Ajker Patrika

স্টেশন বন্ধের ফাঁদে ট্রেন ক্রসিংয়ে দুর্ভোগ যাত্রীর

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
স্টেশন বন্ধের ফাঁদে ট্রেন ক্রসিংয়ে দুর্ভোগ যাত্রীর

কুষ্টিয়ার পোড়াদহ-রাজবাড়ী রেলপথের মধ্যবর্তী খোকসা স্টেশনটি বন্ধ ঘোষণা (ক্লোজিং ডাউন) করায় যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। খোকসায় ক্রসিং বন্ধ থাকায় প্রতিদিন সকালে রাজশাহীগামী টুঙ্গীপাড়া এক্সপ্রেস ও ঢাকাগামী মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেন দুটিকে অন্য স্টেশনে পৌনে এক ঘণ্টা অপেক্ষায় থাকতে হয়। ফলে এই দুই ট্রেন ছাড়তে বিলম্ব হওয়ায় পর্যায়ক্রমে অন্য স্টেশনেও অন্তত চার জোড়া ট্রেন ক্রসিং বিলম্বে পড়ে। এতে ট্রেনের যাত্রীরা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। 

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, পশ্চিমাঞ্চলের রেলওয়ের শত কিলোমিটার দীর্ঘ পোড়াদহ-রাজবাড়ী রুটের মধ্যবর্তী এ স্টেশনে একজন স্টেশনমাস্টার, দুজন বুকিং সহকারী, চারজন পয়েন্টম্যান, চারজন পোটার, ক্লিনার ও মালিসহ ১৫ কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদ ছিল। বছর দুয়েক আগে হঠাৎ করে স্টেশনমাস্টার তৈফিক আহম্মেদকে ঈশ্বরদীতে (প্রেষণ) সরিয়ে নেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে স্টেশনটি ক্লোজিং ডাউন বা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এর পর থেকে স্টেশনটিতে ট্রেনের ক্রসিংব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে। এখন আর স্টেশনের সিগন্যাল ঘরে বাতি 
জ্বলে না। রেললাইনের সিগন্যাল পাখায় পাখায় লাল সবুজ বাতির আলোও ওঠে না। এখন একজন বুকিং সহকারী আর একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ চারজন কর্মচারী দিয়ে খোকসার স্টেশনটি সচল রাখা হয়েছে। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিদিন সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে রাজশাহীগামী টুঙ্গিপাড়া ও ঢাকাগামী মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেন দুটির নিয়মিত ক্রসিং রয়েছে খোকসায়। স্টেশনটিতে ক্রসিং বন্ধের পর পাংশা অথবা কুমারখালীতে ক্রসিং করা হয়। আর এ কারণেই ট্রেন জোড়া প্রতিদিনই পৌনে এক ঘণ্টা বিলম্বে চলাচল করে। ফলে প্রতিদিনই বিভিন্ন ট্রেন আশপাশের স্টেশনে ক্রসিংয়ের জন্য বিড়ম্বনায় পড়ে। 
পশ্চিমাঞ্চলের রেলের একটি সূত্র জানায়, খোকসা স্টেশনে যাত্রীদের টিকিট বুকিং ও পণ্য পরিবহন থেকে প্রতি মাসে ১৫ লাখ টাকার বেশি রাজস্ব আয় হয়। এর মধ্যে বেসরকারি খাতে চলাচলকারী ট্রেনগুলো থেকে বেশি আয় হচ্ছে। স্টেশনে প্রয়োজনীয়সংখ্যক কর্মচারী থাকলে সরকারের আয় আরও বৃদ্ধি পেত। 

সম্প্রতি একদিন বেলা ১টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সে সময় রাজবাড়ীগামী ফিরতি শাটল ট্রেন পার হবে। শতাধিক যাত্রী স্টেশনে অপেক্ষা করছেন। বেসরকারি সংস্থার কর্মচারীরা ট্রেনের টিকিট বিক্রিতে ব্যস্ত। স্টেশনমাস্টারের কক্ষের দরজা বন্ধ। তবে টেলিফোন বেজে উঠলেই একজন সেই রুমে যাচ্ছেন আবার বের হয়ে আসছেন। তাঁর সঙ্গে কথা বলে জানা গেল তিনি ক্লিনার পদের কর্মচারী। তাঁর নাম মিরাজুল ইসলাম। পাশের স্টেশন থেকে লাইন ক্লিয়ার চেয়ে টেলিফোন বার্তা পাঠালে তাঁর উত্তর দেওয়া, ঘণ্টা বাজানো, লাইন ক্লিয়ার দেওয়া সবই করেন তিনি। একজন মাত্র বুকিং সহকারী তিনি সকাল থেকে ডিউটি করে বাড়ি গেছেন। অন্য একজন পয়েন্টম্যান প্রধান রেলক্রসিংয়ের গেট ম্যানেজ করছেন। অপরজন পোটার ব্যস্ত আছেন স্টেশনে। 

রেল নিয়ে বিভিন্ন আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা খন্দকার সেলিম রেজা বলেন, এই রেল রুটে ঢাকা, খুলনা, রাজশাহী, গোপালগঞ্জ, বেনাপোলসহ বিভিন্ন রুটের আন্তনগর ট্রেন চলাচল করে। এ ছাড়া দুই জোড়া শাটল ট্রেনে যাত্রী ও মালামাল পরিবহন করা হয়। এখান থেকে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করেন। কিন্তু এই স্টেশনে জনবল সংকটের কারণে প্রতিদিনই অধিকাংশ ট্রেন এখানে এলে লাইন ক্লিয়ার পাওয়ার অপেক্ষায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এতে যাত্রীরা সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন না। ফলে ভোগান্তিতে বিরক্ত হয়ে অনেকে ট্রেনের টিকিট কাটা বন্ধ করে দিচ্ছেন। 

প্রেষণে থাকা স্টেশনমাস্টার তৈফিক আহম্মেদ বলেন, পাংশা ও কুমারখালীতে সার্কিট ব্রেকিং হওয়ায় প্রতিদিন সকাল হলেই মধুমতি অথবা টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস ট্রেনটিকে বিলম্বে ছাড়া হচ্ছে। ফলে দিনের প্রথম ট্রেনটি পৌনে এক ঘণ্টা বিলম্বে যাত্রা করছে। এখন সব থেকে দ্রুত স্টেশনটি ক্লোজিং ডাউন থেকে অবমুক্ত করতে হবে। এ ছাড়া প্রয়োজনীয়সংখ্যক কর্মচারী পদায়ন করলে যাত্রী ভোগান্তি ও ট্রেনের বিলম্ব দূর করা সম্ভব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মিডিয়া ছুটায় দেব, চেনো আমাদের’—সাংবাদিককে হুমকি কুড়িগ্রামের এসপির

মেঘনা আলম ‘নিরাপত্তা হেফাজতে’, কারণ জানাল পুলিশ

তিন সুপারস্টারেও ফ্লপ, ৩৪ বছর আগে যে সর্বভারতীয় ছবি প্রযোজককে দেউলিয়া বানিয়েছিল

বান্দরবান, মণিপুর, মিজোরাম ও রাখাইন নিয়ে খ্রিষ্টান রাষ্ট্র করার ষড়যন্ত্র চলছে: বজলুর রশীদ

ইসলামপুর বিএনপির সহসভাপতি যোগ দিলেন জামায়াতে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত