বিলুপ্তির পথে তালতলীর রাখাইন তাঁতপল্লি

তালতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১১: ৫৩
Thumbnail image

বরগুনার তালতলী উপজেলায় বসবাসের শুরুর দিকে জীবিকা নির্বাহের জন্য রাখাইন নারীরা তাঁতে কাপড় বোনা শুরু করেন। সেই থেকে কয়েক বছর আগেও রাখাইনদের তাঁতশিল্প ছিল জমজমাট। কিন্তু এই পল্লিতে তাঁতশিল্পের সেই সুবর্ণ দিন আজ আর নেই।

এই শিল্পের কারিগরেরা বেছে নিয়েছেন অন্য পেশা। যাঁরা আছেন, ভালো নেই তাঁরা। মানবেতর জীবন পার করছেন এই উপজেলার রাখাইন পল্লিবাসী। বিলুপ্তির পথে তাঁতশিল্প।

জানা যায়, ১৭০০ সালের শেষের দিকে মিয়ানমারের আরাকানের মেঘাবতীর সান্ধ্যে জেলার ছেং ডোয়ে, রেমেত্রে, মেং অং অঞ্চল ছেড়ে রাখাইনরা এখানে বসবাস শুরু করেন। এরপর থেকেই তাঁদের পল্লিতে দিনরাত সমানতালে তাঁতের ঠকঠক আওয়াজ শোনা যেত। তাঁতিদের কর্মব্যস্ততায় সরগরম ছিল রাখাইনপাড়া। উপজেলার রাখাইন মার্কেটে ছিল তাঁতের শাড়ি কাপড় বিক্রির ধুম। আর এখন সেই মার্কেটে নেই বেচা-কেনায় ভিড়, নেই রাখাইন পল্লিতে কর্মব্যস্ততা। একদিকে যেমন সুতার সংকট, অন্যদিকে পণ্যটির মাত্রাতিরিক্ত দাম, আবার পাচ্ছেন না সরকারি সহায়তা নানা সমস্যায় স্থবির হয়ে আছে রাখাইনদের তাঁতশিল্প।

এদিকে দু-একটি পাড়ায় তাঁত দেখা গেলেও শুধু নিজেদের প্রয়োজনে কাপড় বুনছেন তাঁরা। বাজারজাত করতে হলে সরকারি সহযোগিতা চান এ তাঁতশিল্পীরা। রাখাইন তাঁতশিল্পী লাচা নো বলেন, ‘সুতার দাম বেশি থাকায় এখন আর কাপড় বোনা সম্ভব হচ্ছে না।’

মনুকে পাড়ার চিং খে উই রাখানই বলেন, ‘এখন নিজেদের প্রয়োজনে দু-একটি কাপড় বোনা হয়। আগে কাপড় বুনে শেষ করতে পারতাম না।’

তালতলী উপজেলা তাঁতি সমিতির সভাপতি মংচিন থান বলেন, ‘সুতার দাম বেশি ও বিক্রির ব্যবস্থা না থাকায় রাখাইন পল্লির মানুষগুলো অন্য পেশায় ঝুঁকছেন। আগের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে দরকার সরকারি সহযোগিতা।’

তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কাওসার হোসেন বলেন, তাঁতশিল্পীদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। যুব উন্নয়ন থেকে প্রশিক্ষণ দিয়ে ঋণের ব্যবস্থা করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে রাখাইনের তাঁতশিল্পীদের জন্য মার্কেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত