মিয়ানমারে রাখাইনের পর এবার চিন রাজ্যও হাতছাড়া হতে যাচ্ছে জান্তা বাহিনীর

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩: ৫৮
Thumbnail image
জান্তাবাহিনীর দখল করা একটি ঘাঁটিতে চিন ব্রাদারহুডের সদস্যরা। ছবি: ইরাবতী

মিয়ানমারের চিন রাজ্যের ৮০ শতাংশেরও বেশি এখন বিদ্রোহী গোষ্ঠীদের হাতে। স্থানীয় বিদ্রোহী গোষ্ঠী চিন ব্রাদারহুড জানিয়েছে, গত সপ্তাহের শেষ দিকে জান্তা বাহিনীকে মিন্দাত ও কানপেতলেত টাউনশিপ থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার পর চিন রাজ্যের ৮০ শতাংশের বেশি এলাকা বর্তমানে বিরোধী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতীর প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

চিন ব্রাদারহুডের মুখপাত্র ইয়াও মাং ইরাবতীকে বলেছেন, দক্ষিণ চিন রাজ্য জান্তা বাহিনীর হাত থেকে মুক্ত হয়েছে এবং তাদের বাহিনী রাজ্যের উত্তরে ফালামের একমাত্র অবশিষ্ট জান্তা অবস্থান ২৬৮-পদাতিক ব্যাটালিয়নের ওপর আক্রমণ চালাচ্ছে।

ইয়াও মাং বলেন, চিন রাজ্যের রাজধানী হাখা এবং অন্যান্য শহর ফালাম, তেদিম ও থানতলাং টাউনশিপে অবস্থানরত অবশিষ্ট জান্তা বাহিনী শহরগুলোর মধ্যে সীমাবদ্ধ। পালেতওয়া, মাতুপি, কানপেতলেত, মিন্দাত ও তোনজাং টাউনশিপ ইতিমধ্যে জান্তা বাহিনীর হাত থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ইয়াও মাং বলেন, মিন্দাতে ১৩ জন রাজনৈতিক বন্দী মুক্তি পেয়েছে এবং রোববার সকালে বিরোধী বাহিনী পৌঁছানোর পর জান্তা বাহিনী কানপেতলেত ছেড়ে চলে যায়।

উল্লেখ্য, চিন রাজ্যভিত্তিক বিদ্রোহী গোষ্ঠী ইয়াও ডিফেন্স ফোর্স, সাগাইং অঞ্চলের উত্তরাঞ্চলীয় গাংগাউ জেলার ইয়াও আর্মি এবং মনিওয়া পিপলস ডিফেন্স ফোর্স মিলে গঠন করেছে চিন ব্রাদারহুড। প্রতিবেদন অনুসারে, মিন্দাত, ফালাম ও কানপেতলেতের ওপর আক্রমণের জন্য এই গোষ্ঠীগুলো চার মাস ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছিল।

এরপর, গত ৯ নভেম্বর মিন্দাত এবং ফালামে অপারেশন ‘সিবি’ শুরু হয়। এরপর গত শুক্রবার চিন ব্রাদারহুড জানায় যে, ১৬৮ জন জান্তা সেনা ও পুলিশ তাদের পরিবারসহ আত্মসমর্পণ করেছে এবং মিন্দাতে জান্তা বাহিনীর ২৭৪ ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়নের পতন হয়েছে।

চিন ব্রাদারহুডের এক সদস্য জানিয়েছেন, বর্তমানে ৩০০ জনের বেশি জান্তা সেনা ও পুলিশ আটক আছে তাদের হাতে এবং তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার গোষ্ঠীটি জানায়, রাখাইন রাজ্যের আরাকান আর্মি মিন্দাত অভিযানে অস্ত্র, গোলাবারুদ, শক্তি বাড়ানো এবং সামরিক পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করেছে।

এদিকে, চিনল্যান্ড কাউন্সিলের পক্ষে লড়াইরত চিন ন্যাশনাল আর্মি অপারেশন জেরিকো শুরু করেছে এবং চলতি মাসের শুরুতে হাখা ও থানতলাংয়ের মধ্যবর্তী টিমিত সমভূমি দখল করেছে জান্তাবাহিনীর কাছ থেকে।

এদিকে, মিয়ানমারেও বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে খুব একটা সুবিধা করতে পারছে না জান্তাবাহিনী। গত ২১ ডিসেম্বর মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর পশ্চিমাঞ্চলীয় হেডকোয়ার্টার দখলে নেওয়ার দাবি করে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। তারা জানিয়েছে, তারা আরাকান রাজ্যের রাজধানী সিতওয়ে থেকে ৩১৮ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত আন টাউনশিপের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। এর আগে শুক্রবার কেন্দ্রীয় আরাকানে জান্তা বাহিনীর পশ্চিমাঞ্চলীয় আঞ্চলিক সামরিক কমান্ড সদর দপ্তরের নিয়ন্ত্রণও নেয় আরাকান আর্মি।

সামরিক বাহিনীর কাছ থেকে আন টাউনশিপের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর আরাকান আর্মি এখন আরাকানের ১৪টি টাউনশিপ নিয়ন্ত্রণ করছে। এর মধ্যে রয়েছে আরাকানের—পায়েকতাউ, মিনব্যা, ম্রউক-উ, কিয়াকতাউ, মিয়েবন, পন্নাগিউন, রামরি, রথিডং, বুথিডং, থানদে, টাউংগুপ, মংডু এবং চিনল্যান্ডের পালেতওয়া।

আরাকান আর্মি আরও বেশ কয়েকটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সমন্বয়ে ২০২৩ সালের ১৩ নভেম্বর আরাকানকে জান্তা বাহিনীর শাসন থেকে মুক্ত করার জন্য আক্রমণ চালানোর পর এএ—এর দখলের বাইরে আছে মাত্র চারটি শহর—সিতওয়ে, কায়াকপায়ু, গাওয়া এবং মুনাউং।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কারা পরিদর্শক হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক

ট্রাম্পের অভিষেক: সি আমন্ত্রণ পেলেও পাননি মোদি, থাকছেন আরও যাঁরা

ট্রাম্পের শপথের আগেই বার্নিকাটসহ তিন কূটনীতিককে পদত্যাগের নির্দেশ

কিশোরগঞ্জে বিএনপি নেতা হত্যা: সাবেক চেয়ারম্যানসহ গ্রেপ্তার ৪

সংস্কারের কিছু প্রস্তাবে মনঃক্ষুণ্ন বিএনপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত