Ajker Patrika

বাগেরহাট-৩ আসন: খালেক পরিবার নাকি নতুন মুখ

এস এস শোহান, বাগেরহাট ওসুমেল সারাফাত, মোংলা
বাগেরহাট-৩ আসন: খালেক পরিবার নাকি নতুন মুখ

অর্থনৈতিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ বাগেরহাট-৩ (রামপাল ও মোংলা) সংসদীয় আসনটি ১৯৯৬ সাল থেকেই একটি পরিবারের দখলে। গত ২৭ বছরে কখনো খুলনা সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক আবার কখনো তাঁর স্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার এই আসনের এমপি হয়ে আসছেন। সব শেষ ২০১৮ সালের নির্বাচনে জামায়াতের আব্দুল ওয়াদুদকে হারিয়ে তৃতীয়বারের মতো এমপি হন হাবিবুন নাহার। বর্তমানে তিনি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। তবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উপমন্ত্রীকে হটিয়ে দলীয় মনোনয়ন পেতে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন আওয়ামী লীগের ৬ নেতা। তাঁরা বিভিন্ন সভা-সমাবেশে উপমন্ত্রীর সমালোচনা করে বক্তব্য দিচ্ছেন।

আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হলেন রামপাল উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শেখ মো. আবু সাইদ, মোংলা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস আলী ইজারাদার, চিত্রনায়ক ও আওয়ামী লীগ নেতা শাকিল খান, খুলনা জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবু হানিফ, আওয়ামী লীগ নেতা ওবায়দুর রহমান ওবায়েদ ও আব্দুল লতিফ সোহেল। তাঁরা গণসংযোগের পাশাপাশি দলের বিভিন্ন সমাবেশ ও সভায় প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

দীর্ঘদিনের দলীয় কোন্দল নিরসন ও রামপাল-মোংলার উন্নয়নে এবার নতুন কাউকে নৌকার দায়িত্ব দেওয়ার আশা করছেন মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ইদ্রিস আলী ইজারাদার বলেন, দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিবার থেকে রামপাল-মোংলার জনপ্রতিনিধি এসেছেন। তাঁদের কিছু কার্যক্রমের কারণে দলের মধ্যে বিভক্তির সৃষ্টি হয়েছে। হাইব্রিড (নব্য) নেতাদের দলে পদ দিয়ে, ত্যাগী নেতাদের কোণঠাসা করে রেখেছেন।

মনোনয়নপ্রত্যাশী আবু সাইদ বলেন, ছাত্রজীবন থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। দুঃসময়ে জীবন বাজি রেখে দল গোছানোর কাজ করেছেন। কিন্তু ক্ষমতাবানদের কাছে প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন। নেত্রী (শেখ হাসিনা) মনোনয়ন দিলে এলাকার মানুষের উন্নয়ন করবেন।

সম্প্রতি ৬ মনোনয়নপ্রত্যাশীর মধ্যে আবু সাইদ, ইদ্রিস আলী ইজারাদার, শাকিল খান ও আবু হানিফ একত্র হয়ে সভা করেছেন। ওই সভা থেকে পরিবর্তনের জন্য জনগণকে একত্র হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। অন্যদিকে মেয়র ও এমপির সমর্থকেরা দাবি করেছেন, মাঠপর্যায়ে এসব মনোনয়নপ্রত্যাশীর তেমন সমর্থন নেই। মনোনয়ন পাওয়া নয়, খালেক দম্পতিকে কোণঠাসা করাই তাঁদের উদ্দেশ্য।

এ বিষয়ে হাবিবুন নাহার বলেন, তাঁর স্বামী দীর্ঘদিন ধরে এখানকার এমপি ছিলেন। তিনিও কয়েকবারের এমপি। জনগণের পাশে থেকে রামপাল-মোংলার উন্নয়ন করছেন। তাই আশা করছেন, এবারও দল তাঁকে মনোনয়ন দেবে।

আসন পুনরুদ্ধার
বিএনপি-জামায়াত জোটে থাকার সময় এই আসনে জামায়াতের নেতারাই মনোনয়ন পেতেন। দলীয় সূত্র বলছে, এবারও জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির আব্দুল ওয়াদুদ নির্বাচন করবেন। তবে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ভাষ্য, এবার জিততে হলে বিএনপি থেকে প্রার্থী দিতে হবে। এ ছাড়া আসন পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা নেই। 

নির্বাচনে অংশ নিলে বিএনপি থেকে মনোনয়ন চাইবেন কেন্দ্রীয় কমিটির সহপ্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ ফরিদুল ইসলাম। তাঁরা এলাকায় প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। বিভিন্ন সভা-সমাবেশের পাশাপাশি সামাজিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন।

ফরিদুল ইসলাম বলেছেন, দলের সমর্থন পেলে আসনটি উপহার দিতে পারবেন। তবে আব্দুল ওয়াদুদ জানিয়েছেন, জোট থাকলে তাঁরাই নির্বাচন করবেন।

এ দুই দলের বাইরে জাতীয় পার্টির (জাপা) রামপাল উপজেলা শাখার সভাপতি এম এ সবুর ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আব্দুল আজিজ সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত