চাহিদা কম, বরাদ্দ বেশি

আবু সাইম, ঢাকা
প্রকাশ : ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০১: ৩৬

সাধারণত উন্নয়ন প্রকল্পের বিপরীতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের আবদার সামলাতে হিমশিম খেতে হয় সরকারকে। বিশেষত পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়কে যাচাই-বাছাই করে চাহিদার তুলনায় কমিয়ে বরাদ্দ দিতে হয় সব সময়ই। তবে এবারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে দেখা যাচ্ছে উল্টো চিত্র। মন্ত্রণালয়গুলো কম চেয়েও বেশি টাকা পাচ্ছে। সংশোধিত উন্নয়ন বাজেটে রেকর্ড সাড়ে ১৮ হাজার কোটি টাকা কাটছাঁটের পর সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (আরএডিপি) যে আকার দাঁড়াবে তা মন্ত্রণালয়গুলোর চাহিদার চেয়েও সোয়া ৫ হাজার কোটি টাকা বেশি। এরই মধ্যে চলতি অর্থবছরের (২০২২-২৩) আরএডিপির খসড়া চূড়ান্ত করেছে পরিকল্পনা কমিশন।

এ বিষয়ে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, মন্ত্রণালয়গুলোর চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতেই সংশোধিত এডিপির খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। আগামী ১ মার্চ এনইসি (জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ) সভায় এটি অনুমোদন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে এবারের এডিপিতে বৈদেশিক অর্থায়নের অংশে বড় কাটছাঁট হচ্ছে।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানিয়েছে, চলিত অর্থবছরের মূল এডিপির আকার হচ্ছে ২ লাখ ৪৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা। এতে দেশীয় অর্থায়নের (জিওবি) অংশ কমছে না। তবে প্রকল্প সাহায্য অংশ ৯৩ হাজার কোটি টাকা থেকে সাড়ে ১৮ হাজার কোটি টাকা কমছে। সব মিলিয়ে সংশোধিত এডিপির আকার দাঁড়াচ্ছে ২ লাখ ২৭ হাজার ৫৬৬ কোটি টাকা।

গত সোমবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত বর্ধিত সভায় সংশোধিত এডিপির খসড়া চূড়ান্ত করা হয়। সভায় উত্থাপিত তথ্যে দেখা যায়, এবার প্রকল্পের সরকারি বা জিওবি অংশের চাহিদা ছিল ১ লাখ ৪৮ হাজার ৯৩৫ কোটি টাকা। আরএডিপিতে বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৬৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ সরকারি অংশে চাহিদার চেয়েও ৪ হাজার ১৩১ কোটি টাকা বেশি দেয়া হচ্ছে।

আবার প্রকল্প সাহায্য বা বৈদেশিক ঋণের অংশে চাহিদা ছিল ৭৩ হাজার ৩৬৯ কোটি টাকা। আরএডিপিতে বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে ৭৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। চাহিদার চেয়ে ১ হাজার ১৩১ কোটি টাকা বেশি বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে।

সভায় অংশ নেয়া কমিশনের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, এডিপির আকার আরও কমতে পারত। কিন্তু সরকার আকার কম দেখাতে চাইছে না। এ জন্য দেশীয় অংশ কমানো হয়নি। সব সময় মন্ত্রণালয়গুলোর প্রচুর চাহিদা দেখা যেত। কাকে কত টাকা দেয়া যাবে তা ঠিক করতে পরিকল্পনা কমিশনের বেগ পেতে হতো। কিন্তু এবার ঠিক তার উল্টো। এবার মন্ত্রণালয়গুলোর চাহিদা অনেক কম। মূলত বছরের শুরু থেকেই অর্থসংকটের কারণে বিভিন্নভাবে প্রকল্পের অর্থ ব্যয়ে লাগাম টানা হয়। এতে মন্ত্রণালয়গুলোর খরচে ছেদ পড়েছে। তাই বড় ধরনের কাটছাঁটের আভাস অনেক আগেই পাওয়া গিয়েছিল।

বর্ধিত সভা সূত্রে জানা গেছে, এবারের আরএডিপিতে স্থানীয় সরকার বিভাগ পাচ্ছে ৩৯ হাজার ৫৬৩ কোটি টাকা, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ পাচ্ছে ২৯ হাজার ৮৯৬ কোটি টাকা, রেলপথ মন্ত্রণালয় পাচ্ছে ১২ হাজার ৫৯৬ কোটি টাকা, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় পাচ্ছে ৬ হাজার ৭৯৮ কোটি টাকা, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় পাচ্ছে ৫ হাজার ৫৩৯ কোটি টাকা, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় পাচ্ছে ৪ হাজার ২১৭ কোটি টাকা এবং সেতু বিভাগ পাচ্ছে ৭ হাজার ৬৭ কোটি টাকা।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত