় অথবা তৈরি করে নিতে হয়। তৈরি করা মানে তৃণমূল পর্যায় থেকে তৈরি করে নিয়ে আসা। গ্রাম বা মফস্বল থেকে উঠে আসা বাংলাদেশের ফরোয়ার্ডরা খেলতে খেলতেই আজ প্রিমিয়ার লিগের বড় দল বা জাতীয় দলের স্ট্রাইকার। স্ট্রাইকার হওয়ার মৌলিক গুণগুলো কী কী, তা তো তাঁরা জেনেছেন এই পর্যায়ে আসার পর। আর এ পর্যায়ে এসে ‘ঠেকার শিক্ষা’ দিয়ে ভালো কিছু করা যায় না। যোগ্যতা বা সামর্থ্য কম থাকলেও বাড়তি পরিশ্রম করে ঘাটতি পূরণের উদ্যোগ নেয়। কীভাবে হেডে গোল করতে হবে, কীভাবে শুটিং অ্যাকুরেসি বাড়ানো যায়, কীভাবে পজিশন জ্ঞানটা বাড়ানো যায়, এগুলো নিয়ে দিয়াবাতে ব্যক্তিগত অনুশীলনে করেন, সেটারই ফল দেখা গেছে সর্বশেষ ফাইনালে।
এখানে একটা প্রশ্ন আসবে, ঘরোয়া লিগে বিদেশি স্ট্রাইকাররা যেভাবে দ্যুতি ছড়াচ্ছেন, সেখানে বাংলাদেশের স্ট্রাইকাররা কোথায়? দেশের শীর্ষ স্ট্রাইকারদের মধ্যে নাবিব নেওয়াজ জীবন আছেন, সুমন রেজা আছেন, মতিন মিয়া আছেন। নাবিব নেওয়াজ এখন জাতীয় দলের বাইরে, তবে তিনি একজন ভালো স্ট্রাইকার। মতিন মিয়াও এখন নম্বর নাইনে খেলেন না। কিছুটা নম্বর টেন বা উইঙ্গার পজিশনে খেলেন। সর্বশেষ আমিনুর রহমান সজীব, মোহামেডানের সাজ্জাদ হোসেনকে দেখা গেছে। তাঁরা মূলত পর্যাপ্ত সুযোগ পাচ্ছেন না। ক্লাবগুলো বেশির ভাগই বিদেশি খেলোয়াড়দের ওপর ভরসা রাখতে হয়। বিশেষ করে ফরোয়ার্ড লাইনে।
নিঃসন্দেহে মানের দিক থেকে দেশি খেলোয়াড়দের চেয়ে বিদেশি খেলোয়াড়েরা এগিয়ে। আবার এটাও স্বীকার করতে হবে, তাদের খুব বেশি খেলার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। দেশের অন্যতম সেরা ফরোয়ার্ড মতিন মিয়া এই মৌসুমে এখনো পর্যন্ত প্রিমিয়ার লিগে মাত্র ১৬৪ মিনিট খেলেছেন, মাত্র ১ গোল করেছেন। ম্যাচ হয়ে গেছে একেকটা ক্লাবে ১৬টি করে। জাতীয় দলের আরেক স্ট্রাইকার সুমন রেজা প্রিমিয়ার লিগে খেলেছেন মাত্র ৮৭ মিনিট। কোনো গোল নেই। সাজ্জাদ খেলেছেন মাত্র ১৮২ মিনিট। একমাত্র জীবন কিছুটা উজ্জ্বল ৪ গোল করে, ২৯০ মিনিট খেলেছেন। গড়ে ৭২ মিনিট পর পর তিনি একেকটা গোল করেছেন। বাংলাদেশের নাগরিকত্ব নেওয়া এলিটা কিংসলে ১১ ম্যাচে করেছেন ৮ গোল। খেলেছেন ৬৩৩ মিনিট। তিনি ভালো সুযোগ পেয়েছেন, গোলও করেছেন।
স্থানীয় স্ট্রাইকারদের এ সংকটের একটা বিকল্প পথ বেছে নেওয়ার সুযোগ আছে। ২০১৮ সালে ফেডারেশন কাপ হয়েছিল বিদেশি খেলোয়াড়দের ছাড়াই। সেখানে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল আরামবাগ। স্থানীয় স্ট্রাইকাররা যখন ভালো করতে পারছিলেন না, তখন আইডিয়াটা এসেছিল। সেবার কয়েকজন ভালো ফুটবলার বেরিয়ে এসেছিলেন। মাহাবুর রহমান সুফিল, জাফর ইকবাল, আব্দুল্লাহর মতো স্থানীয় ফুটবলাররা ভালো সুযোগ পেয়েছিলেন এবং নিজেদের মেলে ধরেছিলেন। আরও পেছনে তাকালে ২০১৩ সালের সুপার কাপ একটা বড় উদাহরণ। সেবার ‘বিদেশিমুক্ত’ টুর্নামেন্টে স্ট্রাইকার ওয়াহেদ আহমেদ ও তৌহিদুল আলমকে পেয়েছিল দেশের ফুটবল।
এটাই যে স্থায়ী সমাধান, তা ঠিক নয়। একেক রোগের একেক সমাধান। যেহেতু আমাদের স্থানীয় ফরোয়ার্ডরা খেলার তেমন সুযোগ পান না, এ রকম একটা টুর্নামেন্ট হতে পারে। শুধু গোল করতে পারেন না বলে হেলায় ফেলে রাখা, বিষয়টা তা নয়। ভালো সুযোগ করে দিলে কেউ না কেউ ক্লিক করবেন, এটা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
লেখক: ম্যানেজার, ফর্টিস এফসি লিমিটেড
ফুটবলে মানুষ মনে রাখে গোলটাই। যদি হয় ১ ম্যাচে ৪ গোল, সেটিও আবার আবাহনী-মোহামেডানের মতো ফাইনালে—অনেক বড় ব্যাপার। তবে যাঁরা নিয়মিত ঘরোয়া ফুটবল দেখেন, তাঁদের আসলে সুলেমান দিয়াবাতের পারফরম্যান্সে মুগ্ধ হলেও চমকানোর সুযোগ নেই। কারণ, বড় ম্যাচে বড় কিছু করার সামর্থ্য তাঁর আছে।
এখন পর্যন্ত লিগে দিয়াবাতে ১২ গোল করেছেন। ফেডারেশন কাপে তো ৮ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন। একজন স্ট্রাইকার হিসেবে মোহামেডানের মতো দলকে তিনি একাই টানছেন। তাই অনেকে মোহামেডানের দিয়াবাতে না বলে ‘দিয়াবাতের মোহামেডান’ বলেন। এমন ফরোয়ার্ড হাতে থাকলে যেকোনো কোচের জন্য আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলাটা সহজ হয়ে যায়।
দিয়াবাতে আসলে হৃদয় দিয়ে খেলেন। মন-প্রাণ উজাড় করে খেলেন। নিজের দক্ষতা প্রমাণে একেবারে জীবনের সর্বোচ্চ পর্যায়ে চলে যান তিনি। এর বাইরে আর যাওয়া সম্ভব না। শতভাগেরও বেশি দেওয়া বলতে যা বোঝায়, সেটাই দেন দিয়াবাতে। এটাই তাঁর সাফল্যের বড় রহস্য।
স্ট্রাইকারদের ক্ষেত্রে দুটি কথা ব্যবহার হয়—কেউ স্ট্রাইকার হয়ে জন্মায় অথবা তৈরি করে নিতে হয়। তৈরি করা মানে তৃণমূল পর্যায় থেকে তৈরি করে নিয়ে আসা। গ্রাম বা মফস্বল থেকে উঠে আসা বাংলাদেশের ফরোয়ার্ডরা খেলতে খেলতেই আজ প্রিমিয়ার লিগের বড় দল বা জাতীয় দলের স্ট্রাইকার। স্ট্রাইকার হওয়ার মৌলিক গুণগুলো কী কী, তা তো তাঁরা জেনেছেন এই পর্যায়ে আসার পর। আর এ পর্যায়ে এসে ‘ঠেকার শিক্ষা’ দিয়ে ভালো কিছু করা যায় না। যোগ্যতা বা সামর্থ্য কম থাকলেও বাড়তি পরিশ্রম করে ঘাটতি পূরণের উদ্যোগ নেয়। কীভাবে হেডে গোল করতে হবে, কীভাবে শুটিং অ্যাকুরেসি বাড়ানো যায়, কীভাবে পজিশন জ্ঞানটা বাড়ানো যায়, এগুলো নিয়ে দিয়াবাতে ব্যক্তিগত অনুশীলনে করেন, সেটারই ফল দেখা গেছে সর্বশেষ ফাইনালে।
এখানে একটা প্রশ্ন আসবে, ঘরোয়া লিগে বিদেশি স্ট্রাইকাররা যেভাবে দ্যুতি ছড়াচ্ছেন, সেখানে বাংলাদেশের স্ট্রাইকাররা কোথায়? দেশের শীর্ষ স্ট্রাইকারদের মধ্যে নাবিব নেওয়াজ জীবন আছেন, সুমন রেজা আছেন, মতিন মিয়া আছেন। নাবিব নেওয়াজ এখন জাতীয় দলের বাইরে, তবে তিনি একজন ভালো স্ট্রাইকার। মতিন মিয়াও এখন নম্বর নাইনে খেলেন না। কিছুটা নম্বর টেন বা উইঙ্গার পজিশনে খেলেন। সর্বশেষ আমিনুর রহমান সজীব, মোহামেডানের সাজ্জাদ হোসেনকে দেখা গেছে। তাঁরা মূলত পর্যাপ্ত সুযোগ পাচ্ছেন না। ক্লাবগুলো বেশির ভাগই বিদেশি খেলোয়াড়দের ওপর ভরসা রাখতে হয়। বিশেষ করে ফরোয়ার্ড লাইনে।
নিঃসন্দেহে মানের দিক থেকে দেশি খেলোয়াড়দের চেয়ে বিদেশি খেলোয়াড়েরা এগিয়ে। আবার এটাও স্বীকার করতে হবে, তাদের খুব বেশি খেলার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। দেশের অন্যতম সেরা ফরোয়ার্ড মতিন মিয়া এই মৌসুমে এখনো পর্যন্ত প্রিমিয়ার লিগে মাত্র ১৬৪ মিনিট খেলেছেন, মাত্র ১ গোল করেছেন। ম্যাচ হয়ে গেছে একেকটা ক্লাবে ১৬টি করে। জাতীয় দলের আরেক স্ট্রাইকার সুমন রেজা প্রিমিয়ার লিগে খেলেছেন মাত্র ৮৭ মিনিট। কোনো গোল নেই। সাজ্জাদ খেলেছেন মাত্র ১৮২ মিনিট। একমাত্র জীবন কিছুটা উজ্জ্বল ৪ গোল করে, ২৯০ মিনিট খেলেছেন। গড়ে ৭২ মিনিট পর পর তিনি একেকটা গোল করেছেন। বাংলাদেশের নাগরিকত্ব নেওয়া এলিটা কিংসলে ১১ ম্যাচে করেছেন ৮ গোল। খেলেছেন ৬৩৩ মিনিট। তিনি ভালো সুযোগ পেয়েছেন, গোলও করেছেন।
স্থানীয় স্ট্রাইকারদের এ সংকটের একটা বিকল্প পথ বেছে নেওয়ার সুযোগ আছে। ২০১৮ সালে ফেডারেশন কাপ হয়েছিল বিদেশি খেলোয়াড়দের ছাড়াই। সেখানে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল আরামবাগ। স্থানীয় স্ট্রাইকাররা যখন ভালো করতে পারছিলেন না, তখন আইডিয়াটা এসেছিল। সেবার কয়েকজন ভালো ফুটবলার বেরিয়ে এসেছিলেন। মাহাবুর রহমান সুফিল, জাফর ইকবাল, আব্দুল্লাহর মতো স্থানীয় ফুটবলাররা ভালো সুযোগ পেয়েছিলেন এবং নিজেদের মেলে ধরেছিলেন। আরও পেছনে তাকালে ২০১৩ সালের সুপার কাপ একটা বড় উদাহরণ। সেবার ‘বিদেশিমুক্ত’ টুর্নামেন্টে স্ট্রাইকার ওয়াহেদ আহমেদ ও তৌহিদুল আলমকে পেয়েছিল দেশের ফুটবল।
এটাই যে স্থায়ী সমাধান, তা ঠিক নয়। একেক রোগের একেক সমাধান। যেহেতু আমাদের স্থানীয় ফরোয়ার্ডরা খেলার তেমন সুযোগ পান না, এ রকম একটা টুর্নামেন্ট হতে পারে। শুধু গোল করতে পারেন না বলে হেলায় ফেলে রাখা, বিষয়টা তা নয়। ভালো সুযোগ করে দিলে কেউ না কেউ ক্লিক করবেন, এটা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
লেখক: ম্যানেজার, ফর্টিস এফসি লিমিটেড
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
২ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
২ দিন আগে