Ajker Patrika

চার স্ক্যানিং মেশিনের তিনটিই অচল

বেনাপোল প্রতিনিধি
চার স্ক্যানিং মেশিনের তিনটিই অচল

দেশের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর বেনাপোলে আমদানি-রপ্তানি পণ্য পরীক্ষা এবং পাসপোর্টধারী যাত্রীদের মালপত্র তল্লাশির জন্য বসানো হয়েছিল চারটি স্ক্যানিং মেশিন। এগুলোর মধ্যে তিনটিই বর্তমানে অচল। বিকল্প হিসেবে পণ্যের বস্তা ও মালপত্রের ব্যাগ খুলে পরীক্ষা করা হচ্ছে। এতে হয়রানিতে পড়েছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা। অন্যদিকে অচল স্ক্যানিং মেশিন ও দুর্বল নিরাপত্তাব্যবস্থার কারণে চোরাচালানের আশঙ্কা বেড়েছে।

স্ক্যানিং মেশিন তদারকিতে নিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফাইবার অ্যাসোসিয়েটস বলছে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আর কাস্টমস বলছে, স্ক্যানিং মেশিন দ্রুত ঠিক করতে বিদেশ থেকে যন্ত্রাংশ আমদানির প্রক্রিয়া চলছে।

বন্দর-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ৬ বছর আগে চীনের উপহার হিসেবে পাওয়া একটি স্ক্যানিং মেশিন স্থাপন করা হয় বেনাপোল বন্দরের বাইপাস সড়কের পণ্য প্রবেশদ্বারে। প্রায় ১০ কোটি টাকা দামের অত্যাধুনিক মেশিনটি পণ্যবাহী ট্রাকে আসা রাসায়নিক, মাদক, অস্ত্র ও মিথ্যা ঘোষণার পণ্য শনাক্ত করতে সক্ষম। এ ছাড়া ইমিগ্রেশন কাস্টমস রুটে চোরাচালান রোধে এনবিআরের অর্থায়নে বেনাপোল চেকপোস্ট কাস্টমসে আরও ৩টি স্ক্যানিং মেশিন বসানো হয়।

স্ক্যানিং মেশিনগুলো কাস্টমসের পক্ষে পরিচালনা করে আসছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফাইবার অ্যাসোসিয়েটস। কয়েক মাস ধরে স্ক্যানিং মেশিনগুলোয় যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা গেলেও গত সপ্তাহ থেকে একেবারে অচল পড়েছে মোবাইল স্ক্যানার। আর দুই মাস ধরে অচল কাস্টমস ইমিগ্রেশনের দুটি স্ক্যানার, যা মেরামত করতে প্রায় দুই কোটি টাকা প্রয়োজন। চুক্তি অনুযায়ী বড় অঙ্কের ব্যয় কাস্টমস বহন করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেওয়ায় স্ক্যানিং মেশিন ৩টির কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ আছে। এতে পণ্য খালাস করতে না পারায় বাণিজ্য ব্যাহতের পাশাপাশি চোরাচালান বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

সম্প্রতি বন্দর ঘুরে জানা গেছে, স্ক্যানিং মেশিন অচল হওয়ার সুযোগে গত ১৫ দিনে মিথ্যা ঘোষণার পণ্য এবং ভায়াগ্রা, ফেনসিডিল, গাঁজার বড় চালান আটক করা হয় বন্দরে।

ভোগান্তি হচ্ছে কি না জানতে চাইলে ভারতীয় ট্রাকচালক রনজিত বলেন, ভারত থেকে তিনি পোশাকপণ্য নিয়ে এসেছেন দুই দিন আগে। কিন্তু বেনাপোল বন্দরের মোবাইল স্ক্যানিং মেশিনটি বন্ধ থাকায় সেগুলো খালাসে ঝামেলা হচ্ছে। বেড়েছে ভোগান্তি ও হয়রানি।

পাসপোর্টধারী যাত্রী রহিম বলেন, কাস্টমস ইমিগ্রেশনে স্ক্যানিং মেশিন বন্ধ থাকায় নিরাপত্তা ঘাটতির পাশাপাশি হয়রানি বেড়েছে। কোনো অভিযোগ ছাড়াই অনেকের ব্যাগ খুলে মালপত্র তল্লাশি করা হচ্ছে। অন্যদিকে চোরাচালানিরাও সক্রিয় হয়েছে।

আমদানিকারক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, স্ক্যানিং ছাড়া বিকল্পভাবে পণ্য খালাসের ব্যবস্থা করছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ; কিন্তু সেখানে হয়রানি ও নিরাপত্তা ঘাটতি থাকছে। দ্রুত স্ক্যানিং কার্যক্রম সচল হলে সেটি সবার জন্য ভালো।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক সুলতান মাহামুদ বিপুল আজকের পত্রিকাকে বলেন, বাণিজ্য নিরাপদ রাখতে স্ক্যানিং কার্যক্রম চালু করা জরুরি। এ ছাড়া জরুরি পণ্য খালাস করতে দেরি হওয়ায় শিল্পকারখানার উৎপাদন বিঘ্ন ঘটছে।

বন্দর ও কাস্টমসে স্ক্যানার মেশিন তদারকিতে নিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফাইবার অ্যাসোসিয়েটসের বেনাপোলের কর্মকর্তা বনি আমিন বলেন, ‘স্ক্যানিং মেশিন অচল হওয়ার বিষয়টি এরই মধ্যে কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি।’

চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে বেনাপোল চেকপোস্ট কাস্টমসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা নূর আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের চিঠি পেয়েছি। স্ক্যানিং মেশিন দ্রুত ঠিক করতে বিদেশ থেকে যন্ত্রাংশ আমদানির ব্যবস্থা করছেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তবে আপাতত সবাইকে নয়, সন্দেহভাজনদের মালপত্র ম্যানুয়ালি তল্লাশি করা হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণপিটুনিতে নিহত জামায়াত কর্মী নেজাম ও তাঁর বাহিনী গুলি ছোড়ে, মিলেছে বিদেশি পিস্তল: পুলিশ

রাজধানীতে ছিনতাইকারী সন্দেহে ইরানের দুই নাগরিককে মারধর

বিএনপির দুই পেশাজীবী সংগঠনের কমিটি বিলুপ্ত

ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ: ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা, নিষিদ্ধের দাবি শিক্ষার্থীদের

ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে পন্টিংয়ের আরেকটি রেকর্ড ভাঙলেন কোহলি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত