Ajker Patrika

ডাকাত আতঙ্কে মাছ ধরা বন্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
Thumbnail image

বরিশাল বিভাগে গত ৭ বছরে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও ডাকাতের হামলায় সমুদ্রগামী ২৬০ জন জেলে নিহত হয়েছেন। সর্বশেষ গত ১৮ ফেব্রুয়ারি রাতে বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ-পূর্বে ডাকাতের কবলে পড়েন ১৮ জেলে। তাঁদের ১৪ জনকে উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়। নিখোঁজ রয়েছেন আরও ৫ জন। জেলেদের আশঙ্কা, ডাকাতির ওই ঘটনা পরিকল্পিত। আবার ডাকাতের কবলে পড়ার ভয়ে বরগুনার তালতলী, পাথরঘাটা, পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী, মহিপুর, ভোলার চরফ্যাশন, তজুমদ্দিন, মনপুরার হাজারো জেলে ইলিশ শিকারে সাগরে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন।

বিভাগীয় মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, সমুদ্রগামী জেলেদের মধ্যে বরিশালে ১ হাজার ৮২১ জন, ঝালকাঠীতে ২৪০, পিরোজপুরে ৫ হাজার ৩৯৩, পটুয়াখালীতে ৪৮ হাজার ৩৯৮, ভোলায় ৬৩ হাজার ৯৬৫ এবং বরগুনায় ২৭ হাজার ২৭৭ জেলে রয়েছেন। ২০১৬ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত নানা দুর্যোগে ও ডাকাতের হামলার শিকার হয়ে বিভাগের ৬ জেলায় মোট ২৫৯ জন জেলে নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে গত বছর নিহত হন ১৮ জন। সর্বশেষ মৃত্যু হলো আরেক জেলের। ডাকাতেরা নির্যাতন করে ৯ জেলেকে সাগরে ফেলে দিয়েছিলেন। পরে তাঁদের মধ্যে চারজনকে উদ্ধার করা হয়। তাঁরা একটি বয়ায় ধরে ভেসে ছিলেন। তবে উপকূলের জেলেদের দাবি, নিহত জেলের সংখ্যা অনেক বেশি হবে।

ডাকাতের কবলে পড়া সাগর উপকূল বরগুনার তালতলীর ভাই ভাই বোটের জেলে কাইউম জোমাদ্দার (৩৫) এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। তাঁর বাড়ি তালতলীর ৬ নম্বর নিশান বাড়িয়া চামপাড়া গ্রামে। নিখোঁজ কাইউমের ভাই সাইফুল ইসলাম গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে আজকের পত্রিকাকে বলেন, তাঁর অন্য ভাইয়েরা কাইউমকে খুঁজতে সাগরে গেছেন। ইয়াছিন নামের এক ভাই হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তাঁর সঙ্গে কথা বললে হাউমাউ করে কেঁদে ফেলেন। কাইউমের পরিবারে স্ত্রী, ১ মেয়ে ও ২ ছেলে এবং মা-বাবা আছেন।

তালতলীর আগাপাড়া জেলেপাড়ার জেলে মো. নান্নু হাওলাদার বলেন, গত সপ্তাহে যে ডাকাতি হয়েছে সেখানে ডাকাত দল অনেক সময় নিয়ে জেলেদের ধাওয়া করে ধরে নির্যাতন করেছে। ডাকাত হানার পর জেলেরা এখন ইলিশ ধরতে সাগরে যেতে ভয় পাচ্ছেন। আগাপাড়া গ্রামের ২০০ জেলে তীরে চলে এসেছেন।

তালতলী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাহবুবুল আলম বলেন, ডাকাতির ঘটনায় গতকাল বিকেল পর্যন্ত পাঁচজনের সন্ধান পাওয়া যায়নি। নিখোঁজদের মধ্যে তালতলীর একজন এবং বরগুনা সদরের চারজন রয়েছেন।

মৎস্য কর্মকর্তা মাহবুবুল বলেন, ফিরে আসা জেলেদের ভাষ্যমতে, দুই দিন ধরে ডাকাত তাড়া করেছিল। ডাকাতেরা উত্তেজিত হয়ে বেশি নির্যাতন করেছে। প্যান্ট-শার্ট পরা স্মার্ট ডাকাত।


বরগুনা জেলা মৎস্য ট্রলার শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দুলাল মিয়া বলেন, পায়রাবন্দরের বাইরের শেষ বয়া বঙ্গোপসাগরের ৩০-৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বদিকে ওই ডাকাতি হয়। নিঁখোজ পাঁচজনের খোঁজে বোটের মালিকপক্ষ থেকে ১৮ জন গত বুধবার সাগরে গেছেন। ঝুঁকি এড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে হেলিকপ্টার দেওয়ার দাবি দিয়েছেন তাঁরা। তাহলে ৯৫ ভাগ জেলে ঝড় এবং ডাকাতের কবল থেকে রক্ষা পাবেন। কলাপাড়ার মহিপুর মাঝি সমিতির সাধারণ সম্পাদক নুরু মাঝিও মনে করেন তাঁর এলাকার জেলেরা এভাবে প্রতিবছর ইলিশ শিকারে গিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

এ ব্যাপারে বরিশাল বিভাগীয় মৎস্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক আনিছুর রহমান বলেন, ‘এটা কোস্ট গার্ড, নৌবাহিনী দেখবে। আমরা কেবল নিরাপদে থাকার জন্য প্রশিক্ষণ দিই, সচেতন করি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারী সহকর্মীর সঙ্গে রাতযাপন: হাইটেক পার্কের ডিডি আতিক বরখাস্ত

বাংলাদেশসহ ৩ দেশে উন্নয়ন সহায়তা বন্ধের সিদ্ধান্ত সুইজারল্যান্ডের

বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের পদত্যাগ

পদ্মা সেতু ও ড. ইউনূসকে নিয়ে ভারত থেকে শেখ হাসিনার ভাষণ! ভাইরাল ভিডিওর পেছনের ঘটনা জানুন

২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের ফেসবুক প্রোফাইল পিকচার পরিবর্তন কর্মসূচি শুরু

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত