আজকের পত্রিকা: আওয়ামী লীগ নির্বাচন করে ফেলল। এই নির্বাচনকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
হারুন-অর-রশিদ: জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ভালোভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের যে নির্বাচন হয়েছে, এই নির্বাচন তার চেয়ে অনেক বেশি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হয়েছে। কিছু যে বিচ্যুতি ছিল না, তা কিন্তু নয়। তবে বাংলাদেশে এ ধরনের নির্বাচন করা ছিল সরকারের কাছে একটা বড় চ্যালেঞ্জ। এর মূল কারণ হলো, বাংলাদেশের রাজনীতি দুটো পরস্পরবিরোধী আদর্শিক ধারায় বিভক্ত। কাজেই সব দলের অংশগ্রহণ এই নির্বাচনে নিশ্চিত করা যায়নি। তবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের একটা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখা এবং সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার ব্যাপার ছিল। সার্বিক দিক বিবেচনা করলে বলব, অপেক্ষাকৃত ভালো নির্বাচন হয়েছে। ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পেরেছেন। এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি, একজনের ভোট অন্য কেউ দিয়ে দিয়েছেন। এবার এ রকম কোনো ঘটনা ঘটেনি।
দলীয় সরকারের অধীনে এবং নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে এবারের নির্বাচনটা ছিল গণতন্ত্রের জন্য চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জের প্রাথমিক পরীক্ষায় বাংলাদেশ উত্তীর্ণ হয়েছে। এই নির্বাচনটা শুধু ক্ষমতাসীন দলের জন্যই চ্যালেঞ্জ ছিল না, নির্বাচনের আগে বৈশ্বিক রাজনীতির প্রতিবেশ, পরিবেশ যা সৃষ্টি হয়েছিল এবং বিশ্বের শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোর দৃষ্টি, কড়া নজর, নানা ধরনের হুমকি ছিল। কেউ কেউ ধারণা করেছিলেন শেষ পর্যন্ত সরকার নির্বাচন করতে পারবে না। যদিও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তা হবে হযবরল ধরনের। কিন্তু সে ধরনের কোনো ঘটনাই ঘটেনি।
প্রধান বিরোধী দল বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয়নি। তবে তারা নির্বাচনে অংশ নিলে আরও অংশগ্রহণমূলক হতো। বিএনপি এবং তাদের মিত্র জোট নির্বাচন বর্জন করা সত্ত্বেও নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হয়েছে। বিএনপি কিছুটা চেষ্টাও করেছে নির্বাচন প্রতিহত করতে। কিন্তু তারা সফল হতে পারেনি।
এই নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে অনেকেই পরাজিত হয়েছেন। সেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। এটা যদি সাজানো-পাতানো নির্বাচন হতো, তাহলে এ ঘটনা ঘটত না। সেই সঙ্গে তিনজন প্রতিমন্ত্রীও ভোটে পরাজিত হয়েছেন। তবে পশ্চিমা ধাঁচে নির্বাচন করতে হলে আমাদের আরও অপেক্ষা করতে হবে। এ জন্য নির্বাচন কমিশনসহ অন্য রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও গণতান্ত্রিক ও শক্তিশালী করতে হবে।
আজকের পত্রিকা: নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ দেখানোর জন্য আওয়ামী লীগ থেকে স্বতন্ত্র ও ডামি প্রার্থী দেওয়া হয়েছে। দলের মধ্যে এই বিভক্তি কি কোনো প্রভাব ফেলবে?
হারুন-অর-রশিদ: আওয়ামী লীগ হলো প্রাচীন, ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল। ১৯৪৯ সালে এই দল প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই দলের ধারণক্ষমতাও অধিক। এবারের নির্বাচনে দলের নীতিনির্ধারকেরা একটা কৌশল অবলম্বন করেছিলেন, নির্বাচনটা যেন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও প্রতিযোগিতামূলক হয়, ভোটাররা যাতে ভোটকেন্দ্রে আসেন। কারণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকলে তো ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে আসবেন না।
এবার যে ৪১ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ ভোটার উপস্থিত হয়েছিল, এর মূলে কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও প্রতিযোগিতার ব্যাপারটি ছিল। দল থেকে বিভিন্ন আসনে নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেওয়ার পর স্বতন্ত্র প্রার্থী উন্মুক্ত করার কারণে কিন্তু এ ঘটনাগুলো ঘটেছে। যদিও দলীয় ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে টানাপোড়েন, বিরূপ সম্পর্ক তৈরি হয়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।এখন দল এসব বিষয় নিয়ে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। এই বিরূপ উদ্ভূত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দলীয় কাঠামো ও শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসার জন্য নিঃসন্দেহে তাঁরা উদ্যোগ নেবেন।
তবে আমি যেটা মনে করি, বাংলাদেশের রাজনীতির যে সংকট—একটা গণতান্ত্রিক ও মুক্তিযুদ্ধের মৌলিক চেতনাবিশ্বাসী, অসাম্প্রদায়িক, দায়িত্বশীল বিরোধী দলের অনুপস্থিতি। আমাদের রাজনৈতিক সংকটের অন্যতম কারণ হলো এটি। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান নির্মাণ, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা তৈরির ক্ষেত্রে যাঁরা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচিত হয়েছেন, তাঁরা স্পিকারের অনুমতিক্রমে একটা গ্রুপ গঠন করতে পারতেন। তাঁরা যদি বলতেন, আমরা এখন এ দেশে বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করব।
স্পিকার অনুমতি দিলে তাঁরা এটা করতে পারতেন। কিন্তু বোঝা যাচ্ছে, জাতীয় পার্টি বিরোধী দল হচ্ছে। কিন্তু তাদের কার্যকর বিরোধী দল হিসেবে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা নেই। তাই বাংলাদেশের দূরবর্তী ও সুদূরপ্রসারী দৃষ্টি নিয়ে যদি বিষয়টিকে বিবেচনা করা হতো, স্বতন্ত্রভাবে বিজয়ীরা যদি দাঁড়াতে পারতেন, তাহলে আমাদের দেশের, আওয়ামী লীগের জন্য এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের ধারার পক্ষে যেত। এর অর্থ দাঁড়ায়, ক্ষমতাসীন দলের নেতা-নেতৃত্ব তাঁদেরই একটা বিরোধী দল তৈরি করার ক্ষেত্রে একটা সহায়ক ভূমিকা পালন করা।
আর বিরোধী দল হিসেবে বিএনপির আদর্শিক, কাঠামোগত, কর্মসূচি ও পরিবর্তন না ঘটে, তাহলে এই দল যত দিন পর্যন্ত রাজনীতিতে সক্রিয় আছে, তারা কোনো ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে পারবে না। কাজেই বিএনপিকে ভবিষ্যতেও আওয়ামী লীগকে ফেস করতেই হবে।
আজকের পত্রিকা: আপনি যেসব কথা বললেন, তার সূত্র ধরে বলি, আওয়ামী লীগ ১৫ বছরের শাসনে অনেক ক্ষেত্রে বিচ্যুত হয়েছে। আবার রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে কেউ কেউ বাংলাদেশ একদলীয় শাসনব্যবস্থার দিকে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন। আপনি কী বলবেন?
হারুন-অর-রশিদ: কোন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, তা আমার জানা নেই। তাঁরা বিশেষজ্ঞ না বিশেষভাবে অজ্ঞ, এটাও আমার বিশেষভাবে জানার ইচ্ছা। আওয়ামী লীগ মানেই হলো জনগণের দল এবং তাদের ইতিহাস হলো দীর্ঘ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ের ইতিহাস। ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু স্বল্প সময়ের জন্য জাতীয় ঐক্যের লক্ষ্যে বাকশাল গঠন করেছিলেন। এটা কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা ছিল না। সেই সময়ের উদ্ভূত চরম অসহিষ্ণু রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সদ্য প্রস্ফুটিত একটা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল কিছু দল ও ব্যক্তি। যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল তৎকালীন বিরোধী দল, গোপন পার্টিগুলো, চরম চীনপন্থী বাম দল, মাওলানা ভাসানীর নেতৃত্বাধীন পার্টি, জাসদ, হক-তোয়াহা, মতিন ও সিরাজ শিকদারের পার্টি ইত্যাদি। এমন এক অবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল যে বঙ্গবন্ধুকে তাঁরা বাধ্য করেছিল সদ্য শিশু একটি রাষ্ট্রকে রক্ষা করার জন্য ওই পদক্ষেপ নিতে। অন্যভাবে বঙ্গবন্ধু তো বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন।
তাই আওয়ামী লীগ একদলীয় শাসনের দিকে চলে যাবে, এটা ভাবার কোনো কারণ নেই। তবে কেন এটাকে একদলীয় শাসন মনে হবে? তার কারণ এখানে এখন প্রধান বিরোধী দল হিসেবে বিএনপি নেই। বিএনপি যদি নির্বাচনে না আসে, তাহলে কি গণতন্ত্রচর্চা বন্ধ থাকবে এবং সংবিধান স্থগিত থাকবে? অর্থাৎ পুরো জাতি কি জিম্মি হয়ে থাকবে? এটা তো হতে পারে না। সামনে তো পথ চলতে হবে। এ জন্য উদ্ভূত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ করে সামনে আগাতে হবে।
বিএনপি আসুক, তারা দায়িত্বশীল পার্টি হিসেবে আচরণ করুক, বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের চেতনা ধারণ করুক—এভাবে তারা যদি আদর্শগত বড় ধরনের পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে এবং দায়িত্বশীল বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করলে তারা একসময় জনগণের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় যাবে। যেহেতু তারা আগেও ক্ষমতায় ছিল। এর আগে প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের রাজনীতি থেকে তাদের মুক্ত হতে হবে।
আজকের পত্রিকা: নতুন সরকার কি দুর্নীতি, দ্রব্যমূল্যের নিয়ন্ত্রণ, অর্থ পাচারসহ অর্থনীতির দুর্বিষহ অবস্থা স্বাভাবিক করতে পারবে?
হারুন-অর-রশিদ: বর্তমান নতুন সরকারের কাছে চ্যালেঞ্জ কী, সে-সম্পর্কে তারা সম্পূর্ণভাবে ওয়াকিবহাল আছে। আওয়ামী লীগের এবারের নির্বাচনী ইশতেহারে ১১টি সেক্টরকে তারা গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে হাইলাইট করেছে। এর মধ্যে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিকে মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসা, ঘুষ-দুর্নীতি-অনিয়মের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা এবং তথ্যপ্রযুক্তির সম্প্রসারণ—যেটাকে তারা স্মার্ট বাংলাদেশ বলেছে ইত্যাদি।
তবে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে আড়তদার ও সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী মুনাফাখোরদের প্রয়োজনে জেলে বন্দী করার কথা বলেছেন। কিন্তু শুধু বার্তা দিলে তো হবে না। ধীরস্থিরভাবে বিষয়টাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এ জন্য পলিসি ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আমার বিশ্বাস, এসব বিষয়ে সরকার কার্যকর ব্যবস্থা নেবে। তবে সেই সবের সাফল্যের মাত্রা কতটুকু সফল হবে, তা নির্ভর করবে ব্যবস্থা গ্রহণের মাত্রার ওপর।
আজকের পত্রিকা: কার্যকর বিরোধী দলের অনুপস্থিতিতে একটা রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হতে পারে। এ থেকে কীভাবে উত্তরণ ঘটতে পারে?
হারুন-অর-রশিদ: প্রথমত, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা-আদর্শকে ধারণ করা, বাংলাদেশকে ধারণ করা, সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে এ দেশ সৃষ্টি হয়েছে, এই ভাবনার একটা বিরোধী দল বাংলাদেশে থাকা দরকার। সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বিরোধী দল হলো বিকল্প সরকার। সেই দলকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। সরকারের ত্রুটি-বিচ্যুতি, দুর্নীতির বিষয়গুলো তুলে ধরা এবং জনগণের পক্ষে দাবি-দাওয়া, আশা-আকাঙ্ক্ষা তুলে ধরা—এ রকম একটা দায়িত্বশীল দল আওয়ামী লীগের বিপরীতে যতক্ষণ পর্যন্ত গড়ে না উঠবে, তত দিন পর্যন্ত আমাদের যে টানাপোড়েন ও সংকট, তা থেকে কোনো মুক্তির পথ দেখছি না। আজ বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে সংকট, গণতান্ত্রিক চর্চার ক্ষেত্রে যে সংকট, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে যে সংকট, আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর বাইরে অন্যদের ছাড় দেওয়ার ব্যাপারগুলো কেন তাদের করতে হয়েছে? তার কারণ একটা দায়িত্বশীল, গণতান্ত্রিক, শান্তিকামী, দেশের উন্নয়নপ্রত্যাশী কোনো বিরোধী আমাদের দেশে বর্তমানে নেই।
বিএনপি যে পথে হাঁটছে, সেটা তো একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজ প্রতিষ্ঠার অনুকূল নয়; বরং এর বিপরীত। যে কারণে আজকের সমাজটাও দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। এই বিভাজনের কাঠামো যত দিন থাকবে, তত দিন আসলে বাংলাদেশে একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা গড়ে ওঠার কোনো সম্ভাবনা নেই। তাই আওয়ামী লীগ ও দেশের স্বার্থে তাদের একটা কার্যকর বিরোধী দল তৈরি করতে হবে।
সে জন্য সরকারকে বিচক্ষণতা, দূরদৃষ্টি দিয়ে এবং কৌশল অবলম্বন করে একটা কার্যকর বিরোধী দল তৈরি করতে হবে। সেই সঙ্গে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকেও শক্তিশালী করতে হবে। শুধু একক ব্যক্তির জনপ্রিয়তার ওপর ভিত্তি কোনো গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা টেকসই হয় না। কাজেই আমাদের জাতিগতভাবে অর্জনকে টেকসই করার জন্য গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান, আইনের শাসন, সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি যদি সফলভাবে না করতে পারি, তাহলে বেশি দূর অগ্রসর হওয়া যাবে না।
আজকের পত্রিকা: আওয়ামী লীগ নির্বাচন করে ফেলল। এই নির্বাচনকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
হারুন-অর-রশিদ: জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ভালোভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের যে নির্বাচন হয়েছে, এই নির্বাচন তার চেয়ে অনেক বেশি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হয়েছে। কিছু যে বিচ্যুতি ছিল না, তা কিন্তু নয়। তবে বাংলাদেশে এ ধরনের নির্বাচন করা ছিল সরকারের কাছে একটা বড় চ্যালেঞ্জ। এর মূল কারণ হলো, বাংলাদেশের রাজনীতি দুটো পরস্পরবিরোধী আদর্শিক ধারায় বিভক্ত। কাজেই সব দলের অংশগ্রহণ এই নির্বাচনে নিশ্চিত করা যায়নি। তবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের একটা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখা এবং সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার ব্যাপার ছিল। সার্বিক দিক বিবেচনা করলে বলব, অপেক্ষাকৃত ভালো নির্বাচন হয়েছে। ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পেরেছেন। এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি, একজনের ভোট অন্য কেউ দিয়ে দিয়েছেন। এবার এ রকম কোনো ঘটনা ঘটেনি।
দলীয় সরকারের অধীনে এবং নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে এবারের নির্বাচনটা ছিল গণতন্ত্রের জন্য চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জের প্রাথমিক পরীক্ষায় বাংলাদেশ উত্তীর্ণ হয়েছে। এই নির্বাচনটা শুধু ক্ষমতাসীন দলের জন্যই চ্যালেঞ্জ ছিল না, নির্বাচনের আগে বৈশ্বিক রাজনীতির প্রতিবেশ, পরিবেশ যা সৃষ্টি হয়েছিল এবং বিশ্বের শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোর দৃষ্টি, কড়া নজর, নানা ধরনের হুমকি ছিল। কেউ কেউ ধারণা করেছিলেন শেষ পর্যন্ত সরকার নির্বাচন করতে পারবে না। যদিও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তা হবে হযবরল ধরনের। কিন্তু সে ধরনের কোনো ঘটনাই ঘটেনি।
প্রধান বিরোধী দল বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয়নি। তবে তারা নির্বাচনে অংশ নিলে আরও অংশগ্রহণমূলক হতো। বিএনপি এবং তাদের মিত্র জোট নির্বাচন বর্জন করা সত্ত্বেও নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হয়েছে। বিএনপি কিছুটা চেষ্টাও করেছে নির্বাচন প্রতিহত করতে। কিন্তু তারা সফল হতে পারেনি।
এই নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে অনেকেই পরাজিত হয়েছেন। সেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। এটা যদি সাজানো-পাতানো নির্বাচন হতো, তাহলে এ ঘটনা ঘটত না। সেই সঙ্গে তিনজন প্রতিমন্ত্রীও ভোটে পরাজিত হয়েছেন। তবে পশ্চিমা ধাঁচে নির্বাচন করতে হলে আমাদের আরও অপেক্ষা করতে হবে। এ জন্য নির্বাচন কমিশনসহ অন্য রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও গণতান্ত্রিক ও শক্তিশালী করতে হবে।
আজকের পত্রিকা: নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ দেখানোর জন্য আওয়ামী লীগ থেকে স্বতন্ত্র ও ডামি প্রার্থী দেওয়া হয়েছে। দলের মধ্যে এই বিভক্তি কি কোনো প্রভাব ফেলবে?
হারুন-অর-রশিদ: আওয়ামী লীগ হলো প্রাচীন, ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল। ১৯৪৯ সালে এই দল প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই দলের ধারণক্ষমতাও অধিক। এবারের নির্বাচনে দলের নীতিনির্ধারকেরা একটা কৌশল অবলম্বন করেছিলেন, নির্বাচনটা যেন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও প্রতিযোগিতামূলক হয়, ভোটাররা যাতে ভোটকেন্দ্রে আসেন। কারণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকলে তো ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে আসবেন না।
এবার যে ৪১ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ ভোটার উপস্থিত হয়েছিল, এর মূলে কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও প্রতিযোগিতার ব্যাপারটি ছিল। দল থেকে বিভিন্ন আসনে নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেওয়ার পর স্বতন্ত্র প্রার্থী উন্মুক্ত করার কারণে কিন্তু এ ঘটনাগুলো ঘটেছে। যদিও দলীয় ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে টানাপোড়েন, বিরূপ সম্পর্ক তৈরি হয়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।এখন দল এসব বিষয় নিয়ে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। এই বিরূপ উদ্ভূত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দলীয় কাঠামো ও শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসার জন্য নিঃসন্দেহে তাঁরা উদ্যোগ নেবেন।
তবে আমি যেটা মনে করি, বাংলাদেশের রাজনীতির যে সংকট—একটা গণতান্ত্রিক ও মুক্তিযুদ্ধের মৌলিক চেতনাবিশ্বাসী, অসাম্প্রদায়িক, দায়িত্বশীল বিরোধী দলের অনুপস্থিতি। আমাদের রাজনৈতিক সংকটের অন্যতম কারণ হলো এটি। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান নির্মাণ, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা তৈরির ক্ষেত্রে যাঁরা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচিত হয়েছেন, তাঁরা স্পিকারের অনুমতিক্রমে একটা গ্রুপ গঠন করতে পারতেন। তাঁরা যদি বলতেন, আমরা এখন এ দেশে বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করব।
স্পিকার অনুমতি দিলে তাঁরা এটা করতে পারতেন। কিন্তু বোঝা যাচ্ছে, জাতীয় পার্টি বিরোধী দল হচ্ছে। কিন্তু তাদের কার্যকর বিরোধী দল হিসেবে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা নেই। তাই বাংলাদেশের দূরবর্তী ও সুদূরপ্রসারী দৃষ্টি নিয়ে যদি বিষয়টিকে বিবেচনা করা হতো, স্বতন্ত্রভাবে বিজয়ীরা যদি দাঁড়াতে পারতেন, তাহলে আমাদের দেশের, আওয়ামী লীগের জন্য এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের ধারার পক্ষে যেত। এর অর্থ দাঁড়ায়, ক্ষমতাসীন দলের নেতা-নেতৃত্ব তাঁদেরই একটা বিরোধী দল তৈরি করার ক্ষেত্রে একটা সহায়ক ভূমিকা পালন করা।
আর বিরোধী দল হিসেবে বিএনপির আদর্শিক, কাঠামোগত, কর্মসূচি ও পরিবর্তন না ঘটে, তাহলে এই দল যত দিন পর্যন্ত রাজনীতিতে সক্রিয় আছে, তারা কোনো ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে পারবে না। কাজেই বিএনপিকে ভবিষ্যতেও আওয়ামী লীগকে ফেস করতেই হবে।
আজকের পত্রিকা: আপনি যেসব কথা বললেন, তার সূত্র ধরে বলি, আওয়ামী লীগ ১৫ বছরের শাসনে অনেক ক্ষেত্রে বিচ্যুত হয়েছে। আবার রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে কেউ কেউ বাংলাদেশ একদলীয় শাসনব্যবস্থার দিকে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন। আপনি কী বলবেন?
হারুন-অর-রশিদ: কোন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, তা আমার জানা নেই। তাঁরা বিশেষজ্ঞ না বিশেষভাবে অজ্ঞ, এটাও আমার বিশেষভাবে জানার ইচ্ছা। আওয়ামী লীগ মানেই হলো জনগণের দল এবং তাদের ইতিহাস হলো দীর্ঘ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ের ইতিহাস। ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু স্বল্প সময়ের জন্য জাতীয় ঐক্যের লক্ষ্যে বাকশাল গঠন করেছিলেন। এটা কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা ছিল না। সেই সময়ের উদ্ভূত চরম অসহিষ্ণু রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সদ্য প্রস্ফুটিত একটা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল কিছু দল ও ব্যক্তি। যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল তৎকালীন বিরোধী দল, গোপন পার্টিগুলো, চরম চীনপন্থী বাম দল, মাওলানা ভাসানীর নেতৃত্বাধীন পার্টি, জাসদ, হক-তোয়াহা, মতিন ও সিরাজ শিকদারের পার্টি ইত্যাদি। এমন এক অবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল যে বঙ্গবন্ধুকে তাঁরা বাধ্য করেছিল সদ্য শিশু একটি রাষ্ট্রকে রক্ষা করার জন্য ওই পদক্ষেপ নিতে। অন্যভাবে বঙ্গবন্ধু তো বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন।
তাই আওয়ামী লীগ একদলীয় শাসনের দিকে চলে যাবে, এটা ভাবার কোনো কারণ নেই। তবে কেন এটাকে একদলীয় শাসন মনে হবে? তার কারণ এখানে এখন প্রধান বিরোধী দল হিসেবে বিএনপি নেই। বিএনপি যদি নির্বাচনে না আসে, তাহলে কি গণতন্ত্রচর্চা বন্ধ থাকবে এবং সংবিধান স্থগিত থাকবে? অর্থাৎ পুরো জাতি কি জিম্মি হয়ে থাকবে? এটা তো হতে পারে না। সামনে তো পথ চলতে হবে। এ জন্য উদ্ভূত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ করে সামনে আগাতে হবে।
বিএনপি আসুক, তারা দায়িত্বশীল পার্টি হিসেবে আচরণ করুক, বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের চেতনা ধারণ করুক—এভাবে তারা যদি আদর্শগত বড় ধরনের পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে এবং দায়িত্বশীল বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করলে তারা একসময় জনগণের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় যাবে। যেহেতু তারা আগেও ক্ষমতায় ছিল। এর আগে প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের রাজনীতি থেকে তাদের মুক্ত হতে হবে।
আজকের পত্রিকা: নতুন সরকার কি দুর্নীতি, দ্রব্যমূল্যের নিয়ন্ত্রণ, অর্থ পাচারসহ অর্থনীতির দুর্বিষহ অবস্থা স্বাভাবিক করতে পারবে?
হারুন-অর-রশিদ: বর্তমান নতুন সরকারের কাছে চ্যালেঞ্জ কী, সে-সম্পর্কে তারা সম্পূর্ণভাবে ওয়াকিবহাল আছে। আওয়ামী লীগের এবারের নির্বাচনী ইশতেহারে ১১টি সেক্টরকে তারা গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে হাইলাইট করেছে। এর মধ্যে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিকে মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসা, ঘুষ-দুর্নীতি-অনিয়মের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা এবং তথ্যপ্রযুক্তির সম্প্রসারণ—যেটাকে তারা স্মার্ট বাংলাদেশ বলেছে ইত্যাদি।
তবে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে আড়তদার ও সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী মুনাফাখোরদের প্রয়োজনে জেলে বন্দী করার কথা বলেছেন। কিন্তু শুধু বার্তা দিলে তো হবে না। ধীরস্থিরভাবে বিষয়টাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এ জন্য পলিসি ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আমার বিশ্বাস, এসব বিষয়ে সরকার কার্যকর ব্যবস্থা নেবে। তবে সেই সবের সাফল্যের মাত্রা কতটুকু সফল হবে, তা নির্ভর করবে ব্যবস্থা গ্রহণের মাত্রার ওপর।
আজকের পত্রিকা: কার্যকর বিরোধী দলের অনুপস্থিতিতে একটা রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হতে পারে। এ থেকে কীভাবে উত্তরণ ঘটতে পারে?
হারুন-অর-রশিদ: প্রথমত, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা-আদর্শকে ধারণ করা, বাংলাদেশকে ধারণ করা, সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে এ দেশ সৃষ্টি হয়েছে, এই ভাবনার একটা বিরোধী দল বাংলাদেশে থাকা দরকার। সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বিরোধী দল হলো বিকল্প সরকার। সেই দলকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। সরকারের ত্রুটি-বিচ্যুতি, দুর্নীতির বিষয়গুলো তুলে ধরা এবং জনগণের পক্ষে দাবি-দাওয়া, আশা-আকাঙ্ক্ষা তুলে ধরা—এ রকম একটা দায়িত্বশীল দল আওয়ামী লীগের বিপরীতে যতক্ষণ পর্যন্ত গড়ে না উঠবে, তত দিন পর্যন্ত আমাদের যে টানাপোড়েন ও সংকট, তা থেকে কোনো মুক্তির পথ দেখছি না। আজ বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে সংকট, গণতান্ত্রিক চর্চার ক্ষেত্রে যে সংকট, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে যে সংকট, আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর বাইরে অন্যদের ছাড় দেওয়ার ব্যাপারগুলো কেন তাদের করতে হয়েছে? তার কারণ একটা দায়িত্বশীল, গণতান্ত্রিক, শান্তিকামী, দেশের উন্নয়নপ্রত্যাশী কোনো বিরোধী আমাদের দেশে বর্তমানে নেই।
বিএনপি যে পথে হাঁটছে, সেটা তো একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজ প্রতিষ্ঠার অনুকূল নয়; বরং এর বিপরীত। যে কারণে আজকের সমাজটাও দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। এই বিভাজনের কাঠামো যত দিন থাকবে, তত দিন আসলে বাংলাদেশে একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা গড়ে ওঠার কোনো সম্ভাবনা নেই। তাই আওয়ামী লীগ ও দেশের স্বার্থে তাদের একটা কার্যকর বিরোধী দল তৈরি করতে হবে।
সে জন্য সরকারকে বিচক্ষণতা, দূরদৃষ্টি দিয়ে এবং কৌশল অবলম্বন করে একটা কার্যকর বিরোধী দল তৈরি করতে হবে। সেই সঙ্গে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকেও শক্তিশালী করতে হবে। শুধু একক ব্যক্তির জনপ্রিয়তার ওপর ভিত্তি কোনো গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা টেকসই হয় না। কাজেই আমাদের জাতিগতভাবে অর্জনকে টেকসই করার জন্য গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান, আইনের শাসন, সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি যদি সফলভাবে না করতে পারি, তাহলে বেশি দূর অগ্রসর হওয়া যাবে না।
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
২ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
২ দিন আগে