Ajker Patrika

বাগেরহাটে থামছে না ঘের দখল লুটপাট ও চাঁদাবাজি

বাগেরহাট প্রতিনিধি
বাগেরহাটে থামছে না ঘের দখল লুটপাট ও চাঁদাবাজি

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে বাগেরহাটে আত্মগোপনে চলে গেছেন আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতা-কর্মী। এত দিন ধরে তাঁদের কবজায় থাকা বিভিন্ন খাল-নদী ও মৎস্যঘেরগুলো বিএনপির নেতা-কর্মীরা দখল করে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অন্যান্য ঘেরেও লুটপাট ও চাঁদাবাজি চলছে। এসব থেকে নেতা-কর্মীদের বিরত থাকতে কঠোর নির্দেশ দেওয়া হলেও তা খুব একটা কাজে আসছে না।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাগেরহাটের ৯ উপজেলার সবগুলোতেই ঘের ঘিরে নৈরাজ্য চলছে। তবে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ উঠেছে সদর, মোরেলগঞ্জ, রামপাল ও মোংলায়। সদর উপজেলার হোজির নদ দখল করে মাছ চাষ করতেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা। এখন ডেমা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আজাদ হাওলাদার, ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রসুল শেখসহ দলটির লোকজন এই দখল নিয়েছেন। জানতে চাইলে আজাদ বলেন, ‘এটা তো বড় নদী। গোড়ার দিকে হেদায়েতপুরে বিএনপি যারা করে, তারা বেড় দিছে। আর আগাটা আমাগো আয়ত্তে আছে।’

ডেমা ইউনিয়নে ব্যক্তিগত ঘেরও দখল করে নেওয়া হচ্ছে। সেখানকার এক সাবেক ইউপি সদস্য সজিব তরফদার ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর টানা কয়েক দিন এলাকায় শটগান নিয়ে ঘুরেছেন বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। তিনি যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তবে তাঁর দলীয় পদ নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তাঁর ভাই সোহেল তরফদারও যুবদল নেতা। সজিবসহ স্থানীয় বিএনপি নামধারী নেতা-কর্মীদের মাধ্যমে ওই এলাকায় দেড় শতাধিক ঘের থেকে মাছ ধরে নেওয়া, ঘের দখল ও চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া গেছে। কিন্তু ভয়ে তাঁদের বিষয়ে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না কেউ।

ঘেরমালিকেরা বলছেন, এখানকার মানুষের প্রধান পেশা মাছ চাষ। এখানে ৫ আগস্ট রাত থেকে পাঁচ-ছয়টি দলের ঘের দখল ও মাছ লুট শুরু হয়। প্রথমে একটি দল ঘেরে গিয়ে কর্মচারীদের হুমকি দিয়ে বের করে দিচ্ছে। পরে সেখান থেকে মাছ ধরে বিক্রি করছে। আরেক পক্ষ ঘেরমালিকের কাছে চাঁদা দাবি করছে। চাঁদা পাওয়ার পর ঘের ছেড়ে দিয়ে আসছে। একই ঘের থেকে দু-তিন পক্ষের মাছ ধরে নিয়ে আসার ঘটনাও ঘটেছে।

নাম প্রকাশ না করা এক ঘেরমালিক বলেন, ‘আমরা ১১ জন মিলে নিজেদের জমিতে একসঙ্গে মাছ চাষ করি। কেউ রাজনীতিতে না থাকলেও ৫ আগস্টের পর আমাদের ঘের দখল করে নেয়। পরে সজিব মেম্বারের লোকদের ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ঘের ছাড়াতে হইছে।’
দলীয় নেতা-কর্মীদের এসব অন্যায় থেকে বিরত থাকার জন্য সতর্ক করার পাশাপাশি ব্যবস্থাও নিচ্ছে বিএনপি। দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে গত শুক্রবার সজিব তরফদারকে দলের প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এ টি এম আকরাম হোসেন তালিম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে সজিবকে বহিষ্কার ও তাঁর সঙ্গে সাংগঠনিক কোনো সম্পর্ক না রাখতে সবাইকে বলা হয়েছে।

আকরাম হোসেন বলেন, ‘আরও যাঁদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাচ্ছে, তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো ধরনের অন্যায়কে আমরা সমর্থন ও প্রশ্রয় দেব না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলের আগে বাংলাদেশ কী করেছিল, সেদিকে নজর দিন: ভারত

কোলের সন্তান বিক্রি করে অলংকার, মোবাইল কিনলেন মা

ভ্যাটিকানের মতো একটি ক্ষুদ্র মুসলিম রাষ্ট্র নিয়ে জোর জল্পনা

বিএনপি ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষে নয়, বহুত্ববাদেরও বিপক্ষে

ভারতের সংখ্যালঘু ইস্যুতে বাংলাদেশের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাল দিল্লি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত