এ যুগের আসমানী

ফরিদ খান মিন্টু, শরণখোলা (বাগেরহাট)
প্রকাশ : ১৯ নভেম্বর ২০২১, ০৫: ২০
আপডেট : ১৯ নভেম্বর ২০২১, ১৯: ৩৫

২০০৭ সালের মহা প্রলয়ংকরী সিডরের আঘাতে শরণখোলায় গৃহহীন হয়ে পড়ে অধিকাংশ পরিবার। প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় সিডরের ১৪ তম বছর পার হলো। সিডরের পর থেকে বিভিন্ন সময় সরকারি এবং এনজিওর মাধ্যমে হাজার হাজার ত্রাণের ঘর দিয়ে পুনর্বাসন করা হলো গৃহহীনদের। কিন্তু ঘর হয়নি স্বামীপরিত্যাক্তা শাহিনুর ও মাসুরা বেগমের ভাগ্যে। জোটেনি মাথা গোঁজার ঠাঁই, পাননি সরকারি বেসরকারি কোনো ধরনের ত্রাণের ঘর।

উপজেলা প্রশাসন বা জনপ্রতিনিধিদের কাছে বারবার আবেদন নিবেদন করেও লাভ হয়নি। তাদের বাসপযোগী ঘর না থাকায় তারা এখন আশ্রয় নিয়েছে অন্যের ঘরে। নানা কষ্টে দিন কাটছে অনাহারে-অর্ধাহারে।

উপজেলার উত্তর কদমতলা গ্রামের মৃত কাসেম হাওলাদারের মেয়ে শাহিনুর। পারিবারিক কলহের জেরে ৮ বছর আগে স্বামী ছগীর হাওলাদারের সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়। দুই কন্যা, এক পুত্র সন্তানসহ স্বামীর ভিটা থেকে বের করে দেওয়া তাঁকে। শাহিনুর হতদরিদ্র বাড়িতে কোনোভাবে ছাপড়া ঘর তুলে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে অসহায় জীবন যাপন করতেন। তবে ২০১৯ সালের ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের তাণ্ডবে ঘরটি বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। তারপরেও কোনোভাবে ঘরের চালে পলিথিন দিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। পরবর্তীতে প্রবল বর্ষণে পলিথিন দিয়ে ঢাকা বসবাসের ঘরটিও, অতিবৃষ্টিতে টিকতে না পেরে পার্শ্ববর্তী ছেলে মেয়ে নিয়ে বোনের ঘরে আশ্রয় নিয়েছেন।

একই গ্রামের হতদরিদ্র আব্দুর রহিম হাওলাদারের স্ত্রী মাসুরা বেগম দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে অতিকষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। নামমাত্র জমিটুকুতে একটি টিনের ঘর থাকলেও ঘরটি সিডরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কোনোভাবে ধার-দেনা করে ঘরটি বসবাসযোগ্য করা হলেও ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে বিধ্বস্ত হয়। তার মধ্যেও খোলা আকাশের নিচে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কোনোভাবে বসবাস করতেন। তবে ঘরটি ২ বছর পূর্বে একেবারেই ভেঙে যায়। তারপর থেকে বৃষ্টি ও নিরাপত্তাসহ নানা কারণে কখনো বোন, ভাই ও মেয়ের বাড়িতে ঘুরে ঘুরে দিন কাটছে তাঁর।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত