ডায়ালাইসিস উপকরণ কিনে নিঃস্ব রংপুর মেডিকেলের রোগীরা

শিপুল ইসলাম, রংপুর
প্রকাশ : ০৫ মে ২০২৩, ১২: ১১

রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে কিডনি রোগীদের ডায়ালাইসিস করার প্রয়োজনীয় কিছু উপকরণ বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে বলে অভিযোগ রোগীদের। এতে নিঃস্ব হচ্ছেন মধ্যবিত্ত ও গরিব রোগীরা। উপকরণ কেনার সামর্থ্য না থাকায় বেশ কয়েকজন রোগী বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। এদিকে হেমোডায়ালাইসিস মেশিনের ১৫টি নষ্ট। এতে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসাসেবা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, কিডনি রোগীদের ডায়ালাইসিসের জন্য ডায়ালাইসিস ইউনিটের নেফ্রোলজি (কিডনি) বিভাগের ৩৯টি হেমোডায়ালাইসিস মেশিন আছে। এর মধ্যে ১৫টি মেশিন ছয় মাসের বেশি সময় ধরে নষ্ট।

সম্প্রতি গাইবান্ধা জেলা সদরের লক্ষ্মীপুর বালাআটা গ্রামের শারমিন আক্তারের (৩০) সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে ছয় মাস ডায়ালাইসিস করার জন্য এক মাস আগে ২০ হাজার টাকা দিয়ে প্যাকেজ নিয়েছি। এখানে সপ্তাহে দুই দিন করে প্রয়োজনীয় উপকরণ দিয়ে ডায়ালাইসিস করাবেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু এখান থেকে কোনো উপকরণ পাচ্ছি না। একবার ডায়ালাইসিস করতে বাইরে থেকে উপকরণ কিনতে হচ্ছে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকার।’

গাইবান্ধা জেলা সদরের খানসিংহপুর কাঁচারীপাড়া গ্রামের রাজমিস্ত্রি আলমগীর হোসেন। দুই মাস ধরে তিনি রমেক হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ডায়ালাইসিস চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাঁর স্ত্রী লাইজু বেগম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘যদি সরকারি হাসপাতালেচিকিৎসা নিতে সব ওষুধপত্র বাইরে থেকে কিনবারেই লাগে, তাহলে এত বড় হাসপাতাল থাকি লাভ কী!’

অভিযোগ উঠেছে, বেশ কিছু রোগী অর্থাভাবে ডায়ালাইসিস করার উপকরণ কিনতে না পেরে মারা গেছেন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, জ্যারিকেন এ-পার্ট ও বি-পার্ট পানি, ডায়াজার, ব্লাড লাইন, নিডল, স্যালাইন সেট, হেপারিং ব্লাড সেটসহ বেশ কিছু উপকরণ বরাদ্দ নেই এক বছর ধরে। ডায়ালাইসিসের জন্য রোগীর স্বজনদের এসব উপকরণ বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। ডায়ালাইসিস বিভাগের সিনিয়র স্টাফ নার্স ফাতেমা বেগম বলেন, ‘যাঁরা ডায়ালাইসিস নিচ্ছেন তাঁরা উপকরণ বাইরে থেকে কিনে আনছেন। তার আগে রোগীদের ৪০০ টাকা সরকারি ফি জমা দিতে হচ্ছে।’ তবে তাঁর কাছে রোগী মারা যাওয়ার কোনো তথ্য নেই।

রমেক হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ ইউনুস আলী বলেন, ‘ডায়ালাইসিস চিকিৎসার জন্য সব উপকরণ বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে রোগীদের এমন অভিযোগ সত্য নয়। তবে কিছুদিন আগে হাসপাতালে কিছু সমস্যা হওয়ার কারণে এমআরএসের টেন্ডার হয়নি। এ কারণে কিছু উপকরণ সংকট রয়েছে। তবু তিন দফায় ১৫ লাখ টাকার উপকরণ ক্রয় করে রোগীদের মাঝে সরবরাহ করা হয়েছে।’ হেমোডায়ালাইসিস মেশিন নষ্টের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ওই মেশিনগুলো মেরামতের জন্য টেকনিক্যাল মেকানিককে জানানো হয়েছে। দ্রুত সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত