Ajker Patrika

চাঁদে উপনিবেশ নিয়ে প্রতিযোগিতা, সংঘাতের আশঙ্কা জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের

অনলাইন ডেস্ক
Thumbnail image

অদূর ভবিষ্যতে বিজ্ঞান ও বাণিজ্যের মধ্যে জ্যোতির্বিজ্ঞানীয় সংঘাতের আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা। চাঁদে ঘন ঘন অভিযান ও এর বিভিন্ন উপাদানের অপব্যবহারকে কেন্দ্র করেই এ সংঘাত হতে পারে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে চাঁদে বিভিন্ন জরিপ চালানোর জন্য বেশ কয়েকটি অভিযান চালানোর পরিকল্পনা করেছে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। চলতি সপ্তাহেই উৎক্ষেপণ করা হবে চন্দ্রযান পেরেগ্রিন মিশন ওয়ান।

সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন অনুসারে, পেরেগ্রিন মিশন ওয়ানের লক্ষ্য হলো, চাঁদে খনিজ পদার্থ, পানি ও অন্যান্য উপাদানের খোঁজ করা, যেন সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাসযোগ্য ঘাঁটি তৈরি করা যায়। এ অভিযানের জন্য নাসার কমার্শিয়াল লুনার পেলোড সার্ভিসেস (সিএলপিএস) কর্মসূচির মাধ্যমে ২৬০ কোটি ডলার অর্থায়ন করা হয়েছে। পরবর্তীতে এ ঘাঁটিগুলো মঙ্গলে মানব অভিযানের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে।

তবে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে বলছেন, চাঁদকে কাজে লাগানোর তাড়ায় মূল্যবান বৈজ্ঞানিক স্থানগুলোর অপূরণীয় ক্ষতি হতে পারে। মহাকর্ষীয় তরঙ্গ গবেষণা, কৃষ্ণ গহ্বর পর্যবেক্ষণ, দূরবর্তী নক্ষত্রের কক্ষপথে থাকা ক্ষুদ্র গ্রহগুলোতে প্রাণের অনুসন্ধান করার গবেষণা এবং অন্যান্য গবেষণা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

হার্ভার্ড ও স্মিথসোনিয়ানের সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোফিজিকসের গবেষক মার্টিন এলভিস বলেন, ‘এ সমস্যাটি প্রকট আকার ধারণ করেছে। আমাদের এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। কারণ আজকের নেওয়া সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতে চাঁদের প্রতি আমাদের আচরণ কেমন হবে তা নির্ধারণ করবে।’

এই মতামতের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞান বিষয়ক অধ্যাপক রিচার্ড গ্রিন। তিনি বলেন, ‘আমরা চাঁদে ঘাঁটি তৈরির বিরোধিতা করছি না। তবে, সেখানে কাজে লাগানোর মতো অল্প কয়েকটি জায়গাই আছে এবং এর বেশ কয়েকটিই বৈজ্ঞানিকভাবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমরা কোথায় খনি ও ঘাঁটি তৈরি করছি এ বিষয়ে আমাদের অত্যন্ত সাবধান হতে হবে।’

রিচার্ড গ্রিনের নেতৃত্বে ও ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিকাল ইউনিয়নের উদ্যোগে একটি দল চলতি মাসের শেষের দিকে জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এবং এতে আন্তঃগ্রহ সম্পদগুলো রক্ষায় আইন আরও কঠোর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

১৯৬৭ সালের জাতিসংঘের মহাকাশ চুক্তি অনুসারে, কোনো দেশ মহাজাগতিক কোনো স্থানের নিয়ন্ত্রণ দাবি করতে পারবে না। তবে, এ চুক্তিতে বাণিজ্যিক অভিযানের বিষয়ে কিছু বলা নেই। কোনো ধরনের মহাজাগতিক খনন ও সম্পদের অপব্যবহারের বিষয় এতে উল্লেখ নেই।

গ্রিন এ সমস্যার কয়েকটি দিক উল্লেখ করেছেন। এর মধ্যে একটি হলো, চাঁদে বেশ কয়েকটি গভীর গর্ত আবিষ্কৃত হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এ গর্তগুলো কয়েকশ বছর আগে চাঁদ গঠনের সময় তৈরি হয়েছে এবং এগুলো চির অন্ধকার। এসব স্থানে কখনোই সূর্যের আলো পৌঁছায়নি। তাই এসব স্থান অস্বাভাবিক শীতল। এ স্থানগুলো বৈজ্ঞানিকভাবে অত্যধিক গুরুত্বপূর্ণ।

এ ধরনের গর্তগুলো সংবেদনশীল বৈজ্ঞানিক যন্ত্র রাখার জন্য আদর্শ। যেমন, এসব স্থানে ইনফ্রারেড টেলিস্কোপ স্থাপন করা যায়, যা তাৎক্ষণিক ঠান্ডা করার প্রয়োজন হয়। এ ছাড়া এসব স্থানে পর্যবেক্ষণকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। এসব স্থান থেকে সহজে প্রাণের অনুসন্ধান করা যায়। এসব আলোহীন গর্তে বরফরূপে পানি থাকতে পারে। এ বরফ সমুদ্র থেকে পানির ইতিহাস সম্পর্কে মূল্যবান তথ্য দিতে পারে।

এ ছাড়া বরফ ভর্তি গর্তগুলো চাঁদে উপনিবেশ স্থাপনকারীদের জন্যও বেশ মূল্যবান হতে পারে। পানির খোঁজ পেলে সে স্থানগুলো অভিযানকারী কোম্পানি ও মহাকাশচারীদের বসতি স্থাপন করার জন্য অপ্রতিরোধ্য লক্ষ্যে পরিণত হবে।

মার্টিন এলভিস বলেন, ‘চাঁদে মানুষের জন্য পানি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে। তবে আমাদের নিশ্চিত করতে হবে, এটি যেন এমন কোনো জায়গা থেকে নেওয়া হয় যা বৈজ্ঞানিকভাবে অপ্রতিস্থাপনযোগ্য নয়।’

নাসা ও অন্যান্য মহাকাশ সংস্থা চন্দ্রপৃষ্ঠে রোবট রোভার ও অন্যান্য ডিভাইস নিয়ন্ত্রণ করার জন্য স্যাটেলাইট পাঠানোর পরিকল্পনা করছে। এসব স্যাটেলাইট থেকে আসা রেডিও সংকেতের কারণে রেডিও টেলিস্কোপের সংবেদনশীলতা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারী সহকর্মীর সঙ্গে রাতযাপন: হাইটেক পার্কের ডিডি আতিক বরখাস্ত

বাংলাদেশসহ ৩ দেশে উন্নয়ন সহায়তা বন্ধের সিদ্ধান্ত সুইজারল্যান্ডের

পদ্মা সেতু ও ড. ইউনূসকে নিয়ে ভারত থেকে শেখ হাসিনার ভাষণ! ভাইরাল ভিডিওর পেছনের ঘটনা জানুন

বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের পদত্যাগ

২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের ফেসবুক প্রোফাইল পিকচার পরিবর্তন কর্মসূচি শুরু

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত