আলম শাইন
ভৌগোলিক কারণে বাংলাদেশ বিশ্বের ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে একটি। ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, টর্নেডো, ভূমিকম্প, বন্যা, খরা, তাপপ্রবাহ বৃদ্ধি, নদীভাঙন, লবণাক্ততা বৃদ্ধি, মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক ও মরুকরণ-প্রক্রিয়া বাংলাদেশের নিত্যদিনের সঙ্গী। হালে যোগ হয়েছে মাত্রাতিরিক্ত বজ্রপাত। যদিও বজ্রপাত দেশে সব সময়ই ঘটছে, তবে সম্প্রতি সেই সীমা অতিক্রম করে ফেলেছে।
আগে আমরা বজ্রপাত ঘটতে দেখেছি মৌসুমভিত্তিক; বিশেষ করে বর্ষা ও কালবৈশাখী মৌসুমে একটু বেশি লক্ষ করেছি। সম্প্রতি বজ্রপাতের হার সেই তুলনায় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। বছরের যেকোনো সময় সামান্য মেঘ জমলেই কিংবা ঝড়ের পূর্বাভাস দেখা দিলেই বজ্রপাত হচ্ছে। সে এক ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে ওই মুহূর্তে। এতে বিপুল প্রাণনাশের সংবাদও পাওয়া যাচ্ছে।
গবেষণায় জানা গেছে, বাংলাদেশের সুনামগঞ্জে তিন মাসে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ২৫টি বজ্রপাত আঘাত হানে। মূলত ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে এখানে বেশি বজ্রপাত ঘটছে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা।
তাঁরা জানিয়েছেন, ভারতের খাসিয়া পাহাড় ও মেঘালয়ে মার্চ থেকে মে পর্যন্ত মেঘ জমতে থাকে। জমাকৃত মেঘে মেঘে ঘর্ষণের ফলে অত্র এলাকায়, অর্থাৎ সুনামগঞ্জে বজ্রপাত বেশি ঘটছে। তাতে জানমালের ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি সর্বসাধারণ ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। আকাশে সামান্য মেঘ দেখলেই কৃষক অথবা খেটে খাওয়া মানুষ ঘরমুখী হতে চেষ্টা করেন। আর যাঁরা দূর হাওর-বাঁওড়ে কাজকর্মে নিয়োজিত থাকেন, তাঁরা তখন ভীষণ বিপাকে পড়ে যান। ফলে তাঁরা যখন-তখন দুর্ঘটনার শিকারে পরিণত হন। ১৮ জুন গণমাধ্যম মারফত জানা যায় ১০ জেলায় (১৭ জুন, শুক্রবার) বজ্রপাতে ১৬ জনের মৃত্যুর সংবাদ।
এভাবে দেশে প্রায় প্রতিনিয়তই আমরা বজ্রপাতে মৃত্যুর সংবাদ জানতে পারছি, যা সত্যিই দুঃখজনক।
বিষয়টি মাথায় নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের একজন অধ্যাপক জানিয়েছেন, বাংলাদেশে বজ্রপাতের মূল কারণ ভৌগোলিক অবস্থান। তিনি ব্যাখ্যা দিয়েছেন, বঙ্গোপসাগরের পরেই ভারত মহাসাগর। সেখান থেকে গরম আর্দ্র বাতাস বাংলাদেশের ওপরে ভেসে আসছে। অন্যদিকে উত্তর থেকে হিমালয়ের ঠান্ডা বাতাস ধেয়ে আসছে। এ দুই ধরনের বাতাসের সংমিশ্রণ বজ্রপাতের জন্য অনুকূল হওয়ায় বাংলাদেশে ব্যাপক বজ্রপাত ঘটছে।
তবে যেভাবেই বজ্রপাত হোক না কেন, তাতে জানমালের প্রচুর ক্ষতি সাধিত হচ্ছে—এটিই সত্যি কথা। বিশেষ করে বজ্রপাতে পুরুষের মৃত্যুর হার বেশি লক্ষ করা যাচ্ছে। কারণ, মাঠ-প্রান্তরে, জলাশয়ে কিংবা রাস্তাঘাটে পুরুষের অবস্থান নারীদের তুলনায় বেশি হওয়ায় দুর্যোগের কবলে তাঁরাই বেশি পড়ছেন। ফলে সংসারের উপার্জনক্ষম মানুষটিকে অকালে প্রাণ হারাতে হচ্ছে,
তাতে পরিবারটিকে পড়তে হচ্ছে ভয়ানক বিপর্যয়ের মুখে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য মোতাবেক জানা যায়, ২০১১ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত এক দশকে মোট ২ হাজার ৭৮৫ জন বজ্রপাতে প্রাণ হারিয়েছেন। ২০১২ সালে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় বজ্রপাতে একসঙ্গে ১৩ জনের মৃত্যুর খবরও আমরা জানতে পেরেছিলাম। সেই বজ্রপাতটি ঘটেছে তা-ও কিনা আগস্ট মাসে। তাতে প্রতীয়মান হয়, বজ্রপাত এখন আর মৌসুম ভিত্তিতে হচ্ছে না। বছরের যেকোনো সময় আঘাত হেনে প্রাণহানি ঘটাচ্ছে।
অতিরিক্ত বজ্রপাত ঘটার জন্য জলবায়ুর পরিবর্তনকেও দায়ী করা হচ্ছে। যে হারে বৃক্ষনিধন ও কার্বন নিঃসরণের মাত্রা বাড়ছে, তাতে বায়ুমণ্ডলে এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। ফলে পারিপার্শ্বিক আবহাওয়া বজ্রপাতের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করছে।
এই বৈরী আবহাওয়াকে এখন বজ্রপাতের অনুকূলে নয়, মানুষের অনুকূলে আনতে হবে বনায়ন সৃষ্টির মাধ্যমে। বড় বড় গাছগাছালি লাগিয়ে বনায়ন সৃষ্টি করতে হবে, তাতে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। কারণ, বজ্রপাত ঘটার সঙ্গে তাপমাত্রা বৃদ্ধির সম্পর্ক ওতপ্রোতভাবে জড়িত; বিশেষ করে মাঠ-প্রান্তরসহ রাস্তার দুই ধারে তালগাছ লাগাতে হবে বেশি বেশি।
কারণ, বিশেষজ্ঞদের অভিমত, তালগাছ হচ্ছে প্রকৃতির বজ্রনিরোধক। তাই কাজটি করতে হবে আমাদের এখনই। কারণ, একটি তালের চারা রোপণের ১৪-১৫ বছর পর সেটি বজ্রনিরোধক হিসেবে কাজ করতে সক্ষম হয়। শুধু তালগাছ রোপণই নয়, পাশাপাশি বজ্রনিরোধক লাইটপোস্টে সিমেন্ট ব্যবহার করে টানিয়ে দিতে হবে। যেটি নেপালেও করা হয়েছে। আমাদের দেশেও বিজিবি ক্যাম্পে ব্যবহৃত হচ্ছে। এগুলোকে বলা হয় ‘লাইট মিনার স্টার’; যা ব্যবহার করা যেতে পারে মাঠ-প্রান্তরেও।
এর ব্যবহার খুব সহজ, অর্থকড়িও তেমন খরচ হয় না। আশার কথা হচ্ছে, হাওর এলাকায় কংক্রিটের শেল্টার নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। শেল্টারে বজ্রপাত নিরোধক যন্ত্রও স্থাপন করা হবে। আবার মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কৃষকদের সতর্ক বার্তা পাঠানোর ব্যবস্থাও করা হবে। নিঃসন্দেহে ভালো উদ্যোগ এটি।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি, ব্রিটিশ শাসনামলে একধরনের চৌম্বকীয় পিলার পুঁতে রাখা হয়েছিল দেশের মাঠ-প্রান্তরে কিংবা রাস্তার পাশে। সেগুলোর গায়ে খোদাই করে লেখা ছিল ‘ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’। ভারত-বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকায় বেশি পুঁতে রাখার কারণে অনেকের কাছে এগুলো ‘সীমান্ত পিলার’ নামে পরিচিত। বোতল আকৃতির ওজনদার সেই পিলার বজ্রনিরোধকের কাজে ব্যবহৃত হতো; কয়েক বর্গকিলোমিটার সুরক্ষাও দিত। পিলারের আশপাশে বজ্রপাত ঘটলেও মানুষের তেমন ক্ষতি হতো না। অথচ অসাধুরা লোভের বশবর্তী হয়ে সেই পিলারগুলো তুলে সীমান্তবর্তী দেশে পাচার করে দিচ্ছে।
শেষ কথা হচ্ছে, চৌম্বকীয় পিলার হারিয়ে আমাদের চুপচাপ বসে থাকলে চলবে না। প্রাকৃতিক এই দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হবে সবাইকে সাহসের সঙ্গে, ধৈর্য ধারণের মাধ্যমে। দেশের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে এর থেকে উত্তরণের জন্য; বিশেষ করে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, যুবসম্প্রদায় ও শিক্ষার্থীদের এগিয়ে আসতে হবে বৃক্ষরোপণে উদ্বুদ্ধ করতে। সোজা কথা, দেশের আনাচকানাচে প্রচুর গাছ লাগাতে হবে।
একযোগে লাখ লাখ তালের চারা রোপণ করতে হবে দেশে। তবেই বজ্রপাত থেকে অনেকটাই মুক্তি মিলবে; অর্থাৎ বনায়ন সৃষ্টির মাধ্যমে ছায়া শীতল রাখতে হবে দেশটাকে।
লেখক: জলবায়ুবিষয়ক কলামিস্ট
ভৌগোলিক কারণে বাংলাদেশ বিশ্বের ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে একটি। ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, টর্নেডো, ভূমিকম্প, বন্যা, খরা, তাপপ্রবাহ বৃদ্ধি, নদীভাঙন, লবণাক্ততা বৃদ্ধি, মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক ও মরুকরণ-প্রক্রিয়া বাংলাদেশের নিত্যদিনের সঙ্গী। হালে যোগ হয়েছে মাত্রাতিরিক্ত বজ্রপাত। যদিও বজ্রপাত দেশে সব সময়ই ঘটছে, তবে সম্প্রতি সেই সীমা অতিক্রম করে ফেলেছে।
আগে আমরা বজ্রপাত ঘটতে দেখেছি মৌসুমভিত্তিক; বিশেষ করে বর্ষা ও কালবৈশাখী মৌসুমে একটু বেশি লক্ষ করেছি। সম্প্রতি বজ্রপাতের হার সেই তুলনায় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। বছরের যেকোনো সময় সামান্য মেঘ জমলেই কিংবা ঝড়ের পূর্বাভাস দেখা দিলেই বজ্রপাত হচ্ছে। সে এক ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে ওই মুহূর্তে। এতে বিপুল প্রাণনাশের সংবাদও পাওয়া যাচ্ছে।
গবেষণায় জানা গেছে, বাংলাদেশের সুনামগঞ্জে তিন মাসে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ২৫টি বজ্রপাত আঘাত হানে। মূলত ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে এখানে বেশি বজ্রপাত ঘটছে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা।
তাঁরা জানিয়েছেন, ভারতের খাসিয়া পাহাড় ও মেঘালয়ে মার্চ থেকে মে পর্যন্ত মেঘ জমতে থাকে। জমাকৃত মেঘে মেঘে ঘর্ষণের ফলে অত্র এলাকায়, অর্থাৎ সুনামগঞ্জে বজ্রপাত বেশি ঘটছে। তাতে জানমালের ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি সর্বসাধারণ ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। আকাশে সামান্য মেঘ দেখলেই কৃষক অথবা খেটে খাওয়া মানুষ ঘরমুখী হতে চেষ্টা করেন। আর যাঁরা দূর হাওর-বাঁওড়ে কাজকর্মে নিয়োজিত থাকেন, তাঁরা তখন ভীষণ বিপাকে পড়ে যান। ফলে তাঁরা যখন-তখন দুর্ঘটনার শিকারে পরিণত হন। ১৮ জুন গণমাধ্যম মারফত জানা যায় ১০ জেলায় (১৭ জুন, শুক্রবার) বজ্রপাতে ১৬ জনের মৃত্যুর সংবাদ।
এভাবে দেশে প্রায় প্রতিনিয়তই আমরা বজ্রপাতে মৃত্যুর সংবাদ জানতে পারছি, যা সত্যিই দুঃখজনক।
বিষয়টি মাথায় নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের একজন অধ্যাপক জানিয়েছেন, বাংলাদেশে বজ্রপাতের মূল কারণ ভৌগোলিক অবস্থান। তিনি ব্যাখ্যা দিয়েছেন, বঙ্গোপসাগরের পরেই ভারত মহাসাগর। সেখান থেকে গরম আর্দ্র বাতাস বাংলাদেশের ওপরে ভেসে আসছে। অন্যদিকে উত্তর থেকে হিমালয়ের ঠান্ডা বাতাস ধেয়ে আসছে। এ দুই ধরনের বাতাসের সংমিশ্রণ বজ্রপাতের জন্য অনুকূল হওয়ায় বাংলাদেশে ব্যাপক বজ্রপাত ঘটছে।
তবে যেভাবেই বজ্রপাত হোক না কেন, তাতে জানমালের প্রচুর ক্ষতি সাধিত হচ্ছে—এটিই সত্যি কথা। বিশেষ করে বজ্রপাতে পুরুষের মৃত্যুর হার বেশি লক্ষ করা যাচ্ছে। কারণ, মাঠ-প্রান্তরে, জলাশয়ে কিংবা রাস্তাঘাটে পুরুষের অবস্থান নারীদের তুলনায় বেশি হওয়ায় দুর্যোগের কবলে তাঁরাই বেশি পড়ছেন। ফলে সংসারের উপার্জনক্ষম মানুষটিকে অকালে প্রাণ হারাতে হচ্ছে,
তাতে পরিবারটিকে পড়তে হচ্ছে ভয়ানক বিপর্যয়ের মুখে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য মোতাবেক জানা যায়, ২০১১ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত এক দশকে মোট ২ হাজার ৭৮৫ জন বজ্রপাতে প্রাণ হারিয়েছেন। ২০১২ সালে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় বজ্রপাতে একসঙ্গে ১৩ জনের মৃত্যুর খবরও আমরা জানতে পেরেছিলাম। সেই বজ্রপাতটি ঘটেছে তা-ও কিনা আগস্ট মাসে। তাতে প্রতীয়মান হয়, বজ্রপাত এখন আর মৌসুম ভিত্তিতে হচ্ছে না। বছরের যেকোনো সময় আঘাত হেনে প্রাণহানি ঘটাচ্ছে।
অতিরিক্ত বজ্রপাত ঘটার জন্য জলবায়ুর পরিবর্তনকেও দায়ী করা হচ্ছে। যে হারে বৃক্ষনিধন ও কার্বন নিঃসরণের মাত্রা বাড়ছে, তাতে বায়ুমণ্ডলে এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। ফলে পারিপার্শ্বিক আবহাওয়া বজ্রপাতের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করছে।
এই বৈরী আবহাওয়াকে এখন বজ্রপাতের অনুকূলে নয়, মানুষের অনুকূলে আনতে হবে বনায়ন সৃষ্টির মাধ্যমে। বড় বড় গাছগাছালি লাগিয়ে বনায়ন সৃষ্টি করতে হবে, তাতে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। কারণ, বজ্রপাত ঘটার সঙ্গে তাপমাত্রা বৃদ্ধির সম্পর্ক ওতপ্রোতভাবে জড়িত; বিশেষ করে মাঠ-প্রান্তরসহ রাস্তার দুই ধারে তালগাছ লাগাতে হবে বেশি বেশি।
কারণ, বিশেষজ্ঞদের অভিমত, তালগাছ হচ্ছে প্রকৃতির বজ্রনিরোধক। তাই কাজটি করতে হবে আমাদের এখনই। কারণ, একটি তালের চারা রোপণের ১৪-১৫ বছর পর সেটি বজ্রনিরোধক হিসেবে কাজ করতে সক্ষম হয়। শুধু তালগাছ রোপণই নয়, পাশাপাশি বজ্রনিরোধক লাইটপোস্টে সিমেন্ট ব্যবহার করে টানিয়ে দিতে হবে। যেটি নেপালেও করা হয়েছে। আমাদের দেশেও বিজিবি ক্যাম্পে ব্যবহৃত হচ্ছে। এগুলোকে বলা হয় ‘লাইট মিনার স্টার’; যা ব্যবহার করা যেতে পারে মাঠ-প্রান্তরেও।
এর ব্যবহার খুব সহজ, অর্থকড়িও তেমন খরচ হয় না। আশার কথা হচ্ছে, হাওর এলাকায় কংক্রিটের শেল্টার নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। শেল্টারে বজ্রপাত নিরোধক যন্ত্রও স্থাপন করা হবে। আবার মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কৃষকদের সতর্ক বার্তা পাঠানোর ব্যবস্থাও করা হবে। নিঃসন্দেহে ভালো উদ্যোগ এটি।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি, ব্রিটিশ শাসনামলে একধরনের চৌম্বকীয় পিলার পুঁতে রাখা হয়েছিল দেশের মাঠ-প্রান্তরে কিংবা রাস্তার পাশে। সেগুলোর গায়ে খোদাই করে লেখা ছিল ‘ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’। ভারত-বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকায় বেশি পুঁতে রাখার কারণে অনেকের কাছে এগুলো ‘সীমান্ত পিলার’ নামে পরিচিত। বোতল আকৃতির ওজনদার সেই পিলার বজ্রনিরোধকের কাজে ব্যবহৃত হতো; কয়েক বর্গকিলোমিটার সুরক্ষাও দিত। পিলারের আশপাশে বজ্রপাত ঘটলেও মানুষের তেমন ক্ষতি হতো না। অথচ অসাধুরা লোভের বশবর্তী হয়ে সেই পিলারগুলো তুলে সীমান্তবর্তী দেশে পাচার করে দিচ্ছে।
শেষ কথা হচ্ছে, চৌম্বকীয় পিলার হারিয়ে আমাদের চুপচাপ বসে থাকলে চলবে না। প্রাকৃতিক এই দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হবে সবাইকে সাহসের সঙ্গে, ধৈর্য ধারণের মাধ্যমে। দেশের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে এর থেকে উত্তরণের জন্য; বিশেষ করে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, যুবসম্প্রদায় ও শিক্ষার্থীদের এগিয়ে আসতে হবে বৃক্ষরোপণে উদ্বুদ্ধ করতে। সোজা কথা, দেশের আনাচকানাচে প্রচুর গাছ লাগাতে হবে।
একযোগে লাখ লাখ তালের চারা রোপণ করতে হবে দেশে। তবেই বজ্রপাত থেকে অনেকটাই মুক্তি মিলবে; অর্থাৎ বনায়ন সৃষ্টির মাধ্যমে ছায়া শীতল রাখতে হবে দেশটাকে।
লেখক: জলবায়ুবিষয়ক কলামিস্ট
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
০২ মার্চ ২০২৫বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ জানুয়ারি ২০২৫গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪