ব্র্যান্ড-ফুটপাত সবখানে জমে উঠেছে কেনাকাটা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ২৭ মার্চ ২০২৪, ০৮: ৪৬

রোজা সবে অর্ধেক হলো। ঈদের কেনাকাটার সময় তাই এখনো যা আছে, কম না। তবে স্বাধীনতা দিবসে গতকাল মঙ্গলবার ছিল বেশির ভাগ কর্মজীবী মানুষের ছুটি। এই অবসরে ঈদের কেনাকাটাটা আরও একটু এগিয়ে রাখতে শপিং মল-বিপণিবিতানে ঘুরেছেন অনেকেই। 

পোশাক কিনতে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া ছেলেকে নিয়ে রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কে গিয়েছিলেন সত্তরোর্ধ্ব আব্দুল মান্নান। ছেলের জন্য প্যান্ট কেনার জন্য কয়েকটি দোকান ঘুরেছেন। কিন্তু দামে-মানে ঠিকঠাক পছন্দ হচ্ছিল না। ছেলের চাওয়া ব্র্যান্ড। তাঁর যুক্তি, ভালো ডিজাইন এবং ভালো মান দুটোই একসঙ্গে মেলে ব্র্যান্ডের পোশাকে। বাবা মনে করেন, নামী ব্র‍্যান্ডের পোশাক কেনার চেয়ে ভালো ও আরামদায়ক কাপড় দেখে তুলনামূলক কম দামে নন-ব্র‍্যান্ডের পোশাক কেনাই ভালো। 

আব্দুল মান্নান বললেন, ‘সাড়ে তিন হাজার টাকায় ব্র‍্যান্ডের প্যান্ট কিনে কী লাভ, যদি সব মিলিয়ে দেড়-দুই হাজার টাকা খরচে বাইরেই পেয়ে যাই?’

রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্ক, বসুন্ধরা সিটি শপিং মল এবং গাউছিয়া-নিউমার্কেট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ঈদের কেনাকাটা করতে দোকানগুলোতে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। কেউ কিনছেন ব্র‍্যান্ডের পোশাক, কেউ আবার নন-ব্র‍্যান্ড। কিন্তু ব্র‍্যান্ডের আউটলেটগুলোতে ঢুঁ মারতে ভুলছেন না কেউ। 

যমুনা ফিউচার পার্কের কিছুটা সামনে ফুটপাতে ছেলের জন্য জিনসের প্যান্ট কিনছিলেন শাহনাজ বেগম। তিনি বলেন, ‘বড় বড় দোকান ঘুরে দেখছি। দাম বেশি চায়। সস্তায় যদি পেয়ে যাই, বাড়তি দাম দিতে যাব কেন?’

বিভিন্ন বিপণিবিতান ঘুরে দেখা যায়, ব্র‍্যান্ডের আউটলেটগুলোতে উপচেপড়া ভিড়। ট্রায়াল রুম এবং টাকা পরিশোধের কাউন্টারগুলোর সামনে লম্বা লাইন দেখে বোঝাই যাচ্ছিল আগত ক্রেতারা পোশাক দেখার পাশাপাশি কিনছেও বেশ।

ইনফিনিটির ম্যানেজার (সেলস অ্যান্ড অপারেশন) ইফতেখারুল হক বলেন, এবার ঈদে এখন পর্যন্ত বিক্রি বেশ ভালো। গত তিন বছর ঈদের বাজারে করোনার প্রভাব ছিল।ক্রেতা ছিল কম। তবে এবার করোনার কোনো প্রভাব নেই। ফলে ভালো বেচাকেনা হচ্ছে। 

ইফতেখারুল জানান, ইনফিনিটিতে প্রতিবারের মতো এবারও লুবনানের পাঞ্জাবির চাহিদা বেশি। আড়াই হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১৬ হাজার টাকায় পাঞ্জাবি পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া বাচ্চাদের পোশাক এবং নারীদের থ্রিপিসও ভালো চলছে।

এবার ঈদের পরপরই পয়লা বৈশাখ। তাই ঈদ ও পয়লা বৈশাখের পোশাক একসঙ্গেই কিনছেন অনেকে। পশ্চিমা ব্র‍্যান্ডের পাশাপাশি দেশীয় ব্র‍্যান্ডের আউটলেটগুলোতেও ভিড় করছেন ক্রেতারা। 

যমুনা ফিউচার পার্কের বিশ্বরঙ বাই বিপ্লব সাহা আউটলেটের ব্যবস্থাপক মাহফুজুর রহমান খান বলেন, বেচাকেনা জমে উঠেছে। সামনে পয়লা বৈশাখ থাকায় বিশ্বরঙ-এর সব আউটলেটে আলাদা বৈশাখ কর্নার করা হচ্ছে। ২০ রমজান থেকে বেচাকেনা আরও বাড়বে বলে জানান তিনি। 

একই কথা জানালেন, অঞ্জনসের যমুনা আউটলেটের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আব্দুল আলীম। তিনি বলেন, করোনার ধাক্কা সামলে উঠেছে সবাই। এবার তাই ঈদের বাজারে বেচাকেনা অনেক ভালো। চৈত্র মাসে ঈদ হওয়ায় ক্রেতারা হালকা পোশাক খুঁজছেন বেশি। 

ব্র‍্যান্ডের আউটলেটগুলোর মতো ফুটপাতের বিক্রেতারাও বলছেন, এবার ক্রেতাসমাগম ভালো। রোজার শুরুর দিকে ক্রেতা কম থাকলেও গত শুক্রবার থেকে ভালো বেচাকেনা হচ্ছে। অস্থায়ী দোকানের বিক্রেতারা শার্ট, টি-শার্ট, ট্রাউজার, প্যান্ট ও শিশুদের পোশাক বিক্রিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। 

যমুনা ফিউচার পার্ক এলাকার অস্থায়ী বিক্রেতা শাহ আলম বলেন, ‘ফুটপাতে সব সময় মোটামুটি কাস্টমার থাকে। এবার রমজানের শুরুতে বেচাকেনা একটু কম ছিল। এখন আবার জমতে শুরু করতে। ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত বেচাকেনা চলবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত