পানের উৎপাদন কম হলেও দামে খুশি চাষি

ফারুক হোসাইন রাজ, কলারোয়া (সাতক্ষীরা)
প্রকাশ : ২৬ ডিসেম্বর ২০২২, ১২: ২০

শীতে পানগাছে নতুন পাতা গজায় না। চাহিদা অনুযায়ী এ সময় পানের উৎপাদন কম হওয়ায় দামও থাকে কিছুটা চড়া। মহামারি করোনাভাইরাসের প্রভাব, অনাবৃষ্টি, খরাসহ নানান প্রতিকূলতায় গত দুই বছর পান বিক্রি করে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হন পানচাষিরা।তবে চলতি বছর চড়া দামে পান বিক্রি করতে পেরে খুশি সাতক্ষীরা কলারোয়ার পানচাষিরা।

কলারোয়া পৌর সদরের মুরারিকাটি এলাকার পানচাষি মফিজুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছরের এই শীত মৌসুমে পানের দাম একটু বেশি থাকে। কারণ, এ সময় পানগাছের কচি পাতার বৃদ্ধি ঘটে না, পান পাতা পেকে বাদামি রঙের হয়ে যায়, নির্দিষ্ট সময়ে পান কাটতে না পারলে ঝরে যায়, এ সময় গাছ থেকে সীমিত পরিমাণ পান কেটে বিক্রি করা যায়। সব মিলিয়ে এ মৌসুমে পানের উৎপাদন কম হয়।

এসব কারণে দাম বেড়ে যায়। তবে চলতি মৌসুমে পানের স্বাভাবিক দামের থেকে কয়েক গুণ বাড়ায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।কলারোয়ার বড় পাইকারি পানের বাজার সরসকাটি ঘুরে দেখা যায়, বেলা দেড়টার দিকে পানের বাজার বসে মাত্র আধঘণ্টার মধ্যে শেষ হয় বেচাবিক্রি। সপ্তাহে রবি ও বৃহস্পতিবার বসে এ হাট। এখানে বড় পান বিক্রি হচ্ছে প্রতি পোন ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, মাঝারি পান ৮০ থেকে ১০০ টাকা, ছোট পান ৩৫ থেকে ৫০ টাকা। এ ছাড়া পাকা বা বাদামি রঙের পান প্রতি পোন ৫০ টাকা, মাঝারি ও ছোট ২৫ থেকে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, যা গত দুই বছরের মধ্যে বেশি।

তরুণ পানচাষি দেবাশীষ চক্রবর্তী বলেন, আবহাওয়া ও দাম অনুকূলে থাকলে বছরে খরচ বাদে দেড়-দুই লাখ টাকা লাভ থাকে। বরজ তৈরির এক বছর পর প্রতি আষাঢ় ও ভাদ্র মাসে সবচেয়ে বেশি খরচ হয়। পানপাতা ভাঙার কারণে গাছ লতিয়ে লম্বা হয়ে যায়। এ সময় লম্বা হয়ে যাওয়া গাছগুলো না কেটে মাটিতে পুঁতে বাঁশের শলার সঙ্গে লতা বাঁধতে বিঘাপ্রতি ৬০ থেকে ৭০ হাজার খরচ হয়। তবে গত দুই বছরে যে লোকসান হয়েছে, চলতি মৌসুমে চড়া দামে পান বিক্রি করতে পারলে সব ক্ষতি পুষিয়ে লাভ করা যাবে।’

পান ব্যাপারী কার্তিক চন্দ্র বলেন, গত বছর বড় পান ৮০, মাঝারি ২০ ও ছোট পান ৫ টাকা পোন দরে বিক্রি হয়েছে, কিন্তু এখন দাম চড়া।বড় পান বিক্রি হচ্ছে প্রতি পোন ১৮০ থেকে ২০০, মাঝারি ৮০ থেকে ১০০ ও ছোট পান ৩৫ থেকে ৫০ টাকা। এ ছাড়া পাকা বা বাদামি রঙের পান প্রতি পোন মাঝারি ৫০ এবং ছোট ২৫ থেকে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

জয়নগর ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা তাপস কুমার মজুমদার বলেন, গত কয়েক বছরের তুলনায় শীতের এই মৌসুমে চাষিরা ভালো দামে পান বিক্রি করতে পারছেন। জয়নগর, দক্ষিণ-উত্তর ক্ষেত্রপাড়া ও ধানদিয়া ৪টি গ্রামে প্রায় ৭০ বিঘা জমিতে পান চাষ হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চাষিদের উত্তম পান চাষের সার্বিক পরামর্শ ও সহায়তা করছে। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত