রেভারেন্ড এডওয়ার্ড আইয়ুব
যিশুর পরিত্রাণ আনার পরিকল্পনা সৃষ্টির আগে থেকেই চলে আসছে। সে জন্য ঈশ্বর চাইলেই যেকোনো দূর অতীতে পরিত্রাণ সম্পন্ন করতে পারতেন। ঈশ্বর চাইলে শয়তানকে তার বিদ্রোহের সঙ্গে সঙ্গে বন্দী করতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি, যেন সব দিক থেকে ইতিহাসের সঠিক সময়ে তিনি কাজ করতে পারেন।
পাপ থেকে পরিত্রাণ এক মহৎ বিষয়। পাপের শাস্তি গুরুতর ও চিরকালীন বলে এর থেকে মুক্তি মহৎ। গভীরভাবে পাপের উপলব্ধি সেই মুক্তিকে বিরাট করে তোলে। অনেকে পাপ সম্পর্কে তেমন চিন্তা করে না। পাপ করতে করতে পাপ-অভ্যাস হয়ে গেলে পাপবোধ আর থাকে না। বাইবেল পাপ সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা দেয় এবং সঙ্গে এ থেকে নিষ্কৃতির পথও দেখায়। সে জন্য পরিত্রাণ ও যিশুর আগমন বাইবেলের অনুসারীদের কাছে বেশ আনন্দের।
আরেকটি কারণে এই পরিত্রাণ মহৎ। কেননা, যিশুখ্রিষ্ট এই পরিত্রাণ রচনা ও সিদ্ধ করেছেন (ইব্রিয় ২: ১০)। এটি এমন পরিত্রাণ, যা শুধু ঘোষিত হয়নি বা দাবি করা হয়নি বা ভবিষ্যতে সংঘটিত হবে–এমনও বলা হয়নি। কিন্তু এর রচনা থেকে সিদ্ধতা পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়েছে। এই পরিত্রাণ যিশুর আগমন ও নিজের যাতনা দ্বারা সিদ্ধ করেছেন, যেন তাতে বিশ্বাসীরা পাপের শাস্তি থেকে রক্ষা পান।
এই পরিত্রাণ অর্থ দিয়ে এবং নিজের চেষ্টায় লাভ করা যায় না। এই পরিত্রাণ এক অনন্য ও অতুলনীয় উপহার, যা শুধু যিশুর ধার্মিকতা দিয়ে সম্ভব করা হয়েছে। ইব্রিয় ১:৮ পদে বলা হয়েছে, ‘আর সারল্যের রাজদণ্ডই তাঁর রাজ্যের শাসনদণ্ড।’ এখানে ‘সারল্য’ মানে ধার্মিকতা। এই পরিত্রাণ প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত শুধু যিশুর ধার্মিকতা দিয়ে প্রদেয় (রোমীয় ১: ১৭)। পৃথিবীর যেসব মানুষ পরিত্রাণের জন্য চেষ্টা করছে, তাদের চিন্তামতো এ পরিত্রাণ আসে না।
উপহার সবাই ভালোবাসে। কিন্তু পরিত্রাণকে অনেকে উপহার হিসেবে গ্রহণ করতে পারে না। যারা যিশুর ওপরে নির্ভর করে ও বিশ্বাস করে, তাদের জন্য শুধু বিশ্বাস দিয়ে পরিত্রাণ গ্রহণ সহজ। কিন্তু যিনি পরিত্রাণ সম্পাদন করেছেন, তাঁর জন্য সহজ ছিল না। মনুষ্য-পুত্রকে অনেক দুঃখ-কষ্ট সহ্য করে পরিত্রাণকে সফল করতে হয়েছে। এমনকি স্বর্গ থেকে যিশুর পৃথিবীতে আগমনও তাঁর এক ত্যাগ। এ পৃথিবীতে সব মানুষ যেখানে পাপী, সেখানে ঈশ্বরের পবিত্র পুত্র যিশুর আসা ও বাস করা বড় ত্যাগ। জগতের সব মানুষ ও তাদের পাপ একদিকে, আরেকদিকে যিশুর নিষ্পাপত্ব। তবু যিশুর নিষ্পাপত্ব জগতের সব মানুষের পাপের বোঝার চেয়ে ভারী। একজন মানুষের নিষ্পাপত্ব সব সৃষ্টির পাপের বোঝা বহনে যথেষ্ট। পবিত্রতার মূল্য পাপের দায় থেকে অনেক বেশি। পরিত্রাণ এত মহৎ কেন?
প্রথমত, এই মহৎ পরিত্রাণ প্রথমে প্রভুর দ্বারা ঘোষিত [কথিত] হয়েছে–ইব্রিয় ২:৩
পরিত্রাণের সুসমাচার পাপ করার পরপরই এদন বাগানেই ঘোষণা করা হয়েছে, যখন ঈশ্বর শয়তানকে বলেছিলেন হবার বংশ তোমার বংশের মস্তক চূর্ণ করবেন। আদমের কাছে ঈশ্বর শাস্তি হিসেবে মৃত্যুর কথা ঘোষণা করেন আর শয়তানের কাছে যিশুর আগমন ও বিজয় ঘোষণা করেন। তখনই শুরু হয়েছে ঈশ্বরের পরিত্রাণের ইতিহাস।
যিশুর আগমনের জন্য পৃথিবীর প্রেক্ষাপট সঠিকভাবে প্রস্তুত হওয়া দরকার ছিল। পৌত্তলিক রোমান সাম্রাজ্য থেকে একত্ববাদী ও ঈশ্বরের পরিকল্পনায় অসফল ইহুদি জাতিকেও প্রস্তুতি নিতে হয়েছিল। যিশু এমন সময়ে এলেন যখন ইহুদিরা খ্রিষ্টের আগমনের জন্য তীব্র আকাঙ্ক্ষা নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন, যদিও খ্রিষ্ট সম্পর্কে তাদের ধারণা অস্বচ্ছ ছিল।
আমরা বাইবেল থেকে জানি, যিশুর এ পরিত্রাণ আনার পরিকল্পনা সৃষ্টির আগে থেকেই চলে আসছে। সে জন্য ঈশ্বর চাইলেই যেকোনো দূর অতীতে পরিত্রাণ সম্পন্ন করতে পারতেন। ঈশ্বর চাইলে শয়তানকে তার বিদ্রোহের সঙ্গে সঙ্গে বন্দী করতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি, যেন সবদিক থেকে ইতিহাসের সঠিক সময়ে তিনি কাজ করতে পারেন। আব্রাহামকে বলেছিলেন, কত বছর ইহুদিরা মিসরে থাকবে, মোশিকে বলেছেন, কখন তিনি তাদের মিসর থেকে বের করে আনবেন, সলোমনের পাপের শাস্তি হিসেবে কত বছর ইহুদি জাতি ব্যাবিলনে বন্দী অবস্থায় থাকবে, তা-ও তিনি প্রকাশ করেছিলেন। ঈশ্বর হিসাব করে কাজ করেন। ইতিহাস ঘটার আগেই তিনি ইতিহাস রচনা করেন এবং সেই অনুসারে ইতিহাস ঘটান।
দ্বিতীয়ত, এ মহৎ পরিত্রাণ যারা শুনেছিল তাদের দ্বারা আমাদের কাছে দৃঢ়িকৃত হয়েছে–ইব্রিয় ২: ৩
কোনো কোনো মানুষ এই পরিত্রাণ গ্রহণ করে না। কেননা, সে ইতিহাসকে বিশ্বাস করতে পারছে না। পরিত্রাণের ইতিহাস এক অনন্য ইতিহাস। কেননা, যাঁরা এর পক্ষে সাক্ষ্য দিয়েছেন, তাঁরা একই বার্তা দিয়েছেন। এটি এমন স্পষ্ট যে অব্রাহাম যিশুখ্রিষ্টের প্রায় দুই হাজার বছর আগে দেখে আনন্দ করেছেন। দায়ুদ প্রায় এক হাজার বছর আগে ভাববাণী করেছেন। যিশাইয় প্রায় ৭০০ বছর আগে দেখেছেন ও ঘোষণা দিয়েছেন। যোহন বাপ্তাইজক যিশু থেকে ছয় মাসের বড়। আর তিনি এমন ঘোষণাকারী, যিনি যিশুর একেবারে সমসাময়িক।
যাঁরা সাক্ষ্য দিয়েছেন, তা নিজের থেকে বলেননি। যাঁর সম্পর্কে তাঁরা বলেছেন, তিনিও স্বীকার করেছেন যে তাঁর আগেকার ভাববাদীরা তাঁর বিষয়ে বলেছেন। তবে পরিত্রাণ সম্পাদনে সব ধারাবাহিক উপাদান একসঙ্গে করলে পূর্ণাঙ্গ চিত্র দেয়। যিশু সেই পূর্ণাঙ্গ চিত্র। জগতের অনেক মানুষ পরিত্রাণ বুঝতে পারছে না; কেননা, শুরু থেকে চলে আসা এই ধারাবাহিকতা তারা বুঝতে পারছে না। কোনো একটি বিশেষ অংশ দেখলে শুধু আংশিক দেখা হবে এবং শেষটুকু বোঝা কঠিন হবে, যদি না ঈশ্বরের পবিত্র আত্মা বুঝতে সাহায্য করেন।
ঈশ্বরের বার্তা মানুষের কাছে নিয়ে আসার জন্য ভাববাদীরা কাজ করেছেন। স্বর্গদূতেরাও কাজ করেছেন। বাইবেলে আমরা দেখি, দূতদের সব কথাই সফল হয়েছে। তাদের কথা ফলেনি, এমন কোনো প্রমাণ নেই। তাই তাদের কথা অলঙ্ঘনীয়। আমাদের রাজা যিশুর আগমন একেবারে রাজা হিসেবে–যেখানে দূতেরা কাজ করেছেন ও ভাববাদীরা কাজ করেছেন। তাঁর আগমনবার্তা ঘোষণা শুধু নয়, কিন্তু ভাববাদীরা তাঁর পথও প্রস্তুত করেছেন।
তৃতীয়ত, এই মহৎ পরিত্রাণ সম্পর্কে ঈশ্বর নানা চিহ্ন, অদ্ভুত লক্ষণ ও বহুরূপ পরাক্রম-কার্য দ্বারা এবং পবিত্র আত্মার বর বিতরণ দ্বারা সাক্ষ্য দিয়েছেন–ইব্রিয় ২: ৪
মানুষ মনে করে, সে বাস্তবতামুখী। বিজ্ঞান মানুষকে কোনো কিছু বিশ্বাস করাতে প্রমাণ করে দেয়। তাই বিজ্ঞানের হাওয়ায় মানুষ আত্মিক বিষয়গুলো বোঝার জন্যও প্রমাণ খোঁজ করে বেড়ায়। অথচ বিজ্ঞান দিয়ে যেমন পাপ বোঝা যাবে না, পরিমাপ করা যাবে না, তেমনি পরিত্রাণ প্রমাণ করা যাবে না।
যিশুর দাবির প্রত্যাখ্যানকারীও স্বীকার করেছে যে, ঈশ্বর ভিন্ন এমন কাজ কে করতে পারে? কিন্তু ইহুদিরা যিশুকে আশানুরূপভাবে গ্রহণ করেনি। কারণ তারা কাজ দেখতে চেয়েছে, কিন্তু কাজ দিয়ে তিনি যে বার্তা দিতে চেয়েছেন, তাতে তাদের দৃষ্টি যায়নি। যারা বাইরের দিক থেকে কোনো কিছু দেখে আবেগাপ্লুত হয়, তারা ভেতরকার বার্তা হারানোর ভয়ে থাকে। যিশু একবার বলেছেন, ‘তোমরা আমার কথা বিশ্বাস না করলেও আমার কাজগুলোকে বিশ্বাস করো।’
ঈশ্বর যা ঘোষণা করেছেন, ‘অতএব এমন বৃহৎ সাক্ষিমেঘে বেষ্টিত হওয়াতে আইস, আমরাও সমস্ত বোঝা ও সহজ বাধাজনক পাপ ফেলে দিয়ে ধৈর্যপূর্বক আমাদের সম্মুখস্থ ধাবনক্ষেত্রে দৌড়াই; বিশ্বাসের আদিকর্তা ও সিদ্ধিকর্তা যিশুর প্রতি দৃষ্টি রাখি; তিনিই আপনার সম্মুখস্থ আনন্দের নিমিত্ত ক্রুশ সহ্য করলেন, অপমান তুচ্ছ করলেন এবং ঈশ্বরের সিংহাসনের দক্ষিণে উপবিষ্ট হয়েছেন। তাঁকেই আলোচনা কর, যিনি আপনার বিরুদ্ধে পাপীদের এমন প্রতিবাদ সহ্য করেছিলেন, যেন প্রাণের ক্লান্তিতে অবসন্ন না হও।’ [ইব্রিয় ১২: ১-৩ ]।
রেভারেন্ড এডওয়ার্ড আইয়ুব, পালক ও শিক্ষক, গাজীপুর সিটি প্রেসবিটেরিয়ান চার্চ
যিশুর পরিত্রাণ আনার পরিকল্পনা সৃষ্টির আগে থেকেই চলে আসছে। সে জন্য ঈশ্বর চাইলেই যেকোনো দূর অতীতে পরিত্রাণ সম্পন্ন করতে পারতেন। ঈশ্বর চাইলে শয়তানকে তার বিদ্রোহের সঙ্গে সঙ্গে বন্দী করতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি, যেন সব দিক থেকে ইতিহাসের সঠিক সময়ে তিনি কাজ করতে পারেন।
পাপ থেকে পরিত্রাণ এক মহৎ বিষয়। পাপের শাস্তি গুরুতর ও চিরকালীন বলে এর থেকে মুক্তি মহৎ। গভীরভাবে পাপের উপলব্ধি সেই মুক্তিকে বিরাট করে তোলে। অনেকে পাপ সম্পর্কে তেমন চিন্তা করে না। পাপ করতে করতে পাপ-অভ্যাস হয়ে গেলে পাপবোধ আর থাকে না। বাইবেল পাপ সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা দেয় এবং সঙ্গে এ থেকে নিষ্কৃতির পথও দেখায়। সে জন্য পরিত্রাণ ও যিশুর আগমন বাইবেলের অনুসারীদের কাছে বেশ আনন্দের।
আরেকটি কারণে এই পরিত্রাণ মহৎ। কেননা, যিশুখ্রিষ্ট এই পরিত্রাণ রচনা ও সিদ্ধ করেছেন (ইব্রিয় ২: ১০)। এটি এমন পরিত্রাণ, যা শুধু ঘোষিত হয়নি বা দাবি করা হয়নি বা ভবিষ্যতে সংঘটিত হবে–এমনও বলা হয়নি। কিন্তু এর রচনা থেকে সিদ্ধতা পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়েছে। এই পরিত্রাণ যিশুর আগমন ও নিজের যাতনা দ্বারা সিদ্ধ করেছেন, যেন তাতে বিশ্বাসীরা পাপের শাস্তি থেকে রক্ষা পান।
এই পরিত্রাণ অর্থ দিয়ে এবং নিজের চেষ্টায় লাভ করা যায় না। এই পরিত্রাণ এক অনন্য ও অতুলনীয় উপহার, যা শুধু যিশুর ধার্মিকতা দিয়ে সম্ভব করা হয়েছে। ইব্রিয় ১:৮ পদে বলা হয়েছে, ‘আর সারল্যের রাজদণ্ডই তাঁর রাজ্যের শাসনদণ্ড।’ এখানে ‘সারল্য’ মানে ধার্মিকতা। এই পরিত্রাণ প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত শুধু যিশুর ধার্মিকতা দিয়ে প্রদেয় (রোমীয় ১: ১৭)। পৃথিবীর যেসব মানুষ পরিত্রাণের জন্য চেষ্টা করছে, তাদের চিন্তামতো এ পরিত্রাণ আসে না।
উপহার সবাই ভালোবাসে। কিন্তু পরিত্রাণকে অনেকে উপহার হিসেবে গ্রহণ করতে পারে না। যারা যিশুর ওপরে নির্ভর করে ও বিশ্বাস করে, তাদের জন্য শুধু বিশ্বাস দিয়ে পরিত্রাণ গ্রহণ সহজ। কিন্তু যিনি পরিত্রাণ সম্পাদন করেছেন, তাঁর জন্য সহজ ছিল না। মনুষ্য-পুত্রকে অনেক দুঃখ-কষ্ট সহ্য করে পরিত্রাণকে সফল করতে হয়েছে। এমনকি স্বর্গ থেকে যিশুর পৃথিবীতে আগমনও তাঁর এক ত্যাগ। এ পৃথিবীতে সব মানুষ যেখানে পাপী, সেখানে ঈশ্বরের পবিত্র পুত্র যিশুর আসা ও বাস করা বড় ত্যাগ। জগতের সব মানুষ ও তাদের পাপ একদিকে, আরেকদিকে যিশুর নিষ্পাপত্ব। তবু যিশুর নিষ্পাপত্ব জগতের সব মানুষের পাপের বোঝার চেয়ে ভারী। একজন মানুষের নিষ্পাপত্ব সব সৃষ্টির পাপের বোঝা বহনে যথেষ্ট। পবিত্রতার মূল্য পাপের দায় থেকে অনেক বেশি। পরিত্রাণ এত মহৎ কেন?
প্রথমত, এই মহৎ পরিত্রাণ প্রথমে প্রভুর দ্বারা ঘোষিত [কথিত] হয়েছে–ইব্রিয় ২:৩
পরিত্রাণের সুসমাচার পাপ করার পরপরই এদন বাগানেই ঘোষণা করা হয়েছে, যখন ঈশ্বর শয়তানকে বলেছিলেন হবার বংশ তোমার বংশের মস্তক চূর্ণ করবেন। আদমের কাছে ঈশ্বর শাস্তি হিসেবে মৃত্যুর কথা ঘোষণা করেন আর শয়তানের কাছে যিশুর আগমন ও বিজয় ঘোষণা করেন। তখনই শুরু হয়েছে ঈশ্বরের পরিত্রাণের ইতিহাস।
যিশুর আগমনের জন্য পৃথিবীর প্রেক্ষাপট সঠিকভাবে প্রস্তুত হওয়া দরকার ছিল। পৌত্তলিক রোমান সাম্রাজ্য থেকে একত্ববাদী ও ঈশ্বরের পরিকল্পনায় অসফল ইহুদি জাতিকেও প্রস্তুতি নিতে হয়েছিল। যিশু এমন সময়ে এলেন যখন ইহুদিরা খ্রিষ্টের আগমনের জন্য তীব্র আকাঙ্ক্ষা নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন, যদিও খ্রিষ্ট সম্পর্কে তাদের ধারণা অস্বচ্ছ ছিল।
আমরা বাইবেল থেকে জানি, যিশুর এ পরিত্রাণ আনার পরিকল্পনা সৃষ্টির আগে থেকেই চলে আসছে। সে জন্য ঈশ্বর চাইলেই যেকোনো দূর অতীতে পরিত্রাণ সম্পন্ন করতে পারতেন। ঈশ্বর চাইলে শয়তানকে তার বিদ্রোহের সঙ্গে সঙ্গে বন্দী করতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি, যেন সবদিক থেকে ইতিহাসের সঠিক সময়ে তিনি কাজ করতে পারেন। আব্রাহামকে বলেছিলেন, কত বছর ইহুদিরা মিসরে থাকবে, মোশিকে বলেছেন, কখন তিনি তাদের মিসর থেকে বের করে আনবেন, সলোমনের পাপের শাস্তি হিসেবে কত বছর ইহুদি জাতি ব্যাবিলনে বন্দী অবস্থায় থাকবে, তা-ও তিনি প্রকাশ করেছিলেন। ঈশ্বর হিসাব করে কাজ করেন। ইতিহাস ঘটার আগেই তিনি ইতিহাস রচনা করেন এবং সেই অনুসারে ইতিহাস ঘটান।
দ্বিতীয়ত, এ মহৎ পরিত্রাণ যারা শুনেছিল তাদের দ্বারা আমাদের কাছে দৃঢ়িকৃত হয়েছে–ইব্রিয় ২: ৩
কোনো কোনো মানুষ এই পরিত্রাণ গ্রহণ করে না। কেননা, সে ইতিহাসকে বিশ্বাস করতে পারছে না। পরিত্রাণের ইতিহাস এক অনন্য ইতিহাস। কেননা, যাঁরা এর পক্ষে সাক্ষ্য দিয়েছেন, তাঁরা একই বার্তা দিয়েছেন। এটি এমন স্পষ্ট যে অব্রাহাম যিশুখ্রিষ্টের প্রায় দুই হাজার বছর আগে দেখে আনন্দ করেছেন। দায়ুদ প্রায় এক হাজার বছর আগে ভাববাণী করেছেন। যিশাইয় প্রায় ৭০০ বছর আগে দেখেছেন ও ঘোষণা দিয়েছেন। যোহন বাপ্তাইজক যিশু থেকে ছয় মাসের বড়। আর তিনি এমন ঘোষণাকারী, যিনি যিশুর একেবারে সমসাময়িক।
যাঁরা সাক্ষ্য দিয়েছেন, তা নিজের থেকে বলেননি। যাঁর সম্পর্কে তাঁরা বলেছেন, তিনিও স্বীকার করেছেন যে তাঁর আগেকার ভাববাদীরা তাঁর বিষয়ে বলেছেন। তবে পরিত্রাণ সম্পাদনে সব ধারাবাহিক উপাদান একসঙ্গে করলে পূর্ণাঙ্গ চিত্র দেয়। যিশু সেই পূর্ণাঙ্গ চিত্র। জগতের অনেক মানুষ পরিত্রাণ বুঝতে পারছে না; কেননা, শুরু থেকে চলে আসা এই ধারাবাহিকতা তারা বুঝতে পারছে না। কোনো একটি বিশেষ অংশ দেখলে শুধু আংশিক দেখা হবে এবং শেষটুকু বোঝা কঠিন হবে, যদি না ঈশ্বরের পবিত্র আত্মা বুঝতে সাহায্য করেন।
ঈশ্বরের বার্তা মানুষের কাছে নিয়ে আসার জন্য ভাববাদীরা কাজ করেছেন। স্বর্গদূতেরাও কাজ করেছেন। বাইবেলে আমরা দেখি, দূতদের সব কথাই সফল হয়েছে। তাদের কথা ফলেনি, এমন কোনো প্রমাণ নেই। তাই তাদের কথা অলঙ্ঘনীয়। আমাদের রাজা যিশুর আগমন একেবারে রাজা হিসেবে–যেখানে দূতেরা কাজ করেছেন ও ভাববাদীরা কাজ করেছেন। তাঁর আগমনবার্তা ঘোষণা শুধু নয়, কিন্তু ভাববাদীরা তাঁর পথও প্রস্তুত করেছেন।
তৃতীয়ত, এই মহৎ পরিত্রাণ সম্পর্কে ঈশ্বর নানা চিহ্ন, অদ্ভুত লক্ষণ ও বহুরূপ পরাক্রম-কার্য দ্বারা এবং পবিত্র আত্মার বর বিতরণ দ্বারা সাক্ষ্য দিয়েছেন–ইব্রিয় ২: ৪
মানুষ মনে করে, সে বাস্তবতামুখী। বিজ্ঞান মানুষকে কোনো কিছু বিশ্বাস করাতে প্রমাণ করে দেয়। তাই বিজ্ঞানের হাওয়ায় মানুষ আত্মিক বিষয়গুলো বোঝার জন্যও প্রমাণ খোঁজ করে বেড়ায়। অথচ বিজ্ঞান দিয়ে যেমন পাপ বোঝা যাবে না, পরিমাপ করা যাবে না, তেমনি পরিত্রাণ প্রমাণ করা যাবে না।
যিশুর দাবির প্রত্যাখ্যানকারীও স্বীকার করেছে যে, ঈশ্বর ভিন্ন এমন কাজ কে করতে পারে? কিন্তু ইহুদিরা যিশুকে আশানুরূপভাবে গ্রহণ করেনি। কারণ তারা কাজ দেখতে চেয়েছে, কিন্তু কাজ দিয়ে তিনি যে বার্তা দিতে চেয়েছেন, তাতে তাদের দৃষ্টি যায়নি। যারা বাইরের দিক থেকে কোনো কিছু দেখে আবেগাপ্লুত হয়, তারা ভেতরকার বার্তা হারানোর ভয়ে থাকে। যিশু একবার বলেছেন, ‘তোমরা আমার কথা বিশ্বাস না করলেও আমার কাজগুলোকে বিশ্বাস করো।’
ঈশ্বর যা ঘোষণা করেছেন, ‘অতএব এমন বৃহৎ সাক্ষিমেঘে বেষ্টিত হওয়াতে আইস, আমরাও সমস্ত বোঝা ও সহজ বাধাজনক পাপ ফেলে দিয়ে ধৈর্যপূর্বক আমাদের সম্মুখস্থ ধাবনক্ষেত্রে দৌড়াই; বিশ্বাসের আদিকর্তা ও সিদ্ধিকর্তা যিশুর প্রতি দৃষ্টি রাখি; তিনিই আপনার সম্মুখস্থ আনন্দের নিমিত্ত ক্রুশ সহ্য করলেন, অপমান তুচ্ছ করলেন এবং ঈশ্বরের সিংহাসনের দক্ষিণে উপবিষ্ট হয়েছেন। তাঁকেই আলোচনা কর, যিনি আপনার বিরুদ্ধে পাপীদের এমন প্রতিবাদ সহ্য করেছিলেন, যেন প্রাণের ক্লান্তিতে অবসন্ন না হও।’ [ইব্রিয় ১২: ১-৩ ]।
রেভারেন্ড এডওয়ার্ড আইয়ুব, পালক ও শিক্ষক, গাজীপুর সিটি প্রেসবিটেরিয়ান চার্চ
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
০২ মার্চ ২০২৫বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ জানুয়ারি ২০২৫গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪