কাজী ফারজানা আফরীন
পৃথিবীতে অনেক রকম প্রাণীর একত্রে বসবাসকেই এককথায় জীববৈচিত্র্য বলে। বিজ্ঞানের ভাষায় জীববৈচিত্র্য হলো উদ্ভিদ, প্রাণী, অণুজীবসহ পৃথিবীর গোটা জীবসম্ভারের অন্তর্গত বংশানু তথা জিন এবং সেগুলোর সমন্বয়ে গঠিত বাস্তুতন্ত্র। একটি প্রজাতিকে পৃথিবীতে টিকে থাকতে হলে অন্য প্রজাতির ওপর নির্ভরশীল হতে হয়। এই নির্ভরশীলতাই হচ্ছে জীববৈচিত্র্যের মূল বিষয়। মানুষ তার খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, ওষুধপথ্য ইত্যাদির জন্য সরাসরি প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল। এককথায়, খাদ্য ও স্বাস্থ্যরক্ষার জন্য মানুষ জীববৈচিত্র্যের ওপর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল।
জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের প্রত্যক্ষ হুমকিগুলোর মধ্যে রয়েছে—দ্রুত ও অপরিকল্পিত নগরায়ণ, শিল্পায়ন, বন ও জলাভূমিকে কৃষিক্ষেত্রে রূপান্তর বা ভূমি ব্যবহারের অন্যান্য রূপ, জনসংখ্যার চাপ, বায়ু ও পানিদূষণ, জলবিদ্যুৎ ব্যবস্থার পরিবর্তন, প্রাকৃতিক সম্পদের অতিরিক্ত সংগ্রহ। সেই সঙ্গে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের অতিরিক্ত ব্যবহার, জীববৈচিত্র্যসমৃদ্ধ অঞ্চলে অনিয়ন্ত্রিত পর্যটনশিল্প, প্লাস্টিক পণ্যের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার, ইলেকট্রনিকস বর্জ্য, মাত্রাতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণ ইত্যাদি।
ইসলাম তার অনুসারীদের সামগ্রিকভাবে সৌন্দর্যমণ্ডিত দেখতে চায়—এ জন্য ১৪০০ বছর আগেই পূর্ণাঙ্গ দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কারণ, স্বাস্থ্যসম্মত পরিচ্ছন্ন পরিবেশ এবং উন্নত জীবনমান পদ্ধতি একে অপরের পরিপূরক। মিসরের প্রখ্যাত আলেম আল্লামা সাইয়েদ তানতাভি লিখেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে ৫০০ বার প্রকৃতি এবং পরিবেশদূষণমুক্ত রাখার উৎসাহ দিয়েছেন। তাতে ৫৪ প্রজাতির উদ্ভিদের কথা বলা হয়েছে; যার ৫১ প্রজাতি পৃথিবীতে পাওয়া যায়। বিক্ষিপ্তভাবে প্রায় ২০০ আয়াতে প্রাণিজগতের প্রসঙ্গ এসেছে।’
জীবজগৎ-বিষয়ক আয়াত ও হাদিস বিশ্লেষণ করলে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জোর তাগিদ পাওয়া যায়। মানুষের কল্যাণে আল্লাহ তাঁর সমগ্র সৃষ্টিজগৎ ভারসাম্যপূর্ণ করে সৃষ্টি করেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তিনি তোমাদের জন্য পৃথিবীর সবকিছু সৃষ্টি করেছেন।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ২৯)
আরও এরশাদ হয়েছে, ‘আমি পৃথিবীকে বিস্তৃত করেছি, এতে পর্বতমালা স্থাপন করেছি এবং সব বস্তু সুপরিমিতভাবে উৎপন্ন করেছি। আমি তোমাদের জন্য তাতে জীবিকার ব্যবস্থা করেছি এবং তোমরা যাদের রিজিকদাতা নও, তাদের জন্যও। প্রতিটি বস্তুর ভান্ডারই আমার কাছে আছে এবং আমি তা প্রয়োজনীয় পরিমাণেই সরবরাহ করে থাকি। আমি বৃষ্টিসঞ্চারী বায়ু প্রেরণ করি, এরপর আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করি এবং তা তোমাদের পান করতে দিই। মূলত এর ভান্ডার তোমাদের হাতে নেই।’ (সুরা হিজর, আয়াত: ১৯-২২)
অন্য আয়াতে এরশাদ হয়েছে, ‘মানুষ তার খাদ্যের প্রতি লক্ষ করুক—আমি আশ্চর্য উপায়ে পানি বর্ষণ করেছি, এরপর ভূমি বিদীর্ণ করেছি, এরপর তাতে উৎপন্ন করেছি শস্য, আঙুর, শাকসবজি, জয়তুন, খেজুর, ঘন উদ্যান, ফল ও ঘাস; তোমাদের ও তোমাদের চতুষ্পদ জন্তুদের জীবনোপকরণ হিসেবে।’ (সুরা আবাসা, আয়াত ২৪-৩২)
প্রাণিজগৎকে পৃথক জাতিসত্তার স্বীকৃতি দিয়ে কোরআন বলছে, ‘পৃথিবীতে বিচরণশীল যত প্রাণী আছে, আর যত পাখি দুই ডানা মেলে উড়ে বেড়ায়, তারা সবাই তোমাদের মতো একেকটি জাতি। (সুরা আনআম, আয়াত: ৩৮)
পৃথিবীর মানুষকে গাছপালা ও পাহাড়-পর্বত ধ্বংস না করার জন্য পবিত্র কোরআনের সুরা রুমের ৩৮ নম্বর আয়াতে সতর্কবাণী দেওয়া হয়েছে। পরিবেশ সুস্থ, সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন রাখতে নির্দেশ দিয়ে বলা হয়েছে, ‘তোমরা নিজেদের ধ্বংস ডেকে এনো না।’ (সুরা বাকারা: ১৯৫) আরও এরশাদ হয়েছে, ‘শান্তি স্থাপনের পর তোমরা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করো না।’ (সুরা আরাফ, আয়াত: ৫৬) অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, ‘মানুষের কৃতকর্মের কারণে জলে-স্থলে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে।’ (সুরা রুম: ৪১)
কোনো প্রাণী যদি বিপন্ন হয় এবং তার অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়ে, তবে তা সংরক্ষণে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। কেননা, নুহ (আ.)-এর মহাপ্লাবনের সময় আল্লাহ তাআলা প্রাণিকুলের অস্তিত্ব রক্ষার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এরশাদ হয়েছে, ‘অবশেষে যখন আমার আদেশ এল এবং চুলা (পানিতে) উথলে উঠল; আমি বললাম, তাতে উঠিয়ে নাও প্রতিটি শ্রেণির যুগলের দুটি করে।’ (সুরা হুদ, আয়াত: ৪০)
মহানবী (সা.) সেই ১৪০০ বছর আগে বৃক্ষ বা বন রক্ষার জোর তাগিদ দিয়েছেন। এক ব্যক্তি একটি গাছের পাতা ছিঁড়লে রাসুল (সা.) বললেন, ‘প্রত্যেকটি পাতা আল্লাহর মহিমা ঘোষণা করে।’ মহানবী (সা.) আরও বলেন, ‘গাছ লাগানো মুসলিমদের জন্য সদকাস্বরূপ।’ (বুখারি, মুসলিম ও দারেমি)
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ করার উৎসাহ দিয়ে মহানবী (সা.) বলেন, ‘মানুষ, পাখি বা পশু যখন তাদের খাবার গ্রহণ করে, তখন তা তার রোপণকারীর (উৎপাদনকারীর) পক্ষে একটি সদকা বা দান হিসেবে পরিগণিত হয়।’ (বুখারি ও মুসলিম) আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.) বলেন, ‘যদি নিশ্চিতভাবে জানো যে, কেয়ামত এসে গেছে, তখন হাতে যদি লাগানোর মতো একটি চারাও থাকে, তবে তা লাগাবে।’ (মুসলিম)
পশুপাখির সঙ্গে যথাসম্ভব দয়াশীল আচরণ করতে হবে। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) ওই ব্যক্তিকে অভিশাপ দিয়েছেন, যে প্রাণীদের অঙ্গচ্ছেদ করে।’ (বুখারি) অহেতুক পশুপাখির পেছনে লেগে থাকা এবং এগুলোকে অযথা শিকার করা ইসলামে নিন্দনীয়। মহানবী (সা.) এরশাদ করেন, ‘কোনো প্রাণীকে লক্ষ্যবস্তু বানিও না।’ (মুসলিম) অন্য হাদিসে এরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি অহেতুক কোনো চড়ুই পাখি মেরে ফেলল, কিয়ামতের দিন পাখিটি আল্লাহর কাছে এই বলে নালিশ করবে যে, হে আল্লাহ, অমুক ব্যক্তি আমাকে অহেতুক হত্যা করেছে।’ (নাসায়ি)
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার অংশ হিসেবে পৃথিবীর তাপমাত্রা কমানোর জন্য জীববৈচিত্র্যের সুরক্ষা অতীব প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ। সৃষ্টিজগতের ভারসাম্য রক্ষায় এ ক্ষেত্রে কোরআন-সুন্নাহর দিকনির্দেশনাই হোক সর্বোত্তম পাথেয়। কারণ, ইসলামের দৃষ্টিতেও সব প্রজাতির জীবকে বাঁচিয়ে রাখা আমাদের প্রত্যেকের অলঙ্ঘনীয় দায়িত্ব। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের গুরুত্ব সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
কাজী ফারজানা আফরীন: সহকারী অধ্যাপক ইসলামিক স্টাডিজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
পৃথিবীতে অনেক রকম প্রাণীর একত্রে বসবাসকেই এককথায় জীববৈচিত্র্য বলে। বিজ্ঞানের ভাষায় জীববৈচিত্র্য হলো উদ্ভিদ, প্রাণী, অণুজীবসহ পৃথিবীর গোটা জীবসম্ভারের অন্তর্গত বংশানু তথা জিন এবং সেগুলোর সমন্বয়ে গঠিত বাস্তুতন্ত্র। একটি প্রজাতিকে পৃথিবীতে টিকে থাকতে হলে অন্য প্রজাতির ওপর নির্ভরশীল হতে হয়। এই নির্ভরশীলতাই হচ্ছে জীববৈচিত্র্যের মূল বিষয়। মানুষ তার খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, ওষুধপথ্য ইত্যাদির জন্য সরাসরি প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল। এককথায়, খাদ্য ও স্বাস্থ্যরক্ষার জন্য মানুষ জীববৈচিত্র্যের ওপর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল।
জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের প্রত্যক্ষ হুমকিগুলোর মধ্যে রয়েছে—দ্রুত ও অপরিকল্পিত নগরায়ণ, শিল্পায়ন, বন ও জলাভূমিকে কৃষিক্ষেত্রে রূপান্তর বা ভূমি ব্যবহারের অন্যান্য রূপ, জনসংখ্যার চাপ, বায়ু ও পানিদূষণ, জলবিদ্যুৎ ব্যবস্থার পরিবর্তন, প্রাকৃতিক সম্পদের অতিরিক্ত সংগ্রহ। সেই সঙ্গে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের অতিরিক্ত ব্যবহার, জীববৈচিত্র্যসমৃদ্ধ অঞ্চলে অনিয়ন্ত্রিত পর্যটনশিল্প, প্লাস্টিক পণ্যের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার, ইলেকট্রনিকস বর্জ্য, মাত্রাতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণ ইত্যাদি।
ইসলাম তার অনুসারীদের সামগ্রিকভাবে সৌন্দর্যমণ্ডিত দেখতে চায়—এ জন্য ১৪০০ বছর আগেই পূর্ণাঙ্গ দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কারণ, স্বাস্থ্যসম্মত পরিচ্ছন্ন পরিবেশ এবং উন্নত জীবনমান পদ্ধতি একে অপরের পরিপূরক। মিসরের প্রখ্যাত আলেম আল্লামা সাইয়েদ তানতাভি লিখেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে ৫০০ বার প্রকৃতি এবং পরিবেশদূষণমুক্ত রাখার উৎসাহ দিয়েছেন। তাতে ৫৪ প্রজাতির উদ্ভিদের কথা বলা হয়েছে; যার ৫১ প্রজাতি পৃথিবীতে পাওয়া যায়। বিক্ষিপ্তভাবে প্রায় ২০০ আয়াতে প্রাণিজগতের প্রসঙ্গ এসেছে।’
জীবজগৎ-বিষয়ক আয়াত ও হাদিস বিশ্লেষণ করলে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জোর তাগিদ পাওয়া যায়। মানুষের কল্যাণে আল্লাহ তাঁর সমগ্র সৃষ্টিজগৎ ভারসাম্যপূর্ণ করে সৃষ্টি করেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তিনি তোমাদের জন্য পৃথিবীর সবকিছু সৃষ্টি করেছেন।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ২৯)
আরও এরশাদ হয়েছে, ‘আমি পৃথিবীকে বিস্তৃত করেছি, এতে পর্বতমালা স্থাপন করেছি এবং সব বস্তু সুপরিমিতভাবে উৎপন্ন করেছি। আমি তোমাদের জন্য তাতে জীবিকার ব্যবস্থা করেছি এবং তোমরা যাদের রিজিকদাতা নও, তাদের জন্যও। প্রতিটি বস্তুর ভান্ডারই আমার কাছে আছে এবং আমি তা প্রয়োজনীয় পরিমাণেই সরবরাহ করে থাকি। আমি বৃষ্টিসঞ্চারী বায়ু প্রেরণ করি, এরপর আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করি এবং তা তোমাদের পান করতে দিই। মূলত এর ভান্ডার তোমাদের হাতে নেই।’ (সুরা হিজর, আয়াত: ১৯-২২)
অন্য আয়াতে এরশাদ হয়েছে, ‘মানুষ তার খাদ্যের প্রতি লক্ষ করুক—আমি আশ্চর্য উপায়ে পানি বর্ষণ করেছি, এরপর ভূমি বিদীর্ণ করেছি, এরপর তাতে উৎপন্ন করেছি শস্য, আঙুর, শাকসবজি, জয়তুন, খেজুর, ঘন উদ্যান, ফল ও ঘাস; তোমাদের ও তোমাদের চতুষ্পদ জন্তুদের জীবনোপকরণ হিসেবে।’ (সুরা আবাসা, আয়াত ২৪-৩২)
প্রাণিজগৎকে পৃথক জাতিসত্তার স্বীকৃতি দিয়ে কোরআন বলছে, ‘পৃথিবীতে বিচরণশীল যত প্রাণী আছে, আর যত পাখি দুই ডানা মেলে উড়ে বেড়ায়, তারা সবাই তোমাদের মতো একেকটি জাতি। (সুরা আনআম, আয়াত: ৩৮)
পৃথিবীর মানুষকে গাছপালা ও পাহাড়-পর্বত ধ্বংস না করার জন্য পবিত্র কোরআনের সুরা রুমের ৩৮ নম্বর আয়াতে সতর্কবাণী দেওয়া হয়েছে। পরিবেশ সুস্থ, সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন রাখতে নির্দেশ দিয়ে বলা হয়েছে, ‘তোমরা নিজেদের ধ্বংস ডেকে এনো না।’ (সুরা বাকারা: ১৯৫) আরও এরশাদ হয়েছে, ‘শান্তি স্থাপনের পর তোমরা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করো না।’ (সুরা আরাফ, আয়াত: ৫৬) অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, ‘মানুষের কৃতকর্মের কারণে জলে-স্থলে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে।’ (সুরা রুম: ৪১)
কোনো প্রাণী যদি বিপন্ন হয় এবং তার অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়ে, তবে তা সংরক্ষণে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। কেননা, নুহ (আ.)-এর মহাপ্লাবনের সময় আল্লাহ তাআলা প্রাণিকুলের অস্তিত্ব রক্ষার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এরশাদ হয়েছে, ‘অবশেষে যখন আমার আদেশ এল এবং চুলা (পানিতে) উথলে উঠল; আমি বললাম, তাতে উঠিয়ে নাও প্রতিটি শ্রেণির যুগলের দুটি করে।’ (সুরা হুদ, আয়াত: ৪০)
মহানবী (সা.) সেই ১৪০০ বছর আগে বৃক্ষ বা বন রক্ষার জোর তাগিদ দিয়েছেন। এক ব্যক্তি একটি গাছের পাতা ছিঁড়লে রাসুল (সা.) বললেন, ‘প্রত্যেকটি পাতা আল্লাহর মহিমা ঘোষণা করে।’ মহানবী (সা.) আরও বলেন, ‘গাছ লাগানো মুসলিমদের জন্য সদকাস্বরূপ।’ (বুখারি, মুসলিম ও দারেমি)
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ করার উৎসাহ দিয়ে মহানবী (সা.) বলেন, ‘মানুষ, পাখি বা পশু যখন তাদের খাবার গ্রহণ করে, তখন তা তার রোপণকারীর (উৎপাদনকারীর) পক্ষে একটি সদকা বা দান হিসেবে পরিগণিত হয়।’ (বুখারি ও মুসলিম) আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.) বলেন, ‘যদি নিশ্চিতভাবে জানো যে, কেয়ামত এসে গেছে, তখন হাতে যদি লাগানোর মতো একটি চারাও থাকে, তবে তা লাগাবে।’ (মুসলিম)
পশুপাখির সঙ্গে যথাসম্ভব দয়াশীল আচরণ করতে হবে। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) ওই ব্যক্তিকে অভিশাপ দিয়েছেন, যে প্রাণীদের অঙ্গচ্ছেদ করে।’ (বুখারি) অহেতুক পশুপাখির পেছনে লেগে থাকা এবং এগুলোকে অযথা শিকার করা ইসলামে নিন্দনীয়। মহানবী (সা.) এরশাদ করেন, ‘কোনো প্রাণীকে লক্ষ্যবস্তু বানিও না।’ (মুসলিম) অন্য হাদিসে এরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি অহেতুক কোনো চড়ুই পাখি মেরে ফেলল, কিয়ামতের দিন পাখিটি আল্লাহর কাছে এই বলে নালিশ করবে যে, হে আল্লাহ, অমুক ব্যক্তি আমাকে অহেতুক হত্যা করেছে।’ (নাসায়ি)
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার অংশ হিসেবে পৃথিবীর তাপমাত্রা কমানোর জন্য জীববৈচিত্র্যের সুরক্ষা অতীব প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ। সৃষ্টিজগতের ভারসাম্য রক্ষায় এ ক্ষেত্রে কোরআন-সুন্নাহর দিকনির্দেশনাই হোক সর্বোত্তম পাথেয়। কারণ, ইসলামের দৃষ্টিতেও সব প্রজাতির জীবকে বাঁচিয়ে রাখা আমাদের প্রত্যেকের অলঙ্ঘনীয় দায়িত্ব। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের গুরুত্ব সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
কাজী ফারজানা আফরীন: সহকারী অধ্যাপক ইসলামিক স্টাডিজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
০২ মার্চ ২০২৫বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ জানুয়ারি ২০২৫গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪