পশুর হাটে এখন আদরের লালচান-কালাচানরা

মান্দি ডি কস্তা, ঢাকা
প্রকাশ : ২৩ জুন ২০২৩, ১১: ৪৬

কালাচানকে দেখে এতটাই ভালো লেগেছিল যে কোনো কিছু না ভেবে তাকে কিনে বাড়ি ফেরেন মো. আল আমিন। ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকায় কেনা সেই কালাচানকে আদর-স্নেহে বড় করেছেন তিন বছর ধরে। বলতে বলতে আবেগে কণ্ঠ ভারী হয়ে আসে আল আমিনের। ফ্রিজিয়ান আর ব্রাহামার ক্রস এই কালাচান।পরে শাহিওয়াল জাতের লালচানকেও নিয়ে আসেন তিনি ৪৪ হাজার টাকায়। অনেক আদরের সেই কালাচান আর লালচানকে হাটে তুলেছেন আল আমিন। 

রাজধানীর গাবতলী পশুর হাটে গতকাল বৃহস্পতিবার গিয়ে আল আমিনের সঙ্গে কথা হয়। সঙ্গে তাঁর ভাই মো. রোমানও এসেছেন। রোমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কালাচান সারা রাত দাঁড়াই ছিল, বালুর মধ্যে ও শোয় না। অনেক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। পরে সকালে দুইডা ফোম আনার পর শুইছে।’ বলতে বলতে রোমানেরও গলা ধরে আসে। সিরাজগঞ্জ থেকে আসা এই দুই সহোদর জানান, কালাচানের ওজন ১ হাজার ৭৫ কেজি। দাম হাঁকছেন সাড়ে ১২ লাখ টাকা। আর শাহিওয়াল লালচানের ওজন ৯৮০ কেজি। দাম চাচ্ছেন ৯ লাখ টাকা।

গত বুধবার রাত থেকেই গাবতলীসহ বিভিন্ন হাটে এভাবে আদরের লালচান-কালাচানদের আনতে শুরু করেছেন দেশের বিভিন্ন এলাকার খামারিরা। গরুর পাশাপাশি এরই মধ্যে হাটে উঠেছে প্রচুর ছাগলও। এ ছাড়া হাটের বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে আছে দুম্বা। ৩ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে এসব দুম্বা। গাড়ল আর মহিষও উত্তেজনা ছড়াচ্ছে। একেকটি মহিষ ৩ লাখ ২০ হাজার থেকে সাড়ে ১২ লাখ টাকা দাম হাঁকছেন ব্যাপারীরা। আর গাড়ল বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকায়। 

যশোর থেকে আসা মতিয়ার হোসেন বলেন, গত বছর ৩৯টি গরু এনেছিলেন। সব বিক্রি হয়ে গিয়েছিল। এবার ২৯টি গরুর মধ্যে ১২টি এনেছেন। বাকি গরুগুলো আজ শুক্রবার আনবেন। ২৯টি গরুর জন্য জায়গার ভাড়া দিতে হবে ১ লাখ টাকা। সবচেয়ে ছোট গরুটির দাম চাচ্ছেন তিনি ২ লাখ টাকা। সাড়ে ৫ মণ মাংস হবে। আর বড় গরুগুলোর মধ্যে ৯০০ কেজি ওজনেরটার দাম চাইছেন ১১ লাখ টাকা।

কুষ্টিয়ার ব্যবসায়ী মো. নূরে আলম জানান, এবার ৬০টি ছাগল এনেছেন। ছোট ছাগলগুলো ১৮ হাজার টাকায় কেনা পড়ছে। ১৮ কেজি মাংস হবে। বড় ছাগলগুলো ১ মণের বেশি হবে, ৪৫ হাজার টাকার মতো কেনা পড়েছে।

গাবতলীর হাটে হাসিল আদায়কারী রফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, এখন হাসিল সাড়ে ৩ শতাংশ। আর সরকার-নির্ধারিত হাট শুরু হলে ৫ শতাংশ হাসিল আদায় করা হবে। এখন যাঁরা কিনবেন, তাঁরা দেড় শতাংশ হাসিল ছাড় পাবেন।

এদিকে বাড়িতে যাঁদের জায়গা আছে, তাঁরা এরই মধ্যে কোরবানির পশু কিনতে শুরু করেছেন। সকালে গাবতলীর হাট থেকে আদাবরের বাসিন্দা হাজি ফোরকান ১ লাখ ৪৫ হাজার টাকায় একটি ষাঁড় কিনেছেন। আর মণিপুরিপাড়ার বকুল বিশ্বাস গরু কিনেছেন ১ লাখ ৮ হাজার টাকায়। গাবতলী থেকে মেরাদিয়া যাওয়ার পথে হাতিরঝিলের পাশে সাব্বির আহমেদ নামের একজনকে দেখা যায়, গরুকে ঘাস খাওয়াতে বের হয়েছেন। তিনি জানান, ৮৫ হাজার টাকায় দুদিন আগে গরুটি কিনেছেন।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেরাদিয়া হাটে গিয়ে দেখা যায়, হাটে এরই মধ্যে অনেক পশু উঠেছে। চুয়াডাঙ্গা থেকে আসা ব্যাপারী শাহীন আলম বলেন, এবার তিনটি গরু এনেছেন। একেকটির ওজন ৬-৭ মণ করে হবে। দাম চাচ্ছেন ২ লাখ ৩০ হাজার থেকে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা। মেহেরপুরের ব্যবসায়ী নফর আলী গরু এনেছেন চারটি, দাম হাঁকছেন ২ লাখ থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত