নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
স্বাধীনতাকামী লাখো বাঙালির লাগাতার আন্দোলন আর সশস্ত্র সংগ্রামের প্রস্তুতিতে শঙ্কিত হয়ে পড়ে পাকিস্তানি সামরিক জান্তা। আনুষ্ঠানিক অসহযোগ আন্দোলনের এক সপ্তাহের মাথায় দেশ পুরোপুরি অচল হয়ে পড়ে। কিন্তু সেদিকে তোয়াক্কা না করে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে স্বাধীনতার সংগ্রাম দমনে নিষ্ঠুর পরিকল্পনা নিতে থাকে হানাদারেরা। ১৯৭১ সালের ১৩ মার্চ ইয়াহিয়া খানের নেতৃত্বাধীন সরকার ১১৫ নম্বর সামরিক ফরমান জারি করে ১৫ মার্চ সকাল ১০টার মধ্যে প্রতিরক্ষা বিভাগের বেসামরিক কর্মচারীদের কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। নির্দেশে বলা হয়, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজে যোগ না দিলে কর্মীদের চাকরিচ্যুত ও পলাতক ঘোষণা করে সামরিক আদালতে বিচার করা হবে।
নির্দেশ অমান্যকারীদের সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ড হবে। ওই নির্দেশ জারির পরপরই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিবৃতি দিয়ে এ ধরনের উসকানিমূলক কার্যকলাপ বন্ধের আহ্বান জানান। পরদিন ঢাকার সব সংবাদপত্র বঙ্গবন্ধুর বিবৃতি ফলাও করে প্রচার করে। পূর্বদেশের প্রধান শিরোনাম ছিল, ‘নির্দেশ দিলেও সংগ্রাম চলবে’। সংবাদ প্রধান শিরোনামের নিচে ছয় কলাম শিরোনাম করেছিল, ‘এই ধরনের নির্দেশ উস্কানিমূলক: মুজিব’।
এদিকে পাকিস্তানের ভাঙন নিশ্চিত—এমনটা বুঝতে পেরে বিরোধী দলের নেতারাও ১৯৭১ সালের ১৩ মার্চ জরুরি বৈঠকে মিলিত হন। পশ্চিম পাকিস্তানের পিপিপি ও কাইয়ুমপন্থী মুসলিম লীগ ছাড়া সব বিরোধী দল সেই বৈঠকে অংশ নেয়। বৈঠক শেষে অবিলম্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জানানো হয়। ওয়ালী ন্যাপ আগেই বঙ্গবন্ধুর প্রতি সমর্থন জানিয়েছিল। ন্যাপপ্রধান খান আব্দুল ওয়ালী খান এদিন ঢাকায় এসে পুনরায় বঙ্গবন্ধুর দাবির প্রতি সমর্থন জানান। দৈনিক সংবাদ পরদিন প্রধান শিরোনাম করেছিল, ‘মুজিবের দাবীর সহিত সম্পূর্ণ একমত: ওয়ালী’।
একাত্তরের ১৩ মার্চ লন্ডনভিত্তিক প্রভাবশালী সাময়িকী দি ইকোনমিস্টের এক নিবন্ধে মন্তব্য করা হয়, পূর্ণ স্বায়ত্তশাসনের মৌলিক অধিকারটুকু যদি শেখ মুজিব না-ই পান, তাহলে সামরিক শাসনের কারণে পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীনতা ঘোষণার দিকেই এগোবে। কোনো পূর্বশর্ত ছাড়াই ২৫ মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে যোগদানের বিষয়ে জুলফিকার আলী ভুট্টোর সম্মতির কথা উল্লেখ করে সংলাপের সম্ভাব্য আবহ তৈরির আভাস দিয়েও নিবন্ধে বলা হয়, এ মুহূর্তেও প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান সামরিক শাসন বহাল রাখতে বদ্ধপরিকর বলেই মনে হচ্ছে। সাধারণ পরিবহন বিমানযোগে নিয়মিত পশ্চিম পাকিস্তান থেকে পূর্ব পাকিস্তানে সেনা পাঠানো হচ্ছে, আর ট্যাংকগুলোকে যেভাবে ব্যবহারোপযোগী করে তোলা হচ্ছে, তাকে রাজপথে মুখোমুখি সংঘাতের প্রস্তুতি হিসেবেই ধরে নেওয়া যায়।
একাত্তরের এই দিনে অনিবার্য হয়ে ওঠে বাংলাদেশের স্বাধীনতা। দেশের বিভিন্ন স্থানে কৃষক, শ্রমিক, চাকরিজীবী, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, লেখক, শিক্ষকসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। কিন্তু সেদিকে তোয়াক্কা না করে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে আন্দোলন দমন করার ফন্দি আঁটতে থাকে সামরিক জান্তা।
১৯৭১ সালের এই দিনে দৈনিক ইত্তেফাকে ‘চতুরঙ্গ’ শিরোনামে উপসম্পাদকীয় নিবন্ধে বলা হয়েছিল, ‘বাংলায় যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, সে আন্দোলনের জোয়ার ভাসিয়ে দিয়েছে সব বিরুদ্ধ কণ্ঠ, সেই আন্দোলনের প্রতিটি প্রবাহ সচল করার পেছনে রয়েছে জনগণের অবিচল সংগ্রামী মনোভাব। কোনো বাধাই জনগণের ইচ্ছাকে অবদমিত করতে পারেনি। নির্যাতনে নির্যাতনে জনগণের ইচ্ছা আরো সুদৃঢ়, আরো বিশাল হয়েছে মাত্র।’ সুহৃদ ছদ্মনামে লেখক আরও বলেন, ‘এই আন্দোলনের বিক্ষুব্ধ তরঙ্গমালা কে রোধ করবে?’ ওই দিন পত্রিকাটির প্রধান শিরোনাম ছিল, ‘আমি তারস্বরে এই হুশিয়ারীই উচ্চারণ করিয়া যাইব...’—আসগর খান। ইনসেটে ছিল, ‘দোষ করিল লাহোর—গুলী চলিল ঢাকায়’। প্রধান শিরোনামের পাশে এক কলাম শিরোনাম ছিল ‘প্রেসিডেন্ট আসছেন’। প্রধান প্রতিবেদনের নিচে তিন কলাম শিরোনাম ছিল ‘কোন দেশপ্রেমিকই মুজিবের পূর্ব শর্তের বিরোধিতা করিতে পারে না’—সি আর আসলাম। সি আর আসলাম ছিলেন পিকিংপন্থী ন্যাপের সেক্রেটারি জেনারেল।
স্বাধীনতাকামী লাখো বাঙালির লাগাতার আন্দোলন আর সশস্ত্র সংগ্রামের প্রস্তুতিতে শঙ্কিত হয়ে পড়ে পাকিস্তানি সামরিক জান্তা। আনুষ্ঠানিক অসহযোগ আন্দোলনের এক সপ্তাহের মাথায় দেশ পুরোপুরি অচল হয়ে পড়ে। কিন্তু সেদিকে তোয়াক্কা না করে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে স্বাধীনতার সংগ্রাম দমনে নিষ্ঠুর পরিকল্পনা নিতে থাকে হানাদারেরা। ১৯৭১ সালের ১৩ মার্চ ইয়াহিয়া খানের নেতৃত্বাধীন সরকার ১১৫ নম্বর সামরিক ফরমান জারি করে ১৫ মার্চ সকাল ১০টার মধ্যে প্রতিরক্ষা বিভাগের বেসামরিক কর্মচারীদের কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। নির্দেশে বলা হয়, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজে যোগ না দিলে কর্মীদের চাকরিচ্যুত ও পলাতক ঘোষণা করে সামরিক আদালতে বিচার করা হবে।
নির্দেশ অমান্যকারীদের সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ড হবে। ওই নির্দেশ জারির পরপরই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিবৃতি দিয়ে এ ধরনের উসকানিমূলক কার্যকলাপ বন্ধের আহ্বান জানান। পরদিন ঢাকার সব সংবাদপত্র বঙ্গবন্ধুর বিবৃতি ফলাও করে প্রচার করে। পূর্বদেশের প্রধান শিরোনাম ছিল, ‘নির্দেশ দিলেও সংগ্রাম চলবে’। সংবাদ প্রধান শিরোনামের নিচে ছয় কলাম শিরোনাম করেছিল, ‘এই ধরনের নির্দেশ উস্কানিমূলক: মুজিব’।
এদিকে পাকিস্তানের ভাঙন নিশ্চিত—এমনটা বুঝতে পেরে বিরোধী দলের নেতারাও ১৯৭১ সালের ১৩ মার্চ জরুরি বৈঠকে মিলিত হন। পশ্চিম পাকিস্তানের পিপিপি ও কাইয়ুমপন্থী মুসলিম লীগ ছাড়া সব বিরোধী দল সেই বৈঠকে অংশ নেয়। বৈঠক শেষে অবিলম্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জানানো হয়। ওয়ালী ন্যাপ আগেই বঙ্গবন্ধুর প্রতি সমর্থন জানিয়েছিল। ন্যাপপ্রধান খান আব্দুল ওয়ালী খান এদিন ঢাকায় এসে পুনরায় বঙ্গবন্ধুর দাবির প্রতি সমর্থন জানান। দৈনিক সংবাদ পরদিন প্রধান শিরোনাম করেছিল, ‘মুজিবের দাবীর সহিত সম্পূর্ণ একমত: ওয়ালী’।
একাত্তরের ১৩ মার্চ লন্ডনভিত্তিক প্রভাবশালী সাময়িকী দি ইকোনমিস্টের এক নিবন্ধে মন্তব্য করা হয়, পূর্ণ স্বায়ত্তশাসনের মৌলিক অধিকারটুকু যদি শেখ মুজিব না-ই পান, তাহলে সামরিক শাসনের কারণে পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীনতা ঘোষণার দিকেই এগোবে। কোনো পূর্বশর্ত ছাড়াই ২৫ মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে যোগদানের বিষয়ে জুলফিকার আলী ভুট্টোর সম্মতির কথা উল্লেখ করে সংলাপের সম্ভাব্য আবহ তৈরির আভাস দিয়েও নিবন্ধে বলা হয়, এ মুহূর্তেও প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান সামরিক শাসন বহাল রাখতে বদ্ধপরিকর বলেই মনে হচ্ছে। সাধারণ পরিবহন বিমানযোগে নিয়মিত পশ্চিম পাকিস্তান থেকে পূর্ব পাকিস্তানে সেনা পাঠানো হচ্ছে, আর ট্যাংকগুলোকে যেভাবে ব্যবহারোপযোগী করে তোলা হচ্ছে, তাকে রাজপথে মুখোমুখি সংঘাতের প্রস্তুতি হিসেবেই ধরে নেওয়া যায়।
একাত্তরের এই দিনে অনিবার্য হয়ে ওঠে বাংলাদেশের স্বাধীনতা। দেশের বিভিন্ন স্থানে কৃষক, শ্রমিক, চাকরিজীবী, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, লেখক, শিক্ষকসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। কিন্তু সেদিকে তোয়াক্কা না করে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে আন্দোলন দমন করার ফন্দি আঁটতে থাকে সামরিক জান্তা।
১৯৭১ সালের এই দিনে দৈনিক ইত্তেফাকে ‘চতুরঙ্গ’ শিরোনামে উপসম্পাদকীয় নিবন্ধে বলা হয়েছিল, ‘বাংলায় যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, সে আন্দোলনের জোয়ার ভাসিয়ে দিয়েছে সব বিরুদ্ধ কণ্ঠ, সেই আন্দোলনের প্রতিটি প্রবাহ সচল করার পেছনে রয়েছে জনগণের অবিচল সংগ্রামী মনোভাব। কোনো বাধাই জনগণের ইচ্ছাকে অবদমিত করতে পারেনি। নির্যাতনে নির্যাতনে জনগণের ইচ্ছা আরো সুদৃঢ়, আরো বিশাল হয়েছে মাত্র।’ সুহৃদ ছদ্মনামে লেখক আরও বলেন, ‘এই আন্দোলনের বিক্ষুব্ধ তরঙ্গমালা কে রোধ করবে?’ ওই দিন পত্রিকাটির প্রধান শিরোনাম ছিল, ‘আমি তারস্বরে এই হুশিয়ারীই উচ্চারণ করিয়া যাইব...’—আসগর খান। ইনসেটে ছিল, ‘দোষ করিল লাহোর—গুলী চলিল ঢাকায়’। প্রধান শিরোনামের পাশে এক কলাম শিরোনাম ছিল ‘প্রেসিডেন্ট আসছেন’। প্রধান প্রতিবেদনের নিচে তিন কলাম শিরোনাম ছিল ‘কোন দেশপ্রেমিকই মুজিবের পূর্ব শর্তের বিরোধিতা করিতে পারে না’—সি আর আসলাম। সি আর আসলাম ছিলেন পিকিংপন্থী ন্যাপের সেক্রেটারি জেনারেল।
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
২ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
২ দিন আগে