আনিসুল ইসলাম নাঈম
সফটওয়্যার হলো এক ধরনের প্রোগ্রাম বা ডেটা ও কিছু ইলেকট্রনিক নির্দেশনা, যার মাধ্যমে একটি কম্পিউটার পরিচালিত হয়। আমরা প্রতিনিয়ত কম্পিউটার বা অন্যান্য ডিভাইসে যেসব ছোট-বড় অ্যাপ্লিকেশন (অ্যাপ) ব্যবহার করে থাকি, সেগুলো মূলত একেকটি সফটওয়্যার। অন্যদিকে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং হলো এমন একটি ইঞ্জিনিয়ারিং, যেখানে সফটওয়্যার তৈরির প্ল্যানিং, ডিজাইন, প্রোগ্রামিং, বিশ্লেষণ ও সফটওয়্যারের যাবতীয় রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। একটি সফটওয়্যারের সম্পূর্ণ জীবনচক্রে যে বিষয়গুলো লক্ষ রাখা হয়, তা সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অন্তর্ভুক্ত।
পড়ার যোগ্যতা
স্নাতক পর্যায়ে ভর্তি হওয়ার জন্য একজন শিক্ষার্থীকে অবশ্যই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা করতে হবে এবং উভয় পরীক্ষায় ন্যূনতম জিপিএ ৩.৫ এবং মোট জিপিএ কমপক্ষে ৮ থাকতে হয়। উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ম অনুযায়ী ভর্তি পরীক্ষায় ও মেধাতালিকায় স্থান থাকা সাপেক্ষে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ার সুযোগ পাওয়া যায়। সাধারণত এ বিষয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য পদার্থবিজ্ঞান, ইংরেজি ও গণিতে ন্যূনতম জিপিএ ৩.৫ থাকতে হয়। তবে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে শিথিলতা থাকতে পারে।
কোথায় ভর্তি হওয়া যায়
বাংলাদেশে অল্প কয়েকটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেখানে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং প্রোগ্রাম চালু রয়েছে। তার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজি’র অধীনে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং অন্তর্ভুক্ত। এ ছাড়া সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং প্রোগ্রাম রয়েছে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অন্যতম। এ ছাড়া সিলেটের মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটিতে এই প্রোগ্রাম চালু রয়েছে।
যেসব কোর্সে পড়ানো হয়
সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং প্রোগ্রামগুলোর মূল উদ্দেশ্য হলো শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক মানের কম্পিউটার বিজ্ঞান পাঠ্যক্রমের সঙ্গে উন্মুক্ত করে তথ্য ও প্রযুক্তির বাজারে উচ্চ দক্ষ জনশক্তি হিসেবে প্রস্তুত করা। প্রোগ্রামের বেশ কয়েকটি কোর্স রয়েছে। যেমন স্ট্রাকচার্ড প্রোগ্রামিং, অবজেক্ট-ওরিয়েন্টেড কনসেপ্টস, ডেটা স্ট্রাকচার অ্যান্ড অ্যালগরিদম, ডেটাবেজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমস, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, সফটওয়্যার সিকিউরিটি, ওয়েব টেকনোলজি, প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট, সফটওয়্যার টেস্টিং অ্যান্ড কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স, অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট, ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস, বিজনেস কমিউনিকেশনসহ নানা ধরনের তাত্ত্বিক ও প্রায়োগিক বিষয়। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের প্রোগ্রামিং ভাষা, যেমন জাভা, সি++, পাইথন ও জাভাস্ক্রিপ্ট শেখানো হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রজেক্টে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা হাতে-কলমে জ্ঞানার্জনের অভিজ্ঞতাও লাভ করেন।
কর্মসংস্থানের সুযোগ কেমন
বর্তমান প্রযুক্তির যুগে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের প্রচুর চাকরির সুযোগ রয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি এবং সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের মতো সেক্টরে তাঁদের চাহিদা ব্যাপক। এখানে তাঁরা ব্যবসার জন্য সফটওয়্যার সমাধান, ডিজাইন, তৈরি এবং বাজারজাত করেন। টেক জায়ান্ট মাইক্রোসফট, মেটা, গুগল এবং আমাজনের মতো পণ্যভিত্তিক সংস্থা উদ্ভাবনী প্রকল্প এবং অত্যাধুনিক সফটওয়্যার পণ্যগুলোর জন্য দক্ষ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার খুঁজছে। ফিনটেক ও ব্যাংকিং সেক্টরগুলো প্রচলিত নীতিমালা থেকে ডিজিটাল রূপান্তর এবং নিরাপদ অর্থ প্রদান ব্যবস্থা তৈরির জন্য সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের ওপর নির্ভর করে। স্বাস্থ্যসেবা এবং জৈবপ্রযুক্তি শিল্পগুলোর স্বাস্থ্যসেবা সফটওয়্যার অ্যাপ্লিকেশন এবং বায়োইনফরমেটিক্স সরঞ্জাম তৈরিতেও সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়াররা দারুণ ভূমিকা রাখছেন। বর্তমানে ই-কমার্স সেক্টরগুলোর অনলাইন প্ল্যাটফর্ম তৈরি এবং সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্টকে সচল রাখতে একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের প্রোগ্রামিং দক্ষতা, সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা এবং উদ্ভাবনী মানসিকতার জন্য তাঁদের বেশ চাহিদা রয়েছে। এ ছাড়া একাডেমিতে ভালো ফলাফল করে শিক্ষক হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ রয়েছে। পরিশেষে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং গ্র্যাজুয়েটরা ডিজিটাল ভবিষ্যৎ গঠন করছেন এবং বিশ্বের প্রযুক্তি শিল্পে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলছেন।
সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের প্রয়োজনীয়তা কেমন
সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রিধারীরা বিভিন্ন কারণে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, তাঁরা সমৃদ্ধ সফটওয়্যার শিল্পে দক্ষ পেশাদারদের জন্য ক্রমবর্ধমান শিল্প চাহিদা পূরণ করেন। তাঁদের জ্ঞান এবং দক্ষতা আইটি সেক্টরের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে সহায়তা করে। দ্বিতীয়ত, এই ব্যক্তিরা অত্যাধুনিক সফটওয়্যার তৈরি ও বাজারজাত করেন। পাশাপাশি উদীয়মান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এবং নতুন নতুন প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন চালান। তাঁদের সৃজনশীল চিন্তাভাবনা এবং সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগ্রগতিতে অবদান রাখেন। উপরন্তু তাঁরা উদ্যোক্তা বৃদ্ধি, বিদেশি বিনিয়োগে আকর্ষণ এবং কাজের সুযোগ সৃষ্টি করে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখেন। এ ছাড়া তাঁরা বৈশ্বিক আইটি বাজারে বাংলাদেশকে একটি প্রতিযোগী হিসেবে তুলে ধরার মাধ্যমে দেশের বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়ান। সবশেষে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থী এবং ডিগ্রিধারীরা তাঁদের প্রযুক্তিগত দক্ষতার উন্নতি এবং বৈশ্বিক তথ্যপ্রযুক্তিসমৃদ্ধ শিল্পগুলোকে রূপান্তরের মাধ্যমে দেশের ডিজিটাল রূপান্তরে অবদান রাখেন।
পড়ার খরচ কেমন
সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অন্যান্য ডিগ্রির মতো নামমাত্র খরচে এ বিষয়ে ডিগ্রি নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। আর স্বীকৃত প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সাধারণত ৮ থেকে ১০ লাখ টাকার মধ্যে স্নাতক পড়াশোনা সম্পন্ন করা যায়। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে বিএসসি ইন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের খরচ প্রায় সাড়ে ৭ থেকে ৮ লাখ টাকার মতো। তবে এখানে মেধাবী এবং সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি ও আর্থিক সহায়তা পাওয়া যায়।
উচ্চশিক্ষার সুযোগ-সুবিধা
সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং প্রোগ্রামে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে মাস্টার্স বা পিএইচডি করার সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। শিক্ষার্থীদের পছন্দের শীর্ষে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে অন্যতম ইউনিভার্সিটি অব টরন্টো কানাডা, ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অকল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়, নিউজিল্যান্ড ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, যুক্তরাজ্য। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ-সুবিধার পাশাপাশি পড়াশোনার মানও ভালো। তা ছাড়া এসব বিশ্ববিদ্যালয় স্কলারশিপের সুযোগ-সুবিধাও দিয়ে থাকে। দেশের ক্রমবর্ধমান আইটি শিল্প, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের ক্রমবর্ধমান চাহিদা, আউটসোর্সিং ও ফ্রিল্যান্সিং সুযোগ, উদ্যোক্তা এবং স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম, সরকারি উদ্যোগ ও সহায়তা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এবং ক্রমাগত পেশাদার বিকাশের ওপর জোর দেওয়া স্নাতকদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য অবদান রাখে। বাংলাদেশের আইটি শিল্প প্রসারিত হচ্ছে, দক্ষ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য অসংখ্য কাজের সুযোগ তৈরি হচ্ছে। আউটসোর্সিং ও ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মের উত্থান বাংলাদেশি পেশাদারদের বৈশ্বিক প্রকল্পে কাজ করার সুযোগ দিচ্ছে।
অনুলিখন: আনিসুল ইসলাম নাঈম
সফটওয়্যার হলো এক ধরনের প্রোগ্রাম বা ডেটা ও কিছু ইলেকট্রনিক নির্দেশনা, যার মাধ্যমে একটি কম্পিউটার পরিচালিত হয়। আমরা প্রতিনিয়ত কম্পিউটার বা অন্যান্য ডিভাইসে যেসব ছোট-বড় অ্যাপ্লিকেশন (অ্যাপ) ব্যবহার করে থাকি, সেগুলো মূলত একেকটি সফটওয়্যার। অন্যদিকে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং হলো এমন একটি ইঞ্জিনিয়ারিং, যেখানে সফটওয়্যার তৈরির প্ল্যানিং, ডিজাইন, প্রোগ্রামিং, বিশ্লেষণ ও সফটওয়্যারের যাবতীয় রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। একটি সফটওয়্যারের সম্পূর্ণ জীবনচক্রে যে বিষয়গুলো লক্ষ রাখা হয়, তা সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অন্তর্ভুক্ত।
পড়ার যোগ্যতা
স্নাতক পর্যায়ে ভর্তি হওয়ার জন্য একজন শিক্ষার্থীকে অবশ্যই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা করতে হবে এবং উভয় পরীক্ষায় ন্যূনতম জিপিএ ৩.৫ এবং মোট জিপিএ কমপক্ষে ৮ থাকতে হয়। উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ম অনুযায়ী ভর্তি পরীক্ষায় ও মেধাতালিকায় স্থান থাকা সাপেক্ষে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ার সুযোগ পাওয়া যায়। সাধারণত এ বিষয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য পদার্থবিজ্ঞান, ইংরেজি ও গণিতে ন্যূনতম জিপিএ ৩.৫ থাকতে হয়। তবে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে শিথিলতা থাকতে পারে।
কোথায় ভর্তি হওয়া যায়
বাংলাদেশে অল্প কয়েকটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেখানে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং প্রোগ্রাম চালু রয়েছে। তার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজি’র অধীনে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং অন্তর্ভুক্ত। এ ছাড়া সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং প্রোগ্রাম রয়েছে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অন্যতম। এ ছাড়া সিলেটের মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটিতে এই প্রোগ্রাম চালু রয়েছে।
যেসব কোর্সে পড়ানো হয়
সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং প্রোগ্রামগুলোর মূল উদ্দেশ্য হলো শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক মানের কম্পিউটার বিজ্ঞান পাঠ্যক্রমের সঙ্গে উন্মুক্ত করে তথ্য ও প্রযুক্তির বাজারে উচ্চ দক্ষ জনশক্তি হিসেবে প্রস্তুত করা। প্রোগ্রামের বেশ কয়েকটি কোর্স রয়েছে। যেমন স্ট্রাকচার্ড প্রোগ্রামিং, অবজেক্ট-ওরিয়েন্টেড কনসেপ্টস, ডেটা স্ট্রাকচার অ্যান্ড অ্যালগরিদম, ডেটাবেজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমস, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, সফটওয়্যার সিকিউরিটি, ওয়েব টেকনোলজি, প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট, সফটওয়্যার টেস্টিং অ্যান্ড কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স, অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট, ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস, বিজনেস কমিউনিকেশনসহ নানা ধরনের তাত্ত্বিক ও প্রায়োগিক বিষয়। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের প্রোগ্রামিং ভাষা, যেমন জাভা, সি++, পাইথন ও জাভাস্ক্রিপ্ট শেখানো হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রজেক্টে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা হাতে-কলমে জ্ঞানার্জনের অভিজ্ঞতাও লাভ করেন।
কর্মসংস্থানের সুযোগ কেমন
বর্তমান প্রযুক্তির যুগে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের প্রচুর চাকরির সুযোগ রয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি এবং সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের মতো সেক্টরে তাঁদের চাহিদা ব্যাপক। এখানে তাঁরা ব্যবসার জন্য সফটওয়্যার সমাধান, ডিজাইন, তৈরি এবং বাজারজাত করেন। টেক জায়ান্ট মাইক্রোসফট, মেটা, গুগল এবং আমাজনের মতো পণ্যভিত্তিক সংস্থা উদ্ভাবনী প্রকল্প এবং অত্যাধুনিক সফটওয়্যার পণ্যগুলোর জন্য দক্ষ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার খুঁজছে। ফিনটেক ও ব্যাংকিং সেক্টরগুলো প্রচলিত নীতিমালা থেকে ডিজিটাল রূপান্তর এবং নিরাপদ অর্থ প্রদান ব্যবস্থা তৈরির জন্য সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের ওপর নির্ভর করে। স্বাস্থ্যসেবা এবং জৈবপ্রযুক্তি শিল্পগুলোর স্বাস্থ্যসেবা সফটওয়্যার অ্যাপ্লিকেশন এবং বায়োইনফরমেটিক্স সরঞ্জাম তৈরিতেও সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়াররা দারুণ ভূমিকা রাখছেন। বর্তমানে ই-কমার্স সেক্টরগুলোর অনলাইন প্ল্যাটফর্ম তৈরি এবং সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্টকে সচল রাখতে একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের প্রোগ্রামিং দক্ষতা, সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা এবং উদ্ভাবনী মানসিকতার জন্য তাঁদের বেশ চাহিদা রয়েছে। এ ছাড়া একাডেমিতে ভালো ফলাফল করে শিক্ষক হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ রয়েছে। পরিশেষে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং গ্র্যাজুয়েটরা ডিজিটাল ভবিষ্যৎ গঠন করছেন এবং বিশ্বের প্রযুক্তি শিল্পে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলছেন।
সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের প্রয়োজনীয়তা কেমন
সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রিধারীরা বিভিন্ন কারণে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, তাঁরা সমৃদ্ধ সফটওয়্যার শিল্পে দক্ষ পেশাদারদের জন্য ক্রমবর্ধমান শিল্প চাহিদা পূরণ করেন। তাঁদের জ্ঞান এবং দক্ষতা আইটি সেক্টরের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে সহায়তা করে। দ্বিতীয়ত, এই ব্যক্তিরা অত্যাধুনিক সফটওয়্যার তৈরি ও বাজারজাত করেন। পাশাপাশি উদীয়মান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এবং নতুন নতুন প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন চালান। তাঁদের সৃজনশীল চিন্তাভাবনা এবং সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগ্রগতিতে অবদান রাখেন। উপরন্তু তাঁরা উদ্যোক্তা বৃদ্ধি, বিদেশি বিনিয়োগে আকর্ষণ এবং কাজের সুযোগ সৃষ্টি করে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখেন। এ ছাড়া তাঁরা বৈশ্বিক আইটি বাজারে বাংলাদেশকে একটি প্রতিযোগী হিসেবে তুলে ধরার মাধ্যমে দেশের বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়ান। সবশেষে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থী এবং ডিগ্রিধারীরা তাঁদের প্রযুক্তিগত দক্ষতার উন্নতি এবং বৈশ্বিক তথ্যপ্রযুক্তিসমৃদ্ধ শিল্পগুলোকে রূপান্তরের মাধ্যমে দেশের ডিজিটাল রূপান্তরে অবদান রাখেন।
পড়ার খরচ কেমন
সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অন্যান্য ডিগ্রির মতো নামমাত্র খরচে এ বিষয়ে ডিগ্রি নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। আর স্বীকৃত প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সাধারণত ৮ থেকে ১০ লাখ টাকার মধ্যে স্নাতক পড়াশোনা সম্পন্ন করা যায়। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে বিএসসি ইন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের খরচ প্রায় সাড়ে ৭ থেকে ৮ লাখ টাকার মতো। তবে এখানে মেধাবী এবং সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি ও আর্থিক সহায়তা পাওয়া যায়।
উচ্চশিক্ষার সুযোগ-সুবিধা
সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং প্রোগ্রামে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে মাস্টার্স বা পিএইচডি করার সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। শিক্ষার্থীদের পছন্দের শীর্ষে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে অন্যতম ইউনিভার্সিটি অব টরন্টো কানাডা, ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অকল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়, নিউজিল্যান্ড ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, যুক্তরাজ্য। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ-সুবিধার পাশাপাশি পড়াশোনার মানও ভালো। তা ছাড়া এসব বিশ্ববিদ্যালয় স্কলারশিপের সুযোগ-সুবিধাও দিয়ে থাকে। দেশের ক্রমবর্ধমান আইটি শিল্প, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের ক্রমবর্ধমান চাহিদা, আউটসোর্সিং ও ফ্রিল্যান্সিং সুযোগ, উদ্যোক্তা এবং স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম, সরকারি উদ্যোগ ও সহায়তা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এবং ক্রমাগত পেশাদার বিকাশের ওপর জোর দেওয়া স্নাতকদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য অবদান রাখে। বাংলাদেশের আইটি শিল্প প্রসারিত হচ্ছে, দক্ষ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য অসংখ্য কাজের সুযোগ তৈরি হচ্ছে। আউটসোর্সিং ও ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মের উত্থান বাংলাদেশি পেশাদারদের বৈশ্বিক প্রকল্পে কাজ করার সুযোগ দিচ্ছে।
অনুলিখন: আনিসুল ইসলাম নাঈম
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
২ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
২ দিন আগে