সুসংবাদ পেতে যাচ্ছেন ৪,৭৯৫ শিক্ষক-কর্মচারী

উবায়দুল্লাহ বাদল, ঢাকা
প্রকাশ : ১২ এপ্রিল ২০২৩, ১১: ১৬
আপডেট : ১২ এপ্রিল ২০২৩, ১৩: ১০

প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী জাতীয়করণ হওয়া ১০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের আত্তীকরণ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হতে যাচ্ছে। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ওই সব প্রতিষ্ঠানের জন্য ৪ হাজার ৭৯৫টিসহ মোট ৯ হাজার ৩০২টি পদ সৃষ্টি করতে যাচ্ছে সরকার।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেনের সভাপতিত্বে আজ বুধবার দুপুরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলনকক্ষে প্রশাসনিক উন্নয়ন-সংক্রান্ত সচিব কমিটির বৈঠক হওয়ার কথা। সেখানে অনুমোদনের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, জননিরাপত্তা বিভাগসহ সরকারের অন্তত ৮টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের এ বিষয়ে ১৩টি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হতে পারে।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, প্রস্তাবের মধ্যে আছে রাজধানীর মেট্রোরেলের নিরাপত্তার জন্য পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট গঠন, সরকারি কর্মচারী হাসপাতালের জন্য ১ হাজার ৭৬২টি, সমাজসেবা অধিদপ্তরের রাজস্ব খাতের ২৫৭টি, আবহাওয়া অধিদপ্তরের ১৯২টিসহ মোট ৯ হাজার ৩০২টি পদ সৃষ্টি। তবে এসব বিষয়ে দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তা নাম প্রকাশ করে কিছু বলতে রাজি হননি।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী দেশের ৩০২টি বেসরকারি কলেজকে ২০১৬ সালের ১৭ জুন সরকারীকরণ করা হয়। একই বছরের ৩০ জুন এসব কলেজের নিয়োগ ও অর্থ ব্যয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে সব কলেজের শিক্ষক-কর্মচারী ও প্রতিষ্ঠানের মূল কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শুরু হয়। যাচাই-বাছাই শেষে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও অর্থ বিভাগের সম্মতি নেওয়াসহ সব ধরনের প্রক্রিয়া শেষে প্রথম দফায় ১০০টি কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের আত্তীকরণ প্রস্তাবের সার-সংক্ষেপ প্রস্তুত করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। এসব কলেজ সরকারীকরণের আগে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীদের আত্তীকরণের জন্য ৪ হাজার ৭৯৫টি পদ সৃষ্টির প্রস্তাব রয়েছে তাতে।

সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন আত্তীকরণ হওয়া কলেজশিক্ষকদের সংগঠন বাংলাদেশ সরকারি কলেজশিক্ষক ফোরামের (বাসকশিফো) সভাপতি আবুল কালাম আজাদ। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সচিব কমিটি অনুমোদনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের এত দিনের ভোগান্তি দূর হবে বলে আমার বিশ্বাস। বাকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষক-কর্মচারীদের দ্রুত আত্তীকরণের ব্যবস্থা নিতেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ রইল।’

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, রাজধানীর মেট্রোরেলের নিরাপত্তায় ৩৫৭ সদস্যের ম্যাস র‍্যাপিড ট্রানজিট বা এমআরটি পুলিশ ইউনিট গঠনের প্রস্তাব আছে জননিরাপত্তা বিভাগের। প্রস্তাব অনুযায়ী, এমআরটি পুলিশের প্রধান হবেন একজন উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি)। তাঁর অধীনে একজন অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক, একজন পুলিশ সুপার, একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সাতজন পরিদর্শক (নিরস্ত্র), একজন পরিদর্শক (সশস্ত্র), ছয়জন এসআই, ৫১ জন এএসআই, ১০ জন নায়েক, ২৭০ জন কনস্টেবল, একজন হিসাবরক্ষক, একজন উপসহকারী হিসাবরক্ষক, একজন কম্পিউটার অপারেটরসহ মোট ৩৫৭ জনের একটি সাংগঠনিক কাঠামো থাকবে। এই জনবল পুলিশ বাহিনী থেকেই নিয়োগ করা হবে। ইউনিটের সদস্যদের জন্য থাকবে আলাদা ইউনিফর্ম।

জানা যায়, ১৪টি সরকারি মেডিকেল কলেজের এন্ডোক্রাইনোলজি ও মেটাবলিজম বিভাগের জন্য রাজস্ব খাতে স্থায়ী ১৭টি পদ এবং ২৬টি সরকারি মেডিকেল কলেজের নিউরোলজি বিভাগের জন্য রাজস্ব খাতের ১২২টি ক্যাডার পদ সৃজনের প্রস্তাব উঠতে পারে সচিব কমিটিতে। পাশাপাশি সমাজসেবা অধিদপ্তরের জন্য রাজস্ব খাতের অস্থায়ী ২০২টি পদ এবং সহকারী সমাজসেবা অফিসারের ৫৫টি পদ সৃজনের প্রস্তাব তোলা হতে পারে। এ ছাড়া বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নিম্ন সংগঠনের গেজেটেড বেসামরিক কর্মচারী নিয়োগ বিধিমালা, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক কর্মচারী প্রবিধানমালা এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি (কর্মচারী) চাকরি প্রবিধানমালা অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করার কথা। পাশাপাশি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সরকারি প্রতিষ্ঠানের ইন্টার্নশিপ (ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ) নীতিমালা এবং সচিবালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার নিয়োগ বিধিমালাও অনুমোদনের জন্য সচিব কমিটিতে উপস্থাপন করা হবে।

আরও খবর পড়ুন:

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত