এ কে এম শামসুদ্দিন
মাত্র কয়েক দিন আগে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল পার্বত্য চট্টগ্রামে। মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় একজন বাঙালি যুবককে পিটিয়ে হত্যা করলে খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবানে পরিস্থিতি প্রায় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল। পাহাড়ি এই তিন জেলায় পাহাড়ি ও বাঙালি জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রথমে উত্তেজনা, তারপর সংঘর্ষ শুরু হয়। পরিস্থিতির অবনতি হলে সেনাবাহিনী নামানো হয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম এমনিতেই একটি স্পর্শকাতর এলাকা। এ জন্য এই অঞ্চল অশান্ত হয়ে উঠলে তা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
স্বাধীনতার পর অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশ থেকে পৃথক করার এক গভীর ষড়যন্ত্র হয়েছিল। সেই ষড়যন্ত্রের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল ভারত। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য ভারত সীমান্তবর্তী এলাকায় ক্যাম্প স্থাপন করে বিপথগামী পাহাড়িদের অস্ত্র ও বিস্ফোরকের প্রশিক্ষণ দিয়েছিল। এসব প্রশিক্ষণ ক্যাম্প ভারতীয় সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানেই পরিচালিত হতো। ভারতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সশস্ত্র এই দলের নাম ছিল ‘শান্তিবাহিনী’।
এটি পাহাড়ি নেতা মানবেন্দ্র লারমা প্রতিষ্ঠিত জনসংহতি সমিতি বা জেএসএসের সশস্ত্র ফ্রন্ট, যা দুই দশক ধরে পাহাড়ে রক্তপাত ঘটিয়েছে। সে সময় ভারতের সরাসরি সহযোগিতায় শান্তিবাহিনীর সশস্ত্র তৎপরতা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ভারতের মূল লক্ষ্যই ছিল বাংলাদেশকে বিভাজন করা। দীর্ঘ দুই দশক ধরে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জেএসএসের সঙ্গে যোগাযোগ করে শান্তি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হয়েছিল। এরশাদ ও খালেদা জিয়ার শাসনামলে এ বিষয়ে অনেক প্রচেষ্টা চালালেও ভারতের অসহযোগিতার কারণে তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় আসার দেড় বছরের মধ্যে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর জেএসএসের সঙ্গে পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষর করা সম্ভব হয়।
হাসিনা সরকারের পতনের আগে একশ্রেণির বুদ্ধিজীবী ভারতের সঙ্গে সুর মিলিয়ে বলে বেড়াতেন, বাংলাদেশের ভূমি ব্যবহার করে বিচ্ছিন্নতাবাদী অস্ত্রধারী সদস্যরা ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সশস্ত্র তৎপরতা চালায়। অথচ দুই দশকের বেশি সময় ধরে অস্ত্র, প্রশিক্ষণ ও আশ্রয় দিয়ে ভারত যে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব নষ্ট করার কাজে শান্তিবাহিনীকে ব্যবহার করেছিল, আমাদের তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা সে বিষয়ে একবারও মুখ খোলেননি। অথচ শান্তিবাহিনীর বিষয়ে ভারতের ভূমিকা নিয়ে যাঁরাই মুখ খোলার চেষ্টা করেছেন, এই বুদ্ধিজীবীরা তাৎক্ষণিক তাদের বিরুদ্ধাচরণ করেছেন। শুধু তা-ই নয়, আইএসআইয়ের এজেন্ট অথবা রাজাকারের লেবেল দিয়ে তাদের কোণঠাসার চেষ্টা করেছেন।
রাষ্ট্রক্ষমতা থেকে শেখ হাসিনার বিদায়ের পর অন্তর্বর্তী সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য এযাবৎ যতগুলো চেষ্টা হয়েছে, তার মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রামের এই অশান্ত পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্য। বর্তমানে পাহাড়ে চারটি পাহাড়ি সশস্ত্র দল সক্রিয়। প্রশ্ন হচ্ছে, এসব সশস্ত্র দলের অস্ত্রের জোগান আসে কোথা থেকে? অস্ত্র ক্রয়ের অর্থ পায় কার কাছ থেকে?
একটি বিষয় নিয়ে কথা বলা দরকার। পার্বত্য তিন জেলায় বসবাসরত জনগণ আদিবাসী না উপজাতি—এটি এখন বহুল চর্চিত বিষয় এবং ষড়যন্ত্রেরই একটি অংশ। আধিপত্যবাদী শক্তি এ দেশের কিছুসংখ্যক বুদ্ধিজীবীকে ব্যবহার করে, সেমিনার-সিম্পোজিয়াম করিয়ে পাহাড়িদের আদিবাসী প্রমাণ করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। বিশ্বজুড়েই আদিবাসী পরিচয় নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। এর হাওয়া এসে লেগেছে বাংলাদেশেও। কিন্তু এ বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান খুব পরিষ্কার। বাংলাদেশে কোনো আদিবাসী নেই।
২০০৭ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর আদিবাসীদের অধিকারসংক্রান্ত জাতিসংঘের একটি ঘোষণাপত্র (UNDRIP) সাধারণ পরিষদে গৃহীত হয়। সেই ঘোষণাপত্রে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জন্য অনেকগুলো অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে ‘ভূমির অধিকার’, ‘আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার’, ‘স্বায়ত্তশাসনের অধিকার’, ‘জাতীয়তা লাভের অধিকার’, ‘জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ’ উল্লেখযোগ্য। একটু লক্ষ করলেই বোঝা যাবে, এখানে দেশ বিভাজনের জন্য করণীয় সব অধিকারই তাদের দেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘে এই ঘোষণাপত্র গৃহীত হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীরা, বিশেষ করে পাহাড়ি জনগোষ্ঠী নিজেদের আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি তুলে আসছে। জাতিসংঘ ঘোষিত ঘোষণাপত্রের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে উপজাতিদের আদিবাসী বানানোর জন্য ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠীর এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এ দেশের চিহ্নিত কিছু গণমাধ্যম, সুশীল, বুদ্ধিজীবী, মানবাধিকারকর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় শিক্ষক।
আমাদের দেশের গণমাধ্যমগুলো আদিবাসী শব্দ প্রচারে যতটা উৎসাহী, উপজাতি শব্দ ব্যবহারে ততটা উৎসাহী নয়। এ দেশের তথাকথিত গণমাধ্যমগুলোও আদিবাসী শব্দটি প্রচার করে যাচ্ছে। গণমাধ্যমের এই আচরণে দেশের অনেকেই প্রকৃত ইতিহাস না জেনে উপজাতিদের আদিবাসী হিসেবে সম্বোধন করছেন। ব্যাপক হারে প্রচারের মাধ্যমে মিথ্যাকে সত্যে পরিণত করা, বিশ্বের বড় বড় গোয়েন্দা সংস্থার প্রোপাগান্ডা যুদ্ধের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
শারীরিক গঠন, রং, সংস্কৃতি, চরিত্রগত বৈশিষ্ট্যের গুণাবলি ইত্যাদি বিবেচনা করে পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসীদের মূল তিনটি সমাজে বিভক্ত করা যায়। তারা হলো বাঙালি, মঙ্গোলীয় ও উপজাতি। এর মধ্যে উপজাতি জনগণ উল্লেখযোগ্য। পাহাড়ে মোট ১৩টি উপজাতি গোষ্ঠীর বসবাস। এদের মধ্যে চাকমা জনগোষ্ঠী শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে অন্যদের চেয়েও এগিয়ে। পাহাড়ে বসবাসরত এসব জনগণ এযাবৎকাল যৌগিক পরিচয়ে উপজাতি নামে পরিচিত। ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায়, অষ্টাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে তৎকালীন বার্মার উত্তর আরাকানের চিন পার্বত্যাঞ্চলে স্থানীয় মগ বা মার্মা ও চাকমাদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়।
রাজশক্তির সহায়তাপ্রাপ্ত মার্মাদের হাতে চাকমারা ভীষণ পর্যুদস্ত হলে প্রথমে কিছুসংখ্যক চাকমা শের মস্ত খাঁ নামে এক ব্যক্তির নেতৃত্বে পার্বত্য চট্টগ্রামে আশ্রয় নেয়। চাকমা, মার্মা ও অন্যান্য ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী বার্মা ত্যাগ করে পার্বত্য চট্টগ্রামে আশ্রয় গ্রহণের দ্বিতীয় কারণ হলো, ১৭৮৪-৮৫ সালে বার্মার আভা রাজ্য কর্তৃক আরাকান আক্রমণ, দখল ও স্থানীয় লোকদের ওপর ব্যাপক নির্যাতন।
ফলে বর্তমানে রোহিঙ্গা জনগণ যেভাবে বিতাড়িত হয়ে কক্সবাজার এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে; ঠিক তেমনই ওই সময় আরাকানের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ চাকমা, মার্মা ও অন্যান্য ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী উদ্বাস্তুরূপে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড় ও জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছিল। সেই থেকে তাদের পার্বত্য অঞ্চলে বসবাস শুরু। ব্রিটিশ আমলে ১৯০০ সালে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন অ্যাক্ট’ যখন জারি হয়, তখন বিশেষ সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার স্বার্থে বাঙালিদের বিপরীতে পৃথক অনুন্নত জাতিসত্তার স্বীকৃতি লাভের লক্ষ্যে তারা নিজেদের উপজাতি অভিহিত করে। এর আওতায় তাদের নেতারা লাভ করেন সার্কেল চিফ, রাজা চৌধুরী ইত্যাদি অভিজাত পদ।
একই সঙ্গে লাভ করেন নিজেদের ভরণ-পোষণের উপযোগী আর্থিক সুবিধা, জুমকরের অংশ ও সামাজিক বিচারে ধার্যকৃত জরিমানার একাংশ ভোগের অধিকার। লোক ও ভূমি প্রশাসনেও শরিক হন তাঁরা। সার্কেল চিফরা পাহাড়ি জনগণের কাছে রাজা হিসেবেই বিবেচিত। অন্যদিকে ১৯৯৭ সালে সম্পাদিত পার্বত্য চুক্তিতেও তাদের রাজনৈতিক সংগঠন জেএসএসের নেতারা এই উপজাতি আখ্যা বহাল রাখেন। অথচ এখন জাতিসংঘের ঘোষণার পর তাঁরা তাঁদের অতীত ঐতিহ্য ও চুক্তির কথা একপাশে ঠেলে দিয়ে নিজেদের আদিবাসী দাবি করা শুরু করেছেন।
পার্বত্য চট্টগ্রামে অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টির পরপরই ভারতের বেশ কিছু সংগঠন ও গণমাধ্যমকে সক্রিয় হতে দেখা গেছে। ভারতের বহুল পরিচিত আনন্দবাজার পত্রিকা ২১ সেপ্টেম্বর, ‘বাংলাদেশে গণহত্যা থেকে চাকমাদের রক্ষা করুন—মোদিকে বার্তা উত্তর-পূর্বের জনজাতিদের’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রচার করে। খবরে চাকমাদের উদ্ধৃত করে বলা হয়, ‘হাসিনা সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর বাংলাদেশে নতুন সরকারের আমলে তাদের “আদিবাসী” পরিচয় মুছে ফেলার চেষ্টা শুরু হয়েছে।’
পার্বত্য অঞ্চলের এ ঘটনাকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য সাম্প্রদায়িকতার লেবাস লাগিয়ে কয়েকটি জনজাতি সংগঠনের উদ্ধৃত করে পত্রিকাটি বলেছে, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও মুসলিম কট্টরপন্থীরা বৌদ্ধধর্মাবলম্বী চাকমাদের গণহত্যা করছে।
সংঘর্ষে খুন হয়েছেন অন্তত ১০ জন অমুসলিম। অন্যদিকে, ভারতের ত্রিপুরার চাকমা নেতারা পার্বত্য চট্টগ্রামকে ‘ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ’ বলে দাবি করেছেন। তাদের দাবি, পার্বত্য চট্টগ্রামে ৯৮ দশমিক ৫ শতাংশ বৌদ্ধ ও হিন্দু সম্প্রদায়ের হওয়া সত্ত্বেও ১৯৪৭ সালে স্যার সিরিল র্যাডক্লিফ পার্বত্য চট্টগ্রামকে পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত করেন। উল্লেখ্য, ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট তৎকালীন চাকমা নেতারা রাঙামাটিতে ভারতীয় পতাকা উত্তোলন করেছিলেন, যা ২১ আগস্ট পর্যন্ত ওই অবস্থায় ছিল। গত ২৭ সেপ্টেম্বর ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি নেতা প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ তো ঘোষণাই দিলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ যদি মনে করে তারা আমাদের চ্যালেঞ্জ করতে পারে, আমি অবশ্যই মনে করিয়ে দিতে পারি যে, পাকিস্তানকে ভাগ করে ভারত বাংলাদেশ তৈরি করেছে এবং এখন আবার বাংলাদেশকে ভাগ করে আরেকটি দেশ তৈরি করার ক্ষমতা ভারতের আছে।’
এসব নিঃসন্দেহে বাংলাদেশ নিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশের মনোভাবেরই বহিঃপ্রকাশ, যা কোনোভাবেই হালকা করে দেখার বিষয় নয়। অতএব, পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে বাংলাদেশকে আরও বেশি সতর্ক হতে হবে। সরকারি সংস্থাগুলোকে পার্বত্য অঞ্চলে জনসংযোগ বাড়াতে হবে, যাতে সেখানের পরিস্থিতির আর অবনতি না ঘটে। সরকারকে পার্বত্য চট্টগ্রামের ঘটনাবলির সঠিক চিত্র তুলে ধরে প্রকৃত বন্ধুরাষ্ট্রগুলোর সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করতে হবে। দেশের জনগণ যদি সচেতন ও ঐক্যবদ্ধ থাকে, তাহলে বাংলাদেশ বিভাজনে কারও নীলনকশাই বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না।
লেখক: অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ও কলামিস্ট
মাত্র কয়েক দিন আগে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল পার্বত্য চট্টগ্রামে। মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় একজন বাঙালি যুবককে পিটিয়ে হত্যা করলে খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবানে পরিস্থিতি প্রায় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল। পাহাড়ি এই তিন জেলায় পাহাড়ি ও বাঙালি জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রথমে উত্তেজনা, তারপর সংঘর্ষ শুরু হয়। পরিস্থিতির অবনতি হলে সেনাবাহিনী নামানো হয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম এমনিতেই একটি স্পর্শকাতর এলাকা। এ জন্য এই অঞ্চল অশান্ত হয়ে উঠলে তা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
স্বাধীনতার পর অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশ থেকে পৃথক করার এক গভীর ষড়যন্ত্র হয়েছিল। সেই ষড়যন্ত্রের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল ভারত। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য ভারত সীমান্তবর্তী এলাকায় ক্যাম্প স্থাপন করে বিপথগামী পাহাড়িদের অস্ত্র ও বিস্ফোরকের প্রশিক্ষণ দিয়েছিল। এসব প্রশিক্ষণ ক্যাম্প ভারতীয় সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানেই পরিচালিত হতো। ভারতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সশস্ত্র এই দলের নাম ছিল ‘শান্তিবাহিনী’।
এটি পাহাড়ি নেতা মানবেন্দ্র লারমা প্রতিষ্ঠিত জনসংহতি সমিতি বা জেএসএসের সশস্ত্র ফ্রন্ট, যা দুই দশক ধরে পাহাড়ে রক্তপাত ঘটিয়েছে। সে সময় ভারতের সরাসরি সহযোগিতায় শান্তিবাহিনীর সশস্ত্র তৎপরতা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ভারতের মূল লক্ষ্যই ছিল বাংলাদেশকে বিভাজন করা। দীর্ঘ দুই দশক ধরে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জেএসএসের সঙ্গে যোগাযোগ করে শান্তি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হয়েছিল। এরশাদ ও খালেদা জিয়ার শাসনামলে এ বিষয়ে অনেক প্রচেষ্টা চালালেও ভারতের অসহযোগিতার কারণে তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় আসার দেড় বছরের মধ্যে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর জেএসএসের সঙ্গে পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষর করা সম্ভব হয়।
হাসিনা সরকারের পতনের আগে একশ্রেণির বুদ্ধিজীবী ভারতের সঙ্গে সুর মিলিয়ে বলে বেড়াতেন, বাংলাদেশের ভূমি ব্যবহার করে বিচ্ছিন্নতাবাদী অস্ত্রধারী সদস্যরা ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সশস্ত্র তৎপরতা চালায়। অথচ দুই দশকের বেশি সময় ধরে অস্ত্র, প্রশিক্ষণ ও আশ্রয় দিয়ে ভারত যে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব নষ্ট করার কাজে শান্তিবাহিনীকে ব্যবহার করেছিল, আমাদের তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা সে বিষয়ে একবারও মুখ খোলেননি। অথচ শান্তিবাহিনীর বিষয়ে ভারতের ভূমিকা নিয়ে যাঁরাই মুখ খোলার চেষ্টা করেছেন, এই বুদ্ধিজীবীরা তাৎক্ষণিক তাদের বিরুদ্ধাচরণ করেছেন। শুধু তা-ই নয়, আইএসআইয়ের এজেন্ট অথবা রাজাকারের লেবেল দিয়ে তাদের কোণঠাসার চেষ্টা করেছেন।
রাষ্ট্রক্ষমতা থেকে শেখ হাসিনার বিদায়ের পর অন্তর্বর্তী সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য এযাবৎ যতগুলো চেষ্টা হয়েছে, তার মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রামের এই অশান্ত পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্য। বর্তমানে পাহাড়ে চারটি পাহাড়ি সশস্ত্র দল সক্রিয়। প্রশ্ন হচ্ছে, এসব সশস্ত্র দলের অস্ত্রের জোগান আসে কোথা থেকে? অস্ত্র ক্রয়ের অর্থ পায় কার কাছ থেকে?
একটি বিষয় নিয়ে কথা বলা দরকার। পার্বত্য তিন জেলায় বসবাসরত জনগণ আদিবাসী না উপজাতি—এটি এখন বহুল চর্চিত বিষয় এবং ষড়যন্ত্রেরই একটি অংশ। আধিপত্যবাদী শক্তি এ দেশের কিছুসংখ্যক বুদ্ধিজীবীকে ব্যবহার করে, সেমিনার-সিম্পোজিয়াম করিয়ে পাহাড়িদের আদিবাসী প্রমাণ করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। বিশ্বজুড়েই আদিবাসী পরিচয় নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। এর হাওয়া এসে লেগেছে বাংলাদেশেও। কিন্তু এ বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান খুব পরিষ্কার। বাংলাদেশে কোনো আদিবাসী নেই।
২০০৭ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর আদিবাসীদের অধিকারসংক্রান্ত জাতিসংঘের একটি ঘোষণাপত্র (UNDRIP) সাধারণ পরিষদে গৃহীত হয়। সেই ঘোষণাপত্রে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জন্য অনেকগুলো অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে ‘ভূমির অধিকার’, ‘আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার’, ‘স্বায়ত্তশাসনের অধিকার’, ‘জাতীয়তা লাভের অধিকার’, ‘জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ’ উল্লেখযোগ্য। একটু লক্ষ করলেই বোঝা যাবে, এখানে দেশ বিভাজনের জন্য করণীয় সব অধিকারই তাদের দেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘে এই ঘোষণাপত্র গৃহীত হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীরা, বিশেষ করে পাহাড়ি জনগোষ্ঠী নিজেদের আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি তুলে আসছে। জাতিসংঘ ঘোষিত ঘোষণাপত্রের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে উপজাতিদের আদিবাসী বানানোর জন্য ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠীর এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এ দেশের চিহ্নিত কিছু গণমাধ্যম, সুশীল, বুদ্ধিজীবী, মানবাধিকারকর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় শিক্ষক।
আমাদের দেশের গণমাধ্যমগুলো আদিবাসী শব্দ প্রচারে যতটা উৎসাহী, উপজাতি শব্দ ব্যবহারে ততটা উৎসাহী নয়। এ দেশের তথাকথিত গণমাধ্যমগুলোও আদিবাসী শব্দটি প্রচার করে যাচ্ছে। গণমাধ্যমের এই আচরণে দেশের অনেকেই প্রকৃত ইতিহাস না জেনে উপজাতিদের আদিবাসী হিসেবে সম্বোধন করছেন। ব্যাপক হারে প্রচারের মাধ্যমে মিথ্যাকে সত্যে পরিণত করা, বিশ্বের বড় বড় গোয়েন্দা সংস্থার প্রোপাগান্ডা যুদ্ধের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
শারীরিক গঠন, রং, সংস্কৃতি, চরিত্রগত বৈশিষ্ট্যের গুণাবলি ইত্যাদি বিবেচনা করে পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসীদের মূল তিনটি সমাজে বিভক্ত করা যায়। তারা হলো বাঙালি, মঙ্গোলীয় ও উপজাতি। এর মধ্যে উপজাতি জনগণ উল্লেখযোগ্য। পাহাড়ে মোট ১৩টি উপজাতি গোষ্ঠীর বসবাস। এদের মধ্যে চাকমা জনগোষ্ঠী শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে অন্যদের চেয়েও এগিয়ে। পাহাড়ে বসবাসরত এসব জনগণ এযাবৎকাল যৌগিক পরিচয়ে উপজাতি নামে পরিচিত। ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায়, অষ্টাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে তৎকালীন বার্মার উত্তর আরাকানের চিন পার্বত্যাঞ্চলে স্থানীয় মগ বা মার্মা ও চাকমাদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়।
রাজশক্তির সহায়তাপ্রাপ্ত মার্মাদের হাতে চাকমারা ভীষণ পর্যুদস্ত হলে প্রথমে কিছুসংখ্যক চাকমা শের মস্ত খাঁ নামে এক ব্যক্তির নেতৃত্বে পার্বত্য চট্টগ্রামে আশ্রয় নেয়। চাকমা, মার্মা ও অন্যান্য ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী বার্মা ত্যাগ করে পার্বত্য চট্টগ্রামে আশ্রয় গ্রহণের দ্বিতীয় কারণ হলো, ১৭৮৪-৮৫ সালে বার্মার আভা রাজ্য কর্তৃক আরাকান আক্রমণ, দখল ও স্থানীয় লোকদের ওপর ব্যাপক নির্যাতন।
ফলে বর্তমানে রোহিঙ্গা জনগণ যেভাবে বিতাড়িত হয়ে কক্সবাজার এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে; ঠিক তেমনই ওই সময় আরাকানের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ চাকমা, মার্মা ও অন্যান্য ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী উদ্বাস্তুরূপে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড় ও জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছিল। সেই থেকে তাদের পার্বত্য অঞ্চলে বসবাস শুরু। ব্রিটিশ আমলে ১৯০০ সালে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন অ্যাক্ট’ যখন জারি হয়, তখন বিশেষ সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার স্বার্থে বাঙালিদের বিপরীতে পৃথক অনুন্নত জাতিসত্তার স্বীকৃতি লাভের লক্ষ্যে তারা নিজেদের উপজাতি অভিহিত করে। এর আওতায় তাদের নেতারা লাভ করেন সার্কেল চিফ, রাজা চৌধুরী ইত্যাদি অভিজাত পদ।
একই সঙ্গে লাভ করেন নিজেদের ভরণ-পোষণের উপযোগী আর্থিক সুবিধা, জুমকরের অংশ ও সামাজিক বিচারে ধার্যকৃত জরিমানার একাংশ ভোগের অধিকার। লোক ও ভূমি প্রশাসনেও শরিক হন তাঁরা। সার্কেল চিফরা পাহাড়ি জনগণের কাছে রাজা হিসেবেই বিবেচিত। অন্যদিকে ১৯৯৭ সালে সম্পাদিত পার্বত্য চুক্তিতেও তাদের রাজনৈতিক সংগঠন জেএসএসের নেতারা এই উপজাতি আখ্যা বহাল রাখেন। অথচ এখন জাতিসংঘের ঘোষণার পর তাঁরা তাঁদের অতীত ঐতিহ্য ও চুক্তির কথা একপাশে ঠেলে দিয়ে নিজেদের আদিবাসী দাবি করা শুরু করেছেন।
পার্বত্য চট্টগ্রামে অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টির পরপরই ভারতের বেশ কিছু সংগঠন ও গণমাধ্যমকে সক্রিয় হতে দেখা গেছে। ভারতের বহুল পরিচিত আনন্দবাজার পত্রিকা ২১ সেপ্টেম্বর, ‘বাংলাদেশে গণহত্যা থেকে চাকমাদের রক্ষা করুন—মোদিকে বার্তা উত্তর-পূর্বের জনজাতিদের’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রচার করে। খবরে চাকমাদের উদ্ধৃত করে বলা হয়, ‘হাসিনা সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর বাংলাদেশে নতুন সরকারের আমলে তাদের “আদিবাসী” পরিচয় মুছে ফেলার চেষ্টা শুরু হয়েছে।’
পার্বত্য অঞ্চলের এ ঘটনাকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য সাম্প্রদায়িকতার লেবাস লাগিয়ে কয়েকটি জনজাতি সংগঠনের উদ্ধৃত করে পত্রিকাটি বলেছে, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও মুসলিম কট্টরপন্থীরা বৌদ্ধধর্মাবলম্বী চাকমাদের গণহত্যা করছে।
সংঘর্ষে খুন হয়েছেন অন্তত ১০ জন অমুসলিম। অন্যদিকে, ভারতের ত্রিপুরার চাকমা নেতারা পার্বত্য চট্টগ্রামকে ‘ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ’ বলে দাবি করেছেন। তাদের দাবি, পার্বত্য চট্টগ্রামে ৯৮ দশমিক ৫ শতাংশ বৌদ্ধ ও হিন্দু সম্প্রদায়ের হওয়া সত্ত্বেও ১৯৪৭ সালে স্যার সিরিল র্যাডক্লিফ পার্বত্য চট্টগ্রামকে পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত করেন। উল্লেখ্য, ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট তৎকালীন চাকমা নেতারা রাঙামাটিতে ভারতীয় পতাকা উত্তোলন করেছিলেন, যা ২১ আগস্ট পর্যন্ত ওই অবস্থায় ছিল। গত ২৭ সেপ্টেম্বর ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি নেতা প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ তো ঘোষণাই দিলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ যদি মনে করে তারা আমাদের চ্যালেঞ্জ করতে পারে, আমি অবশ্যই মনে করিয়ে দিতে পারি যে, পাকিস্তানকে ভাগ করে ভারত বাংলাদেশ তৈরি করেছে এবং এখন আবার বাংলাদেশকে ভাগ করে আরেকটি দেশ তৈরি করার ক্ষমতা ভারতের আছে।’
এসব নিঃসন্দেহে বাংলাদেশ নিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশের মনোভাবেরই বহিঃপ্রকাশ, যা কোনোভাবেই হালকা করে দেখার বিষয় নয়। অতএব, পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে বাংলাদেশকে আরও বেশি সতর্ক হতে হবে। সরকারি সংস্থাগুলোকে পার্বত্য অঞ্চলে জনসংযোগ বাড়াতে হবে, যাতে সেখানের পরিস্থিতির আর অবনতি না ঘটে। সরকারকে পার্বত্য চট্টগ্রামের ঘটনাবলির সঠিক চিত্র তুলে ধরে প্রকৃত বন্ধুরাষ্ট্রগুলোর সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করতে হবে। দেশের জনগণ যদি সচেতন ও ঐক্যবদ্ধ থাকে, তাহলে বাংলাদেশ বিভাজনে কারও নীলনকশাই বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না।
লেখক: অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ও কলামিস্ট
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
২ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
২ দিন আগে