মো. তায়্যিব-উল-ইসলাম সৌরভ
‘উনাদের’ এবং ‘আমাদের’, এ বিষয়টা শুরুতেই পরিষ্কার করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে। ‘উনারা’ হলেন সেই সব বিশিষ্ট ব্যক্তি, যাঁরা বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন। তাঁরা এসব প্রতিষ্ঠানের ভালোমন্দ দেখেন এবং সে জন্য পরিকল্পনা প্রণয়ন-বাস্তবায়ন করেন। বাকি থাকে আমাদের বা ‘আমরা’! পাঠক নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন এই আমরা আর কেউ নয়, আমরা হলাম আমজনতা। ভ্যাট-ট্যাক্স প্রদানকারী সাধারণ জনগণ।
এবার আসা যাক ‘খামখেয়ালিপনা’ আর ‘কাফফারা’র ব্যাপারটায়। ‘উনাদের খামখেয়ালিপনা’ বুঝতে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত কয়েকটি প্রতিবেদনের মূলকথা তুলে ধরলেই আধা কাজ হবে সারা। আশা, তাতেই ‘উনাদের খামখেয়ালিপনা’র একটা ধারণা আপনারা পেয়ে যাবেন।
২.গত ২৮ আগস্ট দৈনিক ‘আজকের পত্রিকা’য় প্রকাশিত একটি রিপোর্টের শিরোনাম ছিল, ‘দুইবারে টাকা বরাদ্দ, তাই পাশাপাশি দুটি ফ্লাইওভার’। প্রতিবেদনের ভাষ্য, নিচের রাস্তা চার লেনের হলেও ওপরে ফ্লাইওভার বানানো হয়েছে দুই লেনের, ফলে ফ্লাইওভার তৈরির মূল উদ্দেশ্যটা গেছে ভেস্তে। সমস্যার সহজ সমাধানে ‘উনারা’ তাই আরও একটি ফ্লাইওভার তৈরির পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নেমেছেন। বলাই বাহুল্য, নতুন ফ্লাইওভারের নির্মাণ ব্যয় বেড়েছে প্রায় সাড়ে ১১ কোটি টাকা, সঙ্গে অর্থ, শ্রম আর সময়ের দ্বিগুণ খরচ।
প্রায় ৫৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত দ্বিতীয় ভৈরব সেতু উদ্বোধনের মাত্র পাঁচ বছরের মাথায় উপযোগিতা হারাতে বসেছে; কারণ প্রায় শতবর্ষী প্রথম সেতুটি মেয়াদোত্তীর্ণের দ্বারপ্রান্তে; অর্থাৎ নতুন সেতু চালু হতে না হতেই পুরোনো সেতুর বন্ধ হওয়ার সময় হয়েছে এবং এর ফলে ঢাকার সঙ্গে পূর্বাঞ্চলের ‘ডাবল লাইন রেলযোগাযোগ’ কার্যকারিতা হারাবে অনেকাংশে। বিশেষজ্ঞদের মত, রেলের এসব পরিকল্পনা করতে হয় অন্তত ১০০ বছরের হিসাব কষে, তাই যদি দ্বিতীয় সেতুটি সিঙ্গেল লাইন না করে ডাবল লাইন করা হতো, কিছুটা খরচ বাড়লেও সেটাই টেকসই হতো। (দৈনিক বণিক বার্তা, ৭ এপ্রিল, ২০২২)।
১১ সেপ্টেম্বর দৈনিক বাংলা পত্রিকার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে হতবাক করা তথ্য। ‘সিন্ডিকেট হারছে হাইকোর্টে’ শিরোনামের ওই প্রতিবেদনের তথ্য, গত পাঁচ বছরে ঢাবি সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে করা মামলাগুলোর মধ্যে সাতটিতেই সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত বৈধতা হারিয়েছে। সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা আরও মামলা এখনো হাইকোর্টে চলমান। খোদ উপাচার্যের ভাষ্য—অনেক সময় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই, তাই সেসব সিদ্ধান্ত কোর্টে গিয়ে বাতিল হয়ে যাচ্ছে। রাগ-ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ না ঘটিয়ে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সিদ্ধান্তগুলো নিতে হয় বলে তিনি মত প্রকাশ করেছেন।
একটু গত বছরে ফিরে যাই। ২৫ নভেম্বর ২০২১, বগুড়ার দুপচাঁচিয়া পৌরসভার মেয়রের সাময়িক বরখাস্ত আদেশ অবৈধ বলে রায় দেয় আপিল বিভাগ। যেহেতু পৌর মেয়রকে সাময়িক বরখাস্তের ক্ষমতা কর্তৃপক্ষের রয়েছে, সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই সেই ক্ষমতা প্রয়োগ করা হয়েছিল। উল্লেখ্য, এ আদেশটি হাইকোর্টেও অবৈধ বলে ঘোষিত হয়েছিল, কিন্তু সরকারপক্ষ আপিল করায় সেটা আপিল বিভাগ পর্যন্ত গড়িয়েছিল। কর্তৃপক্ষের লাভ হয়েছে ‘যেই লাউ সেই কদু’।
৩.শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকারি আরও অনেক সংস্থার সিদ্ধান্ত, বিশেষ করে শৃঙ্খলাসংক্রান্ত সিদ্ধান্তগুলো অনেক ক্ষেত্রেই আদালতে এসে মুখ থুবড়ে পড়ে। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, যেসব সিদ্ধান্ত হাইকোর্টে এসে বাতিল হয়ে যায়, সেগুলো বাতিল হওয়ার প্রধানতম কারণ সিদ্ধান্ত গ্রহণে কর্তৃপক্ষের আইনি পদ্ধতির সঠিক এবং যথাযথ অনুসরণ না করা। যদিও বিচারের ক্ষেত্রে আদালত সংশ্লিষ্ট সব বিষয় নিয়েই আলোচনা-পর্যালোচনা করেন, খতিয়ে দেখেন। তবে প্রচলিত রেওয়াজ অনুযায়ী রিট মামলায় ‘ফ্যাক্টস’ নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা করা গেলেও, সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে আইনি যথার্থতা আদালতের প্রধান ধর্তব্য; অর্থাৎ কোনো ব্যক্তি যদি আসলেও অপরাধ করে থাকেন আর তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে কর্তৃপক্ষ আইনের সঠিক প্রতিপালন না করে, তাহলে সেই সিদ্ধান্ত আদালতের চোখে অবৈধই হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকই হোন আর স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি, যখন কর্তৃপক্ষের কোনো সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তাঁদের কোর্টে আসতে হয় এবং সেই মামলায় যদি ভুক্তভোগী জয়লাভ করেন, তখন ‘হারু পার্টি’ কর্তৃপক্ষকে দুই রকম আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। এক. মামলায় জয়ী ব্যক্তিকে তাঁর পূর্ণ বেতন দিতে হয়, যদিও তিনি তত দিন কোনো কাজই করতে পারেননি, আর দুই. কর্তৃপক্ষকে সেসব মামলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আইনজীবী নিয়োগ দিতে হয়, পয়সা খরচ করে। তবে পরোক্ষ খরচও আছে এবং সেটা ব্যাপক। একজন শিক্ষক বা জনপ্রতিনিধি, তিনি যদি তাঁর কাজটা করতে না পারেন, তাহলে ক্ষতিটা কিন্তু শুধু অর্থের পাল্লায় মাপলে তা যথেষ্ট হয় না।
৪. স্থান-কাল-পাত্র ভিন্ন হলেও সবগুলো ঘটনার একটা সাধারণ মিল রয়েছে। প্রতিটি ঘটনাই আইন বা ক্ষেত্রমতো যথাযথ নিয়ম না মানার ফলাফল। ফ্লাইওভারই হোক, সেতু হোক কিংবা বরখাস্তের আদেশ—যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে, অপরিকল্পিতভাবে খেয়ালখুশিমতো সিদ্ধান্ত নিলে ভবিষ্যতে তা গলার কাঁটা হবে, সেটা বুঝতে পণ্ডিত হতে হয় না। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমাদের ‘উনারা’ নিজেদের পণ্ডিত ভাবলেও এ সহজ ব্যাপারটি অনুধাবন করতে পারছেন না।
উনাদের এসব ‘খেয়ালখুশির’ সিদ্ধান্তের ফলে কী কী ক্ষতি হচ্ছে তার ফিরিস্তি লেখা যাবে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা। তবে আমাদের চিন্তাটা আপাতত অর্থের অপচয় নিয়ে। যে অপচয়ের হিসাব কেউ কখনো চায় না, চায়নি।
সংবিধান অনুযায়ী, আমরাই প্রজাতন্ত্রের সব ক্ষমতার মালিক, আমাদের দায়িত্ব সংবিধান ও আইন মান্য করা, শৃঙ্খলা রক্ষা করা এবং জাতীয় সম্পদ রক্ষা করা। অপরদিকে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সব ক্ষেত্রে জনগণের সেবা করার। সুতরাং ‘উনাদের’ সিদ্ধান্তের কারণে যদি রাষ্ট্র বা জনগণ কোনো ক্ষতির সম্মুখীন হয়, তাতে আমাদের মাথাব্যথা হওয়া অতি স্বাভাবিক। এ-ও সত্য যে আইন মেনে আমাদের মাথাব্যথা বাড়তে না দিয়ে অতি দ্রুত তা নিরাময়ের ব্যবস্থা করাটাই ‘উনাদের’ আইনি কর্তব্যের মধ্যে পড়ে।
মো. তায়্যিব-উল-ইসলাম সৌরভ, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী
‘উনাদের’ এবং ‘আমাদের’, এ বিষয়টা শুরুতেই পরিষ্কার করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে। ‘উনারা’ হলেন সেই সব বিশিষ্ট ব্যক্তি, যাঁরা বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন। তাঁরা এসব প্রতিষ্ঠানের ভালোমন্দ দেখেন এবং সে জন্য পরিকল্পনা প্রণয়ন-বাস্তবায়ন করেন। বাকি থাকে আমাদের বা ‘আমরা’! পাঠক নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন এই আমরা আর কেউ নয়, আমরা হলাম আমজনতা। ভ্যাট-ট্যাক্স প্রদানকারী সাধারণ জনগণ।
এবার আসা যাক ‘খামখেয়ালিপনা’ আর ‘কাফফারা’র ব্যাপারটায়। ‘উনাদের খামখেয়ালিপনা’ বুঝতে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত কয়েকটি প্রতিবেদনের মূলকথা তুলে ধরলেই আধা কাজ হবে সারা। আশা, তাতেই ‘উনাদের খামখেয়ালিপনা’র একটা ধারণা আপনারা পেয়ে যাবেন।
২.গত ২৮ আগস্ট দৈনিক ‘আজকের পত্রিকা’য় প্রকাশিত একটি রিপোর্টের শিরোনাম ছিল, ‘দুইবারে টাকা বরাদ্দ, তাই পাশাপাশি দুটি ফ্লাইওভার’। প্রতিবেদনের ভাষ্য, নিচের রাস্তা চার লেনের হলেও ওপরে ফ্লাইওভার বানানো হয়েছে দুই লেনের, ফলে ফ্লাইওভার তৈরির মূল উদ্দেশ্যটা গেছে ভেস্তে। সমস্যার সহজ সমাধানে ‘উনারা’ তাই আরও একটি ফ্লাইওভার তৈরির পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নেমেছেন। বলাই বাহুল্য, নতুন ফ্লাইওভারের নির্মাণ ব্যয় বেড়েছে প্রায় সাড়ে ১১ কোটি টাকা, সঙ্গে অর্থ, শ্রম আর সময়ের দ্বিগুণ খরচ।
প্রায় ৫৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত দ্বিতীয় ভৈরব সেতু উদ্বোধনের মাত্র পাঁচ বছরের মাথায় উপযোগিতা হারাতে বসেছে; কারণ প্রায় শতবর্ষী প্রথম সেতুটি মেয়াদোত্তীর্ণের দ্বারপ্রান্তে; অর্থাৎ নতুন সেতু চালু হতে না হতেই পুরোনো সেতুর বন্ধ হওয়ার সময় হয়েছে এবং এর ফলে ঢাকার সঙ্গে পূর্বাঞ্চলের ‘ডাবল লাইন রেলযোগাযোগ’ কার্যকারিতা হারাবে অনেকাংশে। বিশেষজ্ঞদের মত, রেলের এসব পরিকল্পনা করতে হয় অন্তত ১০০ বছরের হিসাব কষে, তাই যদি দ্বিতীয় সেতুটি সিঙ্গেল লাইন না করে ডাবল লাইন করা হতো, কিছুটা খরচ বাড়লেও সেটাই টেকসই হতো। (দৈনিক বণিক বার্তা, ৭ এপ্রিল, ২০২২)।
১১ সেপ্টেম্বর দৈনিক বাংলা পত্রিকার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে হতবাক করা তথ্য। ‘সিন্ডিকেট হারছে হাইকোর্টে’ শিরোনামের ওই প্রতিবেদনের তথ্য, গত পাঁচ বছরে ঢাবি সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে করা মামলাগুলোর মধ্যে সাতটিতেই সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত বৈধতা হারিয়েছে। সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা আরও মামলা এখনো হাইকোর্টে চলমান। খোদ উপাচার্যের ভাষ্য—অনেক সময় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই, তাই সেসব সিদ্ধান্ত কোর্টে গিয়ে বাতিল হয়ে যাচ্ছে। রাগ-ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ না ঘটিয়ে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সিদ্ধান্তগুলো নিতে হয় বলে তিনি মত প্রকাশ করেছেন।
একটু গত বছরে ফিরে যাই। ২৫ নভেম্বর ২০২১, বগুড়ার দুপচাঁচিয়া পৌরসভার মেয়রের সাময়িক বরখাস্ত আদেশ অবৈধ বলে রায় দেয় আপিল বিভাগ। যেহেতু পৌর মেয়রকে সাময়িক বরখাস্তের ক্ষমতা কর্তৃপক্ষের রয়েছে, সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই সেই ক্ষমতা প্রয়োগ করা হয়েছিল। উল্লেখ্য, এ আদেশটি হাইকোর্টেও অবৈধ বলে ঘোষিত হয়েছিল, কিন্তু সরকারপক্ষ আপিল করায় সেটা আপিল বিভাগ পর্যন্ত গড়িয়েছিল। কর্তৃপক্ষের লাভ হয়েছে ‘যেই লাউ সেই কদু’।
৩.শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকারি আরও অনেক সংস্থার সিদ্ধান্ত, বিশেষ করে শৃঙ্খলাসংক্রান্ত সিদ্ধান্তগুলো অনেক ক্ষেত্রেই আদালতে এসে মুখ থুবড়ে পড়ে। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, যেসব সিদ্ধান্ত হাইকোর্টে এসে বাতিল হয়ে যায়, সেগুলো বাতিল হওয়ার প্রধানতম কারণ সিদ্ধান্ত গ্রহণে কর্তৃপক্ষের আইনি পদ্ধতির সঠিক এবং যথাযথ অনুসরণ না করা। যদিও বিচারের ক্ষেত্রে আদালত সংশ্লিষ্ট সব বিষয় নিয়েই আলোচনা-পর্যালোচনা করেন, খতিয়ে দেখেন। তবে প্রচলিত রেওয়াজ অনুযায়ী রিট মামলায় ‘ফ্যাক্টস’ নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা করা গেলেও, সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে আইনি যথার্থতা আদালতের প্রধান ধর্তব্য; অর্থাৎ কোনো ব্যক্তি যদি আসলেও অপরাধ করে থাকেন আর তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে কর্তৃপক্ষ আইনের সঠিক প্রতিপালন না করে, তাহলে সেই সিদ্ধান্ত আদালতের চোখে অবৈধই হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকই হোন আর স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি, যখন কর্তৃপক্ষের কোনো সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তাঁদের কোর্টে আসতে হয় এবং সেই মামলায় যদি ভুক্তভোগী জয়লাভ করেন, তখন ‘হারু পার্টি’ কর্তৃপক্ষকে দুই রকম আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। এক. মামলায় জয়ী ব্যক্তিকে তাঁর পূর্ণ বেতন দিতে হয়, যদিও তিনি তত দিন কোনো কাজই করতে পারেননি, আর দুই. কর্তৃপক্ষকে সেসব মামলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আইনজীবী নিয়োগ দিতে হয়, পয়সা খরচ করে। তবে পরোক্ষ খরচও আছে এবং সেটা ব্যাপক। একজন শিক্ষক বা জনপ্রতিনিধি, তিনি যদি তাঁর কাজটা করতে না পারেন, তাহলে ক্ষতিটা কিন্তু শুধু অর্থের পাল্লায় মাপলে তা যথেষ্ট হয় না।
৪. স্থান-কাল-পাত্র ভিন্ন হলেও সবগুলো ঘটনার একটা সাধারণ মিল রয়েছে। প্রতিটি ঘটনাই আইন বা ক্ষেত্রমতো যথাযথ নিয়ম না মানার ফলাফল। ফ্লাইওভারই হোক, সেতু হোক কিংবা বরখাস্তের আদেশ—যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে, অপরিকল্পিতভাবে খেয়ালখুশিমতো সিদ্ধান্ত নিলে ভবিষ্যতে তা গলার কাঁটা হবে, সেটা বুঝতে পণ্ডিত হতে হয় না। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমাদের ‘উনারা’ নিজেদের পণ্ডিত ভাবলেও এ সহজ ব্যাপারটি অনুধাবন করতে পারছেন না।
উনাদের এসব ‘খেয়ালখুশির’ সিদ্ধান্তের ফলে কী কী ক্ষতি হচ্ছে তার ফিরিস্তি লেখা যাবে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা। তবে আমাদের চিন্তাটা আপাতত অর্থের অপচয় নিয়ে। যে অপচয়ের হিসাব কেউ কখনো চায় না, চায়নি।
সংবিধান অনুযায়ী, আমরাই প্রজাতন্ত্রের সব ক্ষমতার মালিক, আমাদের দায়িত্ব সংবিধান ও আইন মান্য করা, শৃঙ্খলা রক্ষা করা এবং জাতীয় সম্পদ রক্ষা করা। অপরদিকে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সব ক্ষেত্রে জনগণের সেবা করার। সুতরাং ‘উনাদের’ সিদ্ধান্তের কারণে যদি রাষ্ট্র বা জনগণ কোনো ক্ষতির সম্মুখীন হয়, তাতে আমাদের মাথাব্যথা হওয়া অতি স্বাভাবিক। এ-ও সত্য যে আইন মেনে আমাদের মাথাব্যথা বাড়তে না দিয়ে অতি দ্রুত তা নিরাময়ের ব্যবস্থা করাটাই ‘উনাদের’ আইনি কর্তব্যের মধ্যে পড়ে।
মো. তায়্যিব-উল-ইসলাম সৌরভ, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
০২ মার্চ ২০২৫বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ জানুয়ারি ২০২৫গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪