Ajker Patrika

ঈদ ঘিরে স্বপ্ন তাঁতিদের

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ মার্চ ২০২২, ১৩: ৫৭
ঈদ ঘিরে স্বপ্ন তাঁতিদের

করোনাভাইরাসের ধাক্কা সামলে নতুন করে ঘুরে দাঁড়াতে হিমশিম খাচ্ছেন টাঙ্গাইলের তাঁতিরা। গত দুই বছর বিক্রি না হওয়ায় অনেকেই এ পেশা ছেড়েছেন। আর এখনো যাঁরা আছেন, তাঁদের মধ্যে হাতে গোনা দু-চারজন ছাড়া বাকিরা খুঁড়িয়ে চলছেন। এবারের ঈদে ভালো বেচাকেনা না হলে ব্যবসা বন্ধ করতে বাধ্য হতে হবে বলে বলছেন অনেকে।

তাঁত উদ্যোক্তারা বলছেন, সরকারের সহযোগিতা ছাড়া এ শিল্প আর খুব বেশি দিন টিকে থাকা সম্ভব নয়। তবে ঈদকে ঘিরে নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন তাঁতিরা।

সরেজমিন দেখা গেছে, পানু, জয়দেব, সুমন, সাইফুল, লাল মিয়া শাড়ি বুনছেন দেলদুয়ার উপজেলা পাথরাইল গ্রামে। তাঁতপল্লির বেশ কিছু তাঁতঘর ঘুরে তাঁদের মতো আরও কিছু তাঁতশিল্পীকে শাড়ি বুনতে দেখা গেল। তবে তাঁদের চোখেমুখে আতঙ্কের ছাপ।

তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এসব তাঁতির এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে করোনায় দেওয়া লকডাউনের সময় থেকে। ওই সময়ে তাঁতপল্লির অর্ধেক তাঁত বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক তাঁতি পুঁজি হারিয়ে চলে গেছেন অন্য পেশায়। আর যাঁরা তাঁতশিল্পটাকে ধরে রেখেছেন, তাঁরাও ঋণের ভারে নুয়ে পড়েছেন। লকডাউনের প্রথম ধাক্কা সামলে তাঁত শ্রমিক-মালিকসহ এ পেশার সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাই ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছেন। এর মধ্যে ওমিক্রনের হোঁচট আরেকবার পিছিয়ে দিয়েছে।

ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র তাঁতপল্লিতে এখন খটখট শব্দে মুখরিত থাকার কথা। অথচ তাঁতপল্লির অনেক এলাকাই এখন নীরব। এভাবে চলতে থাকলে ঈদের শাড়ি উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে বড় ব্যবসা থেকে বঞ্চিত হবেন তাঁতিরা। তাঁতশিল্পী, শাড়ি ব্যবসায়ীসহ শাড়ি বানানোর কাজে সম্পৃক্ত সবাই বেকার হয়ে পড়বেন।

করটিয়া হাটের পাইকারি শাড়ি বিক্রেতা নিতাই বসাক, মনোরঞ্জন বসাক, উজ্জ্বল বসাক, খুশি বসাক, ইমান আলীসহ অনেকে জানান, করটিয়াতে রয়েছে দেশের অন্যতম টাঙ্গাইল শাড়ির পাইকারি হাট। মঙ্গল ও বুধবার এ হাটে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকারেরা শাড়ি কিনতে আসেন। এখন সবকিছু স্বাভাবিক হলেও হাটে ক্রেতা আসছে না।

জেলার বেশ কয়েকটি উপজেলায় তাঁত থাকলেও দেলদুয়ার উপজেলার চণ্ডী-পাথরাইলসহ পাশের এলাকা অধিক সমৃদ্ধ। এ অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষের প্রধান পেশা শাড়ি বানানো। এ ছাড়া সুতা গোছানো, বুটিকাট ও শাড়ি বিক্রিসহ নানা কাজে পরিবারের নারী-শিশুরাও সম্পৃক্ত তাঁতশিল্পের সঙ্গে। জেলায় মোট ৪ হাজার ৩৯১ জন ফ্যাক্টরি মালিকের ৩০ হাজারের ওপরে তাঁত কারখানা রয়েছে। এ পেশায় ১ লাখ ৩ হাজারেরও বেশি তাঁতশ্রমিক সম্পৃক্ত বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে তাঁতপল্লির শাড়ি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রঘুনাথ বসাক বলেন, করোনার প্রথম ঢেউয়ের পর দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা কাপড় কিনতে আসা শুরু করেছিলেন। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে আবার তা থেমে যায়। এখন পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও বিভিন্ন এলাকার পাইকারেরা আসছেন না। আর ক্রেতা না আসায় উৎপাদিত শাড়ি ঘরেই পড়ে থাকছে।

এদিকে শাড়ি বিক্রি না হওয়ায় উৎপাদনও কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া করোনায় শ্রমিকেরা অন্য পেশায় চলে যাওয়ায় এখন সফট সিল্কের আধুনিক কাপড় বানাতে পারছেন না বলেও জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মিডিয়া ছুটায় দেব, চেনো আমাদের’—সাংবাদিককে হুমকি কুড়িগ্রামের এসপির

বান্দরবান, মণিপুর, মিজোরাম ও রাখাইন নিয়ে খ্রিষ্টান রাষ্ট্র করার ষড়যন্ত্র চলছে: বজলুর রশীদ

ইসলামপুর বিএনপির সহসভাপতি যোগ দিলেন জামায়াতে

যশোরে সেপটিক ট্যাংকে গৃহবধূর মরদেহ: ভিসেরা প্রতিবেদনে ধর্ষণের পর হত্যার আলামত

জুলাই ফাউন্ডেশনে অর্থ কেলেঙ্কারির অভিযোগে নাগরিক কমিটির পিংকি কারাগারে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত