আব্দুর রাজ্জাক
আমাদের কোমলমতি ছেলেরা সড়কে বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে আন্দোলন করে সফল হয়েছে। সড়কের দুর্ঘটনাজনিত কারণে তাদের সহপাঠীরা নিহত হচ্ছে, স্কুল-কলেজের মেয়েরা বাসের সহকারী বা চালকদের দ্বারা অপমানিত হচ্ছে। এই সব অনিয়মের বিরুদ্ধে ছাত্ররা রাস্তায় নেমেছে।
চালকেরা যথারীতি গ্রেপ্তার হয়েছেন। সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, শাস্তি হবে দুর্ঘটনার রূপ বিশ্লেষণ করে। ছাত্ররা আরও দাবি করল, তাদের অর্ধেক ভাড়া নিতে হবে। ঢাকা শহরে তাদের অর্ধেক ভাড়ার দাবি মেনে নেওয়া হলো। ছাত্ররা তাদের দাবির পরিধি বিস্তৃত করল, সারা দেশের ছাত্রদের অর্ধেক ভাড়া নিতে হবে। এই দাবির একপর্যায়ে তথ্যমন্ত্রী বাসমালিকদের এই দাবিও মেনে নেওয়ার অনুরোধ করলেন।
সহজেই অনুমেয়, ছাত্ররা যেসব যৌক্তিক দাবির আন্দোলন-সংগ্রাম করে, সেসব দাবি আদায় হয়। ছাত্রজীবনের সত্তর দশকের শেষে, আশির দশকের প্রথম দিকে অনেকের সঙ্গে আমিও বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি। ন্যায্য দাবির প্রতি সচেতন নাগরিকদের মৌন সমর্থন থাকে বলে এসব দাবি সহজেই আদায় হয়।
আমাদের এই স্কুল-কলেজপড়ুয়া ছাত্ররা খুবই সচেতন। তারা তাদের নিজেদের দাবি বোঝে, ন্যায্যতা আর আদায়ের কৌশল বোঝে।
এসব ছাত্র কয়েক দিন যাবৎ সব ধরনের যানবাহনের লাইসেন্স, সড়কে চলাচলের অনুমোদন সনদ, চালকদের লাইসেন্স ইত্যাদি পরীক্ষা করছে। যদি অনিয়ম পায় সেই সব গাড়ি আটকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করছে। খুব ভালো, জীবনের প্রথম থেকেই পুলিশি ও পরিদর্শী কাজে নিজেদের মধ্যে একটু অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করছে। ভবিষ্যৎ জীবনে কাজে দেবে।
এই ছাত্রদের কাছে আমার একটি নিবেদন, তোমাদের শ্রেণিকক্ষে যেসব শিক্ষক মহোদয় পাঠদান করেন, তাঁরা কি ঠিকমতো পাঠদান করেন? তা কি তোমরা বুঝতে পারো? যদি ঠিকমতো পাঠদান করেন, তাহলে তোমরা এসব শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়তে যাও কেন? এখন দেখি প্রায় প্রত্যেক শিক্ষকই বাড়িতে কোচিং সেন্টার করেন। স্কুলের পড়াটা ওখানে অনেক টাকার বিনিময়ে পণ্য বিক্রির মতো পড়ান। তোমরাই স্কুলের পরিবর্তে বাবা-মায়ের টাকা নিয়ে, ওই সব জায়গায় ভর্তি হয়ে প্রাইভেট পড়ো। এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে তোমরা কোনো প্রতিবাদ করোনি কেন?
তোমরা যেভাবে সড়ক পরিবহনের বিভিন্ন লাইসেন্স চেকিংসহ অন্যান্য বিষয় পরিদর্শন করছো, আমার মনে হয় তোমরা ন্যায়-অন্যায়, ঠিক-বেঠিক, স্বচ্ছ-অস্বচ্ছ, তার পরিমাপ জানো।
এখন দেখো তোমাদের বাবা-মা, বড় ভাই, অর্থাৎ তোমাদের অভিভাবকেরা কীভাবে উপার্জন করেন, মাসে কত টাকা তাঁদের বেতন, কত টাকা তোমাদের সংসারের পেছনে ব্যয় হয়, কত টাকা তোমাদের বাসাভাড়া। এই সব ছাড়াও তোমাদের পরিবারের কর্তৃপক্ষ কত সম্পদ করেছেন, এই সব সম্পদ কোত্থেকে এল, তাঁরা কত টাকা আয় করেন, আর তোমাদের লেখাপড়ার পেছনে, সংসারের পেছনে কত টাকা ব্যয় করেন। পেশা ব্যবসা হলে জানতে চাও কত টাকা আয়কর-ভ্যাট ও কাস্টমস ডিউটি ফাঁকি দেন। তোমাদের ব্যবসায় যেসব শ্রমিক কাজ করেন, তাঁদের পারিশ্রমিক ঠিকমতো দেওয়া হয় কি না। অভিভাবকদের কাছে এসবের হিসাব চাও। যদি দেখো তোমাদের পরিবারের কর্তাব্যক্তিরা হিসাব দিতে পারছেন না, তাহলে মনে করবে তাঁরা দুর্নীতির আশ্রয় নিচ্ছেন। নিজেদের ঘর থেকে তোমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম শুরু করো। তোমাদের এই সাহসী উদ্যোগী ভূমিকা সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে যাওয়া দুর্নীতিকে রুখতে পারে।
যদি তোমরা সূচনা করতে পারো এই উদ্যোগের, তাহলে দেশের সাধারণ-সৎমানুষ তোমাদের পাশে থাকবে। এই জাতি সারা জীবন তোমাদের স্মরণ রাখবে। আমাদের এই দেশ দুর্নীতির কলঙ্কমুক্ত হবে।
আর যদি শুধু সড়কের অনিয়মের জন্য আন্দোলন করে নিজেদের স্বার্থ আদায় করো, তাহলে তোমাদের দিয়ে সুস্থ-দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়া হবে না। তোমরা ভেঙে দিতে না পারলে এই সমাজের সব অনিয়ম, দুর্নীতি, অবিচার, অব্যবস্থাপনা। এ সমাজ এ রকমই চলতে থাকবে।
আব্দুর রাজ্জাক, প্রকৌশলী
আমাদের কোমলমতি ছেলেরা সড়কে বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে আন্দোলন করে সফল হয়েছে। সড়কের দুর্ঘটনাজনিত কারণে তাদের সহপাঠীরা নিহত হচ্ছে, স্কুল-কলেজের মেয়েরা বাসের সহকারী বা চালকদের দ্বারা অপমানিত হচ্ছে। এই সব অনিয়মের বিরুদ্ধে ছাত্ররা রাস্তায় নেমেছে।
চালকেরা যথারীতি গ্রেপ্তার হয়েছেন। সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, শাস্তি হবে দুর্ঘটনার রূপ বিশ্লেষণ করে। ছাত্ররা আরও দাবি করল, তাদের অর্ধেক ভাড়া নিতে হবে। ঢাকা শহরে তাদের অর্ধেক ভাড়ার দাবি মেনে নেওয়া হলো। ছাত্ররা তাদের দাবির পরিধি বিস্তৃত করল, সারা দেশের ছাত্রদের অর্ধেক ভাড়া নিতে হবে। এই দাবির একপর্যায়ে তথ্যমন্ত্রী বাসমালিকদের এই দাবিও মেনে নেওয়ার অনুরোধ করলেন।
সহজেই অনুমেয়, ছাত্ররা যেসব যৌক্তিক দাবির আন্দোলন-সংগ্রাম করে, সেসব দাবি আদায় হয়। ছাত্রজীবনের সত্তর দশকের শেষে, আশির দশকের প্রথম দিকে অনেকের সঙ্গে আমিও বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি। ন্যায্য দাবির প্রতি সচেতন নাগরিকদের মৌন সমর্থন থাকে বলে এসব দাবি সহজেই আদায় হয়।
আমাদের এই স্কুল-কলেজপড়ুয়া ছাত্ররা খুবই সচেতন। তারা তাদের নিজেদের দাবি বোঝে, ন্যায্যতা আর আদায়ের কৌশল বোঝে।
এসব ছাত্র কয়েক দিন যাবৎ সব ধরনের যানবাহনের লাইসেন্স, সড়কে চলাচলের অনুমোদন সনদ, চালকদের লাইসেন্স ইত্যাদি পরীক্ষা করছে। যদি অনিয়ম পায় সেই সব গাড়ি আটকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করছে। খুব ভালো, জীবনের প্রথম থেকেই পুলিশি ও পরিদর্শী কাজে নিজেদের মধ্যে একটু অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করছে। ভবিষ্যৎ জীবনে কাজে দেবে।
এই ছাত্রদের কাছে আমার একটি নিবেদন, তোমাদের শ্রেণিকক্ষে যেসব শিক্ষক মহোদয় পাঠদান করেন, তাঁরা কি ঠিকমতো পাঠদান করেন? তা কি তোমরা বুঝতে পারো? যদি ঠিকমতো পাঠদান করেন, তাহলে তোমরা এসব শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়তে যাও কেন? এখন দেখি প্রায় প্রত্যেক শিক্ষকই বাড়িতে কোচিং সেন্টার করেন। স্কুলের পড়াটা ওখানে অনেক টাকার বিনিময়ে পণ্য বিক্রির মতো পড়ান। তোমরাই স্কুলের পরিবর্তে বাবা-মায়ের টাকা নিয়ে, ওই সব জায়গায় ভর্তি হয়ে প্রাইভেট পড়ো। এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে তোমরা কোনো প্রতিবাদ করোনি কেন?
তোমরা যেভাবে সড়ক পরিবহনের বিভিন্ন লাইসেন্স চেকিংসহ অন্যান্য বিষয় পরিদর্শন করছো, আমার মনে হয় তোমরা ন্যায়-অন্যায়, ঠিক-বেঠিক, স্বচ্ছ-অস্বচ্ছ, তার পরিমাপ জানো।
এখন দেখো তোমাদের বাবা-মা, বড় ভাই, অর্থাৎ তোমাদের অভিভাবকেরা কীভাবে উপার্জন করেন, মাসে কত টাকা তাঁদের বেতন, কত টাকা তোমাদের সংসারের পেছনে ব্যয় হয়, কত টাকা তোমাদের বাসাভাড়া। এই সব ছাড়াও তোমাদের পরিবারের কর্তৃপক্ষ কত সম্পদ করেছেন, এই সব সম্পদ কোত্থেকে এল, তাঁরা কত টাকা আয় করেন, আর তোমাদের লেখাপড়ার পেছনে, সংসারের পেছনে কত টাকা ব্যয় করেন। পেশা ব্যবসা হলে জানতে চাও কত টাকা আয়কর-ভ্যাট ও কাস্টমস ডিউটি ফাঁকি দেন। তোমাদের ব্যবসায় যেসব শ্রমিক কাজ করেন, তাঁদের পারিশ্রমিক ঠিকমতো দেওয়া হয় কি না। অভিভাবকদের কাছে এসবের হিসাব চাও। যদি দেখো তোমাদের পরিবারের কর্তাব্যক্তিরা হিসাব দিতে পারছেন না, তাহলে মনে করবে তাঁরা দুর্নীতির আশ্রয় নিচ্ছেন। নিজেদের ঘর থেকে তোমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম শুরু করো। তোমাদের এই সাহসী উদ্যোগী ভূমিকা সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে যাওয়া দুর্নীতিকে রুখতে পারে।
যদি তোমরা সূচনা করতে পারো এই উদ্যোগের, তাহলে দেশের সাধারণ-সৎমানুষ তোমাদের পাশে থাকবে। এই জাতি সারা জীবন তোমাদের স্মরণ রাখবে। আমাদের এই দেশ দুর্নীতির কলঙ্কমুক্ত হবে।
আর যদি শুধু সড়কের অনিয়মের জন্য আন্দোলন করে নিজেদের স্বার্থ আদায় করো, তাহলে তোমাদের দিয়ে সুস্থ-দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়া হবে না। তোমরা ভেঙে দিতে না পারলে এই সমাজের সব অনিয়ম, দুর্নীতি, অবিচার, অব্যবস্থাপনা। এ সমাজ এ রকমই চলতে থাকবে।
আব্দুর রাজ্জাক, প্রকৌশলী
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
০২ মার্চ ২০২৫বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ জানুয়ারি ২০২৫গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪