উদ্ভিদ গবেষণা ও সংরক্ষণে মধুপুরে বিশেষ উদ্যান

মধুপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৪: ১৭
Thumbnail image

মধুপুর গড়াঞ্চলে বিলুপ্ত প্রজাতির ভেষজ উদ্ভিদের গবেষণা কার্যক্রম সম্প্রসারণের জন্য প্রায় তিন হেক্টর জমিতে আরবোরেটাম (বিশেষ উদ্যান) গড়ে তোলা হয়েছে। বনবিভাগের ব্যবস্থাপনায় মধুপুর বনাঞ্চলের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়।

বন বিভাগের রসুলপুর জাতীয় উদ্যান সদর রেঞ্জ সূত্রে জানা যায়, মধুপুরে প্রায় ২৫০ প্রজাতির গাছ রয়েছে। আবার বিশালায়তনের এ বনে রয়েছে নানা প্রাণী। সম্ভাবনাপূর্ণ এই বনাঞ্চলে উদ্ভিদবিজ্ঞানী, শিক্ষার্থী, পর্যটকসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষের অল্প সময়ে পুরো বন ঘুরে দেখা সম্ভব হয় না। অল্প সময়ে বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ সম্পর্কে জানা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে।

গবেষক ও শিক্ষার্থীদের কষ্ট লাঘব, বিলুপ্ত উদ্ভিদ সংরক্ষণ ও গবেষণার জন্য স্থানীয় ও নৃগোষ্ঠীর সহায়তায় ২০১৯-২০ অর্থবছরে আরবোরেটাম গড়ে তোলা হয়। মধুপুর জাতীয় উদ্যানের ইকো-ট্যুরিজম উন্নয়ন ও টেকসই ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় এটি বাস্তবায়ন হয়। জাতীয় উদ্যান সদর রেঞ্জের জলই এলাকায় তিন হেক্টর জায়গায় উদ্ভিদ সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন প্রজাতির গাছের ৪ হাজার ৮০০ চারা রোপণ করা হয়েছে। সরেজমিন দেখা যায়, গামার, গর্জন, গজারি, চাপালিশ, কানাইডাঙ্গা, বহেড়া, ডুমুর, সিধা, ওজা, হরীতকী, আমলকী, গাদিলা, পিতরাজ, কাঞ্চন, বুনো আমড়ার চারাগুলো এক-দেড় বছরে সতেজ হয়ে বেড়ে উঠেছে। সাজতে শুরু করেছে আরবোরেটাম।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পর্যায়ক্রমে গাছের প্রজাতির সংখ্যা বাড়ানো হবে। এ আরবোরেটামের চারদিকে প্রাচীর ও একটি ব্যারাক নির্মাণ করা হবে। যার নির্মাণকাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে।

জাতীয় উদ্যান সদর রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা এস এম হাবিবুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের এই প্রকল্পের লক্ষ্য গবেষণা কার্যক্রম সহজীকরণ, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও উন্নয়ন, বিপদাপন্ন উদ্ভিদ ও প্রাণিকুলের আবাসস্থল সংরক্ষণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা। জবরদখল ও অবৈধভাবে গাছ কাটা প্রতিরোধ করে বননির্ভর স্থানীয় বেকার জনগোষ্ঠীর জন্য কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করে দারিদ্র্য নিরসনে এ আরবোরেটাম করা হয়েছে। এটির ফলে মধুপুর বনের ঐতিহ্য টিকে থাকবে, বৃদ্ধি পাবে বন্যপ্রাণীসহ জীববৈচিত্র্য।

টাঙ্গাইল উত্তরের সহকারী বন সংরক্ষক আবু সালেহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আরবোরেটাম উদ্ভিদবিদ্যার গবেষণা ও অনুশীলনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। প্রকল্পটি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হলে এখানে শিক্ষার্থী ও গবেষকেরা গবেষণায় উৎসাহবোধ করবেন। গবেষণাকর্মেও সময় অনেক কম লাগবে।’

তিনি জানান, এ আরবোরেটাম মধুপুরের বন থেকে হারিয়ে যাওয়া উদ্ভিদগুলো সংরক্ষণ করতে পারবে। এখান থেকে বীজ ও কাটিং সংগ্রহ করা যাবে। এটা হবে দেশের মধ্যে অন্যতম একটি আরবোরেটাম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত