Ajker Patrika

মানুষের ভোগান্তি কমাতে হবে

সম্পাদকীয়
আপডেট : ২৭ মার্চ ২০২২, ০৮: ৪৮
মানুষের ভোগান্তি কমাতে হবে

মানুষের ভোগান্তি কমানোর জন্য ডিজিটাল ব্যবস্থা সহায়ক হবে বলে মনে করা হলেও বাস্তবে সরকারি কোনো দপ্তরে সেবা নিতে গিয়ে কিংবা জরুরি কাজ সারতে গিয়ে মানুষের দুর্ভোগ কী কমেছে?

কমেনি যে তার উদাহরণ হিসেবে ২৩ মার্চ বুধবার আগারগাঁওয়ে পাসপোর্ট অফিসে শত শত মানুষের দুর্ভোগের কথা উল্লেখ করা যায়।

নতুন সার্ভার চালু ও পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের জন্য পাঁচ দিন বন্ধ ছিল ই-পাসপোর্ট সেবা। বুধবার থেকে আবার এ সেবা শুরু হয়েছে। কয়েক দিন বন্ধের পর সেবাগ্রহীতার চাপ বেশি হওয়াই স্বাভাবিক। এটা পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তাদের বিবেচনায় ছিল বলে মনে হয় না। বুথের সংখ্যা বাড়িয়ে বা অন্য কোনো উপায়ে আবেদন ফরম জমা নেওয়ার ব্যবস্থা না করে উল্টো অসংখ্য মানুষকে লাইনে দাঁড় করিয়ে রেখে কোনো রকম ঘোষণা না দিয়ে বেলা ৩টার দিকে আবেদন ফরম জমা নেওয়া বন্ধ করে দিয়ে কর্মকর্তারা চরম দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন।

কেউ অফিস ছুটি নিয়ে, কেউ ক্লাস কামাই করে, কেউবা একটু দেরিতে অফিসে গিয়ে কাজে যোগ দেবেন ভেবে পাসপোর্ট অফিসে গিয়েছিলেন। কিন্তু পাসপোর্ট অফিসে সেবার মানের কোনো উন্নতি না হওয়ায় তাঁরা হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়েছেন। মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন অথচ কাউন্টারের ভেতরে যিনি দায়িত্ব পালন করছেন, তিনি কাউকে কিছু না বলে উধাও।

মানুষ কাউন্টারের সামনে জড়ো হয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেও কর্তৃপক্ষের কোনো হেলদোল লক্ষ করা যায়নি।

পাসপোর্ট অফিসের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ নতুন কিছু নয়। সেখানে দালাল চক্রের দৌরাত্ম্যের কথাও কারও অজানা নয়। ই-পাসপোর্ট চালু হওয়ার ফলে মানুষের পাসপোর্ট পাওয়া সহজ ও হয়রানিমুক্ত হবে বলে আশা করা হলেও তা হয়নি। পাসপোর্ট অফিসের বাইরে দালালেরা এখনো সক্রিয়। বাড়তি টাকা খরচ করলে তারা সহজেই ফরম জমা দেওয়া থেকে শুরু করে পাসপোর্ট দ্রুত পাওয়ার ব্যবস্থাও করে দেয়।

অনলাইনে ফরম পূরণ করার পর অফিসে আনুষ্ঠানিকতা বেশি থাকার কথা নয়। আঙুলের ছাপ নেওয়া আর ছবি তোলার জন্য প্রতি আবেদনকারীর জন্য কত সময় লাগে তার হিসাব করে প্রতিদিন কতজন মানুষকে সেবাদানের সক্ষমতা পাসপোর্ট অফিসের আছে, তা বের করে সেই সংখ্যক মানুষকে উপস্থিত থাকতে বললেই ঝামেলা অনেক কমে। প্রত্যেক মানুষেরই সময়ের মূল্য আছে। সব মানুষেরই আত্মমর্যাদাবোধ আছে। কোনো কারণে এক দিন সমস্যা হলে কর্তৃপক্ষের উচিত সেবাগ্রহীতাদের কাছে মার্জনা প্রার্থনা করা এবং সমস্যা কেন হয়েছে, তার কারণ ব্যাখ্যা করা। বয়স্ক ব্যক্তি এবং নারীদের টানা দাঁড়িয়ে থাকা সম্ভব হয় না। সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখার বিষয়টিও বিবেচনা করা দরকার। উন্নয়নের গান তখনই মানুষের কানে মধুর লাগবে, যখন সেবা নিতে গিয়ে তাদের কষ্ট ভোগ করতে হবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত