অজয় দাশগুপ্ত
বাংলাদেশ, বাংলা ভাষা আর তার বাঙালি সংস্কৃতির জীবন নিয়ে বাঁচা যেকোনো প্রবাসীই দেশের সম্পদ। আমাদের অর্জিত সম্পদ বা টাকাপয়সার পাশাপাশি মেধাবিনিময় গুরুত্ব পাওয়া উচিত ছিল। সেটা হয় না। কারণ মেধাভিত্তিক সমাজ গড়ে ওঠেনি। সে সমাজ এখন দুরাশা মাত্র। যদি সেটা সম্ভব না হয়, তবে সুরাহা হবে কীভাবে?
অথচ আমরা জানি, বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি রেমিট্যান্স। অধিক বেতন, উন্নত কর্মপরিবেশ ও উন্নত জীবনযাপনের আশায় মানুষ নিজ দেশ ছেড়ে বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমায়। এসব প্রবাসীর পাঠানো রেমিট্যান্স আমাদের দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করছে।
রেমিট্যান্স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দেশের মাথাপিছু আয় এবং মোট জিডিপিও বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। প্রবাসী আয়ের অর্থ দেশের দারিদ্র্য বিমোচন, খাদ্যনিরাপত্তা, শিশুর পুষ্টি ও শিক্ষার ক্ষেত্রেও অবদান রাখছে।
একটি বিস্মৃত কাঠামোতে বিদেশে বাংলাদেশের শ্রমশক্তির অভিবাসনের বিভিন্ন দিককে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। তবে সময়ের পালাবদলের হাত ধরে বাংলাদেশ থেকে অভিবাসনের একটি গঠনমূলক পরিবর্তন ঘটছে বলে মনে হয়। অর্থনৈতিক উন্নয়নে রেমিট্যান্সের অবদান মোট জিডিপির ১২ শতাংশের মতো। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হয়েছে।
প্রবাসী এসব শ্রমিক যে পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে পাঠাচ্ছেন, তা দেশের মোট রপ্তানি আয়ের অর্ধেক। গত ৪০ বছরে প্রায় ১ কোটি ২৫ লাখ প্রবাসী বিদেশে গমন করেছেন এবং তা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিজেদের কষ্টার্জিত উপার্জনের অর্থ নিয়মিত পাঠিয়ে তাঁরা এ দেশকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষেভাবে গড়ে তোলার ভূমিকা পালন করছেন। বর্তমানে আমাদের মোট অভিবাসনের একটি বড় অংশজুড়ে আছে শ্রমিকদের অস্থায়ী দেশান্তর। এর সত্যতা স্বীকারে অকুণ্ঠ বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।
গত ১৬ জানুয়ারি দুপুরে গণভবনে প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতা, সংগ্রামে বিশ্ব জনমত সৃষ্টিতে প্রবাসীরা বিরাট অবদান রাখছেন। প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসীদের বিরাট অবদান রয়েছে। সেটা ছাড়াও স্বাধীন বাংলাদেশে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি।’
‘প্রবাসীরা আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে, যেকোনো আন্দোলনে অবদান রেখেছেন। যখন বাংলাদেশে মার্শাল ল জারি হয়, আমরা যখন কাজ করতে পারি না, তখন প্রবাসীরা প্রতিবাদ জানান। আপনারা আন্দোলন সংগ্রাম করেন। জনমত সৃষ্টি করেন। এটা আমাদের জন্য বিরাট শক্তি।’
তিনি যা বোঝেন বা অনুধাবন করেন তা খুলে বলেন। এটাই তাঁর কৃতিত্ব। অন্যদিকে আমরা যারা বাইরের দেশে বসবাসরত বাংলাদেশি কেউ কেউ দ্বৈত নাগরিকত্ব নিয়ে অন্য দেশের নাগরিক, তাদের কষ্ট বোঝেন না মাননীয়রা। দুঃখ বা বেদনাগুলো দেশভেদে ভিন্ন ভিন্ন।
আমেরিকা, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডার বাঙালিদের কষ্ট এবং মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমজীবী বাঙালির কষ্ট এক নয়। এখানে একটা বড় তফাত হলো পারমানেন্ট রেসিডেন্সি বা নাগরিকত্ব। যাঁরা বিদেশে থাকতে পারবেন না বা সব সময়ের জন্য বিদেশে বসবাস করতে পারবেন না, তাঁদের সমস্যা মৌলিক। তাঁরা দেশে টাকা পাঠান নিজেদের পরিবার-পরিজন নিয়ে ভালোভাবে বাঁচার জন্য। এখানে সবচেয়ে বড় বাধা মধ্যস্বত্বভোগী ও দালালেরা। রেমিট্যান্স পাঠানোর কাজটিতে কী কী বাধা বা কোথায় এর অন্তরায় লুকিয়ে, সবাই জানেন। প্রশ্ন হচ্ছে, এর দায় কাদের বা সমাধান করবে কে?
সবচেয়ে বড় সমস্যা, আমাদের সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হয় না। সাধারণ প্রবাসীদের বেলায় পদ, পদবি পুরস্কার কিংবা অর্জনের স্বীকৃতি দিতে কুণ্ঠিত আমাদের দেশের বড় মানুষেরা। এই কুণ্ঠার কারণ আমরা জানি। কারণ তাঁদের বেশির ভাগই দেখতে বড় হলেও, মূলত তাঁরা বড় কেউ নন। নানা গোঁজামিলে তাঁদের বড় করে তোলা এবং তাঁদের হাতে ক্ষমতা থাকায় দেশের আজ এই অবস্থা। এয়ারপোর্ট থেকে বাড়ি ফেরা পর্যন্ত সব জায়গায় যে ভোগান্তির স্বীকার হতে হয়, এর হিসাব রাখে না কেউ। রাখলে সমস্যার গভীরে যাওয়ার ইচ্ছা থাকত।
তবে আওয়ামী লীগের আমলে একবারের জন্যও তা দেখিনি। তাদের আমলে প্রবাসে দল করা, দলের শাখা খোলা মানুষজন প্লট পাওয়াসহ নানা সুবিধা পেলেও সাধারণ প্রবাসীদের মেধা ও মননের কোনো স্বীকৃতি নেই। হ্যাঁ, ঢালাওভাবে বলছি না। বলছি এই কারণে, যাঁদের অর্জন সবকিছু ছাপিয়ে বড় হয়ে ওঠে, কিছুতেই ঠেকানো যায় না, কেবল তখনই তাঁদের স্বীকৃতি মেলে।
মোদ্দাকথা, আমাদের দেশের অন্য যেকোনো খাতের মতো প্রবাসীকল্যাণ খাতও প্রশ্নমুক্ত নয়। তাদের সদিচ্ছা থাকলেও উদ্যোগ দেখা যায় না। কিছু গৎবাঁধা পরিসংখ্যান বা তালিকা দিয়ে আসলে কিছুই প্রমাণ হয় না। আমরা এয়ারপোর্টে গিয়ে যেসব অনভিপ্রেত প্রশ্নের সম্মুখীন হই বা যেকোনো কাজে যেসব বিপত্তির মুখোমুখি হই, তার উত্তর বা সমাধান জানা দরকার। যেমন ধরুন আপনি কেন দেশে এসেছেন? এই প্রশ্ন দিয়ে শুরুটা যেকোনো নাগরিক বা বাংলাদেশির জন্য অমর্যাদাকর। এর সঙ্গে আছে সন্দেহ আর সংশয়। একবার ভাবুন, যে মানুষটি দেন এবং দিতে এসেছেন, তাঁকেই নাজেহাল করছেন গ্রহীতারা।
আমি ভাবি নতুন প্রজন্মকে নিয়ে। তারা জ্ঞান-বিজ্ঞান ও অভিজ্ঞতায় আমাদের চেয়ে এগিয়ে। তারা যখন দেখে বা দেখবে একজন ভারতীয়, শ্রীলঙ্কান বা নেপালি প্রবাসী ভিআইপি মর্যাদা পান, তাঁদের দেশে তাঁরা গর্ব নিয়ে অবাধে চলাফেরা করতে পারেন। কিন্তু আমরা সেই সম্মানটুকুও পাই না। সাধারণ মানুষেরা প্রবাসীদের বরণ করতে এবং তাঁদের ভালোবাসা দিতে কার্পণ্য করেন না। যত দোষ ওই নন্দ ঘোষ সিস্টেমে। এ ব্যাপারে আমাদের দূতাবাসগুলোর ভূমিকা থাকার কথা থাকলেও তার কোনো নজির দেখা যায় না। যদি তা থাকেও তা ছিটেফোঁটা।
সব মিলিয়ে শেখ হাসিনার যে বক্তব্য, তাঁর যে সদিচ্ছা বা মূল্যায়ন, তার বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি। মনে রাখতে হবে, দেশের বাইরে প্রায় দুই কোটি বাংলাদেশির বসবাস। তাঁরা সচ্ছল। তাঁদের কর্ম, মেধা ও অর্থের সঠিক মূল্যায়ন না হলে সমস্যার সমাধান হবে না।
যেকোনো একাডেমি থেকে যেকোনো দপ্তরের কর্তা-কর্ত্রীদের কাছে এই বার্তা পৌঁছাতে হবে যে প্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাদের শক্তির জায়গা। সেই শক্তির সঠিক ব্যবহারেই ভবিষ্যৎ আরও নিরাপদ আর সুন্দর হয়ে উঠতে পারে।
লেখক: অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী কলামিস্ট
বাংলাদেশ, বাংলা ভাষা আর তার বাঙালি সংস্কৃতির জীবন নিয়ে বাঁচা যেকোনো প্রবাসীই দেশের সম্পদ। আমাদের অর্জিত সম্পদ বা টাকাপয়সার পাশাপাশি মেধাবিনিময় গুরুত্ব পাওয়া উচিত ছিল। সেটা হয় না। কারণ মেধাভিত্তিক সমাজ গড়ে ওঠেনি। সে সমাজ এখন দুরাশা মাত্র। যদি সেটা সম্ভব না হয়, তবে সুরাহা হবে কীভাবে?
অথচ আমরা জানি, বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি রেমিট্যান্স। অধিক বেতন, উন্নত কর্মপরিবেশ ও উন্নত জীবনযাপনের আশায় মানুষ নিজ দেশ ছেড়ে বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমায়। এসব প্রবাসীর পাঠানো রেমিট্যান্স আমাদের দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করছে।
রেমিট্যান্স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দেশের মাথাপিছু আয় এবং মোট জিডিপিও বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। প্রবাসী আয়ের অর্থ দেশের দারিদ্র্য বিমোচন, খাদ্যনিরাপত্তা, শিশুর পুষ্টি ও শিক্ষার ক্ষেত্রেও অবদান রাখছে।
একটি বিস্মৃত কাঠামোতে বিদেশে বাংলাদেশের শ্রমশক্তির অভিবাসনের বিভিন্ন দিককে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। তবে সময়ের পালাবদলের হাত ধরে বাংলাদেশ থেকে অভিবাসনের একটি গঠনমূলক পরিবর্তন ঘটছে বলে মনে হয়। অর্থনৈতিক উন্নয়নে রেমিট্যান্সের অবদান মোট জিডিপির ১২ শতাংশের মতো। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হয়েছে।
প্রবাসী এসব শ্রমিক যে পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে পাঠাচ্ছেন, তা দেশের মোট রপ্তানি আয়ের অর্ধেক। গত ৪০ বছরে প্রায় ১ কোটি ২৫ লাখ প্রবাসী বিদেশে গমন করেছেন এবং তা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিজেদের কষ্টার্জিত উপার্জনের অর্থ নিয়মিত পাঠিয়ে তাঁরা এ দেশকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষেভাবে গড়ে তোলার ভূমিকা পালন করছেন। বর্তমানে আমাদের মোট অভিবাসনের একটি বড় অংশজুড়ে আছে শ্রমিকদের অস্থায়ী দেশান্তর। এর সত্যতা স্বীকারে অকুণ্ঠ বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।
গত ১৬ জানুয়ারি দুপুরে গণভবনে প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতা, সংগ্রামে বিশ্ব জনমত সৃষ্টিতে প্রবাসীরা বিরাট অবদান রাখছেন। প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসীদের বিরাট অবদান রয়েছে। সেটা ছাড়াও স্বাধীন বাংলাদেশে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি।’
‘প্রবাসীরা আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে, যেকোনো আন্দোলনে অবদান রেখেছেন। যখন বাংলাদেশে মার্শাল ল জারি হয়, আমরা যখন কাজ করতে পারি না, তখন প্রবাসীরা প্রতিবাদ জানান। আপনারা আন্দোলন সংগ্রাম করেন। জনমত সৃষ্টি করেন। এটা আমাদের জন্য বিরাট শক্তি।’
তিনি যা বোঝেন বা অনুধাবন করেন তা খুলে বলেন। এটাই তাঁর কৃতিত্ব। অন্যদিকে আমরা যারা বাইরের দেশে বসবাসরত বাংলাদেশি কেউ কেউ দ্বৈত নাগরিকত্ব নিয়ে অন্য দেশের নাগরিক, তাদের কষ্ট বোঝেন না মাননীয়রা। দুঃখ বা বেদনাগুলো দেশভেদে ভিন্ন ভিন্ন।
আমেরিকা, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডার বাঙালিদের কষ্ট এবং মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমজীবী বাঙালির কষ্ট এক নয়। এখানে একটা বড় তফাত হলো পারমানেন্ট রেসিডেন্সি বা নাগরিকত্ব। যাঁরা বিদেশে থাকতে পারবেন না বা সব সময়ের জন্য বিদেশে বসবাস করতে পারবেন না, তাঁদের সমস্যা মৌলিক। তাঁরা দেশে টাকা পাঠান নিজেদের পরিবার-পরিজন নিয়ে ভালোভাবে বাঁচার জন্য। এখানে সবচেয়ে বড় বাধা মধ্যস্বত্বভোগী ও দালালেরা। রেমিট্যান্স পাঠানোর কাজটিতে কী কী বাধা বা কোথায় এর অন্তরায় লুকিয়ে, সবাই জানেন। প্রশ্ন হচ্ছে, এর দায় কাদের বা সমাধান করবে কে?
সবচেয়ে বড় সমস্যা, আমাদের সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হয় না। সাধারণ প্রবাসীদের বেলায় পদ, পদবি পুরস্কার কিংবা অর্জনের স্বীকৃতি দিতে কুণ্ঠিত আমাদের দেশের বড় মানুষেরা। এই কুণ্ঠার কারণ আমরা জানি। কারণ তাঁদের বেশির ভাগই দেখতে বড় হলেও, মূলত তাঁরা বড় কেউ নন। নানা গোঁজামিলে তাঁদের বড় করে তোলা এবং তাঁদের হাতে ক্ষমতা থাকায় দেশের আজ এই অবস্থা। এয়ারপোর্ট থেকে বাড়ি ফেরা পর্যন্ত সব জায়গায় যে ভোগান্তির স্বীকার হতে হয়, এর হিসাব রাখে না কেউ। রাখলে সমস্যার গভীরে যাওয়ার ইচ্ছা থাকত।
তবে আওয়ামী লীগের আমলে একবারের জন্যও তা দেখিনি। তাদের আমলে প্রবাসে দল করা, দলের শাখা খোলা মানুষজন প্লট পাওয়াসহ নানা সুবিধা পেলেও সাধারণ প্রবাসীদের মেধা ও মননের কোনো স্বীকৃতি নেই। হ্যাঁ, ঢালাওভাবে বলছি না। বলছি এই কারণে, যাঁদের অর্জন সবকিছু ছাপিয়ে বড় হয়ে ওঠে, কিছুতেই ঠেকানো যায় না, কেবল তখনই তাঁদের স্বীকৃতি মেলে।
মোদ্দাকথা, আমাদের দেশের অন্য যেকোনো খাতের মতো প্রবাসীকল্যাণ খাতও প্রশ্নমুক্ত নয়। তাদের সদিচ্ছা থাকলেও উদ্যোগ দেখা যায় না। কিছু গৎবাঁধা পরিসংখ্যান বা তালিকা দিয়ে আসলে কিছুই প্রমাণ হয় না। আমরা এয়ারপোর্টে গিয়ে যেসব অনভিপ্রেত প্রশ্নের সম্মুখীন হই বা যেকোনো কাজে যেসব বিপত্তির মুখোমুখি হই, তার উত্তর বা সমাধান জানা দরকার। যেমন ধরুন আপনি কেন দেশে এসেছেন? এই প্রশ্ন দিয়ে শুরুটা যেকোনো নাগরিক বা বাংলাদেশির জন্য অমর্যাদাকর। এর সঙ্গে আছে সন্দেহ আর সংশয়। একবার ভাবুন, যে মানুষটি দেন এবং দিতে এসেছেন, তাঁকেই নাজেহাল করছেন গ্রহীতারা।
আমি ভাবি নতুন প্রজন্মকে নিয়ে। তারা জ্ঞান-বিজ্ঞান ও অভিজ্ঞতায় আমাদের চেয়ে এগিয়ে। তারা যখন দেখে বা দেখবে একজন ভারতীয়, শ্রীলঙ্কান বা নেপালি প্রবাসী ভিআইপি মর্যাদা পান, তাঁদের দেশে তাঁরা গর্ব নিয়ে অবাধে চলাফেরা করতে পারেন। কিন্তু আমরা সেই সম্মানটুকুও পাই না। সাধারণ মানুষেরা প্রবাসীদের বরণ করতে এবং তাঁদের ভালোবাসা দিতে কার্পণ্য করেন না। যত দোষ ওই নন্দ ঘোষ সিস্টেমে। এ ব্যাপারে আমাদের দূতাবাসগুলোর ভূমিকা থাকার কথা থাকলেও তার কোনো নজির দেখা যায় না। যদি তা থাকেও তা ছিটেফোঁটা।
সব মিলিয়ে শেখ হাসিনার যে বক্তব্য, তাঁর যে সদিচ্ছা বা মূল্যায়ন, তার বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি। মনে রাখতে হবে, দেশের বাইরে প্রায় দুই কোটি বাংলাদেশির বসবাস। তাঁরা সচ্ছল। তাঁদের কর্ম, মেধা ও অর্থের সঠিক মূল্যায়ন না হলে সমস্যার সমাধান হবে না।
যেকোনো একাডেমি থেকে যেকোনো দপ্তরের কর্তা-কর্ত্রীদের কাছে এই বার্তা পৌঁছাতে হবে যে প্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাদের শক্তির জায়গা। সেই শক্তির সঠিক ব্যবহারেই ভবিষ্যৎ আরও নিরাপদ আর সুন্দর হয়ে উঠতে পারে।
লেখক: অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী কলামিস্ট
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
২ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
২ দিন আগে