মামলার তদন্তে দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই ২ মাসেও

আবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১১ আগস্ট ২০২২, ১২: ০৩
Thumbnail image

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের ঘটনায় এখনো কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। ঘটনার দুই মাসের বেশি সময় পার হলেও এখন পর্যন্ত কাউকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়নি। এমনকি বিএম ডিপোর লাইসেন্সও স্থগিত বা বাতিল করা হয়নি। তদন্ত কমিটির কয়েকটি প্রতিবেদনে বিএম কনটেইনার ডিপোকে দায়ী করা হলেও দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

গত ৪ জুন সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণে ১৩ জন ফায়ারকর্মীসহ ৫০ জন নিহত হন। আহত হন অসংখ্য মানুষ। এ ঘটনায় ৭ জুন সীতাকুণ্ড থানায় ডিপোর মালিকদের বাদ দিয়ে আট কর্মচারীকে আসামি করে মামলা করা হয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক সুমন বণিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ডিপো থেকে মামলার আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। মর্গে থাকা নিহত ১৪ জনের লাশ স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা যায়নি। ডিএনএ প্রতিবেদন পেতে যোগাযোগ করা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে লাশগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা যাবে। এ ঘটনায় ছয়টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিভাগীয় কমিশনার ও বন্দরের তদন্ত কমিটি বিএম ডিপোকে দায়ী করে প্রতিবেদন দিয়েছে।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের সহকারী কমিশনার উত্তম চাকমা বলেন, বিএম ডিপোর বিস্ফোরণের ঘটনা তদন্ত শেষ পর্যায়ে। পুরোনো মালপত্র সরিয়ে নিলে বিএম ডিপো আবার চালু করা হবে।

কাস্টমস সূত্র জানায়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের গত বছর জারি করা বেসরকারি আইসিডি নীতিমালার ৮ নম্বর ধারায় লাইসেন্স স্থগিত বা বাতিলের বিধান রয়েছে। এ ধারায় ছয়টি শর্ত রয়েছে। যার অন্যতম শর্ত হলো আইন ও বিধিমালার শর্ত ভঙ্গ করা বা অদক্ষতা, অবহেলা অথবা আইসিডি প্রতিষ্ঠার অনুমতিপত্রের কোনো শর্ত ভঙ্গ করলে কমিশনার লাইসেন্স সাময়িক স্থগিত বা বোর্ড লাইসেন্স বাতিল করতে পারবে।

বিএম ডিপোতে বিস্ফোরণে নিহত গাড়িচালক মো. শাহ জাহানের শ্বশুর লিটন মিয়া বলেন, ‘চার মাসের শিশুসন্তানসহ দুই ছেলে নিয়ে মেয়ে আমার কাছে আছে। কারখানার মালিক কোনো খোঁজ নেয় না। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।’

চট্টগ্রাম সীতাকুণ্ড ফায়ার স্টেশনের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা মো. নুরুল আলম দুলাল বলেন, ‘বিএম ডিপোর বিস্ফোরণে আমাদের ১০ জন ফায়ারকর্মীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনো তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন। তাঁদের ডিএনএর নমুনা নেওয়া হয়েছে।’

নুরুল আলম দুলাল আরও বলেন, এ ছাড়া ১৭ জন ফায়ারকর্মী আহত হয়েছেন। আমাদের ফায়ার বিভাগ থেকে এখনো কোনো মামলা হয়নি। একটি জিডি করা হয়েছে। প্রধান কার্যালয় থেকে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তারা বিষয়টি তদন্ত করছে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আকতার কবির আজকের পত্রিকাকে বলেন, মামলাটি আইওয়াশ মাত্র। এ মামলা শাস্তির জন্য করা হয়নি। ডিপোতে বিস্ফোরণে যাদের হাত-পা উড়ে গেছে, তাদের আসামি করা হয়েছে।

মামলায় যাঁদের আসামি করা হয়েছে, তাঁরা হলেন বিএম ডিপোর মহাব্যবস্থাপক নাজমুল আক্তার খান, উপমহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) নুরুল আক্তার খান, ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) খালেদুর রহমান, সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্বাস উল্যা, জ্যেষ্ঠ নির্বাহী (প্রশাসন) নাসির উদ্দিন, সহকারী ব্যবস্থাপক আবদুল আজিজ, ডিপোর শেড ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম ও সহকারী ডিপো ইনচার্জ নজরুল ইসলাম। তাঁদের অনেকেই আহত হয়ে হাসপাতালে রয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত