Ajker Patrika

গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ এখনো এড়ানো সম্ভব: জাতিসংঘ

আপডেট : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৩: ৩৬
গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ এখনো এড়ানো সম্ভব: জাতিসংঘ

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় জরুরি মানবিক সাহায্য পৌঁছানোর অনুমতি দেওয়া হলে সেখানে এখনো মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ এড়ানো যেতে পারে। গতকাল রোববার এ কথা বলেছে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সাহায্য সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ। বার্তা সংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে।

গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলা চলছে চার মাসেরও বেশি সময় ধরে। এতে নিহতের সংখ্যা প্রায় ৩০ হাজারের কাছে পৌঁছেছে। আহত প্রায় ৭০ হাজার। এরই মধ্যে খাবার, পানি ও চিকিৎসা সরঞ্জামের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘ কয়েক মাস ধরেই এলাকাটিতে দুর্ভিক্ষের হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছে। বিভিন্ন শরণার্থীশিবিরে খাবারের অভাবে ধুঁকছে লাখো মানুষ।

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি সম্পর্কে সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ইউএনআরডব্লিউএ প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেন, ‘এটি একটি মানবসৃষ্ট বিপর্যয়। বিশ্ব আর কখনোই দুর্ভিক্ষ হতে না দেওয়ার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জরুরি সহায়তা এবং সুরক্ষা প্রদানের অনুমতি দেওয়ার প্রকৃত রাজনৈতিক ইচ্ছা থাকলে দুর্ভিক্ষ এখনো এড়ানো যেতে পারে।’

২০০৭ সাল থেকে গাজায় শাসনকারী গোষ্ঠী হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে আটকে পড়া সাধারণ গাজাবাসীর জন্য সাহায্য সংস্থাগুলো বরাবরই উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। গাজায় বর্তমানে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কাকে ‘অভূতপূর্ব’ বলেও বর্ণনা করেছে জাতিসংঘ।

লাজারিনি বলেন, ইউএনআরডব্লিউএর কর্মীরা হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলায় অংশ নিয়েছিল বলে ইসরায়েলের চাপের কারণে সংস্থাটি শেষবার উত্তর গাজায় খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছিল এক মাসেরও বেশি আগে, ২৩ জানুয়ারি।

গাজার উত্তরাঞ্চলের পরিস্থিতিকে ‘অত্যন্ত সংকটজনক’ বলে অভিহিত করেছে জাতিসংঘের মানবিক সংস্থা ওসিএইচএ। হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে অপুষ্টির কারণে অনেক শিশু মারা গেছে। ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে সর্বশেষ নিহতের সংখ্যা ২৯,৬৯২ জন। যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।

চলতি সপ্তাহেই বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি জানায়, গাজায় অভূতপূর্ব মাত্রার দুর্দশা দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, অঞ্চলটিতে প্রায় ২২ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। গত শুক্রবার গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গাজায় জাবালিয়া শিবির থেকে সাত কিলোমিটার দূরে এক হাসপাতালে অপুষ্টির কারণে দুই মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ সতর্ক করে বলেছে, উদ্বেগজনক হারে খাবারের সংকট, ক্রমবর্ধমান অপুষ্টি ও রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণে গাজায় শিশুমৃত্যু বাড়তে পারে।

১৯ ফেব্রুয়ারিতে এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজায় দুই বছরের কম বয়সী শিশুরা তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ক্রমবর্ধমান ক্ষুধার যন্ত্রণায় মানুষ পচা ভুট্টা, মানুষের খাওয়ার অনুপযোগী পশুখাদ্য, এমনকি লতাপাতাও খাওয়া শুরু করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত