তাপমাত্রা চড়ছে, রোগী বাড়ছে হাসপাতালে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১১: ৩১
Thumbnail image

 

প্রচণ্ড গরমে অস্থির জনজীবন। বেলা বাড়তেই মাথার ওপর যেন আগুন ঢালতে শুরু করে সূর্য। তীব্র গরমে হাসপাতালগুলোয় বাড়ছে রোগীর ভিড়। অধিকাংশই জ্বর, সর্দি, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। সবচেয়ে বেশি কাবু শিশুরা।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, গতকাল চুয়াডাঙ্গা ও যশোরে তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এই তাপমাত্রা চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার নতুন রেকর্ড। যশোরে রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি। আজ শনিবার তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে অধিদপ্তর।

রাজধানীতে গতকাল শুক্রবার একাধিক হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, গরমজনিত অসুস্থতায় সব বয়সী রোগীর চাপই বেড়েছে। বেশি শিশু রোগী। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের তথ্য বলছে, ২০৭ নম্বর ওয়ার্ডে শয্যা ও মেঝে মিলিয়ে ভর্তি আছে ৪৮টি শিশু। তাদের মধ্যে ২৩ জনই গরমজনিত বিভিন্ন রোগে (জ্বর-সর্দি-কাশি, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া) আক্রান্ত। প্রায় একই চিত্র হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা শিশু হাসপাতাল ও মহাখালীর আইসিডিডিআরবিতেও।

জানতে চাইলে ঢাকা মেডিকেলের শিশু ওয়ার্ডের চিকিৎসক অর্মিতা মজুমদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত কয়েক দিন ডায়রিয়া, জ্বর ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুরা বেশি ভর্তি হচ্ছে। ধারণা করছি, প্রচণ্ড গরমের কারণে শিশুরা এসব রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে।’

ঢাকা শিশু হাসপাতালের বহির্বিভাগে গতকাল পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ১০২টি শিশু চিকিৎসা নিয়েছে। তাদের অধিকাংশই জ্বর, ঠান্ডা, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। আর আইসিডিডিআরবিতে এই সময়ে চিকিৎসা নিয়েছে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ৫ শতাধিক শিশু।

ঢাকা শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. জাহাঙ্গীর আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, শিশুদের সহ্যক্ষমতা কম। প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের কারণে তারাই বেশি অসুস্থ হচ্ছে।

আইসিডিডিআরবির নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ বলেন, কয়েক দিন ধরে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। প্রচণ্ড গরম ও পানিবাহিত রোগের কারণে সাধারণত শিশুরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়।

প্রচণ্ড গরমে সুস্থ থাকতে কিছু পরামর্শ দিয়ে ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের রেজিস্ট্রার ডা. এ টি এম রফিক উজ্জ্বল বলেন, অপ্রয়োজনে বাড়ির বাইরে যাওয়া যাবে না, বেশি বেশি বিশুদ্ধ পানি ও তরল খাবার গ্রহণ করতে হবে।

এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসের তথ্য বলছে, চলমান তাপপ্রবাহ আরও কয়েক দিন অব্যাহত থাকতে পারে। গতকাল সন্ধ্যার বুলেটিনে অধিদপ্তর বলেছে, রাজশাহী, পাবনা, টাঙ্গাইল জেলাসহ খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং চাঁদপুর, মৌলভীবাজার জেলাসহ ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের অবশিষ্টাংশ এবং বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। আজ সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে গরমের অস্বস্তি বাড়তে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের ৭২ ঘণ্টার পূর্বাভাসেও তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বর্ধিত পাঁচ দিনের পূর্বাভাসেও অবস্থার উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই বলে জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত