তাপস মজুমদার
ভূপৃষ্ঠের নিচে নুড়ি, বালু, পলি—এসব অসংগঠিত দ্রব্যসমূহের সঙ্গে মিলে পানি একটি স্তর তৈরি করে সেখানে অবস্থান করে, যাকে অ্যাকুইফার (ভূগর্ভস্থ সিক্ত শিলাস্তর) বলা হয়। জমিতে যখন সেচ দেওয়া হয় অথবা বৃষ্টি পড়ে, তখন সেখান থেকে অতিরিক্ত পানি চুইয়ে ভূ-অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। আর এভাবে অগভীর অ্যাকুইফার তৈরি হয়। এসব অগভীর অ্যাকুইফারের মধ্যে যে পানি চলাচল করে, সেটাকেই সাধারণভাবে গ্রাউন্ডওয়াটার বলা হয়ে থাকে। গ্রাউন্ডওয়াটারের প্রধান উৎস হলো বৃষ্টি। বৃষ্টির পানি এবং অন্যান্য উৎস থেকে আসা ভূ-উপরিস্থ পানি প্রবেশ্য স্তর ভেদপূর্বক ভূ-অভ্যন্তরে প্রবেশ করে ভূগর্ভস্থ সিক্ত শিলাস্তর পুনর্ভরণ করে। কিন্তু যেখানে ভূতল অপ্রবেশ্য যেমন—সড়কপথ, ঘরবাড়ি, পাহাড়ি এলাকায় পানি সহজে মাটির নিচে প্রবেশ করতে পারে না।
যথেষ্ট মাত্রায় পানি যদি মাটির অভ্যন্তরে এভাবে প্রবেশ করে, তাহলে মাটির নিচের শিলাস্তরের মধ্যভাগ পানিতে পূর্ণ হয়ে যায়। যে গভীরতায় ভূ-অভ্যন্তর পানিতে সম্পূর্ণ ভরে যায়, সেই গভীরতাকেই বলা হয় পানির স্তর। খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, যে পরিমাণ পানি মাটির নিচে গিয়ে এই একুইফার পূর্ণ করছে, তার থেকে বেশি পরিমাণ পানি যদি সেখান থেকে উত্তোলন করা হয়, তাহলে ধীরে ধীরে পানির স্তর নিচে নেমে যায়। আমাদের দেশে এখন তা-ই ঘটছে। বিশেষ করে খরা মৌসুমে এই অবস্থা প্রকট। ফলে পানি ক্রমাগত দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠছে।
২৭ এপ্রিল আজকের পত্রিকার প্রধান শিরোনাম ছিল ‘নামছে স্তর, দুষ্প্রাপ্য হচ্ছে পানি’। সেই লেখায় আমাদের দেশের বিভিন্ন এলাকার পানির স্তর, কৃষকের দুর্ভোগ, এর কারণ এবং কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে। পড়লে যে কারোরই চিত্রটিকে ভয়াবহ মনে হবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। স্থানবিশেষে পানির স্তর ৩৫ থেকে ১৫৩ ফুট পর্যন্ত গভীরে নেমে গেছে। নাচোলের একজন কৃষক বলেছেন, গভীর নলকূপে পর্যাপ্ত পানি উঠছে না বলে আগে যেখানে এক ঘণ্টায় জমি ভিজে যেত, এখন দুই ঘণ্টা পানি দিয়েও জমিতে পানি রাখা যাচ্ছে না। নওগাঁর আরেকজন কৃষক বলেছেন, এবার বোরো ফসল মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। মানিকগঞ্জের ঘিওরের একজন জানান, এভাবে খরা সপ্তাহখানেক থাকলে জমিতে ধানের চেয়ে চিটার ভাগ বেশি হবে। অতিরিক্ত খরায় এবার আমের ফলনে বিপর্যয় ঘটতে পারে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় খুলনা, যশোর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, জয়পুরহাট, চুয়াডাঙ্গা, মানিকগঞ্জসহ দেশের অনেক জায়গায় ভয়ংকর রকমের পানিসংকটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এই দুষ্প্রাপ্যতার কারণ কী?
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বৈশ্বিক উষ্ণতা বেড়েছে। পাশাপাশি আমরা আমাদের চারপাশের পুকুর ও জলাশয় ভরাট করে ফেলছি। নদী দখল হয়ে আংশিক ভরাট হয়ে যাচ্ছে। ফলে আগে যে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর রিচার্জ বা পুনর্ভরণ হতো, সেটা হচ্ছে না। গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। বিপরীতে গাছ কিছু লাগানো হলেও তার যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ হচ্ছে না। নিয়মের তোয়াক্কা না করে (এক কিলোমিটারের মধ্যে গভীর নলকূপ বসানো যাবে না) যে যার মতো গভীর নলকূপ ও সাবমারসিবল পাম্প স্থাপন করে পানির সংস্থান করছে। সে জন্য ভূগর্ভস্থ পানির ওপর চাপ বাড়ছে।
জানা যায়, দক্ষিণ আফ্রিকার রাজধানী কেপটাউনকে বিশ্বের প্রথম জলহীন শহর হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এ বছরই এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে কর্তৃপক্ষ পানি সরবরাহ করতে অপারগতা প্রকাশ করেছে। সেখানে নিয়মিত স্নান করা নিষেধ। শহরে পানির ট্যাংকার থাকবে। সেখান থেকে ২৫ লিটার পর্যন্ত পানি সংগ্রহ করা যাবে। সম্প্রতি ভারতের বেঙ্গালুরু শহরেও এ রকম পানির সংকট দেখা দিয়েছে। সেখানে প্রতিদিনের চাহিদা ২ হাজার ৬০০ মিলিয়ন লিটার। ঘাটতি প্রায় ৫০০ মিলিয়ন লিটার। এই ঘাটতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষ বড় বড় আবাসিক ভবনে পানি সরবরাহ বিচ্ছিন্ন করে প্রতিদিন প্রায় ৬০ লাখ এমএল পানি বাঁচানোর ব্যবস্থা করছে। পানিবিহীন ভবনের ভয়াবহতা কল্পনা করা যায়!
আমাদের ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ক্রমাগত গভীর হচ্ছে। পাশাপাশি পানির চাহিদাও বাড়ছে। এমন অবস্থায় আমাদেরও ভয়ংকর দুরবস্থা উপস্থিত হতে পারে। সে রকম দুরবস্থা আসার আগেই আমাদের যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কার্বন নিঃসারণ হ্রাস, ড্যাম নির্মাণ, নদীর নাব্যতা বাড়ানো, পুকুর ভরাট এবং নদীর গতিপথ বন্ধ না করা, শহরের জলাশয়গুলো যথাযথভাবে রক্ষা করা, প্রচুর বৃক্ষ রোপণ করা প্রয়োজন। এসব ব্যাপারে সরকার এবং সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান কড়াকড়িভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি। পাশাপাশি এই ভয়াবহ পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত পানির ব্যবহারে অত্যন্ত সতর্ক হওয়া। নিম্নে কয়েকটি সাধারণ করণীয় উল্লেখ করা হলো:
১. দাড়ি কাটা, দাঁত ব্রাশ করা, বাসন মাজা ইত্যাদি কাজে পানি ব্যবহারের সময় ট্যাপ একটানা চালু না রাখা (স্টপ-স্টার্ট পদ্ধতি অবলম্বন করা)।
২. প্রতিদিন গাড়ি, বাড়ির সিঁড়ি, মেঝে বা উঠান ধোয়া এড়িয়ে চলা। এমনকি ঘর মোছাও প্রতিদিন না করা।
৩. বৃষ্টির পানি সংগ্রহ ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা এবং এই পানির ব্যবহার বাড়ানো।
৪. কোনো ট্যাপ থেকে ফোঁটায় ফোঁটায় পানি পড়ে গেলে তা দ্রুত মেরামত করা।
৫. কমোডের ফ্ল্যাশে প্রচুর পানির অপচয় হয়। কমোড ব্যবহার হ্রাস করা। একান্ত ব্যবহার করলেও দুই বোতামযুক্ত ফ্ল্যাশ ব্যবহার করা।
৬. সুবিধা থাকলে পুকুর বা নদীতে গোসল করার অভ্যাস গড়ে তোলা।
৭. টবের গাছে ন্যূনতম পরিমাণ পানি দেওয়া।
৮. বাথরুমে বালতির পানিতে গোসলের সময় ছোট মগ ব্যবহার করা।
৯. শাওয়ারে গোসলের সময় যে পানিটা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে, বালতিতে সেটা সংগ্রহ করে রেখে ফ্ল্যাশে ব্যবহার করা।
১০. অল্প সময়ে গোসল করা এবং শাওয়ারে গোসল করার সময় স্টপ-স্টার্ট পদ্ধতি অবলম্বন করা।
১১. কাপড় কাচা যথাসম্ভব কমিয়ে একবার ব্যবহৃত কাপড় রোদে বা বাতাসে শুকিয়ে পুনর্ব্যবহার করা।
১২. শিশুকে গামলায় গোসল করানোর পর পানিটা ফেলে না দিয়ে সেই পানি কাপড় ধোয়া বা কমোডে ব্যবহার করা।
১৩. কম্পোস্টেবল কাপ, চামচ, বাটি, থালা ব্যবহার করা যেতে পারে, যাতে ধোয়ার জন্য পানি ব্যবহার করতে না হয়।
লেখক: ভূতত্ত্ববিদ, সাংস্কৃতিক সংগঠক
ভূপৃষ্ঠের নিচে নুড়ি, বালু, পলি—এসব অসংগঠিত দ্রব্যসমূহের সঙ্গে মিলে পানি একটি স্তর তৈরি করে সেখানে অবস্থান করে, যাকে অ্যাকুইফার (ভূগর্ভস্থ সিক্ত শিলাস্তর) বলা হয়। জমিতে যখন সেচ দেওয়া হয় অথবা বৃষ্টি পড়ে, তখন সেখান থেকে অতিরিক্ত পানি চুইয়ে ভূ-অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। আর এভাবে অগভীর অ্যাকুইফার তৈরি হয়। এসব অগভীর অ্যাকুইফারের মধ্যে যে পানি চলাচল করে, সেটাকেই সাধারণভাবে গ্রাউন্ডওয়াটার বলা হয়ে থাকে। গ্রাউন্ডওয়াটারের প্রধান উৎস হলো বৃষ্টি। বৃষ্টির পানি এবং অন্যান্য উৎস থেকে আসা ভূ-উপরিস্থ পানি প্রবেশ্য স্তর ভেদপূর্বক ভূ-অভ্যন্তরে প্রবেশ করে ভূগর্ভস্থ সিক্ত শিলাস্তর পুনর্ভরণ করে। কিন্তু যেখানে ভূতল অপ্রবেশ্য যেমন—সড়কপথ, ঘরবাড়ি, পাহাড়ি এলাকায় পানি সহজে মাটির নিচে প্রবেশ করতে পারে না।
যথেষ্ট মাত্রায় পানি যদি মাটির অভ্যন্তরে এভাবে প্রবেশ করে, তাহলে মাটির নিচের শিলাস্তরের মধ্যভাগ পানিতে পূর্ণ হয়ে যায়। যে গভীরতায় ভূ-অভ্যন্তর পানিতে সম্পূর্ণ ভরে যায়, সেই গভীরতাকেই বলা হয় পানির স্তর। খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, যে পরিমাণ পানি মাটির নিচে গিয়ে এই একুইফার পূর্ণ করছে, তার থেকে বেশি পরিমাণ পানি যদি সেখান থেকে উত্তোলন করা হয়, তাহলে ধীরে ধীরে পানির স্তর নিচে নেমে যায়। আমাদের দেশে এখন তা-ই ঘটছে। বিশেষ করে খরা মৌসুমে এই অবস্থা প্রকট। ফলে পানি ক্রমাগত দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠছে।
২৭ এপ্রিল আজকের পত্রিকার প্রধান শিরোনাম ছিল ‘নামছে স্তর, দুষ্প্রাপ্য হচ্ছে পানি’। সেই লেখায় আমাদের দেশের বিভিন্ন এলাকার পানির স্তর, কৃষকের দুর্ভোগ, এর কারণ এবং কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে। পড়লে যে কারোরই চিত্রটিকে ভয়াবহ মনে হবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। স্থানবিশেষে পানির স্তর ৩৫ থেকে ১৫৩ ফুট পর্যন্ত গভীরে নেমে গেছে। নাচোলের একজন কৃষক বলেছেন, গভীর নলকূপে পর্যাপ্ত পানি উঠছে না বলে আগে যেখানে এক ঘণ্টায় জমি ভিজে যেত, এখন দুই ঘণ্টা পানি দিয়েও জমিতে পানি রাখা যাচ্ছে না। নওগাঁর আরেকজন কৃষক বলেছেন, এবার বোরো ফসল মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। মানিকগঞ্জের ঘিওরের একজন জানান, এভাবে খরা সপ্তাহখানেক থাকলে জমিতে ধানের চেয়ে চিটার ভাগ বেশি হবে। অতিরিক্ত খরায় এবার আমের ফলনে বিপর্যয় ঘটতে পারে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় খুলনা, যশোর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, জয়পুরহাট, চুয়াডাঙ্গা, মানিকগঞ্জসহ দেশের অনেক জায়গায় ভয়ংকর রকমের পানিসংকটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এই দুষ্প্রাপ্যতার কারণ কী?
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বৈশ্বিক উষ্ণতা বেড়েছে। পাশাপাশি আমরা আমাদের চারপাশের পুকুর ও জলাশয় ভরাট করে ফেলছি। নদী দখল হয়ে আংশিক ভরাট হয়ে যাচ্ছে। ফলে আগে যে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর রিচার্জ বা পুনর্ভরণ হতো, সেটা হচ্ছে না। গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। বিপরীতে গাছ কিছু লাগানো হলেও তার যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ হচ্ছে না। নিয়মের তোয়াক্কা না করে (এক কিলোমিটারের মধ্যে গভীর নলকূপ বসানো যাবে না) যে যার মতো গভীর নলকূপ ও সাবমারসিবল পাম্প স্থাপন করে পানির সংস্থান করছে। সে জন্য ভূগর্ভস্থ পানির ওপর চাপ বাড়ছে।
জানা যায়, দক্ষিণ আফ্রিকার রাজধানী কেপটাউনকে বিশ্বের প্রথম জলহীন শহর হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এ বছরই এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে কর্তৃপক্ষ পানি সরবরাহ করতে অপারগতা প্রকাশ করেছে। সেখানে নিয়মিত স্নান করা নিষেধ। শহরে পানির ট্যাংকার থাকবে। সেখান থেকে ২৫ লিটার পর্যন্ত পানি সংগ্রহ করা যাবে। সম্প্রতি ভারতের বেঙ্গালুরু শহরেও এ রকম পানির সংকট দেখা দিয়েছে। সেখানে প্রতিদিনের চাহিদা ২ হাজার ৬০০ মিলিয়ন লিটার। ঘাটতি প্রায় ৫০০ মিলিয়ন লিটার। এই ঘাটতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষ বড় বড় আবাসিক ভবনে পানি সরবরাহ বিচ্ছিন্ন করে প্রতিদিন প্রায় ৬০ লাখ এমএল পানি বাঁচানোর ব্যবস্থা করছে। পানিবিহীন ভবনের ভয়াবহতা কল্পনা করা যায়!
আমাদের ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ক্রমাগত গভীর হচ্ছে। পাশাপাশি পানির চাহিদাও বাড়ছে। এমন অবস্থায় আমাদেরও ভয়ংকর দুরবস্থা উপস্থিত হতে পারে। সে রকম দুরবস্থা আসার আগেই আমাদের যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কার্বন নিঃসারণ হ্রাস, ড্যাম নির্মাণ, নদীর নাব্যতা বাড়ানো, পুকুর ভরাট এবং নদীর গতিপথ বন্ধ না করা, শহরের জলাশয়গুলো যথাযথভাবে রক্ষা করা, প্রচুর বৃক্ষ রোপণ করা প্রয়োজন। এসব ব্যাপারে সরকার এবং সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান কড়াকড়িভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি। পাশাপাশি এই ভয়াবহ পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত পানির ব্যবহারে অত্যন্ত সতর্ক হওয়া। নিম্নে কয়েকটি সাধারণ করণীয় উল্লেখ করা হলো:
১. দাড়ি কাটা, দাঁত ব্রাশ করা, বাসন মাজা ইত্যাদি কাজে পানি ব্যবহারের সময় ট্যাপ একটানা চালু না রাখা (স্টপ-স্টার্ট পদ্ধতি অবলম্বন করা)।
২. প্রতিদিন গাড়ি, বাড়ির সিঁড়ি, মেঝে বা উঠান ধোয়া এড়িয়ে চলা। এমনকি ঘর মোছাও প্রতিদিন না করা।
৩. বৃষ্টির পানি সংগ্রহ ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা এবং এই পানির ব্যবহার বাড়ানো।
৪. কোনো ট্যাপ থেকে ফোঁটায় ফোঁটায় পানি পড়ে গেলে তা দ্রুত মেরামত করা।
৫. কমোডের ফ্ল্যাশে প্রচুর পানির অপচয় হয়। কমোড ব্যবহার হ্রাস করা। একান্ত ব্যবহার করলেও দুই বোতামযুক্ত ফ্ল্যাশ ব্যবহার করা।
৬. সুবিধা থাকলে পুকুর বা নদীতে গোসল করার অভ্যাস গড়ে তোলা।
৭. টবের গাছে ন্যূনতম পরিমাণ পানি দেওয়া।
৮. বাথরুমে বালতির পানিতে গোসলের সময় ছোট মগ ব্যবহার করা।
৯. শাওয়ারে গোসলের সময় যে পানিটা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে, বালতিতে সেটা সংগ্রহ করে রেখে ফ্ল্যাশে ব্যবহার করা।
১০. অল্প সময়ে গোসল করা এবং শাওয়ারে গোসল করার সময় স্টপ-স্টার্ট পদ্ধতি অবলম্বন করা।
১১. কাপড় কাচা যথাসম্ভব কমিয়ে একবার ব্যবহৃত কাপড় রোদে বা বাতাসে শুকিয়ে পুনর্ব্যবহার করা।
১২. শিশুকে গামলায় গোসল করানোর পর পানিটা ফেলে না দিয়ে সেই পানি কাপড় ধোয়া বা কমোডে ব্যবহার করা।
১৩. কম্পোস্টেবল কাপ, চামচ, বাটি, থালা ব্যবহার করা যেতে পারে, যাতে ধোয়ার জন্য পানি ব্যবহার করতে না হয়।
লেখক: ভূতত্ত্ববিদ, সাংস্কৃতিক সংগঠক
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
৫ দিন আগেবিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ জানুয়ারি ২০২৫গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪