আবদুল্লাহ জোয়ারদার
১. চট্টগ্রামের আবু বক্করকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে তাঁর একটি কিডনি কেটে তা ডা. রবিউল হোসেনের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়।
২. চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ভারতের গুজরাটে নিয়ে রবিন নামের এক যুবকের কিডনি কেটে নেওয়া হয়েছে।
৩. মানবসেবার আড়ালে চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার নামে মিরপুরের একটি আশ্রয়কেন্দ্রের মালিক মিল্টন সমাদ্দারের কিডনি পাচারের ভয়ংকর ঘটনা প্রকাশ।
৪. সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজে এক ব্যক্তি হাতের হাড় ভাঙার চিকিৎসা করাতে এসে কিডনি হারিয়েছেন।
ওপরের ঘটনাগুলো পড়ে গা শিউরে ওঠে। বলিউডে ‘রান’ সিনেমায় বিজয় রাজ নামের এক কমেডিয়ান দিল্লি এসে প্রতারিত হতে হতে একসময় মাথার আঘাতের চিকিৎসায় হাসপাতালে ভর্তি হয়ে একটি কিডনি হারান। হলিউড-বলিউডে কিডনি চুরি নিয়ে তৈরি হয়েছে অনেক সিনেমা। আমাদের দেশে হুমায়ূন আহমেদ ‘নক্ষত্রের রাত’ নাটকে হাসান চরিত্রে অভিনয় করা আসাদুজ্জামান নূরের মুখে কিডনি বিক্রি করে সেই টাকায় দেশ-বিদেশের দর্শনীয় স্থান দেখার অভিপ্রায়ের কথা বলা হয়েছে।
কিডনি মানবদেহের অতিগুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। কিডনি পাচার বা চুরি দীর্ঘদিন ধরে চলছে। কিন্তু চট্টগ্রামে ডাক্তার পরিবারের নামে কয়েক মাস আগে মামলা হওয়ায় বিষয়টি সামনে এসেছে। দেশ-বিদেশে শক্তিশালী চক্র গড়ে উঠেছে, যারা এ দেশের কিছু মানুষের অভাব-অনটনকে পুঁজি করে এবং নানা প্রলোভন দেখিয়ে তাঁদের কিডনি পাচার করছে। গত এপ্রিল-জুন মাসেও ভারতে চাকরির জন্য গিয়ে তিনজন কিডনি হারিয়েছেন।
কিডনি চুরির পর সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডাক্তার যে যুক্তি দেখান, তা আরও বিস্ময়কর। তিনি বলেছেন, ‘কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রয়োজনীয় অবকাঠামো এই হাসপাতালে নেই। রোগীর শরীরে কিডনি না থাকার রেকর্ড আছে। অনেকের জন্মগতভাবেও একটি কিডনি থাকে না। আলট্রাসনোগ্রামে ত্রুটি বা অপারেটরের অদক্ষতার কারণে সঠিক চিত্র না-ও আসতে পারে। হাতের হাড় ভাঙার অপারেশনের সময় বোন গ্রাফটিং করা হয়। এ ক্ষেত্রে ভিকটিম খসরু মিয়ার কোমর থেকে হাড় নিয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে মাত্র।’ তাহলে তাঁর কিডনি চুরি হলো কীভাবে?
চক্র এমনভাবে জাল বিছিয়ে রেখেছে, তাদের আসল মতলব সাধারণ মানুষের জানা অসম্ভব। কোনো কোনো সময় একজনের কিডনি নিতে প্রায় দুই বছর লাগে। যেমন রবিন। মিরপুরের একটি চায়ের দোকানে মাছুম নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁর; মাছুম নিজেকে ব্যবসায়ী দাবি করেন। এভাবে বছরখানেকের চেষ্টায় রবিনকে তারা ভারতে নিয়ে জিম্মি করে ভয়ভীতি দেখিয়ে কিডনি দিতে বাধ্য করে। একজনের কিডনি অর্ধকোটি টাকায়ও বিক্রি হয়।
এই চক্র কোনো কোনো ‘শিকার’ ধরার জন্য নানাভাবে অর্থ-শ্রম ব্যয় করে। চক্রের সদস্যরা প্রথমে জেনে নেয় সম্ভাব্য শিকারের আর্থিক অবস্থা। পরে তারা শিকারের অভাব-অনটনের বিষয়টি সামনে আনে। এদের কথাবার্তা, চালচলনে বোঝার উপায় নেই, শিকার কত বড় ভয়ংকর জালে আটকা পড়েছে।
ঢাকার শ্যামলীতে এক বেসরকারি হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, কেউ এসেছেন ডায়ালাইসিস করাতে, কেউ কিডনির পাথর অপসারণ করাতে। গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জের বাছেদ নামের একজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, ২০১৫ সালে তিনি প্রলোভনে পড়ে ভারতে যান। সেখানে চক্রের সদস্যদের প্রস্তাবে তাঁর মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। একটি হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করিয়ে বিভিন্ন টেস্ট করানো হয়। পরে ৩ লাখ টাকায় তাঁর একটি কিডনি দিতে বাধ্য করে।
বাছেদ বলেন, ‘আমি দিনমজুরি করতাম। সংসারে অভাব লেগেই থাকত। ছয় সদস্যের পরিবার আমার ওপর নির্ভরশীল। দালাল বলেছিল, একটি কিডনিতেই মানুষ ঠিকভাবে জীবনযাপন করতে পারে। পড়ালেখা না জানায় তাদের শর্তে রাজি হয়ে যাই। ডান কিডনি দিয়ে ১৫ দিন পর দেশে ফিরি। আমার স্ত্রীর কাছে তারা ৩ লাখ টাকা পাঠায়। দুই বছর পর আমার শরীরে একটু একটু করে সমস্যা দেখা দেয়। প্রথমে কোমরব্যথা, কিছুদিন পর প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া শুরু হয়। প্রায়ই জ্বর আসে। পরে এক ব্যক্তির সহায়তায় ঢাকায় এসে ডাক্তার দেখিয়ে কয়েকটি টেস্ট করাই। ডাক্তার সাহেব বললেন, একটি কিডনি থাকায় এর ওপর প্রচণ্ড চাপ পড়ায় সেটিও বিকল হওয়ার পথে। যে টাকা পেয়েছিলাম, তা সংসারের পেছনে আর ওষুধ কিনতে খরচ করে ফেলি। একটু হাঁটাচলা করলেই শ্বাসকষ্ট হয়। প্রায়ই চোখমুখ ফুলে যায়। কোনো কাজ করতে পারি না। কাজের লোভে ভারতে গিয়ে মাত্র ৩ লাখ টাকায় একটি কিডনি বিক্রি করে এখন পরিবারের বোঝা হয়ে পড়েছি।’
গাইবান্ধার পাশের জেলা জয়পুরহাটের কালাই উপজেলা কিডনি বিক্রির বাজার হয়ে উঠেছিল। বেশ কয়েক বছর আগে এ উপজেলায় অভাবের কারণে তিন শতাধিক মানুষের কিডনি বিক্রির তথ্য পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। কিডনি বেচা মানুষকে সমাজ ভালোভাবে নেয় না। অনেকে লোকলজ্জার ভয়ে ডাক্তারের কাছেও যেতে চান না। প্রশাসনের তৎপরতায় কয়েক বছর বন্ধ থাকার পর তা আবার শুরু হয়েছে গোপনে।
এত স্বাস্থ্যকর্মী, এত ডাক্তার, এত জনপ্রতিনিধি, অথচ তাঁরা দেশের একটি অঞ্চলে অভাবে পড়ে কিছু টাকার জন্য দেহের অতিগুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ বিক্রি করে দিচ্ছেন; তার খবর কেন তাঁদের কাছে নেই? কেন নেই, সেই ব্যাখ্যা চাওয়া এবং দেওয়ার লোকের এখন বড়ই অভাব।
২০১২ সালে যখন কালাই উপজেলায় এই কিডনি বিক্রি নিয়ে হইচই পড়ে যায়, তখন তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. রুহুল হক কি জয়পুরহাটের সিভিল সার্জনকে জিজ্ঞেস করেছিলেন—এতগুলো মানুষ কেন আত্মঘাতী পথে পা বাড়াল? সাংবাদিকেরা যখন এসব সংবাদ মিডিয়ায় তুলে ধরেন, শুধু তখনই তা সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের নজরে পড়ে এবং বড় বড় কর্তাব্যক্তির টনক নড়ে। এর আগে তাঁরা যেন সবকিছুই স্বাভাবিক দেখেন।
খোদ রাজধানী ঢাকায় মিল্টন সমাদ্দার যেভাবে মানবসেবার আড়ালে মানবদেহের অঙ্গ পাচার করে আসছিলেন, সাংবাদিকেরা তা তুলে না ধরলে আমরা জানতেও পারতাম না তাঁর কুৎসিত দিকটি। এসব ঘটনার দায় কে নেবে? অবশ্য মিডিয়ায় লেখালেখি করেও যে খুব একটা লাভ হয়, তা কিন্তু নয়। মিল্টনের জামিনে বের হয়ে আসা তার সর্বশেষ উদাহরণ। যাঁরা প্রতারকদের খপ্পরে পড়ে কিডনি হারাচ্ছেন, তাঁরা যদি রাষ্ট্রের কাছে তা ফেরত চান—রাষ্ট্র তার কী জবাব দেবে?
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার কাজের মাধ্যমে মানুষের এসব দিককে গুরুত্ব দেবে। সরকার কিডনি পাচারের এসব চক্র নির্মূলে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে—এটা আমরা প্রত্যাশা করতেই পারি। কারণ আমরা আশাবাদী মানুষ।
লেখক: আবদুল্লাহ জোয়ারদার
সংবাদকর্মী
১. চট্টগ্রামের আবু বক্করকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে তাঁর একটি কিডনি কেটে তা ডা. রবিউল হোসেনের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়।
২. চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ভারতের গুজরাটে নিয়ে রবিন নামের এক যুবকের কিডনি কেটে নেওয়া হয়েছে।
৩. মানবসেবার আড়ালে চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার নামে মিরপুরের একটি আশ্রয়কেন্দ্রের মালিক মিল্টন সমাদ্দারের কিডনি পাচারের ভয়ংকর ঘটনা প্রকাশ।
৪. সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজে এক ব্যক্তি হাতের হাড় ভাঙার চিকিৎসা করাতে এসে কিডনি হারিয়েছেন।
ওপরের ঘটনাগুলো পড়ে গা শিউরে ওঠে। বলিউডে ‘রান’ সিনেমায় বিজয় রাজ নামের এক কমেডিয়ান দিল্লি এসে প্রতারিত হতে হতে একসময় মাথার আঘাতের চিকিৎসায় হাসপাতালে ভর্তি হয়ে একটি কিডনি হারান। হলিউড-বলিউডে কিডনি চুরি নিয়ে তৈরি হয়েছে অনেক সিনেমা। আমাদের দেশে হুমায়ূন আহমেদ ‘নক্ষত্রের রাত’ নাটকে হাসান চরিত্রে অভিনয় করা আসাদুজ্জামান নূরের মুখে কিডনি বিক্রি করে সেই টাকায় দেশ-বিদেশের দর্শনীয় স্থান দেখার অভিপ্রায়ের কথা বলা হয়েছে।
কিডনি মানবদেহের অতিগুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। কিডনি পাচার বা চুরি দীর্ঘদিন ধরে চলছে। কিন্তু চট্টগ্রামে ডাক্তার পরিবারের নামে কয়েক মাস আগে মামলা হওয়ায় বিষয়টি সামনে এসেছে। দেশ-বিদেশে শক্তিশালী চক্র গড়ে উঠেছে, যারা এ দেশের কিছু মানুষের অভাব-অনটনকে পুঁজি করে এবং নানা প্রলোভন দেখিয়ে তাঁদের কিডনি পাচার করছে। গত এপ্রিল-জুন মাসেও ভারতে চাকরির জন্য গিয়ে তিনজন কিডনি হারিয়েছেন।
কিডনি চুরির পর সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডাক্তার যে যুক্তি দেখান, তা আরও বিস্ময়কর। তিনি বলেছেন, ‘কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রয়োজনীয় অবকাঠামো এই হাসপাতালে নেই। রোগীর শরীরে কিডনি না থাকার রেকর্ড আছে। অনেকের জন্মগতভাবেও একটি কিডনি থাকে না। আলট্রাসনোগ্রামে ত্রুটি বা অপারেটরের অদক্ষতার কারণে সঠিক চিত্র না-ও আসতে পারে। হাতের হাড় ভাঙার অপারেশনের সময় বোন গ্রাফটিং করা হয়। এ ক্ষেত্রে ভিকটিম খসরু মিয়ার কোমর থেকে হাড় নিয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে মাত্র।’ তাহলে তাঁর কিডনি চুরি হলো কীভাবে?
চক্র এমনভাবে জাল বিছিয়ে রেখেছে, তাদের আসল মতলব সাধারণ মানুষের জানা অসম্ভব। কোনো কোনো সময় একজনের কিডনি নিতে প্রায় দুই বছর লাগে। যেমন রবিন। মিরপুরের একটি চায়ের দোকানে মাছুম নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁর; মাছুম নিজেকে ব্যবসায়ী দাবি করেন। এভাবে বছরখানেকের চেষ্টায় রবিনকে তারা ভারতে নিয়ে জিম্মি করে ভয়ভীতি দেখিয়ে কিডনি দিতে বাধ্য করে। একজনের কিডনি অর্ধকোটি টাকায়ও বিক্রি হয়।
এই চক্র কোনো কোনো ‘শিকার’ ধরার জন্য নানাভাবে অর্থ-শ্রম ব্যয় করে। চক্রের সদস্যরা প্রথমে জেনে নেয় সম্ভাব্য শিকারের আর্থিক অবস্থা। পরে তারা শিকারের অভাব-অনটনের বিষয়টি সামনে আনে। এদের কথাবার্তা, চালচলনে বোঝার উপায় নেই, শিকার কত বড় ভয়ংকর জালে আটকা পড়েছে।
ঢাকার শ্যামলীতে এক বেসরকারি হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, কেউ এসেছেন ডায়ালাইসিস করাতে, কেউ কিডনির পাথর অপসারণ করাতে। গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জের বাছেদ নামের একজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, ২০১৫ সালে তিনি প্রলোভনে পড়ে ভারতে যান। সেখানে চক্রের সদস্যদের প্রস্তাবে তাঁর মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। একটি হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করিয়ে বিভিন্ন টেস্ট করানো হয়। পরে ৩ লাখ টাকায় তাঁর একটি কিডনি দিতে বাধ্য করে।
বাছেদ বলেন, ‘আমি দিনমজুরি করতাম। সংসারে অভাব লেগেই থাকত। ছয় সদস্যের পরিবার আমার ওপর নির্ভরশীল। দালাল বলেছিল, একটি কিডনিতেই মানুষ ঠিকভাবে জীবনযাপন করতে পারে। পড়ালেখা না জানায় তাদের শর্তে রাজি হয়ে যাই। ডান কিডনি দিয়ে ১৫ দিন পর দেশে ফিরি। আমার স্ত্রীর কাছে তারা ৩ লাখ টাকা পাঠায়। দুই বছর পর আমার শরীরে একটু একটু করে সমস্যা দেখা দেয়। প্রথমে কোমরব্যথা, কিছুদিন পর প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া শুরু হয়। প্রায়ই জ্বর আসে। পরে এক ব্যক্তির সহায়তায় ঢাকায় এসে ডাক্তার দেখিয়ে কয়েকটি টেস্ট করাই। ডাক্তার সাহেব বললেন, একটি কিডনি থাকায় এর ওপর প্রচণ্ড চাপ পড়ায় সেটিও বিকল হওয়ার পথে। যে টাকা পেয়েছিলাম, তা সংসারের পেছনে আর ওষুধ কিনতে খরচ করে ফেলি। একটু হাঁটাচলা করলেই শ্বাসকষ্ট হয়। প্রায়ই চোখমুখ ফুলে যায়। কোনো কাজ করতে পারি না। কাজের লোভে ভারতে গিয়ে মাত্র ৩ লাখ টাকায় একটি কিডনি বিক্রি করে এখন পরিবারের বোঝা হয়ে পড়েছি।’
গাইবান্ধার পাশের জেলা জয়পুরহাটের কালাই উপজেলা কিডনি বিক্রির বাজার হয়ে উঠেছিল। বেশ কয়েক বছর আগে এ উপজেলায় অভাবের কারণে তিন শতাধিক মানুষের কিডনি বিক্রির তথ্য পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। কিডনি বেচা মানুষকে সমাজ ভালোভাবে নেয় না। অনেকে লোকলজ্জার ভয়ে ডাক্তারের কাছেও যেতে চান না। প্রশাসনের তৎপরতায় কয়েক বছর বন্ধ থাকার পর তা আবার শুরু হয়েছে গোপনে।
এত স্বাস্থ্যকর্মী, এত ডাক্তার, এত জনপ্রতিনিধি, অথচ তাঁরা দেশের একটি অঞ্চলে অভাবে পড়ে কিছু টাকার জন্য দেহের অতিগুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ বিক্রি করে দিচ্ছেন; তার খবর কেন তাঁদের কাছে নেই? কেন নেই, সেই ব্যাখ্যা চাওয়া এবং দেওয়ার লোকের এখন বড়ই অভাব।
২০১২ সালে যখন কালাই উপজেলায় এই কিডনি বিক্রি নিয়ে হইচই পড়ে যায়, তখন তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. রুহুল হক কি জয়পুরহাটের সিভিল সার্জনকে জিজ্ঞেস করেছিলেন—এতগুলো মানুষ কেন আত্মঘাতী পথে পা বাড়াল? সাংবাদিকেরা যখন এসব সংবাদ মিডিয়ায় তুলে ধরেন, শুধু তখনই তা সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের নজরে পড়ে এবং বড় বড় কর্তাব্যক্তির টনক নড়ে। এর আগে তাঁরা যেন সবকিছুই স্বাভাবিক দেখেন।
খোদ রাজধানী ঢাকায় মিল্টন সমাদ্দার যেভাবে মানবসেবার আড়ালে মানবদেহের অঙ্গ পাচার করে আসছিলেন, সাংবাদিকেরা তা তুলে না ধরলে আমরা জানতেও পারতাম না তাঁর কুৎসিত দিকটি। এসব ঘটনার দায় কে নেবে? অবশ্য মিডিয়ায় লেখালেখি করেও যে খুব একটা লাভ হয়, তা কিন্তু নয়। মিল্টনের জামিনে বের হয়ে আসা তার সর্বশেষ উদাহরণ। যাঁরা প্রতারকদের খপ্পরে পড়ে কিডনি হারাচ্ছেন, তাঁরা যদি রাষ্ট্রের কাছে তা ফেরত চান—রাষ্ট্র তার কী জবাব দেবে?
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার কাজের মাধ্যমে মানুষের এসব দিককে গুরুত্ব দেবে। সরকার কিডনি পাচারের এসব চক্র নির্মূলে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে—এটা আমরা প্রত্যাশা করতেই পারি। কারণ আমরা আশাবাদী মানুষ।
লেখক: আবদুল্লাহ জোয়ারদার
সংবাদকর্মী
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২১ ঘণ্টা আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৫ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৫ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৫ দিন আগে