আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো

সম্পাদকীয়
আপডেট : ১৯ মে ২০২২, ১৫: ৫২
Thumbnail image

১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি খণ্ড খণ্ড মিছিল বের হয়েছিল। বেলা ৩টা ২০ মিনিটে পুলিশ মেডিকেল ব্যারাকে ঢুকে গুলি চালিয়েছিল। প্রথমে শিক্ষার্থীরা ভেবেছিলেন এটা ফাঁকা আওয়াজ। কিন্তু রফিক উদ্দিন আহমদ যখন গুলির আঘাতে পড়ে গেলেন, তাঁর মাথার খুলি উড়ে গেল, মাথা থেকে মগজ বের হয়ে ছড়িয়ে পড়ল রাস্তায়, তখনই কেবল বোঝা গেল, এটা ফাঁকা আওয়াজ ছিল না। সত্যিই গুলি ছুড়েছিল পুলিশ। সেদিন পলাশী ব্যারাকে পুলিশের গুলিতে আরও শহীদ হয়েছিলেন আবদুল জব্বার ও আবুল বরকত। গুলি লেগে হাসপাতালে থাকার পর ৭ এপ্রিল মারা গিয়েছিলেন আবদুস সালাম।

আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী তখন ঢাকা কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের বিদায়ী ছাত্র। সেই ছমছমে পরিবেশে গিয়েছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের আউটডোরে। সেখানে গিয়ে তিনি দেখেছিলেন ভাষাশহীদ রফিকের খুলিহীন লাশ। দুঃখভারাক্রান্ত হৃদয়ে সে লাশ দেখার পর কবির মনে হয়, ‘একুশে ফেব্রুয়ারি তারিখটি রক্তে রাঙানো হয়ে গেছে আমার এই ভাইয়ের শোণিত-ধারায়’। সে রাতেই কবিতাটি লিখতে শুরু করেন তিনি।

লিখতে শুরু করেছিলেন ঠিকই, কিন্তু কবিতাটি সেদিনই লিখে শেষ করতে পারেননি। বেশ কয়েক দিন ধরে কবিতাটি লেখা হয়। পরে গান হিসেবে স্বীকৃত এই রচনাটির প্রথম চরণ লেখা হয়েছিল কবিতা হিসেবেই। এটিই একুশের গান: ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’। ১৯৫৩ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ঢাকা কলেজের ছাত্রছাত্রীদের উদ্যোগে তৎকালীন ব্রিটানিয়া সিনেমা হলে আবদুল লতিফের সুরে গানটি প্রথম পরিবেশিত হয়। হাসান হাফিজুর রহমান সম্পাদিত ও মোহাম্মদ সুলতান কর্তৃক প্রকাশিত ‘একুশে ফেব্রুয়ারি’ সংকলনে একুশের গান হিসেবে এটি প্রকাশিত হয় সে বছরেরই মার্চ মাসে। পরে সুরস্রষ্টা আলতাফ মাহমুদের সুরে গানটি পরিণত হয় কিংবদন্তি গানে।

সূত্র: জাহীদ রেজা নূর, আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো, এম আর মাহবুব, একুশের যত প্রথম

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত