সাইফুল মাসুম, ঢাকা
রাজবাড়ী বিসিক শিল্পনগরীর বিশ্বাস রাইস মিল। ভেতরে ঢুকে দেখা গেল, আমজাদ হোসেন নামের এক শ্রমিক একাকী কুলায় চাল নিয়ে ধান বাছাই করছেন। বললেন, এই চাতালে আগে ধান থেকে চাল উৎপাদন করা হতো। এখন কুষ্টিয়া থেকে চাল কিনে এনে বিক্রি করা হয়। কারখানা বন্ধ।
এটিসহ রাজবাড়ীর বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) শিল্পনগরীর ৫৩টি কারখানার ইউনিট থাকলেও চালু রয়েছে মাত্র দুটি। এ দুটি হলো সাগর অয়েল মিল ও আড়ংয়ের কারখানা। তবে বিসিকের তথ্য বলছে, ৩৬টি শিল্প ইউনিট সচল রয়েছে।
রাজবাড়ীসহ সারা দেশে বিসিকের ৮০টি শিল্পনগরীই নানা সমস্যায় জর্জরিত। কোথাও প্লট বরাদ্দ নিলেও কারখানা হয়নি, আবার একসময় কারখানা থাকলেও এখন বাড়ি, দোকান কিংবা গুদামে পরিণত হয়েছে। যেখানে কারখানা করেছেন মালিকেরা, স্বস্তিতে নেই তাঁরাও। গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির সংকটে ধুঁকছেন তাঁরা। নিরাপত্তাহীনতার কারণে কারখানায় চুরি হচ্ছে প্রায়ই। বর্জ্য ও ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার অভাবে কোনো কোনো শিল্পনগরী পরিণত হয়েছে ময়লার ভাগাড়ে। পানি জমে সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতার। এসব নিয়ে বিসিকের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। বেসরকারি উদ্যোক্তাদের শিল্পকারখানা স্থাপনে সহায়তার জন্য ১৯৬০ সালে বিসিকের কার্যক্রম শুরু হয়।
শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা বলেছেন, বিসিকের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা আন্তরিক হলে এসব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
সম্প্রতি রাজবাড়ী সদরের বিসিক শিল্পনগরীতে সরেজমিনে দেখা গেছে, দুটি কারখানা ছাড়া অন্যগুলোতে তালা ঝুলছে। তালাবদ্ধ শাওন ইন্ডাস্ট্রির ফটকে ধাক্কা দিলে খুলে দেন একজন। তিনি ওই কারখানার মালিক রমেন সাহা। তিনি কারখানার উঠানে ধান শুকাচ্ছিলেন। জানালেন, ২৫ বছর ধরে ব্যবসা করছেন। ঋণ না পাওয়ায় ব্যবসা বড় করতে পারছেন না। ঈদ মৌসুমে সেমাই, বাকি সময়ে চিড়া, মুড়ি তৈরি করেন। বিসিক সার্ভিস চার্জ নিলেও সেবা দিচ্ছে না। ড্রেন নোংরা, সড়কে বাতি নেই। বিভিন্ন কারখানায় মাঝেমধ্যে চুরি হচ্ছে।
রাজবাড়ী বিসিক ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও সাগর অয়েল মিলের মালিক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘বিসিক গত কয়েক বছরে সার্ভিস চার্জ তিন গুণ বাড়িয়েছে। গ্যাস ও পানির ব্যবস্থা নেই। বিদ্যুৎও নিরবচ্ছিন্ন নয়। অর্থাভাবে ৯০ ভাগ শিল্পপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে।’
সম্প্রতি বিসিকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিসিকের অধিকাংশ শিল্পনগরীতে গ্যাস-সংযোগ নেই। যেগুলোতে আছে, সেগুলোর বেশির ভাগে গ্যাসের চাপ অনেক কম। পানির পাম্প থাকলেও বিসিক চাহিদামতো পানি দিতে পারছে না। কিছু কিছু শিল্পনগরীতে পানির স্তর অনেক নিচে নেমে যাওয়ায় পানি উঠছে না। মালিকেরা নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পানির চাহিদা পূরণ করছেন। অনেক শিল্পনগরীতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ থাকে না।
জানা গেছে, গ্যাস-সংযোগ না থাকায় নাটোর, গোপালগঞ্জ, ভোলাসহ কয়েকটি বিসিক শিল্পনগরীতে প্লট নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা।
শিল্পনগরীগুলোর সংকট নিয়ে বিসিকের চেয়ারম্যান মুহ. মাহবুবর রহমানের সঙ্গে কথা বলতে পরপর তিন দিন রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে গেলেও ব্যস্ততা দেখিয়ে সময় দেননি। পরে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘আমি কোনো কথা বলতে পারব না।’
তবে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব জাকিয়া সুলতানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিসিকের এই অবস্থা এক দিনে হয়নি। তবে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে বিসিকের অনেক সক্ষমতা রয়েছে। বিসিক নিয়ে অ্যাকশন প্ল্যান করে কাজ শুরু হয়েছে। গ্যাসের সমস্যা শুধু বিসিকের নয়, জাতীয় সংকট।
শিল্প প্লটে বাড়ি, দোকান
রাজশাহীর বিসিক শিল্পনগরীর ২০৫ নম্বর প্লটে একটি তিনতলা বাড়ির নিচতলায় কয়েকটি দোকান। দোতলায় পরিবার নিয়ে থাকেন জিয়া আলী। তৃতীয় তলায় গুদাম ভাড়া দেওয়ার জন্য বাড়ির সামনে সাইনবোর্ড টাঙানো। জিয়া আলী জানান, প্রায় দেড় বিঘার এই প্লট বরাদ্দ পেয়েছিলেন তাঁর বাবা কেরামত আলী। অনেক আগে তাঁদের চালকল ছিল। সেটি বন্ধ হয়ে গেছে। এখন দোকানপাট আর গুদাম ভাড়া দিয়ে তিনি চলছেন।
রাজশাহী বিসিকের এমন অনেক প্লটেই এখন শিল্পকারখানা চলছে না। যাঁরা প্লট বরাদ্দ পেয়েছিলেন, তাঁদের পরিবার বসবাস করছে। জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা বিসিকের ভারপ্রাপ্ত উপমহাব্যবস্থাপক জাফর বায়েজীদ বলেন, ‘যেসব প্লটে বাড়ি আছে, সেগুলো উচ্ছেদ করতে একটি কমিটি আছে। জেলা প্রশাসক এ কমিটির সভাপতি। কমিটি সম্প্রতি বেশ কিছু পরিবারকে নোটিশ করে উচ্ছেদ করেছে।’
৪২ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত মাদারীপুরের বিসিকে বেশ কিছু প্লট গুদাম হিসেবে ভাড়া দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। সেখানে শিল্পনগরী বলতে মানুষ শহরের পুরান বাজার ও তরমুগরিয়ার আসবাবের মার্কেট বোঝে।
কুমিল্লায় বিসিকের শিল্প প্লটে বাসা ভাড়া দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। কুমিল্লা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদ পারভেজ খান ইমরান বলেন, ‘কুমিল্লা বিসিকে প্রকৃত ব্যবসায়ীদের বেশির ভাগই নেই। অনেকের প্লটে কারখানা নেই, ঘর করে ভাড়া দিচ্ছেন। এ বিষয়ে নজর দিতে হবে।’
যেন ময়লার ভাগাড়
বর্জ্য ব্যবস্থাপনার নাজুক অবস্থার কারণে কয়েকটি বিসিক শিল্পনগরী যেন পরিণত হয়েছে ময়লার ভাগাড়ে। এর একটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিসিক। জেলার নন্দনপুরে ২২ একর জমিতে গড়ে তোলা এই শিল্পনগরীতে দেখা যায়, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বালাই নেই। ড্রেন থেকে উপচে পড়ছে ময়লা পানি। যত্রতত্র পড়ে আছে প্লাস্টিকের পরিত্যক্ত বোতল, পলিথিনসহ বিভিন্ন আবর্জনা। মাঝখানে থাকা পুকুর ময়লা ফেলে অনেকটা ভরাট করে ফেলা হয়েছে। বিসিক শিল্পনগরী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জামাল উদ্দিন বলেন, ‘আগে বিসিকের পুকুরের স্বচ্ছ পানিতে সবাই গোসল করত। এখন দুর্গন্ধে পাশ দিয়ে হাঁটা যায় না।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিসিকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. রোকন উদ্দিন ভূইয়া বলেন, ‘সিলেট-কুমিল্লা মহাসড়কে কাজ চলার কারণে বিসিকে প্রায়ই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে।’
সম্প্রতি বিসিকের গবেষণা শাখার জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিসিক শিল্পনগরীর প্রধান সমস্যাগুলোর একটি হলো অবকাঠামোগত সমস্যা। শিল্পনগরীর অধিকাংশ রাস্তা গর্ত ও খানাখন্দে ভরা। একটু বৃষ্টি হলে অনেক রাস্তা পানিতে তলিয়ে যায়। এর ফলে উদ্যোক্তাদের সমস্যায় পড়তে হয়। জরিপে অংশগ্রহণকারী প্রায় ৩২ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন, বিসিক শিল্পনগরীর ড্রেনেজ ব্যবস্থার ৭৯ শতাংশ ব্যবহার উপযোগী নয়।
হরহামেশাই হচ্ছে চুরি
নোয়াখালী বিসিক শিল্পনগরীর কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, শিল্পনগরীর সামনের সড়কে বাতি নেই। সন্ধ্যার পর কারখানা ছাড়া বাকি অংশ অন্ধকারে থাকে। বিকেল থেকে বসে মাদকসেবীদের আড্ডা। রাতে বিভিন্ন কারখানায় চুরি হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিসিকের ব্যবসায়ীরা বলেন, কারখানার ব্যাটারি ও মোটর খুলে নিয়ে যায় চোরেরা। সম্প্রতি জান্নাত ফ্লাওয়ার মিলের আটটি মোটর চুরি গেছে।
সিলেট শহরতলির খাদিমনগরে বিসিকের শিল্প মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ সুমন আজকের পত্রিকাকে বলেন, সীমানাপ্রাচীর না থাকায় আশপাশের গ্রামের মানুষ চলাচল করে। মাদকসেবীরা মাদক সেবন ও কেনাবেচা করে। সবচেয়ে বড় সমস্যা চাঁদাবাজি। প্রায়ই বিভিন্ন দলের নামে এসে চাঁদাবাজেরা চাঁদা দাবি করে।
বিসিকের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিসিকের অধিকাংশ শিল্পনগরীতে সীমানাপ্রাচীর এবং নিরাপত্তা ফটক নেই। সিসি ক্যামেরা ও নিরাপত্তাকর্মীও নেই। এতে বহিরাগতরা উৎপাত করে। এর জন্য জনবল ঘাটতিকে দায়ী করছেন তাঁরা। বিসিকের তথ্য অনুসারে, সংস্থাটিতে অনুমোদিত জনবল ২ হাজার ৪১৪ জন। তাঁদের মধ্যে কর্মকর্তা ৯৪১ জন এবং কর্মচারী ১ হাজার ৪৭৩ জন। তবে কর্মরত রয়েছেন ৫৫৪ কর্মকর্তা, ১ হাজার ৫৯ কর্মচারীসহ মোট ১ হাজার ৬১৩ জন। শূন্য পদ ৮০১টি।
দীর্ঘসূত্রতায় খালি থাকছে প্লট
বিসিকের সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন অনুসারে, বিসিকের ৮০টি শিল্পনগরীতে ১১ হাজার ৯২২টি প্লটের মধ্যে ১০ হাজার ৭৬১টি শিল্পকারখানার জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ৫ হাজার ৯৪৯টি শিল্প ইউনিট স্থাপিত হয়েছে। এগুলোর মধ্যে উৎপাদনে রয়েছে ৪ হাজার ৪৩৪টি। এখনো ১ হাজার ২৪৪টি প্লট বরাদ্দ হয়নি। বিসিক-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দাপ্তরিক দীর্ঘসূত্রতার কারণে অনেক সময় রুগ্ণ কারখানা বা অব্যবহৃত প্লট নতুন উদ্যোক্তাদের মাঝে বরাদ্দ বা হস্তান্তর করা যায় না। রুগ্ণ প্রতিষ্ঠানের প্লট বরাদ্দ বাতিল প্রক্রিয়াও দীর্ঘ।
রাজবাড়ী বিসিক ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি দেলোয়ার হোসেন বলেন, নতুন কারখানার জন্য তিনি তিন বছর আগে প্লট বরাদ্দ পেয়েছেন, কিন্তু এখনো বুঝে পাননি।
গাইবান্ধার বিসিক শিল্পনগরীতে বরাদ্দ দেওয়া ৪০ শতাংশ প্লটেই শিল্পকারখানা হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, বরাদ্দ নিয়ে দখলে রাখা হয়েছে। অথচ ক্ষুদ্রশিল্পে আগ্রহী উদ্যোক্তা থাকলেও সেখানে প্লট খালি নেই। গাইবান্ধার উদ্যোক্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিসিকের শুরুতে অনেকেই প্লট নিয়ে দখল করে আছেন, কারখানা করেননি। অথচ আমরা নতুন উদ্যোক্তারা বিসিকে জায়গার অভাবে পণ্য তৈরি করতে পারছি না। আমাদের দাবি, যাঁরা প্লট বরাদ্দ নিয়ে কারখানা চালু করেননি, সেগুলো নতুন করে বরাদ্দ দেওয়া হোক।’
জানতে চাইলে জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সমিতির (নাসিব) সভাপতি মির্জা নুরুল ঘানি শোভন বলেন, ‘আগে প্লটের মূল্য ২০ বছরে পরিশোধ করা যেত। সেটা এখন কমিয়ে পাঁচ বছর করা হয়েছে। তা ছাড়া কারখানা স্থাপনে সরকারের বিশেষ ব্যবস্থা নেই। অনেকে ভবিষ্যৎ লাভের চিন্তা করে প্লট বরাদ্দ নিয়ে কারখানা করেন না।’
তবে বিসিকের পরিচালক (শিল্প উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ) মোহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, ‘আমরা খালি প্লট দ্রুত হস্তান্তর করার ব্যবস্থা করি। তবু আইনি জটিলতায় কিছু প্লট হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় অনেক সময় দেরি হয়।’
বিসিক ঘিরে নতুন আশা
অনেক সংকট থাকলেও ঘুরে দাঁড়ানোর আশা বিসিক-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের। বিসিকের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, বিসিক দেশব্যাপী শিল্পনগরী স্থাপনের মহাপরিকল্পনা নিয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে ৪০ হাজার একর জমিতে ১০০টি শিল্পনগরী স্থাপনের মাধ্যমে দুই কোটি লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। জাতীয় আয় বাড়বে।
গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ক্ষুদ্র মাঝারি প্রতিষ্ঠানের অনেক প্রতিবন্ধকতা থাকে। সেগুলো কাটানোর জন্য সরকারি সহযোগিতার অংশ হিসেবে বিসিকের শিল্পনগরীগুলো করা। কিন্তু যে ধরনের সুবিধা দেওয়ার কথা, অনেক ক্ষেত্রে শিল্পমালিকেরা সেসব পাচ্ছেন না। বিসিকের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন।’
শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিসিক আইনকে সময়োপযোগী করতে কাজ চলছে। শিগগির এই আইন জাতীয় সংসদে ওঠার কথা রয়েছে। বিসিক নিয়ে মহাপরিকল্পনাও করা হয়েছে। আশা করি, আগামী দিনে সমৃদ্ধ দেশ গড়তে বিসিক আরও বেশি ভূমিকা রাখবে।’
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন আজকের পত্রিকার সিলেট ও রাজশাহীর নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজবাড়ী, মাদারীপুর, কুমিল্লা, গাইবান্ধা, ভোলা, বরগুনা, সাতক্ষীরা, নাটোর, নোয়াখালী, গোপালগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও মানিকছড়ি (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি]
রাজবাড়ী বিসিক শিল্পনগরীর বিশ্বাস রাইস মিল। ভেতরে ঢুকে দেখা গেল, আমজাদ হোসেন নামের এক শ্রমিক একাকী কুলায় চাল নিয়ে ধান বাছাই করছেন। বললেন, এই চাতালে আগে ধান থেকে চাল উৎপাদন করা হতো। এখন কুষ্টিয়া থেকে চাল কিনে এনে বিক্রি করা হয়। কারখানা বন্ধ।
এটিসহ রাজবাড়ীর বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) শিল্পনগরীর ৫৩টি কারখানার ইউনিট থাকলেও চালু রয়েছে মাত্র দুটি। এ দুটি হলো সাগর অয়েল মিল ও আড়ংয়ের কারখানা। তবে বিসিকের তথ্য বলছে, ৩৬টি শিল্প ইউনিট সচল রয়েছে।
রাজবাড়ীসহ সারা দেশে বিসিকের ৮০টি শিল্পনগরীই নানা সমস্যায় জর্জরিত। কোথাও প্লট বরাদ্দ নিলেও কারখানা হয়নি, আবার একসময় কারখানা থাকলেও এখন বাড়ি, দোকান কিংবা গুদামে পরিণত হয়েছে। যেখানে কারখানা করেছেন মালিকেরা, স্বস্তিতে নেই তাঁরাও। গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির সংকটে ধুঁকছেন তাঁরা। নিরাপত্তাহীনতার কারণে কারখানায় চুরি হচ্ছে প্রায়ই। বর্জ্য ও ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার অভাবে কোনো কোনো শিল্পনগরী পরিণত হয়েছে ময়লার ভাগাড়ে। পানি জমে সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতার। এসব নিয়ে বিসিকের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। বেসরকারি উদ্যোক্তাদের শিল্পকারখানা স্থাপনে সহায়তার জন্য ১৯৬০ সালে বিসিকের কার্যক্রম শুরু হয়।
শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা বলেছেন, বিসিকের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা আন্তরিক হলে এসব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
সম্প্রতি রাজবাড়ী সদরের বিসিক শিল্পনগরীতে সরেজমিনে দেখা গেছে, দুটি কারখানা ছাড়া অন্যগুলোতে তালা ঝুলছে। তালাবদ্ধ শাওন ইন্ডাস্ট্রির ফটকে ধাক্কা দিলে খুলে দেন একজন। তিনি ওই কারখানার মালিক রমেন সাহা। তিনি কারখানার উঠানে ধান শুকাচ্ছিলেন। জানালেন, ২৫ বছর ধরে ব্যবসা করছেন। ঋণ না পাওয়ায় ব্যবসা বড় করতে পারছেন না। ঈদ মৌসুমে সেমাই, বাকি সময়ে চিড়া, মুড়ি তৈরি করেন। বিসিক সার্ভিস চার্জ নিলেও সেবা দিচ্ছে না। ড্রেন নোংরা, সড়কে বাতি নেই। বিভিন্ন কারখানায় মাঝেমধ্যে চুরি হচ্ছে।
রাজবাড়ী বিসিক ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও সাগর অয়েল মিলের মালিক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘বিসিক গত কয়েক বছরে সার্ভিস চার্জ তিন গুণ বাড়িয়েছে। গ্যাস ও পানির ব্যবস্থা নেই। বিদ্যুৎও নিরবচ্ছিন্ন নয়। অর্থাভাবে ৯০ ভাগ শিল্পপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে।’
সম্প্রতি বিসিকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিসিকের অধিকাংশ শিল্পনগরীতে গ্যাস-সংযোগ নেই। যেগুলোতে আছে, সেগুলোর বেশির ভাগে গ্যাসের চাপ অনেক কম। পানির পাম্প থাকলেও বিসিক চাহিদামতো পানি দিতে পারছে না। কিছু কিছু শিল্পনগরীতে পানির স্তর অনেক নিচে নেমে যাওয়ায় পানি উঠছে না। মালিকেরা নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পানির চাহিদা পূরণ করছেন। অনেক শিল্পনগরীতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ থাকে না।
জানা গেছে, গ্যাস-সংযোগ না থাকায় নাটোর, গোপালগঞ্জ, ভোলাসহ কয়েকটি বিসিক শিল্পনগরীতে প্লট নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা।
শিল্পনগরীগুলোর সংকট নিয়ে বিসিকের চেয়ারম্যান মুহ. মাহবুবর রহমানের সঙ্গে কথা বলতে পরপর তিন দিন রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে গেলেও ব্যস্ততা দেখিয়ে সময় দেননি। পরে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘আমি কোনো কথা বলতে পারব না।’
তবে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব জাকিয়া সুলতানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিসিকের এই অবস্থা এক দিনে হয়নি। তবে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে বিসিকের অনেক সক্ষমতা রয়েছে। বিসিক নিয়ে অ্যাকশন প্ল্যান করে কাজ শুরু হয়েছে। গ্যাসের সমস্যা শুধু বিসিকের নয়, জাতীয় সংকট।
শিল্প প্লটে বাড়ি, দোকান
রাজশাহীর বিসিক শিল্পনগরীর ২০৫ নম্বর প্লটে একটি তিনতলা বাড়ির নিচতলায় কয়েকটি দোকান। দোতলায় পরিবার নিয়ে থাকেন জিয়া আলী। তৃতীয় তলায় গুদাম ভাড়া দেওয়ার জন্য বাড়ির সামনে সাইনবোর্ড টাঙানো। জিয়া আলী জানান, প্রায় দেড় বিঘার এই প্লট বরাদ্দ পেয়েছিলেন তাঁর বাবা কেরামত আলী। অনেক আগে তাঁদের চালকল ছিল। সেটি বন্ধ হয়ে গেছে। এখন দোকানপাট আর গুদাম ভাড়া দিয়ে তিনি চলছেন।
রাজশাহী বিসিকের এমন অনেক প্লটেই এখন শিল্পকারখানা চলছে না। যাঁরা প্লট বরাদ্দ পেয়েছিলেন, তাঁদের পরিবার বসবাস করছে। জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা বিসিকের ভারপ্রাপ্ত উপমহাব্যবস্থাপক জাফর বায়েজীদ বলেন, ‘যেসব প্লটে বাড়ি আছে, সেগুলো উচ্ছেদ করতে একটি কমিটি আছে। জেলা প্রশাসক এ কমিটির সভাপতি। কমিটি সম্প্রতি বেশ কিছু পরিবারকে নোটিশ করে উচ্ছেদ করেছে।’
৪২ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত মাদারীপুরের বিসিকে বেশ কিছু প্লট গুদাম হিসেবে ভাড়া দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। সেখানে শিল্পনগরী বলতে মানুষ শহরের পুরান বাজার ও তরমুগরিয়ার আসবাবের মার্কেট বোঝে।
কুমিল্লায় বিসিকের শিল্প প্লটে বাসা ভাড়া দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। কুমিল্লা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদ পারভেজ খান ইমরান বলেন, ‘কুমিল্লা বিসিকে প্রকৃত ব্যবসায়ীদের বেশির ভাগই নেই। অনেকের প্লটে কারখানা নেই, ঘর করে ভাড়া দিচ্ছেন। এ বিষয়ে নজর দিতে হবে।’
যেন ময়লার ভাগাড়
বর্জ্য ব্যবস্থাপনার নাজুক অবস্থার কারণে কয়েকটি বিসিক শিল্পনগরী যেন পরিণত হয়েছে ময়লার ভাগাড়ে। এর একটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিসিক। জেলার নন্দনপুরে ২২ একর জমিতে গড়ে তোলা এই শিল্পনগরীতে দেখা যায়, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বালাই নেই। ড্রেন থেকে উপচে পড়ছে ময়লা পানি। যত্রতত্র পড়ে আছে প্লাস্টিকের পরিত্যক্ত বোতল, পলিথিনসহ বিভিন্ন আবর্জনা। মাঝখানে থাকা পুকুর ময়লা ফেলে অনেকটা ভরাট করে ফেলা হয়েছে। বিসিক শিল্পনগরী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জামাল উদ্দিন বলেন, ‘আগে বিসিকের পুকুরের স্বচ্ছ পানিতে সবাই গোসল করত। এখন দুর্গন্ধে পাশ দিয়ে হাঁটা যায় না।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিসিকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. রোকন উদ্দিন ভূইয়া বলেন, ‘সিলেট-কুমিল্লা মহাসড়কে কাজ চলার কারণে বিসিকে প্রায়ই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে।’
সম্প্রতি বিসিকের গবেষণা শাখার জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিসিক শিল্পনগরীর প্রধান সমস্যাগুলোর একটি হলো অবকাঠামোগত সমস্যা। শিল্পনগরীর অধিকাংশ রাস্তা গর্ত ও খানাখন্দে ভরা। একটু বৃষ্টি হলে অনেক রাস্তা পানিতে তলিয়ে যায়। এর ফলে উদ্যোক্তাদের সমস্যায় পড়তে হয়। জরিপে অংশগ্রহণকারী প্রায় ৩২ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন, বিসিক শিল্পনগরীর ড্রেনেজ ব্যবস্থার ৭৯ শতাংশ ব্যবহার উপযোগী নয়।
হরহামেশাই হচ্ছে চুরি
নোয়াখালী বিসিক শিল্পনগরীর কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, শিল্পনগরীর সামনের সড়কে বাতি নেই। সন্ধ্যার পর কারখানা ছাড়া বাকি অংশ অন্ধকারে থাকে। বিকেল থেকে বসে মাদকসেবীদের আড্ডা। রাতে বিভিন্ন কারখানায় চুরি হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিসিকের ব্যবসায়ীরা বলেন, কারখানার ব্যাটারি ও মোটর খুলে নিয়ে যায় চোরেরা। সম্প্রতি জান্নাত ফ্লাওয়ার মিলের আটটি মোটর চুরি গেছে।
সিলেট শহরতলির খাদিমনগরে বিসিকের শিল্প মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ সুমন আজকের পত্রিকাকে বলেন, সীমানাপ্রাচীর না থাকায় আশপাশের গ্রামের মানুষ চলাচল করে। মাদকসেবীরা মাদক সেবন ও কেনাবেচা করে। সবচেয়ে বড় সমস্যা চাঁদাবাজি। প্রায়ই বিভিন্ন দলের নামে এসে চাঁদাবাজেরা চাঁদা দাবি করে।
বিসিকের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিসিকের অধিকাংশ শিল্পনগরীতে সীমানাপ্রাচীর এবং নিরাপত্তা ফটক নেই। সিসি ক্যামেরা ও নিরাপত্তাকর্মীও নেই। এতে বহিরাগতরা উৎপাত করে। এর জন্য জনবল ঘাটতিকে দায়ী করছেন তাঁরা। বিসিকের তথ্য অনুসারে, সংস্থাটিতে অনুমোদিত জনবল ২ হাজার ৪১৪ জন। তাঁদের মধ্যে কর্মকর্তা ৯৪১ জন এবং কর্মচারী ১ হাজার ৪৭৩ জন। তবে কর্মরত রয়েছেন ৫৫৪ কর্মকর্তা, ১ হাজার ৫৯ কর্মচারীসহ মোট ১ হাজার ৬১৩ জন। শূন্য পদ ৮০১টি।
দীর্ঘসূত্রতায় খালি থাকছে প্লট
বিসিকের সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন অনুসারে, বিসিকের ৮০টি শিল্পনগরীতে ১১ হাজার ৯২২টি প্লটের মধ্যে ১০ হাজার ৭৬১টি শিল্পকারখানার জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ৫ হাজার ৯৪৯টি শিল্প ইউনিট স্থাপিত হয়েছে। এগুলোর মধ্যে উৎপাদনে রয়েছে ৪ হাজার ৪৩৪টি। এখনো ১ হাজার ২৪৪টি প্লট বরাদ্দ হয়নি। বিসিক-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দাপ্তরিক দীর্ঘসূত্রতার কারণে অনেক সময় রুগ্ণ কারখানা বা অব্যবহৃত প্লট নতুন উদ্যোক্তাদের মাঝে বরাদ্দ বা হস্তান্তর করা যায় না। রুগ্ণ প্রতিষ্ঠানের প্লট বরাদ্দ বাতিল প্রক্রিয়াও দীর্ঘ।
রাজবাড়ী বিসিক ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি দেলোয়ার হোসেন বলেন, নতুন কারখানার জন্য তিনি তিন বছর আগে প্লট বরাদ্দ পেয়েছেন, কিন্তু এখনো বুঝে পাননি।
গাইবান্ধার বিসিক শিল্পনগরীতে বরাদ্দ দেওয়া ৪০ শতাংশ প্লটেই শিল্পকারখানা হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, বরাদ্দ নিয়ে দখলে রাখা হয়েছে। অথচ ক্ষুদ্রশিল্পে আগ্রহী উদ্যোক্তা থাকলেও সেখানে প্লট খালি নেই। গাইবান্ধার উদ্যোক্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিসিকের শুরুতে অনেকেই প্লট নিয়ে দখল করে আছেন, কারখানা করেননি। অথচ আমরা নতুন উদ্যোক্তারা বিসিকে জায়গার অভাবে পণ্য তৈরি করতে পারছি না। আমাদের দাবি, যাঁরা প্লট বরাদ্দ নিয়ে কারখানা চালু করেননি, সেগুলো নতুন করে বরাদ্দ দেওয়া হোক।’
জানতে চাইলে জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সমিতির (নাসিব) সভাপতি মির্জা নুরুল ঘানি শোভন বলেন, ‘আগে প্লটের মূল্য ২০ বছরে পরিশোধ করা যেত। সেটা এখন কমিয়ে পাঁচ বছর করা হয়েছে। তা ছাড়া কারখানা স্থাপনে সরকারের বিশেষ ব্যবস্থা নেই। অনেকে ভবিষ্যৎ লাভের চিন্তা করে প্লট বরাদ্দ নিয়ে কারখানা করেন না।’
তবে বিসিকের পরিচালক (শিল্প উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ) মোহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, ‘আমরা খালি প্লট দ্রুত হস্তান্তর করার ব্যবস্থা করি। তবু আইনি জটিলতায় কিছু প্লট হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় অনেক সময় দেরি হয়।’
বিসিক ঘিরে নতুন আশা
অনেক সংকট থাকলেও ঘুরে দাঁড়ানোর আশা বিসিক-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের। বিসিকের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, বিসিক দেশব্যাপী শিল্পনগরী স্থাপনের মহাপরিকল্পনা নিয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে ৪০ হাজার একর জমিতে ১০০টি শিল্পনগরী স্থাপনের মাধ্যমে দুই কোটি লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। জাতীয় আয় বাড়বে।
গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ক্ষুদ্র মাঝারি প্রতিষ্ঠানের অনেক প্রতিবন্ধকতা থাকে। সেগুলো কাটানোর জন্য সরকারি সহযোগিতার অংশ হিসেবে বিসিকের শিল্পনগরীগুলো করা। কিন্তু যে ধরনের সুবিধা দেওয়ার কথা, অনেক ক্ষেত্রে শিল্পমালিকেরা সেসব পাচ্ছেন না। বিসিকের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন।’
শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিসিক আইনকে সময়োপযোগী করতে কাজ চলছে। শিগগির এই আইন জাতীয় সংসদে ওঠার কথা রয়েছে। বিসিক নিয়ে মহাপরিকল্পনাও করা হয়েছে। আশা করি, আগামী দিনে সমৃদ্ধ দেশ গড়তে বিসিক আরও বেশি ভূমিকা রাখবে।’
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন আজকের পত্রিকার সিলেট ও রাজশাহীর নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজবাড়ী, মাদারীপুর, কুমিল্লা, গাইবান্ধা, ভোলা, বরগুনা, সাতক্ষীরা, নাটোর, নোয়াখালী, গোপালগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও মানিকছড়ি (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি]
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
২ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
২ দিন আগে