আয় বাড়াতে পণ্য পরিবহনে প্রতিটি আন্তনগর ট্রেনে লাগেজ ভ্যান যুক্ত করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ২৪ সেপ্টেম্বর লাগেজ ভ্যান উদ্বোধন করা হবে। ট্রেনগুলোয় মোট ১২৫টি লাগেজ ভ্যান যুক্ত হচ্ছে। রেফ্রিজারেটর ভ্যানও থাকবে।

রেলপথমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন এ লাগেজ ভ্যান উদ্বোধন করবেন। আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে গতকাল সোমবার তিনি বলেন, লাগেজ ভ্যানে কৃষকেরা পণ্য পরিবহন করতে পারবেন। ১২৫টি লাগেজ ভ্যান আসছে। এর মধ্যে ৭৫টি মিটারগেজ ও ৫০টি ব্রডগেজের ট্রেনের জন্য। ব্রডগেজে ১০টি ও মিটারগেজে ১৬টি রেফ্রিজারেটর থাকবে। এতে খুলনা বা কক্সবাজার থেকে মাছ ও অন্যান্য পণ্য আনা যাবে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, রেলের আয়ের অন্যতম খাত পণ্য পরিবহন। রেলওয়েতে থাকা ৪১টি মিটারগেজ ও ১০টি ব্রডগেজের লাগেজ ভ্যানের বেশির ভাগেরই অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল পেরিয়ে গেছে। এ কারণে পণ্য পরিবহন থেকে যথেষ্ট আয় আসছে না। নতুন লাগেজ ভ্যান সংগ্রহের জন্য ২০২০ সালের ৩১ আগস্ট বাংলাদেশ রেলওয়ে ও চীনের মধ্যে দুটি চুক্তি হয়। ২০২২ সালের জুলাই থেকে এগুলো দেশে পৌঁছানোর কথা থাকলেও এখনো সব ভ্যান আসেনি। ফলে শুরুতে শুধু পশ্চিমাঞ্চলের আন্তনগর ট্রেনের সঙ্গে লাগেজ ভ্যান যুক্ত হবে।

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ৭৫টি মিটারগেজ লাগেজ ভ্যানের মধ্যে ৩০টি ও ৫০টি ব্রডগেজ লাগেজ ভ্যানের মধ্যে ৩০টি জেনারেল লাগেজ ভ্যানে সবুজ শাক সবজিসহ মৌসুমি ফল ও ফুল পরিবহনে ব্যবহার হবে। এ ছাড়া ৭৫টি মিটারগেজ লাগেজ ভ্যানের মধ্যে ১৬টি ও ৫০টি ব্রডগেজ লাগেজ ভ্যানের মধ্যে ১০টি রেফ্রিজারেটেড লাগেজ ভ্যানে পচনশীল দ্রব্য (মাছ, মাংস, দুধ) পরিবহনে ব্যবহার হবে। 

লাগেজ ভ্যানগুলো উন্নতমানের বগি সংবলিত হওয়ার কারণে মিটারগেজ ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার, ব্রডগেজ ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার গতির লাগেজ ট্রেন চালানো হবে। আবার অটোমেটিক এয়ার ব্রেক সিস্টেম ভ্যানগুলো আন্তনগর সব ট্রেনে সংযোজন করে অতি দ্রুত এবং নিরাপদ ট্রেন চালানো সম্ভব হবে। 

রেলওয়ে সূত্র বলছে, সোমবারই এই উদ্বোধনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। তাই এখনো ঠিকভাবে সব গোছানো হয়নি। আবার অনেক লাগেজ ভ্যান এখনো দেশে আসেনি। এই প্রকল্পের যিনি পরিচালক তিনি অবসরে গেছেন।

বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. কামরুল আহসান বলেন, উদ্বোধনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখনো সবকিছু গোছানো হয়নি। 

সূত্র আরও জানায়, এসব ভ্যান সংগ্রহ করা হচ্ছে যাত্রীসেবা ও পণ্য পরিবহনের মান বাড়াতে নেওয়া রোলিং স্টক অপারেশন উন্নয়ন প্রকল্পের (রোলিং স্টক সংগ্রহ) অধীনে। ২০১৮ সালে অনুমোদন হওয়া এ প্রকল্পের ব্যয় ৩ হাজার ৬০২ কোটি ৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দেবে ৭৬৫ কোটি ৫৩ লাখ টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য হিসেবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ঋণ ২ হাজার ৮৩৯ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত হলেও পরে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়।