বিজ্ঞাপনে প্রতারণা

সম্পাদকীয়
প্রকাশ : ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৭: ৩২

দেশে যথেষ্ট পরিমাণ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নেই বলে বেকার তরুণ-তরুণীরা চাকরি পাওয়ার আশা নিয়ে যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের দ্বারস্থ হন। সাধারণত সহজ-সরল মানুষদের প্রতারকেরা প্রধান টার্গেট করে থাকে। এবার ফেসবুকে চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে একটি প্রতারক চক্র বেকার কয়েকজনের কাছ থেকে অনেক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে রাজধানীর ডেমরা এলাকায়। ফেসবুকে ‘ড্রিম লাইফ লজিস্টিক সার্ভিস কোম্পানি লিমিটেড’-এর নামে চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়ে মানুষকে আকৃষ্ট করে প্রায় দুই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি। ফাঁদে পড়া এক তরুণী এই প্রতারক চক্রের সাতজনের বিরুদ্ধে ডেমরা থানায় মামলা করেছেন। এরপর অভিযান চালিয়ে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে ডেমরা থানার পুলিশ। এ নিয়ে আজকের পত্রিকায় বুধবার একটি সংবাদ ছাপা হয়েছে।

চাকরি পেতে আগ্রহী মানুষের প্রতারিত হওয়ার ঘটনা আগের চেয়ে কমেছে, সে কথা বলা যাবে না; বরং আমরা দেখতে পাচ্ছি ক্ষেত্রবিশেষে প্রতারণা আরও বেড়েছে। প্রতারণা নানা কৌশলে হচ্ছে, তবে ব্যক্তির সচেতনতার অভাবও অনেক ক্ষেত্রে দায়ী। মূলত প্রতারকেরা লোভনীয় প্রস্তাব দিয়ে টার্গেট ব্যক্তিদের তাদের ফাঁদে ফেলে। এরপর টাকা নিয়ে গা ঢাকা দেয়। মানুষ লোভ সামলাতে পারলে প্রতারণা কমে যাবে। লোভ যে মানুষের সর্বনাশ করে, তা এ ধরনের ঘটনাগুলোই প্রমাণ করে। চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তি একটু চেষ্টা করলেই জানতে পারে, কোম্পানিটি বৈধ নাকি অবৈধ। আর যেকোনো কোম্পানি সম্পর্কে তথ্য হাসিল করা ডিজিটাল এই যুগে কোনো কঠিন কাজ নয়।

প্রায়ই সংবাদমাধ্যমে এ ধরনের প্রতারক চক্রের খবর চোখে পড়ে। এখন এই প্রতারণা বন্ধ করতে হলে প্রথম করণীয় হলো, প্রতারক চক্র ও তাদের নেপথ্যের কুশীলবদের খুঁজে বের করা। দেশে প্রতারণা বন্ধের আইন আছে, আইন প্রয়োগের জন্য বিভিন্ন বাহিনী ও সংস্থা আছে। তারপরও কীভাবে প্রতারক চক্র দেশময় তাদের জাল বিছিয়ে রাখতে পারছে? আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির যুগে তাদের চিহ্নিত করা মোটেই অসম্ভব ব্যাপার নয় বলেই আমাদের বিশ্বাস। এ ক্ষেত্রে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে একযোগে কাজ করতে হবে। কোথায়, কীভাবে মানুষ প্রতারণার শিকার হচ্ছে, তা খুঁজে বের করতে হবে তাদের।

যেকোনো ডিজিটাল প্রতারণা ও অনিয়মের ঘটনা সবার আগে নজরে আসে পুলিশের। তাদের দায়িত্ব পালনে ঘাটতি তো আছেই। আবার সাধারণ মানুষের লোভের কথাও এড়ানো যাবে না। অর্থের প্রতি মানুষের লোভ একটা সহজাত ব্যাপার। এই লোভে পড়ে মানুষ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেটি দেখার দায়িত্ব সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের। তাদের এ দায় নিতে হবে। 

এই প্রতারণার প্রবণতা কঠোর হাতে বন্ধ করতে হবে। দ্রুততম সময়ে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে পারলে এদের দৌরাত্ম্য কমবে বলে আশা করি। তবে এই প্রতারণার দায়ভার শুধু এককভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাঁধে দেওয়ার সুযোগ নেই। ব্যক্তির সচেতনতার ব্যাপারটিও এ ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত