সরকারের হিসাবেই শ্রমিকের অবস্থা ওই বছর খারাপ হলো। এটি ঘটছে প্রতিবছর। প্রতিনিয়ত। যত বক্তব্য সরকার দিক না কেন, খুব কম বছরেই গড় মজুরি গড় মূল্যস্ফীতির থেকে বেশি বাড়ে। খুব কম, খুব কম উদাহরণ। ফলে মানুষের কষ্ট সব সময়ই বাড়ে। মানুষ কষ্টে থাকে।
ড. আর এম দেবনাথ
এই ভরা মৌসুমে একটা ফুলকপির দাম ৪০/৫০/৬০ টাকা। কিছুদিন আগে আরও বেশি ছিল বলে শুনেছি। প্রশ্ন—এতে কী অসুবিধা? যার টাকা আছে সে কিনে খাবে, যার নেই সে খাবে না। দাম-দর করতে করতে দোকানের পাশ দিয়ে চলে যাবে। দেখা যাচ্ছে, এখানে প্রশ্নটা দামের নয়, ৪০/৫০/৬০ টাকার নয়। প্রশ্নটা ক্রয়ক্ষমতার। এই আলোচনাটা কম। আমরা আলোচনা করি মূল্যস্ফীতির। দাম কত? মূল্যস্ফীতি কত? প্রতি মাসে সরকার ভালোমন্দ একটা হিসাব দেয়। কেউ বিশ্বাস করে, কেউ করে না। নতুন সরকার বসার পর পুরোনো পরিসংখ্যান কেউ বিশ্বাসই করে না। তবু তো হিসাব। হিসাব মূল্যস্ফীতির। বলা হয়েছে, মূল্যস্ফীতির হার ২০২৪ সালের নভেম্বরে ছিল ১১ দশমিক ৬৮ শতাংশ। ক্রমবর্ধমান। অক্টোবরে ছিল ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ। বাড়ুক, এতে কোনো অসুবিধা নেই। যদি ক্রয়ক্ষমতা পাল্লা দিয়ে বাড়ত। বড় মুশকিল, দীর্ঘদিন যাবৎ দেখছি সব সরকার মূল্যস্ফীতির হিসাব দেয়, কিন্তু ক্রয়ক্ষমতার হিসাব দেয় না। মূল্যস্ফীতির পাশাপাশি ক্রয়ক্ষমতার হিসাবটা দিলে আমরা বুঝতে পারতাম প্রকৃত অবস্থাটা কী। ফুলকপির দাম ৬০ টাকা, কোনো অসুবিধা নেই। আমার মাসিক ক্রয়ক্ষমতা সেভাবে বেড়েছে। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে প্রতি মাসে মূল্যস্ফীতি বাড়ে, বাড়ে তো বাড়েই। ক্রয়ক্ষমতা আর বাড়ে না। অর্থাৎ বাড়ে না দৈনিক মজুরি, বেতন, বাড়ে না দৈনিক আয়।
এটা কি এক দিনের ঘটনা? না। যে কারণে দেখা যাবে সব সরকারের আমলেই বিরোধী দলের দাবি: দ্রব্যমূল্য কমাতে হবে। বস্তুত আমরা ছাত্রজীবন থেকে এই দাবি করে আসছি বা শুনে আসছি। আর যতই দাবি করা হচ্ছে, ততই দাম বাড়ছে। ১৯৭২-৭৩ সালের নিরিখে বিচার করে কেউ যদি দেখে তাহলে বুঝতে পারবে মূল্যস্ফীতিটা কীভাবে বেড়েছে, আর মজুরি কত বেড়েছে। পলিশওয়ালা, রিকশাওয়ালা, বাদামওয়ালা, হকার—এই জাতীয় লোকের মজুরি কেমন বেড়েছে, গ্রামের মজুরদের বেতন, মজুরি কত বেড়েছে, বিপরীতে জিনিসের দাম কত বেড়েছে। আকাশপাতাল তফাত দেখা যাচ্ছে।
নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই বলি। এক হালি ছোট সবরি কলা (দেশি) আমাদের কিনতে হয় ৪০ টাকা দিয়ে। আমার পরিষ্কার মনে আছে, এই আকারের চারটি দেশি সবরি কলা ১৯৭৩-এর দিকে আমরা কিনতাম ২ আনা (১২ পয়সা) দিয়ে। শাকসবজির দামের সঙ্গে তুলনা করলে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হবে। ১০০-২০০-৩০০ গুণ দাম বেড়েছে কোনো কোনো জিনিসের। শুধু চালের দাম বাদে। এটি স্পর্শকাতর দ্রব্য। সরকার এর দাম কম রাখার চেষ্টা করে। কিন্তু অন্যান্য দ্রব্যের দাম কেমন? এক ভাগা পুঁটি মাছের দাম ছিল সত্তরের দশকে ১-২ টাকা। এখন এর দাম কত? এক কেজি পুঁটির (ছোট) দাম কত? কত গুণ দাম বেড়েছে? এখন প্রশ্ন, ক্রয়ক্ষমতা কি এভাবে বেড়েছে? প্রশ্নই ওঠে না। তবে কথা আছে। ক্রয়ক্ষমতাও বেড়েছে। সবার নয়, কারও কারও। কমেছে বেশি মানুষের। কারও ক্রয়ক্ষমতা অল্পস্বল্প বেড়েছে। কারও ক্রয়ক্ষমতাই নেই। কেউ বেকার। কেউ পরনির্ভরশীল। হিসাব হচ্ছে গড়ে। এখানে চোরাদের হিসাব আছে, আপনার-আমারও হিসাব আছে। এই তালেগোলে প্রকৃত অবস্থা বোঝা মুশকিল। যেমন একটা হিসাব আছে আমার সামনে। ২০২২-২৩ সালে শিল্পমজুরি গড়ে বেড়েছে ৭ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। এর বিপরীতে মূল্যস্ফীতি গড়ে বেড়েছে ৯ দশমিক ৯ শতাংশ। তাহলে কী দাঁড়াল? সরকারের হিসাবেই শ্রমিকের অবস্থা ওই বছর খারাপ হলো। এটি ঘটছে প্রতিবছর। প্রতিনিয়ত। যত বক্তব্য সরকার দিক না কেন, খুব কম বছরেই গড় মজুরি গড় মূল্যস্ফীতির থেকে বেশি বাড়ে। খুব কম, খুব কম উদাহরণ। ফলে মানুষের কষ্ট সব সময়ই বাড়ে। মানুষ কষ্টে থাকে। এই মানুষ একটু ভালো থাকে, এই মানুষ বিপদে পড়ে। প্রমাণ? এর প্রমাণ সাম্প্রতিক এক জরিপ। জরিপটি করেছে রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র্যাপিড) নামীয় একটি গবেষণা সংস্থা। তাদের মতে, গত দুই বছরে ৭৮ লাখ লোক দারিদ্র্যের মধ্যে নতুন করে পড়েছে। কারণ, মূল্যস্ফীতি। মানে, মূল্যস্ফীতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তাদের মজুরি বাড়েনি। গবেষকেরা দেখিয়েছেন মজুরদের ক্রয়ক্ষমতা দুই বছরে ৬ শতাংশ লোকসান হয়েছে। অর্থাৎ তাঁদের আয় কমেছে ৬ শতাংশ। আমাদের দারিদ্র্য আমরা হিসাব করি দুইভাবে—অতি দরিদ্র ও দরিদ্র। এই দুই বছরে অতি দরিদ্র্যের সংখ্যা বেড়েছে ২ দশমিক ৩০ শতাংশ। ছিল ৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ, হয়েছে এখন ৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ। আবার দরিদ্রের সংখ্যা বেড়েছে ১৮ দশমিক ২২ শতাংশ থেকে ২২ দশমিক ৯৫ শতাংশ। সবচেয়ে আশঙ্কার কথা, তাঁরা বলেছেন অন্য ক্ষেত্রে। তাঁদের গবেষণামতে, আরও ৬ শতাংশ লোক দারিদ্র্যের ঝুঁকিতে। অর্থাৎ তারাও দরিদ্র হবে।
উল্লেখিত গবেষণামতে, পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে। দারিদ্র্যসীমার ওপরে তুলতে বহু কষ্ট করতে হয় এবং তা ধরে রাখতে সংগ্রাম করতে হয়। দেখা যাচ্ছে, এই জায়গায় আমরা ব্যর্থ হচ্ছি। দৃশ্যত এর অনেক কারণ। অর্থনীতি স্বাভাবিক অবস্থায় নেই, ডলার-সংকট, আমদানি সংকট, রপ্তানি সমস্যা, রেমিট্যান্স, সুদ ও আসল পরিশোধ থেকে শুরু করে নানা সমস্যা আমাদের গিলে খাচ্ছে। তিন-চার-পাঁচ বছর যাবৎ আমরা বড় অশান্তির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। প্রথমে করোনা-১৯ আমাদের তছনছ করে দিয়ে গেছে। ব্যবসা-বাণিজ্য নষ্ট করেছে। সাংসারিক জীবন নষ্ট করেছে। হাজার হাজার লোক মারা গেছে। সাপ্লাই চেইন নষ্ট হয়েছে। শিল্পব্যবসা ঠিক রাখার জন্য কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে হয়েছে। এর ধকল সামলাতে না-সামলাতেই এসে যায় ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। আমরা একদম খাদে পড়ে যাই। জিনিসপত্রের দাম, গম-চাল-তেলের দাম হুহু করে বেড়ে যায়। ডলারের দাম বাড়ে ৩৫-৪০ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি ওঠে আকাশে। সরকারি খরচ বাড়ে, দেনা বাড়ে, সুদ বাড়ে। এর মধ্যেই ঘটে যায় সরকার পরিবর্তন। ১৫ বছরের শাসনের পতন ঘটে। এখন নতুন সরকার। অনির্বাচিত সরকার। সবার নজর নির্বাচনের দিকে। বিনিয়োগ নেই। এবার হবে সর্বনিম্ন জিডিপি গ্রোথ। ভীষণ সংকটে আমরা। মানুষ পড়ে যাচ্ছে দারিদ্র্যসীমার নিচে। সব দিকেই জরুরি অবস্থা। এরই মধ্যে সরকার চারদিক সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে।
লেখক: সাবেক শিক্ষক, ঢাবি; অর্থনীতি বিশ্লেষক
এই ভরা মৌসুমে একটা ফুলকপির দাম ৪০/৫০/৬০ টাকা। কিছুদিন আগে আরও বেশি ছিল বলে শুনেছি। প্রশ্ন—এতে কী অসুবিধা? যার টাকা আছে সে কিনে খাবে, যার নেই সে খাবে না। দাম-দর করতে করতে দোকানের পাশ দিয়ে চলে যাবে। দেখা যাচ্ছে, এখানে প্রশ্নটা দামের নয়, ৪০/৫০/৬০ টাকার নয়। প্রশ্নটা ক্রয়ক্ষমতার। এই আলোচনাটা কম। আমরা আলোচনা করি মূল্যস্ফীতির। দাম কত? মূল্যস্ফীতি কত? প্রতি মাসে সরকার ভালোমন্দ একটা হিসাব দেয়। কেউ বিশ্বাস করে, কেউ করে না। নতুন সরকার বসার পর পুরোনো পরিসংখ্যান কেউ বিশ্বাসই করে না। তবু তো হিসাব। হিসাব মূল্যস্ফীতির। বলা হয়েছে, মূল্যস্ফীতির হার ২০২৪ সালের নভেম্বরে ছিল ১১ দশমিক ৬৮ শতাংশ। ক্রমবর্ধমান। অক্টোবরে ছিল ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ। বাড়ুক, এতে কোনো অসুবিধা নেই। যদি ক্রয়ক্ষমতা পাল্লা দিয়ে বাড়ত। বড় মুশকিল, দীর্ঘদিন যাবৎ দেখছি সব সরকার মূল্যস্ফীতির হিসাব দেয়, কিন্তু ক্রয়ক্ষমতার হিসাব দেয় না। মূল্যস্ফীতির পাশাপাশি ক্রয়ক্ষমতার হিসাবটা দিলে আমরা বুঝতে পারতাম প্রকৃত অবস্থাটা কী। ফুলকপির দাম ৬০ টাকা, কোনো অসুবিধা নেই। আমার মাসিক ক্রয়ক্ষমতা সেভাবে বেড়েছে। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে প্রতি মাসে মূল্যস্ফীতি বাড়ে, বাড়ে তো বাড়েই। ক্রয়ক্ষমতা আর বাড়ে না। অর্থাৎ বাড়ে না দৈনিক মজুরি, বেতন, বাড়ে না দৈনিক আয়।
এটা কি এক দিনের ঘটনা? না। যে কারণে দেখা যাবে সব সরকারের আমলেই বিরোধী দলের দাবি: দ্রব্যমূল্য কমাতে হবে। বস্তুত আমরা ছাত্রজীবন থেকে এই দাবি করে আসছি বা শুনে আসছি। আর যতই দাবি করা হচ্ছে, ততই দাম বাড়ছে। ১৯৭২-৭৩ সালের নিরিখে বিচার করে কেউ যদি দেখে তাহলে বুঝতে পারবে মূল্যস্ফীতিটা কীভাবে বেড়েছে, আর মজুরি কত বেড়েছে। পলিশওয়ালা, রিকশাওয়ালা, বাদামওয়ালা, হকার—এই জাতীয় লোকের মজুরি কেমন বেড়েছে, গ্রামের মজুরদের বেতন, মজুরি কত বেড়েছে, বিপরীতে জিনিসের দাম কত বেড়েছে। আকাশপাতাল তফাত দেখা যাচ্ছে।
নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই বলি। এক হালি ছোট সবরি কলা (দেশি) আমাদের কিনতে হয় ৪০ টাকা দিয়ে। আমার পরিষ্কার মনে আছে, এই আকারের চারটি দেশি সবরি কলা ১৯৭৩-এর দিকে আমরা কিনতাম ২ আনা (১২ পয়সা) দিয়ে। শাকসবজির দামের সঙ্গে তুলনা করলে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হবে। ১০০-২০০-৩০০ গুণ দাম বেড়েছে কোনো কোনো জিনিসের। শুধু চালের দাম বাদে। এটি স্পর্শকাতর দ্রব্য। সরকার এর দাম কম রাখার চেষ্টা করে। কিন্তু অন্যান্য দ্রব্যের দাম কেমন? এক ভাগা পুঁটি মাছের দাম ছিল সত্তরের দশকে ১-২ টাকা। এখন এর দাম কত? এক কেজি পুঁটির (ছোট) দাম কত? কত গুণ দাম বেড়েছে? এখন প্রশ্ন, ক্রয়ক্ষমতা কি এভাবে বেড়েছে? প্রশ্নই ওঠে না। তবে কথা আছে। ক্রয়ক্ষমতাও বেড়েছে। সবার নয়, কারও কারও। কমেছে বেশি মানুষের। কারও ক্রয়ক্ষমতা অল্পস্বল্প বেড়েছে। কারও ক্রয়ক্ষমতাই নেই। কেউ বেকার। কেউ পরনির্ভরশীল। হিসাব হচ্ছে গড়ে। এখানে চোরাদের হিসাব আছে, আপনার-আমারও হিসাব আছে। এই তালেগোলে প্রকৃত অবস্থা বোঝা মুশকিল। যেমন একটা হিসাব আছে আমার সামনে। ২০২২-২৩ সালে শিল্পমজুরি গড়ে বেড়েছে ৭ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। এর বিপরীতে মূল্যস্ফীতি গড়ে বেড়েছে ৯ দশমিক ৯ শতাংশ। তাহলে কী দাঁড়াল? সরকারের হিসাবেই শ্রমিকের অবস্থা ওই বছর খারাপ হলো। এটি ঘটছে প্রতিবছর। প্রতিনিয়ত। যত বক্তব্য সরকার দিক না কেন, খুব কম বছরেই গড় মজুরি গড় মূল্যস্ফীতির থেকে বেশি বাড়ে। খুব কম, খুব কম উদাহরণ। ফলে মানুষের কষ্ট সব সময়ই বাড়ে। মানুষ কষ্টে থাকে। এই মানুষ একটু ভালো থাকে, এই মানুষ বিপদে পড়ে। প্রমাণ? এর প্রমাণ সাম্প্রতিক এক জরিপ। জরিপটি করেছে রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র্যাপিড) নামীয় একটি গবেষণা সংস্থা। তাদের মতে, গত দুই বছরে ৭৮ লাখ লোক দারিদ্র্যের মধ্যে নতুন করে পড়েছে। কারণ, মূল্যস্ফীতি। মানে, মূল্যস্ফীতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তাদের মজুরি বাড়েনি। গবেষকেরা দেখিয়েছেন মজুরদের ক্রয়ক্ষমতা দুই বছরে ৬ শতাংশ লোকসান হয়েছে। অর্থাৎ তাঁদের আয় কমেছে ৬ শতাংশ। আমাদের দারিদ্র্য আমরা হিসাব করি দুইভাবে—অতি দরিদ্র ও দরিদ্র। এই দুই বছরে অতি দরিদ্র্যের সংখ্যা বেড়েছে ২ দশমিক ৩০ শতাংশ। ছিল ৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ, হয়েছে এখন ৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ। আবার দরিদ্রের সংখ্যা বেড়েছে ১৮ দশমিক ২২ শতাংশ থেকে ২২ দশমিক ৯৫ শতাংশ। সবচেয়ে আশঙ্কার কথা, তাঁরা বলেছেন অন্য ক্ষেত্রে। তাঁদের গবেষণামতে, আরও ৬ শতাংশ লোক দারিদ্র্যের ঝুঁকিতে। অর্থাৎ তারাও দরিদ্র হবে।
উল্লেখিত গবেষণামতে, পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে। দারিদ্র্যসীমার ওপরে তুলতে বহু কষ্ট করতে হয় এবং তা ধরে রাখতে সংগ্রাম করতে হয়। দেখা যাচ্ছে, এই জায়গায় আমরা ব্যর্থ হচ্ছি। দৃশ্যত এর অনেক কারণ। অর্থনীতি স্বাভাবিক অবস্থায় নেই, ডলার-সংকট, আমদানি সংকট, রপ্তানি সমস্যা, রেমিট্যান্স, সুদ ও আসল পরিশোধ থেকে শুরু করে নানা সমস্যা আমাদের গিলে খাচ্ছে। তিন-চার-পাঁচ বছর যাবৎ আমরা বড় অশান্তির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। প্রথমে করোনা-১৯ আমাদের তছনছ করে দিয়ে গেছে। ব্যবসা-বাণিজ্য নষ্ট করেছে। সাংসারিক জীবন নষ্ট করেছে। হাজার হাজার লোক মারা গেছে। সাপ্লাই চেইন নষ্ট হয়েছে। শিল্পব্যবসা ঠিক রাখার জন্য কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে হয়েছে। এর ধকল সামলাতে না-সামলাতেই এসে যায় ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। আমরা একদম খাদে পড়ে যাই। জিনিসপত্রের দাম, গম-চাল-তেলের দাম হুহু করে বেড়ে যায়। ডলারের দাম বাড়ে ৩৫-৪০ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি ওঠে আকাশে। সরকারি খরচ বাড়ে, দেনা বাড়ে, সুদ বাড়ে। এর মধ্যেই ঘটে যায় সরকার পরিবর্তন। ১৫ বছরের শাসনের পতন ঘটে। এখন নতুন সরকার। অনির্বাচিত সরকার। সবার নজর নির্বাচনের দিকে। বিনিয়োগ নেই। এবার হবে সর্বনিম্ন জিডিপি গ্রোথ। ভীষণ সংকটে আমরা। মানুষ পড়ে যাচ্ছে দারিদ্র্যসীমার নিচে। সব দিকেই জরুরি অবস্থা। এরই মধ্যে সরকার চারদিক সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে।
লেখক: সাবেক শিক্ষক, ঢাবি; অর্থনীতি বিশ্লেষক
আমার এক বন্ধুর স্ত্রী অকস্মাৎ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। স্ত্রীটি জাপানের, তাঁর নাম কাজুকো। আমার বন্ধু জাপানে লেখাপড়া করতে যান এবং সেখানেই তাঁদের পরিচয়, বন্ধুত্ব ও সম্পর্ক তৈরি হয়। পরিচয়ের কারণ, আমাদের দেশে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ত্রাণ কার্যক্রমে তরুণী কাজুকো অংশ নিয়েছিলেন এবং পরবর্তীকালে মুক্তি
২১ মিনিট আগেবাংলা ভাষায় অতিপরিচিত একটি শব্দবন্ধ হলো ‘জগাখিচুড়ি’। পরিস্থিতির প্রসঙ্গভেদে আমরা জগাখিচুড়ি শব্দটি ব্যবহার করি। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, আমাদের দৈনন্দিন কথ্যভাষায় জগাখিচুড়ি শব্দটি আহার্য হিসেবে ব্যবহৃত না হয়ে তালগোল পাকানোর প্রতিশব্দ হিসেবে পরিণত হয়েছে। সচরাচর বৃষ্টির দিন ভুনাখিচুড়ি খেয়ে তৃপ্তির
২৫ মিনিট আগেআমরা আগেই দেখেছি, বিস্ফোরণের সংবাদগুলো যেন পত্রিকায় অগুরুত্বপূর্ণভাবে প্রকাশ করা হয়, তার নির্দেশ দিয়েছিল পাকিস্তানের সামরিক সরকার। কিন্তু পত্রিকায় প্রকাশিত খবরগুলো থেকেই জানা যাচ্ছিল, ঢাকা শহরে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন সময় বোমা বিস্ফোরিত হচ্ছে।
৩৯ মিনিট আগেতত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরে এসেছে। ১৩ বছর আগে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী এনে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্ত করা হয়েছিল। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার যদিও বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরলে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করা সম্ভব হবে না, কিন
১ ঘণ্টা আগে