আব্দুর রাজ্জাক
আমাদের সমাজে একেক সময় একেকটা বিষয়ের ওপরে আলোচনা-সমালোচনা, মুখরোচক কল্পকাহিনি চলতেই থাকে। বেশ কয়েক মাস যাবৎ প্রায় সবার মুখে মুখে পাড়ায়-মহল্লায়, রাস্তার অলিগলিতে রিজার্ভ নিয়ে মুখরোচক গল্প শোনা যাচ্ছে। গ্রামের চায়ের দোকানে বিকেলবেলা একদল মানুষ দল বেঁধে পান-সিগারেটের সঙ্গে চা খেতে খেতে রিজার্ভের বিষয়ে নিজেদের মতো করে খোশগল্প করেন।
ভাবসাব এমন, মনে হয় এ দেশের সব মানুষই রিজার্ভ বিশেষজ্ঞ হয়ে গেছেন!এখন মূল কথায় আসি, বাংলাদেশ ব্যাংকে যে বৈদেশিক মুদ্রা, অর্থাৎ যে মুদ্রা আন্তর্জাতিকভাবে বিনিময় করা যায় তা-ই রিজার্ভ। আমাদের দেশে এই রিজার্ভ গণনা করা হয় বাংলাদেশ ব্যাংকে রক্ষিত ডলারের অঙ্কের পরিমাণ দেখে।
দেশের প্রায় এক কোটি মানুষ মধ্যপ্রাচ্য, মালয়েশিয়া, ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে কাজ করে তাঁদের কষ্টার্জিত শ্রমের মূল্য বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়ের মাধ্যমে বাংলাদেশে পাঠান। এভাবেই মূলত আমাদের দেশে বৈদেশিক মুদ্রা আসে।
আমাদের রপ্তানি বাণিজ্য মূলত পোশাক খাত, চামড়া খাত, পাটজাত পণ্য, বিভিন্ন প্রকার মাছ, সবজি এবং অন্যান্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কুটির শিল্পপণ্য।
এসব রপ্তানি করে আমরা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে থাকি। দেশের কিছু কিছু ব্যক্তি যাঁদের দ্বৈত সিটিজেনশিপ আছে, বিভিন্ন দেশে বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেন, যাঁদের ‘ডায়াসপোরা’ বলা হয়, তাঁরাও বৈদেশিক মুদ্রা দেশে পাঠান। তা ছাড়া, বিদেশি ব্যক্তি বা সংস্থা আমাদের দেশে যখন বিনিয়োগ করে, তখনো বৈদেশিক মুদ্রা চলে আসে।
আমরা যখন বিদেশ থেকে কোনো পণ্য আমদানি করি অথবা বিদেশি বিনিয়োগকারীরা তাদের বিনিয়োগকৃত অর্থের মুনাফা বা তাদের বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের বেতন-ভাতাদি তখন এই বৈদেশিক মুদ্রায় দেওয়া হয়। এটাই প্রচলিত নিয়ম। এভাবেই ব্যবসা-বাণিজ্য চলে। একদিকে বিদেশ থেকে অর্থ আসে, আবার প্রচলিত নিয়মে খরচ হয়। তবে স্বাভাবিক নিয়ম অনুসারে যদি কোনো দেশের ব্যাংকে তিন মাসের আমদানি পণ্যের রিজার্ভ থাকে, তাহলে সেই দেশের সঙ্গে আন্তর্জাতিকভাবে সবাই আমদানি-রপ্তানি করে।
প্রচলিত ধারার বাইরে রিজার্ভ কমার কিছু কারণ আছে। আজকের লেখার মূল বক্তব্য সেখানে। যদি কোনো দেশের স্থানীয় ব্যাংক থেকে কোনো ব্যক্তি বা শিল্পপ্রতিষ্ঠান অধিক হারে নিয়মকানুনের তোয়াক্কা না করে, সঠিক পরিমাণ সম্পদ ব্যাংকে বন্ধক না রেখে ঋণ নেয় এবং এই ঋণ যে খাতে ব্যয় করার কথা ছিল, সেই খাতে ব্যবহার না করে ছলচাতুরীর মাধ্যমে বিদেশে প্রেরণ করে, তখনই স্বদেশি ব্যাংকের রিজার্ভের ঘাটতি পড়ে।
শিল্পে ব্যবহারের জন্য আমদানি করা ক্যাপিটাল মেশিনারি ও কাঁচামালের ওপর আমদানি শুল্ক বলতে গেলে শূন্য। এসব উপকরণের আমদানি মূল্যে প্রচুর ওভার ইনভয়েজিং করা হয়, এ ক্ষেত্রে যে অঙ্কের অর্থের বেশি মূল্য দেখানো হয়, সেই অঙ্কের অর্থ দেশ থেকে পাচার হয়ে যায়। সবাই এটাকে ‘মানি লন্ডারিং’ বলে থাকে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় ব্যাংক। কারণ যে খাতে অর্থ লগ্নি করা হয়েছিল, সেই শিল্প খাত থাকে রুগ্ণ। এভাবে এই খাতের টাকা পাচার হয়ে যায়। ব্যাংক যত রুগ্ণ হবে, যত খেলাপি ঋণ বাড়বে, শিল্প রুগ্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশের সম্পদ পাচার হবে এবং রিজার্ভ কমতে থাকবে।
দেশে একশ্রেণির মানুষ আছেন যাঁরা ঘুষ, দুর্নীতি, কমিশন-বাণিজ্যসহ কালো পথে অর্থ উপার্জন করে সেই অর্থ আয়কর হিসেবে প্রদর্শন করতে পারেন না। তখন এই টাকা হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাঠান। এই শ্রেণির মানুষ খুবই উচ্চবিত্তের হয়। এসব মানুষ সরকারের উচ্চ পদে আসীন থাকেন, রাজনৈতিক দলের বড় পদে থাকেন অথবা সমাজের উচ্চ শ্রেণির মানুষ, যাঁদের কাছে কেউ প্রশ্ন করার সাহস রাখে না।
উল্লিখিত কারণগুলো ঘটে যখন, মানুষের দেশের প্রতি ভালোবাসা কমে যায় অথবা তাঁরা দেশে থাকতে ভরসা পান না। অনেক সময় মানুষ অতি লোভ ও উচ্চাকাঙ্ক্ষার কারণেও দেশের সম্পদ এভাবে পাচার করেন। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা—প্রায় সময় রক্ষকই ভক্ষক হয়। সাধারণ মানুষের এসব কর্মকাণ্ড দেখা, সমালোচনা করা ও মনে মনে ক্ষোভ প্রকাশ করা ছাড়া অন্য কোনো উপায় থাকে না।
আরেকটি পন্থা আছে। বিদেশে কর্মরত মানুষ তাঁদের টাকা ব্যাংকিং চ্যানেলে পাঠান না। তাঁরা যে দেশে কর্মরত আছেন, সেই দেশের প্রতিটি শহরে-অঞ্চলে একজন করে আমাদের দেশেরই দালাল আছে। এই দালাল চক্রের মাধ্যমে তাঁরা টাকা পাঠান। দালাল চক্রগুলো মাসের অথবা সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে শ্রমজীবী মানুষের কাছে গিয়ে তাঁদের উপার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ে নেয়। ওই সব মানুষের স্বদেশের ব্যাংক হিসাবে অথবা তাঁদের কোনো আত্মীয়-স্বজনের কাছে বাংলাদেশি মুদ্রায় সমপরিমাণ অর্থ পরিশোধ করে। অনেক সময় ২-১ শতাংশ বেশি মূল্য পরিশোধ করে। বিদেশে বসে ওই দালাল শ্রেণি এই বৈদেশিক মুদ্রা তাঁদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করে, যাঁরা এ দেশের টাকা বিদেশে পাচার করেন অথবা আমদানি পণ্যে কম মূল্য দেখিয়ে আমদানি করেন। এভাবে এই অর্থ পাচারকারী চক্র বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ এ কাজ করে যাচ্ছে। যদি বিদেশে কর্মরত মানুষের টাকা ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে আসত, তাহলে রিজার্ভ আরও ভালো থাকত। এই হুন্ডি ব্যবসা চলার কারণেও রিজার্ভ কমে।
আবার অনেক সময় রপ্তানি পণ্যে এলসিতে কম মূল্য দেখিয়ে বিদেশে যে পণ্যটি ক্রয় করল, তার কাছ থেকে অতিরিক্ত মূল্যে বৈদেশিক মুদ্রায় গ্রহণ করা হয়। এ ক্ষেত্রেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ হারায়।
স্থানীয় মুদ্রার মূল্যমান যদি ক্রমাগত হ্রাস পেতে থাকে, তখন একশ্রেণির ব্যবসায়ী ডলার মজুত করতে থাকেন বেশি লাভের আশায়। তাই স্থানীয় মুদ্রাকে স্থিতিশীল রাখতে হয়; অর্থাৎ স্থানীয় মুদ্রার দাম যেন ক্রমাগত হ্রাস না পায়।
মোদ্দাকথা, আমদানি-রপ্তানিতে কম মূল্য ও উচ্চ মূল্য দেখিয়ে ব্যাংকের রিজার্ভ কমানো হয়। বিদেশের উপার্জিত অর্থ সঠিক পথে দেশে না এনে হুন্ডি ব্যবসা করার জন্য ও ব্যাংক থেকে ঋণের নামে ছলে-বলে-কৌশলে টাকা নিয়ে সঠিক খাতে ব্যবহার না করে বিদেশে পাঠালে রিজার্ভ কমতে থাকে।
উপরিউক্ত প্রক্রিয়ার সঙ্গে যেসব অসাধু ব্যক্তি জড়িত, তাঁদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা জরুরি। আইনের মাধ্যমে উল্লিখিত প্রক্রিয়া বন্ধ করে রিজার্ভ বাড়ানো যায়। তাতে দেশের উন্নতি হবে তো বটেই, নিজ দেশের সম্পদ নিজ দেশেই থেকে যাবে।
লেখক: প্রকৌশলী
আমাদের সমাজে একেক সময় একেকটা বিষয়ের ওপরে আলোচনা-সমালোচনা, মুখরোচক কল্পকাহিনি চলতেই থাকে। বেশ কয়েক মাস যাবৎ প্রায় সবার মুখে মুখে পাড়ায়-মহল্লায়, রাস্তার অলিগলিতে রিজার্ভ নিয়ে মুখরোচক গল্প শোনা যাচ্ছে। গ্রামের চায়ের দোকানে বিকেলবেলা একদল মানুষ দল বেঁধে পান-সিগারেটের সঙ্গে চা খেতে খেতে রিজার্ভের বিষয়ে নিজেদের মতো করে খোশগল্প করেন।
ভাবসাব এমন, মনে হয় এ দেশের সব মানুষই রিজার্ভ বিশেষজ্ঞ হয়ে গেছেন!এখন মূল কথায় আসি, বাংলাদেশ ব্যাংকে যে বৈদেশিক মুদ্রা, অর্থাৎ যে মুদ্রা আন্তর্জাতিকভাবে বিনিময় করা যায় তা-ই রিজার্ভ। আমাদের দেশে এই রিজার্ভ গণনা করা হয় বাংলাদেশ ব্যাংকে রক্ষিত ডলারের অঙ্কের পরিমাণ দেখে।
দেশের প্রায় এক কোটি মানুষ মধ্যপ্রাচ্য, মালয়েশিয়া, ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে কাজ করে তাঁদের কষ্টার্জিত শ্রমের মূল্য বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়ের মাধ্যমে বাংলাদেশে পাঠান। এভাবেই মূলত আমাদের দেশে বৈদেশিক মুদ্রা আসে।
আমাদের রপ্তানি বাণিজ্য মূলত পোশাক খাত, চামড়া খাত, পাটজাত পণ্য, বিভিন্ন প্রকার মাছ, সবজি এবং অন্যান্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কুটির শিল্পপণ্য।
এসব রপ্তানি করে আমরা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে থাকি। দেশের কিছু কিছু ব্যক্তি যাঁদের দ্বৈত সিটিজেনশিপ আছে, বিভিন্ন দেশে বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেন, যাঁদের ‘ডায়াসপোরা’ বলা হয়, তাঁরাও বৈদেশিক মুদ্রা দেশে পাঠান। তা ছাড়া, বিদেশি ব্যক্তি বা সংস্থা আমাদের দেশে যখন বিনিয়োগ করে, তখনো বৈদেশিক মুদ্রা চলে আসে।
আমরা যখন বিদেশ থেকে কোনো পণ্য আমদানি করি অথবা বিদেশি বিনিয়োগকারীরা তাদের বিনিয়োগকৃত অর্থের মুনাফা বা তাদের বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের বেতন-ভাতাদি তখন এই বৈদেশিক মুদ্রায় দেওয়া হয়। এটাই প্রচলিত নিয়ম। এভাবেই ব্যবসা-বাণিজ্য চলে। একদিকে বিদেশ থেকে অর্থ আসে, আবার প্রচলিত নিয়মে খরচ হয়। তবে স্বাভাবিক নিয়ম অনুসারে যদি কোনো দেশের ব্যাংকে তিন মাসের আমদানি পণ্যের রিজার্ভ থাকে, তাহলে সেই দেশের সঙ্গে আন্তর্জাতিকভাবে সবাই আমদানি-রপ্তানি করে।
প্রচলিত ধারার বাইরে রিজার্ভ কমার কিছু কারণ আছে। আজকের লেখার মূল বক্তব্য সেখানে। যদি কোনো দেশের স্থানীয় ব্যাংক থেকে কোনো ব্যক্তি বা শিল্পপ্রতিষ্ঠান অধিক হারে নিয়মকানুনের তোয়াক্কা না করে, সঠিক পরিমাণ সম্পদ ব্যাংকে বন্ধক না রেখে ঋণ নেয় এবং এই ঋণ যে খাতে ব্যয় করার কথা ছিল, সেই খাতে ব্যবহার না করে ছলচাতুরীর মাধ্যমে বিদেশে প্রেরণ করে, তখনই স্বদেশি ব্যাংকের রিজার্ভের ঘাটতি পড়ে।
শিল্পে ব্যবহারের জন্য আমদানি করা ক্যাপিটাল মেশিনারি ও কাঁচামালের ওপর আমদানি শুল্ক বলতে গেলে শূন্য। এসব উপকরণের আমদানি মূল্যে প্রচুর ওভার ইনভয়েজিং করা হয়, এ ক্ষেত্রে যে অঙ্কের অর্থের বেশি মূল্য দেখানো হয়, সেই অঙ্কের অর্থ দেশ থেকে পাচার হয়ে যায়। সবাই এটাকে ‘মানি লন্ডারিং’ বলে থাকে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় ব্যাংক। কারণ যে খাতে অর্থ লগ্নি করা হয়েছিল, সেই শিল্প খাত থাকে রুগ্ণ। এভাবে এই খাতের টাকা পাচার হয়ে যায়। ব্যাংক যত রুগ্ণ হবে, যত খেলাপি ঋণ বাড়বে, শিল্প রুগ্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশের সম্পদ পাচার হবে এবং রিজার্ভ কমতে থাকবে।
দেশে একশ্রেণির মানুষ আছেন যাঁরা ঘুষ, দুর্নীতি, কমিশন-বাণিজ্যসহ কালো পথে অর্থ উপার্জন করে সেই অর্থ আয়কর হিসেবে প্রদর্শন করতে পারেন না। তখন এই টাকা হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাঠান। এই শ্রেণির মানুষ খুবই উচ্চবিত্তের হয়। এসব মানুষ সরকারের উচ্চ পদে আসীন থাকেন, রাজনৈতিক দলের বড় পদে থাকেন অথবা সমাজের উচ্চ শ্রেণির মানুষ, যাঁদের কাছে কেউ প্রশ্ন করার সাহস রাখে না।
উল্লিখিত কারণগুলো ঘটে যখন, মানুষের দেশের প্রতি ভালোবাসা কমে যায় অথবা তাঁরা দেশে থাকতে ভরসা পান না। অনেক সময় মানুষ অতি লোভ ও উচ্চাকাঙ্ক্ষার কারণেও দেশের সম্পদ এভাবে পাচার করেন। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা—প্রায় সময় রক্ষকই ভক্ষক হয়। সাধারণ মানুষের এসব কর্মকাণ্ড দেখা, সমালোচনা করা ও মনে মনে ক্ষোভ প্রকাশ করা ছাড়া অন্য কোনো উপায় থাকে না।
আরেকটি পন্থা আছে। বিদেশে কর্মরত মানুষ তাঁদের টাকা ব্যাংকিং চ্যানেলে পাঠান না। তাঁরা যে দেশে কর্মরত আছেন, সেই দেশের প্রতিটি শহরে-অঞ্চলে একজন করে আমাদের দেশেরই দালাল আছে। এই দালাল চক্রের মাধ্যমে তাঁরা টাকা পাঠান। দালাল চক্রগুলো মাসের অথবা সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে শ্রমজীবী মানুষের কাছে গিয়ে তাঁদের উপার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ে নেয়। ওই সব মানুষের স্বদেশের ব্যাংক হিসাবে অথবা তাঁদের কোনো আত্মীয়-স্বজনের কাছে বাংলাদেশি মুদ্রায় সমপরিমাণ অর্থ পরিশোধ করে। অনেক সময় ২-১ শতাংশ বেশি মূল্য পরিশোধ করে। বিদেশে বসে ওই দালাল শ্রেণি এই বৈদেশিক মুদ্রা তাঁদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করে, যাঁরা এ দেশের টাকা বিদেশে পাচার করেন অথবা আমদানি পণ্যে কম মূল্য দেখিয়ে আমদানি করেন। এভাবে এই অর্থ পাচারকারী চক্র বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ এ কাজ করে যাচ্ছে। যদি বিদেশে কর্মরত মানুষের টাকা ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে আসত, তাহলে রিজার্ভ আরও ভালো থাকত। এই হুন্ডি ব্যবসা চলার কারণেও রিজার্ভ কমে।
আবার অনেক সময় রপ্তানি পণ্যে এলসিতে কম মূল্য দেখিয়ে বিদেশে যে পণ্যটি ক্রয় করল, তার কাছ থেকে অতিরিক্ত মূল্যে বৈদেশিক মুদ্রায় গ্রহণ করা হয়। এ ক্ষেত্রেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ হারায়।
স্থানীয় মুদ্রার মূল্যমান যদি ক্রমাগত হ্রাস পেতে থাকে, তখন একশ্রেণির ব্যবসায়ী ডলার মজুত করতে থাকেন বেশি লাভের আশায়। তাই স্থানীয় মুদ্রাকে স্থিতিশীল রাখতে হয়; অর্থাৎ স্থানীয় মুদ্রার দাম যেন ক্রমাগত হ্রাস না পায়।
মোদ্দাকথা, আমদানি-রপ্তানিতে কম মূল্য ও উচ্চ মূল্য দেখিয়ে ব্যাংকের রিজার্ভ কমানো হয়। বিদেশের উপার্জিত অর্থ সঠিক পথে দেশে না এনে হুন্ডি ব্যবসা করার জন্য ও ব্যাংক থেকে ঋণের নামে ছলে-বলে-কৌশলে টাকা নিয়ে সঠিক খাতে ব্যবহার না করে বিদেশে পাঠালে রিজার্ভ কমতে থাকে।
উপরিউক্ত প্রক্রিয়ার সঙ্গে যেসব অসাধু ব্যক্তি জড়িত, তাঁদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা জরুরি। আইনের মাধ্যমে উল্লিখিত প্রক্রিয়া বন্ধ করে রিজার্ভ বাড়ানো যায়। তাতে দেশের উন্নতি হবে তো বটেই, নিজ দেশের সম্পদ নিজ দেশেই থেকে যাবে।
লেখক: প্রকৌশলী
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
১২ ঘণ্টা আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৪ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৪ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৪ দিন আগে