Ajker Patrika

প্রতারণা

প্রতারণা

দেশে যথেষ্ট পরিমাণে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নেই বলে বেকার যুবকেরা সোনালি স্বপ্নের আশা নিয়ে বিদেশে পাড়ি দিতে চান। এ জন্য অনেকে জায়গাজমি বা শেষ সম্বলটুকু বিক্রি করতেও দ্বিধা করেন না। কিন্তু আদম ব্যাপারী নামের প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে বিদেশে যাওয়ার স্বপ্ন শুধু শেষ হয় না, পথের ভিখারি হওয়ার দশায়ও পড়তে হয় অনেককে।

আজকের পত্রিকায় গত সোমবার ‘প্রতারিত ১৬ জনের আত্মহত্যার হুমকি’ শিরোনামে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, তা আমাদের বেদনাহত না করে পারে না। ইউরোপের একটি দেশে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে।

কয়েক মাস আগে অভিবাসনবিষয়ক গবেষণা সংস্থা ‘রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিটের (রামরু) তথ্যমতে, বিদেশে অভিবাসনপ্রত্যাশী বাংলাদেশিদের মধ্যে প্রায় ৫১ শতাংশই প্রতারণা ও হয়রানির শিকার হন। তাঁদের মধ্যে ১৯ শতাংশ টাকা দেওয়ার পরও বিদেশে যেতে পারেন না এবং ৩২ শতাংশ বিদেশে গিয়ে নানা দুর্ভোগের শিকার হন।

বিদেশে যেতে আগ্রহীদের প্রতারিত হওয়ার ঘটনা আগের তুলনায় কমেছে, সে কথা বলা যাবে না; বরং ক্ষেত্রবিশেষে তা হয়তো আরও বেড়েছে। প্রতারণা নানা কৌশলে হচ্ছে। এ জন্য ব্যক্তির সচেতনতার অভাবই বহুলাংশে দায়ী। প্রতারকেরা মূলত নানা ধরনের লোভনীয় প্রস্তাব দিয়ে টার্গেট ব্যক্তিদের ফাঁদে ফেলে টাকাপয়সা নিয়ে গা ঢাকা দেয়। বিদেশ গেলেই আর কোনো সমস্যা থাকবে না—এমন সরল বিশ্বাসের কারণেই অনেকে প্রতারকদের ফাঁদে পা দেন। প্রয়োজনীয় খোঁজখবর নিয়ে টাকাপয়সা লেনদেন করলে প্রতারণার হার কমে যাবে।

বিদেশে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সহায়তা করার জন্য প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় রয়েছে, রয়েছে সরকার অনুমোদিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এর বাইরে কোনো ব্যক্তির প্ররোচনায় বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা করা উচিত নয়। তা ছাড়া ডিজিটাল যুগে তথ্য পাওয়াও কঠিন নয়। অথচ সংবাদমাধ্যমে প্রায়ই প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ার খবর ছাপা হচ্ছে।

প্রতারণা বন্ধে প্রথম করণীয় হলো জনসচেতনতা তৈরি করা। প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও বৈধ সংস্থার মাধ্যম ছাড়া বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা করলে প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। অবশ্য দেশে প্রতারণা বন্ধে আইনও আছে। আইন প্রয়োগের জন্য বিভিন্ন বাহিনী ও সংস্থা আছে। এরপরও প্রতারক চক্র দেশময় তাদের জাল বিছিয়ে রাখতে পারছে। আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির যুগে তাদের চিহ্নিত করা মোটেই অসম্ভব নয়। তাহলে মানুষ প্রতারিত হচ্ছে কেন? আমাদের দেশের বড় সমস্যা হলো ভূত তাড়ানোর সরষের মধ্যেই ভূত বাসা বাঁধে।

ভেতর থেকে সহযোগিতা বা পৃষ্ঠপোষকতা না পেলে বাইরের প্রতারকেরা থাবা বিস্তার করতে পারে না। প্রতারক চক্রের সঙ্গে প্রভাবশালী মহলের যোগসাজশ থাকার বিষয়টি উপেক্ষা করা যায় না। তাই বাইরের ভূত তাড়াতে ভেতরের ভূত দমনের কৌশলও রপ্ত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একযোগে কাজ করার বিষয়টি ভাবা যেতে পারে। অপরাধীদের শান্তি নিশ্চিত করতে পারলে দালালদের দৌরাত্ম্যও কমবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মাসুদ আহমেদের সব পদ স্থগিত

টিআইএন নেওয়ার পরে কিন্তু ঘুমাইতে পারবেন না: এনবিআর চেয়ারম্যান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত