Ajker Patrika

কারাগারে সখ্য, মিজানুরের সঙ্গে চলে এল কবুতর

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
আপডেট : ১৮ জুন ২০২২, ১৩: ২১
কারাগারে সখ্য, মিজানুরের সঙ্গে চলে এল কবুতর

প্রায়ই ভালোবাসার টানে শত শত মাইল পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আসেন অনেক তরুণ-তরুণী। তবে এবার ঘটেছে এক ব্যতিক্রমী ঘটনা। তরুণ-তরুণী নয়, ভালোবাসার টানে কয়েক দিন আগে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে চলে এসেছে এক জোড়া কবুতর। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বাকড়ি গ্রামের মিজানুর রহমানের সঙ্গে।

জানা যায়, হত্যা মামলায় রায় হওয়ার সময় আসামি মিজানুর রহমানের বয়স ছিল ২৫। এরপর দীর্ঘ ২২ বছর ১০ মাস পর গত ২ জুন তিনি মুক্তি পেয়েছেন। কারাজীবনে তিনি ঝিনাইদহ, যশোর ও ঢাকা কারাগারে ছিলেন। সর্বশেষ তিনি ছিলেন যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে। সেখানে থাকার সময় মিজানুরের সঙ্গী ছিল এক ঝাঁক কবুতর। এদের মধ্যে দুটির সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। মিজানুর তাদের নাম দেন রাজা আর যাদব। বাড়ি ফেরার সময় তাঁর সঙ্গে রাজা আর যাদবও চলে আসে।

মিজানুর জানান, জেলে নিজে কম খেয়ে কবুতরকে খাবার দিয়েছেন। তবে রাজা আর যাদব নামের কবুতরের প্রতি আলাদা মায়া ছিল। কবুতরগুলোও সারাক্ষণ আশপাশে ঘুরে বেড়াত। একপর্যায়ে কবুতর দুটি কাঁধে উঠতে শুরু করে। ২ জুন মুক্তির দিন ধার্য ছিল। তবে এর আগে থেকেই ওই দুই কবুতরের জন্য তাঁর চিন্তা শুরু হয়।

মিজানুর বলেন, ‘জেলে দুটি কবুতর কার কাছে রেখে যাব ভাবছিলাম। উপায় না পেয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলি। অবশেষে ২ জুন সন্ধ্যা ৬টায় কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় রাজা আর যাদব আমার সঙ্গে চলে আসে।’

মিজানুর জানান, ৭ জুন যাদব ঘরের ফ্যানের সঙ্গে আঘাত পায়। পরে সেটি মারা যায়। সঙ্গীর মৃত্যুতে রাজাও দুদিন কিছু খায় না।

মিজানুরের স্ত্রী ফাতেমা খাতুন জানান, বাড়িতে আরও কবুতর আছে। তবে নতুন কবুতর জোড়া মিজানুরের ঘরে থাকত। এর মধ্যে একটা মারা গেছে। আরেকটি তাঁরা আগলে রেখেছেন।

ঝিনাইদহ জেলখানার সুপার আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘সাজা শেষে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসার সময় মিজানুর কবুতর জোড়া বাড়িতে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। আইনগত বাধা না থাকায় তাঁকে কবুতর নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত