তোফায়েল আহমেদ
গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশন ডিসেম্বরের শেষে বা জানুয়ারির শুরুতে নির্বাচনের সম্ভাবনা দেখছে এবং সুবিধামতো সময়ে তফসিল ঘোষণার কথা ভাবছে। ২০০৬ সালেও নির্বাচন কমিশন একই রকম ভেবেছিল। সেই নির্বাচন সময়মতো হয়নি, শেষ পর্যন্ত পিছিয়ে দুই বছর পর হয়েছে। আমার বিশ্বাস, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনও হবে না, হতে হবে। সেটি সুষ্ঠু দলনিরপেক্ষ প্রশাসনের অধীন সন্ত্রাসমুক্ত ও অংশগ্রহণমূলক হবে, না অন্য কোন পদ্ধতি ও প্রক্রিয়ায় হবে, তা আমরা কেউ জানি না। বিবেকবান ও শান্তিপ্রিয় সব মানুষের প্রত্যাশা, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন জন-আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হবে।
দলীয় সরকার, দলনিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং সর্বদলীয় জাতীয় সরকার—এসব বৃহত্তর রাজনৈতিক বিষয় রাজনীতির জন্য আপাতত তুলে রেখে ভোট ব্যবস্থাপনার কতিপয় ছোট ছোট বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চাই। কারণ নির্বাচন যে ধরনের সরকারের অধীনেই হোক, নির্বাচন ব্যবস্থাপনার কিছু খুঁটিনাটি বিষয় সর্বত্র সব সময় সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। দলনিরপেক্ষ সরকার এবং নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার সমতল ভূমি সত্ত্বেও কিছু সাধারণ বিষয়ে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি না থাকলে শত বজ্র আঁটুনির পরও দুই-একটি ফসকা গেরো সর্বনাশ ডেকে আনতে পারে। আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে নিজ নিজ দলের পক্ষে জাল ভোট দেওয়া এবং ভোট কারচুপি ফৌজদারি অপরাধ হলেও নৈতিক অপরাধ মনে করা হয় না। তাই সুযোগ পেলে ডান-বাম, ইসলামি সেক্যুলার ও দল-নির্দল সবাই সুযোগমতো অনিয়মের সুযোগ নিতে পিছপা হয় না।
বিগত দিনে ড. শামসুল হুদা কমিশন সেনাবাহিনীর সহায়তায় ছবিযুক্ত ডিজিটাল ভোটার তালিকা সফলভাবে প্রস্তুত করে এবং আরও পরে ইভিএম চালুর সফল পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ করে। সেই ইভিএমের পরীক্ষা-নিরীক্ষা কাজী রকিব কমিশন এবং পরের নূরুল হুদা কমিশনও চালিয়ে যায়। কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন ইভিএম ব্যবহার করে অনেক স্থানীয় নির্বাচন করার পরও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনদাবির মুখে ইভিএম পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। কারণ দেশের সব বিরুদ্ধপক্ষীয় রাজনৈতিক দল ও শক্তি ইভিএম প্রত্যাখ্যান করে। অপরদিকে সরকারও আর্থিক সংকটের মুখে নতুন ইভিএম মেশিন কেনায় অসমর্থ। সে কারণে ইভিএমের মাধ্যমে পুরো ভোট গ্রহণ পদ্ধতি এখন পরিত্যক্ত। শক্তিশালী বিরোধী রাজনৈতিক পক্ষ না থাকায় একতরফা নির্বাচনের বুথে ‘ভোট ডাকাত’ ঢুকে পড়েছিল এবং ভোটার শনাক্তের পর পোলিং বাটন নিজেরা টিপে দিয়ে ‘ডাকাত-পছন্দ’ প্রার্থীর পক্ষে ভোট দেওয়া হয়েছে বলে ব্যাপক অভিযোগ আসে। ইভিএম মেশিনে ভোট গ্রহণের আরও কিছু ত্রুটি ছিল। এর মধ্যে ছিল ভোট প্রদানে বিলম্ব, ফলাফলে ডিজিটাল কারচুপির অভিযোগ, মেশিনস্বল্পতা, আঙুলের ছাপ না মেলায় ভোটারের ভোগান্তি প্রভৃতি।
কেন্দ্রে কোনো নিরপেক্ষ প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থার অনুপস্থিতিতে ডাকাত ঢুকে যে কাজটি করেছে, কেন্দ্রে যদি নিরপেক্ষ ও পেশাদারির সঙ্গে নিরাপত্তাব্যবস্থা বহাল থাকত, তাহলে কি ইভিএমের কোনো সুফল পাওয়া যেত না? এ বিষয়টি বোধ হয় খুব একটা গুরুত্ব পায়নি বা বাস্তবতার সঙ্গে মূল্যায়িত হয়নি। ইভিএমের সীমাবদ্ধতা কিছু ছিল না তা নয়; যা সতর্কভাবে সংশোধন করা যেত। যেমন ‘ভেরিফাইয়েবল পেপার অডিট ট্রেইল’ সংযোজন ছিল একটি অত্যন্ত গঠনমূলক প্রস্তাব। ইসি বিদ্যমান মেশিনটি সংস্কারের ব্যাপারে কোনো আগ্রহ দেখায়নি। ভোটকেন্দ্রের অরাজকতার সব দায় যন্ত্রের ওপর চাপিয়ে দিয়ে যন্ত্রটি পুরোপুরি পরিত্যাগ করা ময়লা জল ফেলতে গিয়ে বালতি ফেলে দেওয়ার শামিল হলো।
ইভিএমের দুটি অংশ। একটি ভোটার শনাক্তকরণ ইউনিট, অপরটি ব্যালট ইউনিট। ব্যালট ইউনিটে ‘ভোট ডাকাতের’ উপদ্রব যতখানি ক্ষতিকর হয়েছিল, শনাক্ত ইউনিটে ওই প্রভাবটা সর্বাংশে ইতিবাচক ছিল। শনাক্ত ইউনিট সঠিক ভোটার শনাক্তকরণে কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। তাই হয়তো দেখা যাবে সনাতনী পদ্ধতির তুলনায় ইভিএমে ভোট গ্রহণের কারণে ভোট সংগ্রহের হার কম হয়েছে। এখানে ভোটার নন এমন লোক শনাক্তকরণ ইউনিট পার হতে পারেননি। তাই স্বাভাবিকভাবে ভুয়া ভোটার কেন্দ্রমুখী হননি। যিনি ভোটার হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন, তাঁর ভোটটি অনেক ক্ষেত্রে জবরদস্তিমূলকভাবে ভোট ডাকাতেরা বিশেষ কোনো প্রতীকে দিয়ে দিয়েছেন। এখন যেহেতু ইভিএম থাকবে না, তাই ভোটার শনাক্তের যে ডিজিটাল পদ্ধতি তা আর প্রয়োগ হবে না। পোলিং এজেন্টের মাধ্যমে চেহারা দেখে ভোটার শনাক্তের সনাতনী পদ্ধতি ফিরে আসবে।
আমাদের নির্বাচনব্যবস্থার ইতিহাসে এটি সুবিদিত যে সব প্রার্থী সব কেন্দ্রে এজেন্ট দিতে পারেন না। দিলেও চাপের কারণে এজেন্ট কাজ করতে পারেন না। এ ক্ষেত্রে ভুয়া ভোটারের মাধ্যমে ভোট সংগ্রহ বেড়ে যায়। যাঁদের যে কেন্দ্রে শক্তিশালী অবস্থান, তাঁরা ভোটার শনাক্তের ত্রুটিযুক্ত এ ব্যবস্থার সুযোগ নেবেন এবং পুরো নির্বাচনব্যবস্থাকে ভন্ডুল করার জন্য ভুয়া ভোটার কেন্দ্রে ঢোকানোর সদর দরজা খুলে যাওয়ার একটি প্রবল আশঙ্কা সৃষ্টি হলো। তার ওপর থাকল কোটি কোটি ব্যালট পেপার ছাপিয়ে তা কয়েক লাখ কেন্দ্রে নিরাপদে পাঠানো, লাখ লাখ কেন্দ্রে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ব্যবহার বাক্স ও ব্যালটের নিরাপত্তার কাজটি অনেক ঝুঁকিপূর্ণ। এই কাজগুলো কীভাবে সম্পন্ন হবে তার কোনো রূপরেখা এখনো পাওয়া যায়নি।
সব মহলের দাবি মেনে ইভিএম পরিত্যক্ত হয়েছে—এখন নতুন কোনো সিদ্ধান্তে এটি ফেরত আনা হয়তো সম্ভব ও সংগত কোনোটাই নয়। ব্যালটে ভোট গ্রহণের যাবতীয় ব্যয়বহুল, কালক্ষেপণকারী ও ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবস্থাগুলো দক্ষতার সঙ্গে নিষ্পন্ন করার যাবতীয় ব্যবস্থা যেহেতু নিতে হবে, তাই নির্বাচন কমিশন ও সংশ্লিষ্ট সবার কাছে আবেদন, ভোটার শনাক্তকরণ প্রক্রিয়ায় ইভিএমের শনাক্তকরণ ইউনিটটি ব্যবহার বিবেচনা করবেন কি না, পুনরায় বিবেচনা করে দেখুন। ধরা যাক যতসংখ্যক শনাক্তকরণ ইউনিট কার্যকর আছে তা হয়তো সারা দেশের সব কেন্দ্রের জন্য যথেষ্ট নয়। তবে ৩০০টি সংসদীয় আসনের প্রতিটির অন্তত ৫০ শতাংশ কেন্দ্রে শুধু ইভিএমের শনাক্তকরণ ইউনিটটি ব্যবহারের একটি সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা যেতে পারে। প্রতিটি আসনের এই ৫০ শতাংশ কেন্দ্র অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে বাছাই করতে হবে। বাকি কেন্দ্রগুলো সনাতনী পদ্ধতিতে করতে হবে। কারণ মেশিনস্বল্পতা। মেশিনস্বল্পতা কাটানো গেলে আরও বেশি কেন্দ্রে এই যন্ত্রের ব্যবহার করা যেতে পারে। আসল-নকল বা ভুয়া ভোটার শনাক্তকরণ পদ্ধতি ক্ষতিগ্রস্ত হলে পুরো ভোট গ্রহণ পদ্ধতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সময় থাকতে বিষয়টির ওপর সিদ্ধান্ত আশা করি।
গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশন ডিসেম্বরের শেষে বা জানুয়ারির শুরুতে নির্বাচনের সম্ভাবনা দেখছে এবং সুবিধামতো সময়ে তফসিল ঘোষণার কথা ভাবছে। ২০০৬ সালেও নির্বাচন কমিশন একই রকম ভেবেছিল। সেই নির্বাচন সময়মতো হয়নি, শেষ পর্যন্ত পিছিয়ে দুই বছর পর হয়েছে। আমার বিশ্বাস, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনও হবে না, হতে হবে। সেটি সুষ্ঠু দলনিরপেক্ষ প্রশাসনের অধীন সন্ত্রাসমুক্ত ও অংশগ্রহণমূলক হবে, না অন্য কোন পদ্ধতি ও প্রক্রিয়ায় হবে, তা আমরা কেউ জানি না। বিবেকবান ও শান্তিপ্রিয় সব মানুষের প্রত্যাশা, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন জন-আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হবে।
দলীয় সরকার, দলনিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং সর্বদলীয় জাতীয় সরকার—এসব বৃহত্তর রাজনৈতিক বিষয় রাজনীতির জন্য আপাতত তুলে রেখে ভোট ব্যবস্থাপনার কতিপয় ছোট ছোট বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চাই। কারণ নির্বাচন যে ধরনের সরকারের অধীনেই হোক, নির্বাচন ব্যবস্থাপনার কিছু খুঁটিনাটি বিষয় সর্বত্র সব সময় সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। দলনিরপেক্ষ সরকার এবং নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার সমতল ভূমি সত্ত্বেও কিছু সাধারণ বিষয়ে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি না থাকলে শত বজ্র আঁটুনির পরও দুই-একটি ফসকা গেরো সর্বনাশ ডেকে আনতে পারে। আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে নিজ নিজ দলের পক্ষে জাল ভোট দেওয়া এবং ভোট কারচুপি ফৌজদারি অপরাধ হলেও নৈতিক অপরাধ মনে করা হয় না। তাই সুযোগ পেলে ডান-বাম, ইসলামি সেক্যুলার ও দল-নির্দল সবাই সুযোগমতো অনিয়মের সুযোগ নিতে পিছপা হয় না।
বিগত দিনে ড. শামসুল হুদা কমিশন সেনাবাহিনীর সহায়তায় ছবিযুক্ত ডিজিটাল ভোটার তালিকা সফলভাবে প্রস্তুত করে এবং আরও পরে ইভিএম চালুর সফল পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ করে। সেই ইভিএমের পরীক্ষা-নিরীক্ষা কাজী রকিব কমিশন এবং পরের নূরুল হুদা কমিশনও চালিয়ে যায়। কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন ইভিএম ব্যবহার করে অনেক স্থানীয় নির্বাচন করার পরও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনদাবির মুখে ইভিএম পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। কারণ দেশের সব বিরুদ্ধপক্ষীয় রাজনৈতিক দল ও শক্তি ইভিএম প্রত্যাখ্যান করে। অপরদিকে সরকারও আর্থিক সংকটের মুখে নতুন ইভিএম মেশিন কেনায় অসমর্থ। সে কারণে ইভিএমের মাধ্যমে পুরো ভোট গ্রহণ পদ্ধতি এখন পরিত্যক্ত। শক্তিশালী বিরোধী রাজনৈতিক পক্ষ না থাকায় একতরফা নির্বাচনের বুথে ‘ভোট ডাকাত’ ঢুকে পড়েছিল এবং ভোটার শনাক্তের পর পোলিং বাটন নিজেরা টিপে দিয়ে ‘ডাকাত-পছন্দ’ প্রার্থীর পক্ষে ভোট দেওয়া হয়েছে বলে ব্যাপক অভিযোগ আসে। ইভিএম মেশিনে ভোট গ্রহণের আরও কিছু ত্রুটি ছিল। এর মধ্যে ছিল ভোট প্রদানে বিলম্ব, ফলাফলে ডিজিটাল কারচুপির অভিযোগ, মেশিনস্বল্পতা, আঙুলের ছাপ না মেলায় ভোটারের ভোগান্তি প্রভৃতি।
কেন্দ্রে কোনো নিরপেক্ষ প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থার অনুপস্থিতিতে ডাকাত ঢুকে যে কাজটি করেছে, কেন্দ্রে যদি নিরপেক্ষ ও পেশাদারির সঙ্গে নিরাপত্তাব্যবস্থা বহাল থাকত, তাহলে কি ইভিএমের কোনো সুফল পাওয়া যেত না? এ বিষয়টি বোধ হয় খুব একটা গুরুত্ব পায়নি বা বাস্তবতার সঙ্গে মূল্যায়িত হয়নি। ইভিএমের সীমাবদ্ধতা কিছু ছিল না তা নয়; যা সতর্কভাবে সংশোধন করা যেত। যেমন ‘ভেরিফাইয়েবল পেপার অডিট ট্রেইল’ সংযোজন ছিল একটি অত্যন্ত গঠনমূলক প্রস্তাব। ইসি বিদ্যমান মেশিনটি সংস্কারের ব্যাপারে কোনো আগ্রহ দেখায়নি। ভোটকেন্দ্রের অরাজকতার সব দায় যন্ত্রের ওপর চাপিয়ে দিয়ে যন্ত্রটি পুরোপুরি পরিত্যাগ করা ময়লা জল ফেলতে গিয়ে বালতি ফেলে দেওয়ার শামিল হলো।
ইভিএমের দুটি অংশ। একটি ভোটার শনাক্তকরণ ইউনিট, অপরটি ব্যালট ইউনিট। ব্যালট ইউনিটে ‘ভোট ডাকাতের’ উপদ্রব যতখানি ক্ষতিকর হয়েছিল, শনাক্ত ইউনিটে ওই প্রভাবটা সর্বাংশে ইতিবাচক ছিল। শনাক্ত ইউনিট সঠিক ভোটার শনাক্তকরণে কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। তাই হয়তো দেখা যাবে সনাতনী পদ্ধতির তুলনায় ইভিএমে ভোট গ্রহণের কারণে ভোট সংগ্রহের হার কম হয়েছে। এখানে ভোটার নন এমন লোক শনাক্তকরণ ইউনিট পার হতে পারেননি। তাই স্বাভাবিকভাবে ভুয়া ভোটার কেন্দ্রমুখী হননি। যিনি ভোটার হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন, তাঁর ভোটটি অনেক ক্ষেত্রে জবরদস্তিমূলকভাবে ভোট ডাকাতেরা বিশেষ কোনো প্রতীকে দিয়ে দিয়েছেন। এখন যেহেতু ইভিএম থাকবে না, তাই ভোটার শনাক্তের যে ডিজিটাল পদ্ধতি তা আর প্রয়োগ হবে না। পোলিং এজেন্টের মাধ্যমে চেহারা দেখে ভোটার শনাক্তের সনাতনী পদ্ধতি ফিরে আসবে।
আমাদের নির্বাচনব্যবস্থার ইতিহাসে এটি সুবিদিত যে সব প্রার্থী সব কেন্দ্রে এজেন্ট দিতে পারেন না। দিলেও চাপের কারণে এজেন্ট কাজ করতে পারেন না। এ ক্ষেত্রে ভুয়া ভোটারের মাধ্যমে ভোট সংগ্রহ বেড়ে যায়। যাঁদের যে কেন্দ্রে শক্তিশালী অবস্থান, তাঁরা ভোটার শনাক্তের ত্রুটিযুক্ত এ ব্যবস্থার সুযোগ নেবেন এবং পুরো নির্বাচনব্যবস্থাকে ভন্ডুল করার জন্য ভুয়া ভোটার কেন্দ্রে ঢোকানোর সদর দরজা খুলে যাওয়ার একটি প্রবল আশঙ্কা সৃষ্টি হলো। তার ওপর থাকল কোটি কোটি ব্যালট পেপার ছাপিয়ে তা কয়েক লাখ কেন্দ্রে নিরাপদে পাঠানো, লাখ লাখ কেন্দ্রে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ব্যবহার বাক্স ও ব্যালটের নিরাপত্তার কাজটি অনেক ঝুঁকিপূর্ণ। এই কাজগুলো কীভাবে সম্পন্ন হবে তার কোনো রূপরেখা এখনো পাওয়া যায়নি।
সব মহলের দাবি মেনে ইভিএম পরিত্যক্ত হয়েছে—এখন নতুন কোনো সিদ্ধান্তে এটি ফেরত আনা হয়তো সম্ভব ও সংগত কোনোটাই নয়। ব্যালটে ভোট গ্রহণের যাবতীয় ব্যয়বহুল, কালক্ষেপণকারী ও ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবস্থাগুলো দক্ষতার সঙ্গে নিষ্পন্ন করার যাবতীয় ব্যবস্থা যেহেতু নিতে হবে, তাই নির্বাচন কমিশন ও সংশ্লিষ্ট সবার কাছে আবেদন, ভোটার শনাক্তকরণ প্রক্রিয়ায় ইভিএমের শনাক্তকরণ ইউনিটটি ব্যবহার বিবেচনা করবেন কি না, পুনরায় বিবেচনা করে দেখুন। ধরা যাক যতসংখ্যক শনাক্তকরণ ইউনিট কার্যকর আছে তা হয়তো সারা দেশের সব কেন্দ্রের জন্য যথেষ্ট নয়। তবে ৩০০টি সংসদীয় আসনের প্রতিটির অন্তত ৫০ শতাংশ কেন্দ্রে শুধু ইভিএমের শনাক্তকরণ ইউনিটটি ব্যবহারের একটি সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা যেতে পারে। প্রতিটি আসনের এই ৫০ শতাংশ কেন্দ্র অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে বাছাই করতে হবে। বাকি কেন্দ্রগুলো সনাতনী পদ্ধতিতে করতে হবে। কারণ মেশিনস্বল্পতা। মেশিনস্বল্পতা কাটানো গেলে আরও বেশি কেন্দ্রে এই যন্ত্রের ব্যবহার করা যেতে পারে। আসল-নকল বা ভুয়া ভোটার শনাক্তকরণ পদ্ধতি ক্ষতিগ্রস্ত হলে পুরো ভোট গ্রহণ পদ্ধতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সময় থাকতে বিষয়টির ওপর সিদ্ধান্ত আশা করি।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
০২ মার্চ ২০২৫বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ জানুয়ারি ২০২৫গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪