খাগড়াছড়ি পাহাড়ে রঙিন আম, বেশি দাম

খাগড়াছড়ি সংবাদদাতা
আপডেট : ২৫ জুন ২০২৪, ১১: ০৪
Thumbnail image

খাগড়াছড়ির পাহাড়ি মাটিতে বিদেশি প্রজাতির আম চাষে ঝুঁকছেন স্থানীয় কৃষকেরা। উপযোগী আবহাওয়া ও মাটির গুণাগুণের কারণে ইতিমধ্যে জেলায় ৪২ প্রজাতির বিদেশি আম চাষ হচ্ছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। 

কৃষকেরা জানান, দেশীয় জাতের তুলনায় বিদেশি এসব জাতের আমের দাম অনেক বেশি। জাতভেদে তাঁরা ৩০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত কেজি দরে আম বিক্রি করছেন। এ কারণে দিন দিন বাড়ছে আম চাষ। 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, জেলায় মিয়াজাকি (সূর্যডিম), চিয়াংমাই, তাইওয়ান রেড, তাইওয়ান গ্রিন, ভ্যালোন্সিয়া প্রাইড, আমেরিকার কেন্ট, ডকমাই, রেড পালমার, কাটিমন, কিউজাই, থাইল্যান্ডের কিউজাই, ব্যানানা ম্যাংগো, হানিভিউ, আর টু ইটু, রেড আইভেরি, আমেরিকান কেন্ট, ইটালিয়ান অস্টিন, কেইটসহ ৪২ প্রজাতির আম চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে মিয়াজাকি ও চিয়াংমাই প্রজাতির আমের কেজি ১০০০ টাকা। বাকিগুলো ৩০০ টাকার ওপরে। জেলায় এ বছর ৪ হাজার ১৩০ হেক্টর জমিতে দেশি-বিদেশি জাতের আম আবাদ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার ৫১১ টন।

সদর উপজেলার ভাইবোনছড়া ইউনিয়নের আমচাষি সুজন চাকমা বলেন, ‘আমি ২০১৪ সালে কিউজাই আম দিয়ে শুরু করি। আমার বাগানে ১০ প্রজাতির বিদেশি আম আছে। সব জাতে কম-বেশি ফল এসেছে। বিদেশি কিছু রঙিন আম আছে, যেগুলোর মধ্যে থাইল্যান্ডের বিখ্যাত চিয়াংমাই আমটি খুবই ভালো। এ আমগুলো পরীক্ষিত। এ জাতের আমটি পাহাড়ের মাটির সঙ্গে অ্যাডজাস্ট হয়ে গেছে। ফলন খুবই ভালো দেয়।’ 

তিনি বলেন, ‘গত বছর আমরা কেজি ১ হাজার টাকা দরে বিক্রি করেছি। এ বছর এখনো বিক্রি শুরু হয়নি। এই বছর ৪ টন আম পাব। বিক্রি করে ৫ লাখ টাকা লাভ হবে।’

খাগড়াছড়ির ছোট টিলা ভূমিতে ৪২ প্রজাতির আমের চাষ করেছেন মংশিতু চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমার বাগানে ভারতের আলফানসো, আমেরিকার ভ্যালোন্সিয়া প্রাইডসহ ৪২টি বিদেশি জাতের আমের গাছ আছে। ২২টি জাতে ফলন হয়েছে। বেশি দাম পাওয়ায় বেশি করে চাষ করছি।’ 

খাগড়াছড়ি খেজুরবাগান হর্টিকালচার সেন্টারের উপসহকারী কর্মকর্তা সুজন চাকমা বলেন, ‘এই বছর ভালো ফলন দেখা গিয়েছে। ভোক্তাদের কাছে বেশ আকর্ষণীয় এবং আমরা টেস্ট করে দেখেছি খেতে খুব সুস্বাদু। বিদেশি জাতগুলো পাহাড়ে চাষাবাদের উপযোগী।’
পাহাড়ি কৃষি গবেষণাকেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আলতাফ হোসেন বলেন, রঙিন আম কয়েক বছর ধরে খাগড়াছড়িতে চাষ হয়ে আসছে। রঙের কারণে মানুষ কিনছে। পরীক্ষা করে এর মিষ্টতা, ফলন অন্যান্য গুণগতমান যাচাই করে চাষ করতে পারলে কৃষকেরা লাভবান হবেন। 

খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বশিরুল আলম বলেন, ‘খাগড়াছড়িতে তিন থেকে চার বছর ধরে জাপানের মিয়াজাকি আম চাষাবাদ হচ্ছে। অধিকাংশ আম কালারফুল; পাকলে চমৎকার সুগন্ধি বের হয় এবং খেতেও সুস্বাদু। কৃষকেরা এই আম চাষাবাদ করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। অনেকে সফলও হচ্ছেন। আমরা হর্টিকালচারে বিভিন্ন বিদেশি জাতের পাঁচ থেকে ছয় হাজার আমের চারা উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছি। সেগুলো বিনা মূল্যে বিতরণ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত